ভিলিয়ার্স ঝড়ে বাংলাদেশকে ৩৫৪ রানের চ্যালেঞ্জ দ. আফ্রিকার

প্রায় চার মাস পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাটিং করতে নেমেছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। কিন্তু তার ব্যাটিং দেখে একবারও মনে হলো না, এত দিন পর ২২ গজের ক্রিজে নেমেছেন তিনি। রীতিমতো বাংলাদেশ বোলারদের পিটিয়ে তুলোধোনা করলেন। তার ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়েছে টাইগার বোলিং অ্যাটাক। ৩৬০ ডিগ্রি খ্যাত ব্যাটসম্যানের ১৭৬ রানের টর্নেডো ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশকে ৩৫৪ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে এত রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে মাত্র দুটি। জিততে হলে রেকর্ড গড়তে হবে বাংলাদেশকে।

বুধবার পার্লের বোল্যান্ড পার্কে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। আগের ক’দিনের বৃষ্টিতে শুরুতে উইকেট সামান্য আর্দ্র ও খানিকটা মন্থর থাকায় সতর্কতার সঙ্গে সূচনা করেন আমলা-ডি কক। প্রথমদিকে নতুন বলে বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন মাশরাফি ও তাসকিন। তাদের বল দেখে শুনে মোকাবেলা করেন দুই প্রোটিয়া উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান।

ধীরে ধীরে রূদ্রমূর্তি ধারণ করতে থাকে আমলা ও ডি ককের জুটি। চোখ রাঙাতে থাকে টাইগার বোলারদের ওপর। তবে সেই পথে তাদের বাধা হয়ে দাঁড়ান সাকিব আল হাসান। দলীয় ৯০ রানে ডি কককে (৪৬) ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন তিনি। অবশেষে ওয়ানডে সিরিজে উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। যেন প্রচণ্ড তাপদাহের পর এক পশলা বৃষ্টি।

প্রথম উইকেট পেতে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হলেও দ্বিতীয়টি আসে দ্রুতই। একই ওভারে ডু প্লেসিসকে ক্লিন বোল্ড করে ফেরান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। প্রোটিয়া অধিনায়ক রানের খাতাই খুলতে পারেননি।

জোড়া আঘাতের পর একটু থমকে যাওয়ার কথা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। তবে ঘটে ঠিক উল্টোটা। ক্রিজে এসেই তাণ্ডব চালাতে থাকেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। অপর প্রান্তে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে যান আমলা। তাদের ব্যাটে ছুটে চলে প্রোটিয়ারা।

ডি ভিলিয়ার্সের সাহচর্যে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন আমলা। তবে তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ান রুবেল হোসেন। তার করা অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল খোঁচা মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আমলা (৮৫)। ৯২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ইনিংসটি সাজান তিনি। এতে তৃতীয় উইকেটে তাদের ভয়ঙ্কর জুটি ভাঙে।

প্রোটিয়া ডানহাতি ওপেনার ফিরলেও ডি ভিলিয়ার্স কম্পন থামেনি। অন্যপ্রান্তে অন্য ব্যাটসম্যানরা তাকে খুব একটা সমর্থন যোগাতে না পারলেও একপ্রান্তে থেকে টাইগার বোলারদের ওপর রীতিমতো স্টিম রোলার চালান তিনি। দলীয় ৩৪৩ রানে থামে এই মারকুটে ব্যাটসম্যানের ঝড়। রুবেলের বলে সাব্বিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১০৪ বলে ১৫ চার ও ৭ ছক্কায় ১৭৬ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেন এবি।

এটি ভিলিয়ার্সের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে ওয়ানডেতে তার সর্বোচ্চ রান ছিল ১৬২। ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তা করেন তিনি।

এদিন মাত্র ৩৪ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন খ্যাত ব্যাটসম্যান। পরে সেটিকে ৬৮ বলে সেঞ্চুরিতে পরিণত করেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার ২৫তম সেঞ্চুরি। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম।

ভিলিয়ার্সের বিদায়ের পর স্কোর বোর্ডে খুব একটা রান যোগ করতে পারেনি প্রোটিয়ারা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভার খেলে ৬ উইকেটে ৩৫৩ রান করে তারা। এরই মধ্যে রুবেলের শিকার হয়ে ফেরেন জেপি ডুমিনি ও বেহারদিন।

এই দিন বাংলাদেশের সেরা বোলার রুবেল হোসেন। তিনি ঝুলিতে ভরেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। ২টি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান।

বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে সিরিজের কুইজ

ডিএইচ