• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

পাঁচ ও নয় এর গোলক ধাঁধাঁয় ক্রোয়েশিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ১২ জুলাই ২০১৮, ১৮:০১

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে নিজেদের ফুটবল ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে ক্রোয়েশিয়া। ১২০ মিনিটের লড়াই শেষে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে স্বপ্নের ফাইনালে যে তারা। যে স্বপ্নের শুরু হয়েছে ৩২টি দলকে নিয়ে। বাদ পড়তে পড়তে এখন রয়েছে আর দুটি দল। যেখানে মস্কোর লুঝনিকিতে আগামী ১৫ জুলাই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হবে তারা।

নিজেদের স্বপ্ন পূরণের পথে পাঁচ ও নয় নিয়ে গোলক ধাঁধাঁয় পড়েছে ক্রোয়েশিয়া ফুটবল দল। আসুন জেনে নেই পাঁচ ও নয় এর গোলক ধাঁধাঁ আসলে কী?

রাশিয়া বিশ্বকাপের এবারের আসর ফুটবল ইতিহাসের ২১তম আসর। এর আগে বিশটি আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আলাদা আলাদা ৮টি দল। ১৫ জুলাই যদি ক্রোয়েশিয়া ফ্রান্সকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে তাহলে তারা হবে বিশ্বকাপ ট্রফি ঘরে তোলার ক্ষেত্রে নবম দেশ। আর যদি তারা শিরোপা ঘরে তুলতে না পারে তাহলে ক্রোয়েশিয়া হবে পঞ্চম দেশ যারা ফাইনালে গিয়েও শিরোপা ঘরে তুলতে অক্ষম হয়।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: সিলেটে আড়াই দিনে হারল বাংলাদেশ ‘এ’ দল
--------------------------------------------------------

প্রথমেই পাঁচ’র ইতিহাস

বিশ্বকাপের ইতিহাসে কপাল পোড়া ৪টি দলের মধ্যে দু’বার করে কপাল পুড়েছিল চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরির আর তিনবার করে কপাল পুড়ে নেদারল্যান্ডসের। সাবেক চেকোস্লোভাকিয়া (বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্র) ১৯৩৪ সালে ও ১৯৬২ সালে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেললেও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের। ১৯৩৪ সালের ইতালি বিশ্বকাপের ফাইনালে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় স্বাগতিক ইতালিকে। কিন্তু সে ফাইনালে ইতালির কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয়ে শিরোপার স্বপ্নভঙ্গ হয়। অপরদিকে ১৯৬২ সালের চিলি বিশ্বকাপের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ব্রাজিল। সে ফাইনালে তারা সাম্বার দেশ ব্রাজিলের কাছে ৩-১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা না পাওয়ার বেদনায় পুড়তে হয় চেকোস্লোভাকিয়াকে।

ফেরেঙ্ক পুসকাস, ন্যান্দর হিদেকুটির হাঙ্গেরি ১৯৩৮ সালে ও ১৯৫৪ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালে অংশ নিলেও তাদের পরিণতি হয় চেকোস্লোভাকিয়ার মতো। ১৯৩৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইতালি। সেখানে আগেরবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালি হাঙ্গেরিকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে। অপরদিকে ১৯৫৪ সালের সুইজারল্যান্ড বিশ্বকাপের ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে (বর্তমানে জার্মানি) প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় ফেরেঙ্ক পুসকাস, ন্যান্দর হিদেকুটির হাঙ্গেরি। কিন্তু ফাইনালে ৩-২ গোলে পশ্চিম জার্মানির কাছে পরাজিত হয়ে আর শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি হাঙ্গেরির।

ইয়োহান ক্রুয়েফ, অঁরি হান, রব রেনসেনব্রিঙ্ক, নেসকেন্সের নেদারল্যান্ড ও রোবেন, স্নেইডার, রবিন ভ্যান পার্সির নেদারল্যান্ড বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেও শিরোপা ছুঁয়ে আর দেখা হয়নি তাদের। ডাচরা ১৯৭৪, ১৯৭৮ ও ২০১০ বিশ্বকাপের ফাইনালে অংশগ্রহণ করে। ১৯৭৪ সালে বিশ্বকাপের ইতিহাসেই অন্যতম সেরা একটি দল উপহার দিয়েছিল ‘টোটাল ফুটবল’-এর জনকেরা। কিন্তু ফাইনালে পশ্চিম জার্মানির কাছে পরাজয়ের কারণে তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়। ফাইনালে অলিম্পিয়া স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ২-১ গোলে পরাজিত হয় নেদারল্যান্ড। প্রথমবার হতাশা হওয়ার পরই ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠে ডাচরা। ফাইনালে স্বাগতিক আর্জেন্টিনার কাছে ৩-১ গোলে পরাজিত হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তোলার স্বপ্নভঙ্গ হয়। এরপর তারা শিরোপার স্বপ্ন দেখে ২০১০ সালের আফ্রিকা বিশ্বকাপে। ফাইনালে স্পেনের টিকি-টাকা ফুটবলের কাছে পরাজিত হয় নেদারল্যান্ড। সে ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ে করা আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার গোলে শিরোপা হাত থেকে ফসকে যায় ডাচদের।

চেকোস্লোভাকিয়া, হাঙ্গেরি ও নেদারল্যান্ডের কষ্ট যতটুকু তার চেয়েও বেশি কষ্ট বোধহয় সুইডেনের। কারণ তারা নিজের দেশে ফাইনাল খেললেও শিরোপা ছুঁয়ে দেখতে পারেনি। তবে তারা চেষ্টা করেছিল কিন্তু তাদের ওপর বিধাতার হাত ছিল না বলা চলে। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে সাম্বা ফুটবলের দেশ ব্রাজিলকে পায় সুইডিশরা। কিন্তু ফাইনালে তারা ব্রাজিলের বিপক্ষে ৫-২ গোলের ব্যবধানে হেরে যায়। ওই একবারই এরপর আর ফাইনাল খেলা হয়নি তাদের।

দ্বিতীয়ত নয়’র ইতিহাস
এবারের বিশ্বকাপটি ফুটবল ইতিহাসের ২১তম আসর। এর আগে ২০টি বিশ্বকাপে বিভিন্ন দেশের শোকেসে স্থান পায়। তবে এ বিশটি বিশ্বকাপ শিরোপা কিন্তু আলাদা ২০টি দেশের কাছে যায়নি। মাত্র ৮টি দেশ এ বিশটি শিরোপাকে ভাগ করে নেয়। সেই দেশগুলো হলো উরুগুয়ে, ইতালি, জার্মানি, ব্রাজিল, ইংল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, ফ্রান্স ও স্পেন।

এরমধ্যে সর্বোচ্চ পাঁচবার শিরোপা ঘরে তোলে সাম্বার দেশ ব্রাজিল, চারবার করে শিরোপা ঘরে তোলে ফুটবলের পাওয়ার হাউজ খ্যাত জার্মানি ও আজ্জুরি খ্যাত ইতালি। দু’বার করে শিরোপা ছুঁয়ে দেখার সুযোগ হয়েছে ল্যাটিনের দু’দেশ আলবেসিলেস্তে খ্যাত আর্জেন্টিনা ও লা সেলেস্তে খ্যাত উরুগুয়ে। আর একবার করে শিরোপা নিজেদের শোকেসে পুরেছে থ্রি লায়ন্স খ্যাত ইংল্যান্ড, লস ব্লুজ খ্যাত ফ্রান্স ও লা ফুরিয়া রোজা খ্যাত স্পেন।

এবারের বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের পথে যেহেতু মুখোমুখি হবে ফ্রান্স-ক্রোয়েশিয়া। সেক্ষেত্রে ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হলে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলবে। তখন তারা উরুগুয়ে ও আর্জেন্টিনার সঙ্গে এক কাতারে চলে যাবে। আর শিরোপা জয়ী দেশের সংখ্যা আটেই সীমাবদ্ধ থাকবে। ফ্রান্স শিরোপা জিতলে কিংবা হারলে পাঁচ ও নয়’র গোলক ধাঁধাঁয় পড়বে না।

কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার সামনে পাঁচ ও নয় দুটি গোলকেরই হতাছানি। হারলে হবে ফাইনালে হারা পঞ্চম কপাল পোড়া দল। জিতলে ইতিহাসের নবম দেশ হিসেবে পাবে বিশ্বকাপ জয়ের অমৃত স্বাদ। ক্রোয়েশিয়া কোন ধারায় মিলবে, মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষে উত্তরটা মিলবে আগামী রোববার রাতেই।

আরও পড়ুন:

এএ/জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল শনিবার
বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট ‘গিনেস বুকে’ স্থান পাবে : প্রতিমন্ত্রী
টিভিতে আজকের খেলা
‘ফুটবলের উজ্জ্বল তারকারা অবশ্যই ফর্মে ফিরবে’
X
Fresh