ফেসবুককে জুয়ার প্রচারণা বন্ধের আহ্বান বিটিআরসির
ফেসবুক ব্যবহার করে যেন জুয়ার প্রচারণা করতে না পারে সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মেটার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে যেন অপরাধীরা প্রতারণামূলক কার্যক্রম, বেটিং বা জুয়ার প্রচারণা করতে না পারে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া দরকার। এ লক্ষ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের মাধ্যমে এ ধরনের কনটেন্ট প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত ও অপসারণের লক্ষ্যে কারিগরি ব্যবস্থা প্রবর্তনের ওপর জোর দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বিটিআরসি কার্যালয়ে মহিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে মেটার প্রতিনিধি দলকে আহ্বান জানান তিনি।
সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, মেটার পাবলিক পলিসি প্রধান রুজান সারওয়ার, প্রাইভেসি ও এআই ম্যাটার এক্সপার্ট আরিয়ান জিমেনেজ, কনটেন্ট বিষয় বিশেষজ্ঞ নয়নতারা নারায়ণ, কনটেন্ট পলিসি বিশেষজ্ঞ জনাথন লুইস এবং পলিসি প্রোগ্রাম ম্যানেজার রুসি টিও।
প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম এবং বিটিআরসির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগসহ ফেসবুকের নানাবিধ সমসাময়িক বিষয়ে জানান।
চলন্ত মেট্রোতে রং মেখে দুই তরুণীর কাণ্ড, অতঃপর...
দোল পূর্ণিমার আগেই চলন্ত মেট্রো ট্রেনের বগির মেঝেতে বসে দুই তরুণীর দোল খেলার পাশাপাশি রঙ মাখামাখির ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। তাদের এ কর্মকাণ্ড নিয়ে তদন্তও শুরু করেছে ভারতের মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
রোববার (২৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
We need a law against this asap pic.twitter.com/3qH1aom1Ml
— Madhur Singh (@ThePlacardGuy) March 23, 2024
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে সোমবার (২৫ মার্চ) দোল পূর্ণিমার উদযাপিত হবে। এর আগেই চলন্ত মেট্রো ট্রেনের বগির মেঝেতে বসে দুই তরুণীর দোল খেলার পাশাপাশি রঙ মাখামাখির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সয়লাব হয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, তারা একে অপরের গালে গাল ঘষে দিচ্ছেন। মুখে মুখ ঘষে দিচ্ছেন। একে অপরের উপরে শুয়ে পড়ছেন। ভিডিও দেখে নেটিজেনরা দাবি করেছেন যে নয়াদিল্লির মেট্রো-ট্রেনের দৃশ্য সেটি। তবে, দিল্লি মেট্রো রেল করপোরেশন (ডিএমআরসি) ওই ভিডিওর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভিডিওটি আদৌও আসল নাকি ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে সেটি ছড়ানো হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, প্রাথমিকভাবে মেট্রোর ভেতরে এই ভিডিও ধারণ করা হয়েছে কিনা, সেটা নিয়েও সন্দেহ আছে। কারণ ওই ভিডিও তৈরির জন্য ডিপফেক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। তবে মেট্রোর সন্দেহ ঠিক কিনা, তা অধিকতর তদন্তের পরই স্পষ্টভাবে বোঝা যাবে।
এরকম কোনও ভিডিও ধারণ করা হচ্ছে দেখলেই যাতে আমাদের কাছে অভিযোগ জানানো হয়, সেজন্য আমরা যাত্রীদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে দিল্লি মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
এর আগেও মেট্রোর মধ্যে রিল বানানো বা এমন কোনও কাজ করা থেকে বিরত থাকার জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে লাগাতার প্রচার করা হয়।
‘বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় দেশবাসীকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে তিনি এ শুভেচ্ছা জানান।
ওই পোস্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি লিখেছেন, ২৬ মার্চ, আমাদের স্বাধীনতা দিবস। ৫৩ বছর আগের এ দিনে মধ্যরাতে পাকিস্তানি আর্মিদের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।
তিনি ওয়্যারলেস বার্তায় বলেছিলেন, ‘...এটাই সম্ভবত আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন।... পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলার মাটি হইতে বিতাড়িত না করা পর্যন্ত এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন....।’
আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছিলেন এবং মাত্র ৯ মাসেই বিজয় অর্জন করেছিলেন। আজ স্মরণ করি বঙ্গবন্ধু এবং সব মুক্তিযোদ্ধাকে। সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
ভেঙে গেল ভারত-পাকিস্তানের দুই মেয়ের সম্পর্ক
বহুল আলোচিত ভারতের মেয়ে অঞ্জলি ও পাকিস্তানের মেয়ে সুফি মালিকের সমকামী জুটি ভেঙে গেল। বিয়ে করে আজীবন একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেও কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
সোমবার (২৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে এনডিটিভি। রোববার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলাদাভাবে বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়ে পাঁচ বছরের সম্পর্কে ইতি টেনেছেন তারা।
View this post on Instagram
A post shared by Anjali (@anjalichakra)
অঞ্জলি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, প্রেমিকা পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত সুফি মালিক তাকে ধোঁকা দিয়েছেন। এটা শুনে অবাক লাগতে পারে। কিন্তু আমাদের পথ আলাদা হচ্ছে। আমরা আমাদের বিয়ে ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ সুফি সবটা জেনে-বুঝে পরকীয়ায় জড়িয়েছে।
তিনি লেখেন, আমি জীবনের এই অধ্যায় শেষ করছি, তাই বলে আমি চাই না সুফির প্রতি কোনওরকম নেতিবাচক আচরণ। আমি চাই এই সিদ্ধান্তকে সকলে সম্মান জানাক। আমাদের পাঁচ বছরের এই সম্পর্ক প্রেমে ভরপুর ছিল। সেইভাবেই আমি অতীতটা মনে রাখতে চাই।
View this post on Instagram
A post shared by Sufi Malik (@sufi.sun)
পরকীয়া বিষয়টি স্বীকার করে সুফি লিখেছেন, বিয়ের আগেই না বুঝে আমি তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছি। আমি আমার ভুল স্বীকার করছি এবং তা করতেই থাকব। আমি জানি আমি ওকে কষ্ট দিয়েছি, আমি বুঝতে পারিনি। আমি এই ভুলটা কত বড় সেটা জানি, তাই শুধু অঞ্জলি আর সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাইতে পারি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে নিউ ইয়র্কে বসবাসকারী এই ভারত-পাক জুটির অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরাল হয়েছিল। আজীবন সঙ্গে থাকার কথা বলেছিলেন দুজনে। কিন্তু পাঁচ বছরেই ফুরালো প্রেম!
এবার গরুর মাংস বয়কটের ডাক
রমজান মাসের শুরুতেই শুরু হয় মিষ্টি ও রসালো ফল তরমুজের মৌসুম। সারাদিন রোজা থাকার পর রোজাদারদের ইফতারে ফলটির চাহিদা থাকে। আর এই সুযোগ নিয়ে হুহু করে দাম বাড়িয়ে পিস থেকে কেজিতে তরমুজ বিক্রি শুরু করে বিক্রেতারা। ফলে সপরিবার খাওয়ার মতো একটি তরমুজের দাম পড়ে ৬০০-৮০০ টাকা। চলতি রমজানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তরমুজ বয়কটের ডাক দেয় সাধারণ মানুষ। ফলে অর্ধেক দামে তরমুজ বিক্রি করলেও ক্রেতা পাচ্ছে না বিক্রেতারা।
তরমুজ বয়কটে এর দাম নিয়ে কারসাজি বন্ধ হওয়ায় এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গরুর মাংস বয়কটের ডাক দিয়েছে সাধারণ মানুষ। কারণ, রোজার শুরু থেকেই গরুর মাংসের দাম বেড়েই চলেছে। প্রথমদিকে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি থাকলেও শুক্রবার (২৯ মার্চ) তা ৭৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে, গত ১৫ মার্চ গরুর মাংসের দাম ৬৬৪ টাকা বেঁধে দিয়েছে সরকার। তাতে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই মাংস ব্যবসায়ীদের। এবার এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে জনগণ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজে গরুর মাংস বয়কটের ডাক দিয়েছেন নেটিজেনরা। এছাড়া হাজার হাজার বাংলাদেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের ফেসবুকের টাইমলাইনে কয়েকটি পোস্ট শেয়ার করছেন। যা রীতিমত ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া একটি পোস্ট হবহু তুলে ধরা হলো-
তরমুজের ভাব বেড়েছিল আমাদের আম জনতার বয়কটে তার দাম এখন হাতের নাগালে। এভাবে গরুর মাংসও খাওয়া বাদ দিন,বয়কট করুন ১ বা ২ বা ৩ মাস। দেখবেন, সেটাও হাতের নাগালে চলে আসবে। ক্রেতা না কিনলে দাম বাড়িয়ে কয়দিন কাটা গরুর মাংস রাখবে ফ্রিজে! কম দামে ক্রেতা না কিনলে কতদিন চড়া দাম হাকাবে! ক্রেতাই যদি না থাকে কিসের সিন্ডিকেট! আমরা সব চাইলেই পারি! লাগবে শুধু একতা! চলেন, তরমুজের পরে এবারে গরুর মাংসের দাম কমাই।
ভাইরাল হওয়া আরেকটি পোস্ট-
আমি গরুর মাংস কিনলাম। বলল যে, দেশের মানুষ ভাত পায়না, গরুর মাংস কেনে। গরুর মাংসের ম্যালা দাম, আসুন গরুর মাংস বয়কট করি।
এদিকে গরুর মাংসের দাম বাড়া নিয়ে খামারিদের দুষছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বড় খামারিদের কারসাজিতে বাজারে গরুর মাংসের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না । দুর্মূল্যের এ বাজারে স্বল্পমূল্যে যারাই গরুর মাংস বিক্রি করতে চাচ্ছেন, তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে খামারিদের অসাধু চক্র। একদিকে কোরবানিকে কেন্দ্র করে বাজার থেকে গরু উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে, অন্যদিকে হুমকি আর চাপ এসে হাজির হচ্ছে স্বল্পমূল্যের বিক্রেতাদের জীবনে। খামারিদের এই সিন্ডিকেট ভাঙা গেলে ৫০০ টাকায়ও গরুর মাংস কিনতে পারতো ক্রেতা সাধারণ; আবারও মাসে অন্তত একবার হলেও গরুর মাংসের স্বাদ নিতে পারতো মধ্যবিত্ত পরিবার।
এ বিষয়ে কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করে আলোচনায় আসা ব্যবসায়ী খলিল বলেন, সরকার ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশের অনুমতি দিলে মাংসের দাম ৫০০ টাকায় নেমে আসবে। অন্তত ১০ দিন ভারতীয় গরু দেশে আনা হলে গরুর মাংস ৫০০ টাকা বিক্রি করা সম্ভব।
ঈদে ভাড়া মওকুফ করে বাড়িওয়ালার অনন্য নজির
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে আসন্ন ঈদের অতিরিক্ত খরচের চাপ কমানো এবং ঈদ আনন্দকে প্রাণবন্ত করতে ভাড়াটিয়াদের বাড়িভাড়া মওকুফ করেছেন রাজধানীর মিরপুর এলাকার একটি বাড়ির মালিক। আর বিষয়টি ভাড়াটিয়াদেরকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১ এপ্রিল) ওই বাড়ির মালিকের চিঠি সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
চিঠির লেখাগুলো হুবহু তুলে ধরা হলো-
নিত্যপণ্যের মূল্য হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় আসন্ন ঈদের অতিরিক্ত খরচের চাপ কমানো এবং আপনাদের ঈদ আনন্দকে প্রাণবন্ত করার উদ্দেশ্যে এপ্রিল, ২০২৪ মাসের মূল ভাড়া না নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইল।
জানা গেছে, সোমবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরের রুপালি হাউজিংয়ের ৬১ নম্বর বাড়ির ভাড়াটিয়া তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে বিষয়টি জানালে তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। নেটিজেনরা প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন ওই বাড়ির মালিককে। এই বাড়িওয়ালার হাউজিংয়ে দুইটা বাড়ি আছে এবং সবার জন্য এবার ঈদে এই উপহার দিয়েছেন তিনি।
একজন কমেন্টে লিখেছেন, ঢাকার এক বাড়িওয়ালা তার ভাড়াটিয়ার জন্য উদারতা দেখিয়েছেন। আল্লাহ নিশ্চয় উত্তম কাজের উত্তম প্রতিদান দেবেন। তবে এমন হৃদয়বান মানুষের সংখ্যা সমাজে বৃদ্ধি পাওয়া দরকার। আমরা প্রত্যেকে নিজের জায়গা থেকে রোজা বা ঈদ উপলক্ষে এমন একটি করে ভালো কাজ করলে সমাজে একটা বিরাট পরিবর্তন আসবে।
আরেকজন লিখেছেন, এমন ভালো মানুষ আছে বলেই পৃথিবী টিকে আছে।
পোস্টদাতা আলিমুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমি একজন ভাড়াটিয়া হিসেবে আমার আবেগ প্রকাশ করেছি মাত্র। তবে বাড়ির মালিক বিষয়টি গোপন রাখতেই পছন্দ করেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
গুজব প্রতিরোধে প্রয়োজনে ফেসবুক-ইউটিউব বন্ধ করবে সরকার
সরকারের অভিযোগ আমলে না নিলে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ফেসবুক ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গত ৩১ মার্চ। তবে এর প্রক্রিয়া কী হবে এবং আদৌ সেই পদক্ষেপে সরকার যাবে কী না তা এখনো স্পষ্ট নয়।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) সচিব মো. নূরুল হাফিজ বলেন, মন্ত্রিসভা কমিটির ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমাদের এখনো কিছু জানানো হয়নি।
আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বৃহস্পতিবার বলেন, আমরা তো বলেছি যদি আমাদের কথা না শোনে তাহলে বন্ধ করে দেব।
৩১ মার্চ মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, তারা (ফেসবুক, ইউটিউব, গুগল) বিভিন্ন বিষয় আমাদের সুপারিশ শোনে না। কারণ, গুজব প্রতিরোধ ও সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এখানে কোনো অফিস নেই। আমরা বলব যে তারা আমাদের কথা শুনছে না। প্রয়োজন হলে কিছু সময়ের জন্য এসব বন্ধ থাকবে।
এদিকে বাংলাদেশ চাইছে মেটা বাংলাদেশে অফিস স্থাপন করুক। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মেটার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে একটি আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের অনুরোধ করেন।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, সরকার ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর একটা প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। তারা চাইছে তারা যখন চাইবে তখন যেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথ্য দেয়। সরকারের আপত্তির কনটেন্ট সরিয়ে ফেলে বা ব্যক্তির ব্যাপারে তথ্য দেয়। কিন্তু বাস্তবে এটি সম্ভব নয়। কারণ ফেসবুকের নিজস্ব নীতি আছে। তারা তার ভিত্তিতে চলে। তবে তারা মনে করেন, ফেসবুকের কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস তত ভালো নয়। অনেক ক্ষেত্রে তাদের কাছ থেকে ভালো প্রতিকার পাওয়া যায় না।
ফাইবার অ্যাট হোমের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ সাবির বলেন, কিছু কিছু বিষয় আছে যেটা আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপটে আমরা মনে করি যে ওটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থাকা উচিত নয়। কিন্তু সেটার ব্যাপারে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। তবে সরকারের দিক থেকে যে রিকোয়েস্টগুলো যায় সেগুলো যে সব ভ্যালিড রিকোয়েস্ট তা নয়। সরকারের অনুরোধে ফেসবুক যদি সব সরিয়ে ফেলত তাহলে আমরা হয়তো অনেক তথ্য জানতেই পারতাম না। আবার কোনো ব্যক্তির তথ্য প্রকাশ করলে তার নিরপত্তাও বিঘ্নিত হতে পারত। ব্যক্তির ক্ষেত্রে তারা অত নজর না দিলেও কোনো সরকারের পক্ষ থেকে যখন কোনো রিকোয়েস্ট পাঠানো হয় তখন তারা সেটাকে গুরুত্ব দেয়, তারা যা করার বুঝেশুনেই করে, বলেন তিনি।
আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. বি এম মইনুল হোসেন বলেন, সরকার যে বলছে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাদের কথা শুনছে না, কী শুনছে না তা আমরা জানতে চাই। সরকার কী চায়, কোন ব্যাপারে ব্যবস্থা চায় তা যদি সরকার প্রকাশ করতো তাহলে আমরাও বুঝতে পারতাম সরকারের চাওয়া কতটা যৌক্তিক। তারা (সরকার) এমন কিছু রিকোয়েস্ট পাঠান যা ব্যক্তিকে টার্গেট করে, কোনো ঘটনাকে টার্গেট করে যার মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকে। সেগুলো তো ফেসুক ইউটিউবের গ্রহণ করা উচিত না। তারা করেও না, বলেন তিনি।
তবে তার মতে, সরকারের অনুরোধ তারা গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখলেও ব্যক্তির ক্ষেত্রে তাদের সার্ভিস ভালো না। তাদের কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস আরো উন্নত করা উচিত।
সুমন আহমেদ সাবির বলেন, সরকার চাইলে ফেসবুক ইউটিউব বন্ধ করে দিতে পারে। কিন্তু তার প্রতিক্রিয়া সরকার নিতে পারবে কী না সেটাই প্রশ্ন। দেশের টেলিযোগাযোগও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নির্ভর হয়ে পড়ছে। এর আগে সরকার নানা ঘটনায় দুই-একবার চেষ্টা করেছে সফল হয়নি।
অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন বলেন, দেশের দুই লাখ ৫০ হাজারের মতো মানুষ এখন ই-কমার্সের সঙ্গে যুক্ত। এরমধ্যে অর্ধেক এফ কমার্স। তাই সরকার এটা বন্ধ করতে গেলে দেশের অর্থনীতি বিশাল ক্ষতির মুখে পড়বে। আর ফেসবুক বন্ধ করলে অনেক কিছুই বন্ধ হয়ে যাবে। একটির সাথে আরেকটি যুক্ত।
মানবাধিকার কর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুখ ফয়সাল বলেন, ফেসবুক বা মানুষের কথা বলার, মুক্ত চিন্তার কোনো প্ল্যাটফরম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার যদি মনে করে যে তারা যৌক্তিক কথাও শুনছে না তাহলে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা আরো বাড়তে পারে। এখানে আইন কানুনের সমস্যা থাকতে পারে। এই ধরনের প্ল্যাটফরম যদি কোনো অন্যায় করে তাহলে দেশীয় আইনে ধরা না গেলে সরকার আন্তর্জাতিকভাবে চেষ্টা করতে পারে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামেও নিয়ে যাওয়া যায়। আর তা করতে হলে সরকারের অবস্থান সঠিক হতে হবে, মনে করেন তিনি। বাংলাদেশের কিছু আইন নিয়ে ফেসবুকের ভিন্নমত থাকার কারণেই তারা হয়তো এখানে অফিস করতে চায় না। কারণ তখন ওই আইন তাদের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ হতে পারে। আর তারা যদি মনে করে অফিস না নিয়েই ব্যবসা করা যায় তাহলে তারা অফিস করবে কেন? সরকারের ভাবনা কী?
আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ফেসবুক ও ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিটিআরসি সচিব সচিব মো. নূরুল হাফিজ বলেন, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সাময়িকভাবে বন্ধ করার কোনো সিদ্ধান্তের কথা আমরা জানা নাই। আমরা সরকারের দিক থেকে এধরনের কোনো নির্দেশনা পাই নাই।
তিনি বলেন, মেটা (ফেসবুক, ইউটিউবসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ, বৈঠক এবং আলোচনা হয়। ফেসবুকের সঙ্গে দুই মাস পর পর বৈঠক হয়। আমরা আমাদের বিষয়গুলো শেয়ার করি, আলোচনা করি। ইউটিউব যে দেড় লাখ কনটেন্ট সরিয়েছে তা আমরা বলেছি বলেই সরিয়েছে।
তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা যে বিষয়গুলো পাঠাই তার সবই তারা অ্যাড্রেস করে। তবে প্রতিকার পাই শতকরা ৪০ ভাগের মতো।
আর আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা তো বলিনি এখনই বন্ধ করব। যদি সেরকম কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তারা আমাদের কথা না শোনে তাহলে বন্ধ করব।
বন্ধ করার মত কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে কী না? প্রশ্নটি দুইবার করার পরও তিনি কোনো জবাব দেননি।
বাংলাদেশে এখন ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা পাঁচ কোটির বেশি। ফেসবুকের সঙ্গে সরকার যোগাযোগ বাড়ানোর সঙ্গে অনুরোধের সংখ্যাও বাড়াচ্ছে। ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসে মেটার কাছে তথ্য চেয়ে ৯৮৮টি আবেদন করে বাংলাদেশ সরকার। এরমধ্যে সরকারের ৬৭ শতাংশ আবেদনে সাড়া দিয়েছে মেটা। একইসময়ে বাংলাদেশের দুই হাজার ২২৭টি কনটেন্টে রেস্ট্রিকশন দিয়েছে মেটা। ওই সময়ে ৯৮৮টি অনুরোধের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ার জন্য ছিলো ৯৫৬টি এবং জরুরি ভিত্তিতে তথ্য দেয়ার অনুরোধ ছিলো ৩২টি। আবেদনের অধীনে মোট এক হাজার ৪৫৪ টি অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য চায় সরকার।
২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার মেটার কাছে ৮৩৬টি অনুরোধ করেছিল। এদিকে ইউটিউব গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তিন মাসে বাংলাদেশের প্রায় দেড় লাখ ভিডিও মুছে ফেলেছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালে এক বছরে বাংলাদেশের ছয় লাখ ৩৮ হাজার ভিডিও অপসারণ করেছে তারা।
আর টিকটক গত বছরের একই সময়ে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বাংলাদেশ থেকে আপ করা ৭৫ লাখ ৯৯ হাজার ৩৪৯টি ভিডিও মুছে ফেলেছে।