• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ছক্কা হাঁকিয়ে রংপুরের শ্বাসরুদ্ধ জয়

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৫ নভেম্বর ২০১৭, ২২:৩১

অবিশ্বাস্য! অসাধারণ! অভূতপূর্ব!
চট্টগ্রাম খুব কাছে এসেও ছুঁতে পারল না আরাধ্য বিজয়স্তম্ভ। তবুও কি ম্যাচটিকে অবিশ্বাস্য বা অসাধারণ কিংবা অভূতপূর্ব বলা যায় না? রংপুর জিতলেও জয়টা হয়েছে মূলত ক্রিকেটেরই। কি ছিল না? পরতে পরতে উত্তেজনা আর রোমাঞ্চের শিহরণ! শেষ ওভারের স্নায়ুচাপের তোড়ে হৃদস্পন্দন তো বন্ধ হওয়ার জোগাড়! দুই দলের খেলোয়াড়-সমর্থকেরা হয়তো এ সময় বারবার বলে উঠেছেন, ‘উফ! এত্ত টেনশন নেওয়া যায় না!’

এ ম্যাচকে বলা যায় থিসারাময় জয়। এর আগে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে শেষ ওভারের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৩ রানে রংপুরকে জয় এনে দিয়েছিলেন থিসারা। এরপর টানা দুই ম্যাচ হারতে হয়েছিল রংপুরকে। অবশেষে চট্টগ্রামে গিয়ে স্বাগতিক চিটাগাংয়ের বিপক্ষে আজও রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ বলে ছক্কা মেরে মাশরাফির রংপুরকে ৩ উইকেটে জয় এনে দিলেন এ লঙ্কান পেসার।

শেষ ওভারে ১৪ রানের প্রয়োজন ছিল রংপুর রাইডার্সের। তাতে প্রথম দুই বলেই পেরেরা তুললেন ৮ রান। দ্বিতীয় বলে দারুণ এক ছক্কা। শেষ চার বলে দরকার ৬ রান। তখনই প্রবল নাটকীয়তার শুরু। পরিস্থিতি হয়ে ওঠে শ্বাসরুদ্ধকর। সিঙ্গেল নিতে গিয়ে রান আউট নাহিদুল ইসলাম। পরের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট শাহরিয়ার নাফীসও। ততক্ষণে স্ট্রাইকিংয়ে লঙ্কান পেরেরা। ম্যাচ তবুও অনেকটা চিটাগাংয়ের দিকে। এরপরও ২ রান নিয়ে আশা ধরে রাখেন। একটি শট! শেষ বলে দরকার ৪ রান। এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ সময়ে ওয়াইড দিয়ে বসেন তাসকিন। থিসারা স্কুপ করতে গিয়ে মিস করেন বল। লাইনে থাকলে হয়তো জয় দেখতে পারতো চিটাগাংই। কিন্তু পরের বলে মিড উইকেটের উপর দিয়ে হাওয়ায় ভাসিয়ে দিলেন পেরেরা। ছক্কা! তাতে ৩ উইকেটের জয় তুলে প্রতিশোধটা ভালোভাবেই নেয় রংপুর।

টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রংপুরের অধিনায়ক ম্যাশ। ব্যাট করতে নামা ভাইকিংসরা নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে ১৭৬ রান। জবাবে, মাশরাফির ঝড়ো ইনিংস আর গেইল-মিঠুনের দায়িত্বশীল ইনিংসে ৭ উইকেট হারিয়ে রংপুর জয়ের বন্দরে পৌঁছে।

শনিবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় মাঠে নামে দুই দল। তলানির শেষ দল হিসেবে নামে চিটাগাং ভাইকিংস। ৮ ম্যাচ থেকে ৫ পয়েন্ট নিয়ে সপ্তম স্থানেই রইলো তাসকিন-সৌম্য সরকারের ভাইকিংস। আর গেইল-ম্যাককালামদের রংপুর সমান ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চার নম্বরে উঠলো।

ব্যাটিংয়ে নেমে ভাইকিংস দলপতি ও ওপেনার লুক রনকি ৫ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় করেন ১১ রান। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার ২৬ বলে দুটি চার এবং দুটি ছক্কায় করেন ৩০ রান। তিন নম্বরে নামা এনামুল হক বিজয় আবারো নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ৭ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন। ভ্যান জিল আর আগের ম্যাচে ৯৫ রান করা সিকান্দার রাজা এরপর স্বাগতিকদের টানতে থাকেন। রাজা ১৯ বলে ২২ রান করে ফিরলেও ৪০ বলে তিনটি চার আর চারটি ছক্কায় ভ্যান জিল করেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৮ রান। শেষ দিকে লুইস রিসি ১ রান করেন। আর নাজিবুল্লাহ জাদরান ১৬ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় করেন ২৫ রান।

রংপুরের হয়ে সোহাগ গাজী ২টি, মাশরাফি, রুবেল, নাহিদুল ও মালিঙ্গা ১টি করে উইকেট নেন।

১৭৭ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে রংপুরের ওপেনার ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ২০ বলে ১৫ রান করে বিদায় নেন। গেইলের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। তার ২৫ বলের ইনিংসে একটি চারের পাশাপাশি ছিল তিনটি ছক্কা। ওয়ান ডাউনে ব্যাট করতে নামেন রংপুরের অধিনায়ক মাশরাফি। মাত্র ১৭ বলে চারটি চার আর তিনটি বিশাল ছক্কায় করেন ৪২ রান।

মাঝে রবি বোপারা ১১ রান করে সাজঘরে ফেরেন। মোহাম্মদ মিঠুন করেন ৪৪ রান। তার ২৯ বলের ইনিংসে ছিল চারটি চারের মার। ১৯তম ওভারে লুইস রিসি মাত্র ৫ রান দিয়ে তুলে নেন একটি উইকেট। শেষ ওভারে ১৪ রান দরকার হয় রংপুরের। তাসকিনের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে থিসারা পেরেরা ২ রান নেন। পরের বলে ছক্কা হাঁকান। তৃতীয় বলে রান আউট হন নাহিদুল ইসলাম। চতুর্থ বলে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন শাহরিয়ার নাফিস। পঞ্চম বলে পেরেরা ডাবল নেন। শেষ বলে ৪ রান দরকার ছিল রংপুরের। তবে, শেষ বলের আগের বলটি ওয়াইড দেন তাসকিন। শেষ বলে ছক্কা হাঁকান পেরেরা। থিসারা পেরেরা ১৪ বলে তিন ছক্কায় ২৮ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।

চিটাগাংয়ের আল আমিন, সানজামুল, তানভির, তাসকিন, সৌম্য আর লুইস রিসি একটি করে উইকেট নেন।

ক্যাপ্টেন্স নকের কারণে মাশরাফি প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন।

এএ/এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শেষ সময়ের রোমাঞ্চে ফর্টিসকে রুখে দিলো আবাহনী
বিপিএল ব্যর্থতার পর ডিপিএলে উড়ন্ত সূচনা মাশরাফীর
বিপিএলের দল বাড়ানো নিয়ে মুখ খুললেন পাপন
ডিপিএল শুরু ১১ মার্চ, পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রকাশ
X
Fresh