• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

গেইল-ম্যাককালামেও হারের বৃত্তে রংপুর

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৮ নভেম্বর ২০১৭, ২২:০৯

বিপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয়ের পর টানা দুই হারে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে চলে যায় মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। দলের এমন অবস্থায় আগেভাগেই ম্যাককালাম-গেইলকে উড়িয়ে আনে রংপুর। লক্ষ্য একটাই, যে করে হোক জয়ে ফেরা। কিন্তু সেই একই চিত্র। গেইল-ম্যাককালামের উপস্থিতিতে হারতে হলো তাদের।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ২০তম ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের কাছে ১৪ রানের পরাজয় বরণ করল তারকাঠাসা রংপুর। মিরপুরে টস হেরে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান সংগ্রহ করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। জবাবে ১৩৯ রান সংগ্রহ করে রংপুর।

গেইল-ম্যাককালামের ব্যাটিং তাণ্ডব দেখতে পুরো মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। কিন্তু ঝলক দেখালেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগান স্পিনার রশিদ খান ও তরুণ মেহেদী হাসান। তবে এ মেহেদী হাসান কিন্তু মেহেদী হাসান মিরাজ নন। জাতীয় লিগে খেলেন খুলনার হয়ে মেহেদী। যদিও তিনি ব্যাটিং অলরাউন্ডার। তবে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ স্পিন করে থাকেন। গতবছর বরিশাল বুলসের হয়ে একটি ম্যাচ খেললেও এবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে মাঠে নামতে পারবেন হয়তো আশা করতে পারেননি। কিন্তু কুমিল্লার কোচ গেইল-ম্যাককালামদের বিপক্ষে মাঠে নামিয়ে চমক দিলেন। শুধু তাই নয়, সবাইকে বিস্মিত করে অধিনায়ক তামিম প্রথম ওভার তুলে দেন তরুণ মেহেদী হাসানের হাতে।

প্রথম ম্যাচে দর্শকদের হতাশার সাগরে ডোবান টি-টোয়েন্টির দুই মারকুটে ব্যাটসম্যান। গেইল করেন ১৭ আর ম্যাককালামের ব্যাট থেকে আসে ১৩ রান। চার-ছক্কার ফরম্যাটে দুই জনের রান একত্র করলে নূন্যতম অর্জন অর্ধশতকের ধারেকাছেও যাবে না।

১৫৪ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে বাংলাদেশের তরুন লেগ স্পিনার মেহেদীর প্রথম ওভারের প্রথম তিন বলে ম্যাককালাম নিলেন মাত্র ১ রান। চতুর্থ বলে নিশ্চিত এলবি ছিলেন গেইল। কিন্তু আম্পায়ারের কল্যাণে বেঁচে যান গেইল। প্রথম ওভারে ওই ১ রানই দিলেন মেহেদী হাসান।

চতুর্থ ওভারেই আরেকবার জীবন ফিরে পেলেন গেইল। লিটন দাসের মাখন গলা হাত এবার বাঁচিয়ে দিল তাঁকে। তখন মনে হচ্ছিল ভাগ্যই চাচ্ছে দর্শকের ইচ্ছা পূরণ করতে। গেইল ও ম্যাককালামের ঝড় শুরু হওয়ার ইঙ্গিতও হাসান আলীর ওই ওভারে মিলছিল। গেইল সবেমাত্র হাত খুলেছেন। বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ৩টি। সেই মুহূর্তে মঞ্চে আবির্ভাব আফগান ঘূর্ণি জাদুকর রশিদ খানের। তার বলে এলবির ফাঁদে পড়েন ১৩ বলে ১৭ রান করা গেইল। ৩১ রানে ভাঙে ওপেনিং জুটি। পরের বলেই কুশল পেরেরাকে (০) সাইফ উদ্দিনের ক্যাচে পরিণত করেন রশিদ। ওভারের পঞ্চম বলটি শাহরিয়ার নাফীস রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেললে হ্যাটট্রিক মিস হয় রশিদের।

নিজের প্রথম ওভারের পর আর উইকেট বঞ্চিত নয়। তৃতীয় ওভারে দুই উইকেট নিয়ে খেলার মোড়টাই ঘুরিয়ে দেন মেহেদী। দারুণ এক ডেলিভারিতে প্রথম ফেরান ম্যাককালামকে। ওভারের তৃতীয় বলে ফেরান শাহরিয়ার নাফিসকে। তিন ওভার শেষে মেহেদীর ঝুলিতে ২ উইকেট। এসময় দলের হাল ধরেন মোহাম্মদ মিথুন আর রবি বোপারা। দুজনে মিলে ৬৭ রানের জুটি গড়েন।

২৬ বলে ৩১ রান করে মোহাম্মদ মিথুন আল-আমিনের বলে তামিম ইকবালের তালুবন্দি হলে ভাঙে এই জুটি। হাত খুলে ব্যাট করে রান এগিয়ে নেওয়ার চেষ্ট করেছিলেন রবি বোপারা। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে কুলিয়ে উঠতে পারেননি। ১৯ তম ওভারে চতুর্থ বলে অধিনায়ক মাশরাফি রানআউট হয়ে গেলে সব আশা শেষ হয়ে যায় রংপুরের। থিসারা পেরেরাও হাসান আলীর বলে ০ রানে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ১৪ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও লিটন দাস দেখেশুনে খেলতে থাকেন। দলীয় ২৩ রানে কুমিল্লা শিবিরে আঘাত হানেন পেসার রুবেল হোসেন। ম্যাককালামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তামিম (২১)।

তামিমের আউটের পর রুবেলের চতুর্থ ওভারের শেষ বল ইমরুল ব্যাটে-বলে ভালোভাবে সমন্বয় করতে পারেননি। তবুও ব্যাটের কানায় লেগে বাউন্ডারি পেয়ে যান ইমরুল। চার মেরে রানের খাতা খোলার পর ইমরুল-লিটন ২২ গজের মাঝে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। ঠিক এমন সময় ইমরুলের দিকে তেড়ে যান রুবেল। কুমিল্লার বাঁহাতি ওপেনার ইমরুলকে শুরুতে ঠিক কী বলেছেন রুবেল, এটা জানা যায়নি। কিন্তু দু’জনের মধ্যে যে তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে এটা পরিষ্কার। শেষমেশ আম্পায়ারের হস্তক্ষেপে থামেন ইমরুল-রুবেল। দলীয় ৪৭ রানে লিটন দাস (১১) অধিনায়ক মাশরাফির প্রথম শিকার হন।

ইমরুল-বাটলারের ব্যাটে কুমিল্লা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতেই দ্বিতীয়বার আঘাত হানেন মাশরাফি। তার বলে মাত্র ১ রানে এলবি হয়ে যান বাটলার। কুমিল্লার দূর্গে বড় আঘাতটি হানেন থিসারা পেরেরা। ম্যাচ জুড়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা ইমরুল কায়েসকে ৪৭ রানে বোল্ড করেন তিনি। ৩২ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ২ ওভার বাউন্ডারিতে ৪৭ রান করেছিলেন ইমরুল। কুমিল্লার পঞ্চম উইকেটের পতন ঘটে শোয়েব মালিকের (৯) রান-আউটে। এরপর ৩৪ বলে ৪১ রান করা স্যামুয়েলসকে ফিরিয়ে ম্যাচের রাশ টেনে ধরেন পেরেরা। শেষ পর্যন্ত সাইফ উদ্দিনের ১১ বলে ১৬ রানের ঝড়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান তুলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস।

রংপুরের পক্ষে মাশরাফি ও পেরেরা ২টি করে এবং রুবেল হোসেন ১টি উইকেট লাভ করেন।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস
২০ ওভার ১৫৩/৬ (তামিম ইকবাল ২১, লিটন দাস ১১, ইমরুল কায়েস ৪৭, জস বাটলার ১, মারলন স্যামুয়েলস ৪১, শোয়েব মালিক ৯, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ১৬*, হাসান আলি ২*; সোহাগ গাজী ০/২৪, মাশরাফি বিন মুর্তজা ২/২২, রুবেল হোসেন ১/৪৫, নাজমুল ইসলাম ০/২৪, রবি বোপারা ০/৮, থিসারা পেরেরা ২/২৬)

রংপুর রাইডার্স
২০ ওভার ১৩৯/৭ (ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ১৩, ক্রিস গেইল ১৭, কুশল পেরেরা ০, শাহরিয়ার নাফীস ০, মোহাম্মদ মিথুন ৩১, রবি বোপারা ৪৮, মাশরাফি বিন মুর্তজা ১৭, থিসারা পেরেরা ১, সোহাগ গাজী ০; মেহেদী হাসান ২/১৫, আল-আমিন হোসেন ১/৩৩, হাসান আলি ১/৩৯, রশিদ খান ২/১৯, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ০/৩০)

ফলাফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ১৪ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: মেহেদী হাসান।

এএ

মন্তব্য করুন

daraz
  • খেলা এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শেষ সময়ের রোমাঞ্চে ফর্টিসকে রুখে দিলো আবাহনী
শামার জোসেফকে বিশ্বকাপেও চান গেইল
বিপিএল ব্যর্থতার পর ডিপিএলে উড়ন্ত সূচনা মাশরাফীর
বিপিএলের দল বাড়ানো নিয়ে মুখ খুললেন পাপন
X
Fresh