ফিফায় লিঙ্গ-বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে মুখ খুললেন মহাসচিব
বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন আন্তর্জাতিক ফুটবল সংস্থার (ফিফা) মহাসচিব ফাতমা সামৌরা। সেনেগালের এই কূটনৈতিকের দাবি এই পদটি গ্রহণের পর, প্রথমদিকে তাকে লিঙ্গবিদ্বেষ ও বর্ণবিদ্বেষের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। একজন ‘কৃষ্ণাঙ্গ নারী’ ফুটবলের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান এত প্রভাবশালী পদে থাকবেন, তা নাকি অনেকেরই হজম হয়নি।
২০১৬ সালে ফিফার প্রথম নারী মহাসচিব পদে বসেন ফাতমা। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে ৫৫ বছর বয়সী অভিযোগ করেছেন প্রথমদিকে অনেকেই তাকে এই পদে মানতে চাননি। এক তো তিনি একজন নারী। তার ওপরে কৃষ্ণাঙ্গ। তাই লিঙ্গ এবং বর্ণ, দুদিক থেকেই বিদ্বেষমূলক পরিবেশে পড়তে হয়েছে তাকে।
ফোর্বেসের মতে, এই মুহূর্তে শুধু ফুটবল ছাড়াও বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী তিনিই। সম্প্রতি কথা বলেছেন বিসিবি স্পোর্টসের সঙ্গে।
তিনি জানান, বিষয়টা অত্যন্ত সরল, কিছু মানুষ আছেন যারা ভাবতেই পারেন না যে এ কৃষ্ণাঙ্গ নারী ফিফায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তবে এ কোনও নতুন বিষয় নয়। বরং, এ ধরণের ঘটনার মুখে শুধু ফাতমা নয়, তাঁর মতো প্রত্যেক কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের প্রতিদিনই পড়তে হয় বলে জানিয়েছেন ফিফার প্রভাবশালী এই কর্মকর্তা।
এসব একেবারেই সহ্য হয় না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত এই এই বিষয়টার মোকাবিলা করি। তবে, আমি চাই না আমার চারপাশে কোন বর্ণবিদ্বেষী ঘোরাফেরা করুক।
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : সেরা ব্যাটসম্যান উইলিয়ামসন, বোলার টাই
--------------------------------------------------------
আসলে এতদিন ফিফার উচ্চপদে কোনও নারীকে দেখা যায়নি। এখনও ফিফাতে পুরুষদেরই আধিপত্য রয়েছে। তাই ফাতমার মতে তার এরকম বাধার মুখে পড়াটাই স্বাভাবিক ছিল।
কারণ, তাঁর মতে, তিনি একটি ‘পুরুষ-আধিপত্যের সংস্থা’র মাথার ওপরের পলকা ‘কাচের সিলিংটা’ই ভেঙে দিয়েছেন। তবে সেসব বিদ্বেষীদের এরইমধ্যে তিনি শায়েস্তা করে ফেলেছেন।
জাতিসংঘের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, তারা এখন আমাকে মেনে নিয়েছে। তাঁর অভিযোগ, চাকরি করতে গেলে কখনো কোনো পুরুষের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না। সবাই ধরেই নেয় যে সে কাজটা করতে পারবে। কিন্তু একজন নারীকে উপরে উঠতে গেলে প্রতিপদে তার যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়। ফাতমার পথেও অনেক কাঁটা বিছানো হয়েছে।
গত এপ্রিলে ২০২৬ সালের মরক্কো বিশ্বকাপের বিড নিয়ে ফাতমার বিরুদ্ধে স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ উঠেছিল। তদন্তে জানা যায়, তিনি কোনো অন্যায় কাজে জড়িত ছিলেন না। আদালত তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করে।
সেনেগালের কূটনীতিক ফাতমা সামবা দিয়ুফ সামৌরাকে ফিফার প্রথম নারী মহাসচিব করা হয় ২০১৬ সালের মে মাসে। মেক্সিকো সিটিতে অনুষ্ঠিত ফিফার ৬৬তম কংগ্রেসে সংগঠনটির মহাসচিব হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়েছিল।
তার আগে কোনও নারী ফিফার এত উচ্চপদে বসেননি। দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত জেরোমি ভালকের জায়গায় দায়িত্ব পান ফাতমা।
আরও পড়ুন :
ওয়াই/জেএইচ
মন্তব্য করুন