• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo
মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে লিচু বাগান, বাম্পার ফলনের আশা 
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে লিচু বাগানগুলো। ফুল ফোটার সঙ্গে সঙ্গে মৌমাছি নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে আসতে শুরু করেছেন মৌয়ালরা। এতে একদিকে যেমন মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন তারা, অন্যদিকে পরাগায়নের মাধ্যমে বাড়ছে ফলন। ভালো ফলনে চাষিদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছেন স্থানীয় কৃষি অফিস। বাম্পার ফলনের আশায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন বাগানিরা।  কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর কালিয়াকৈর উপজেলায় প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। উপজেলার লিচু বাগানের জন্য বিখ্যাত চাপাইর ইউনিয়নের মেদীআশুলাই গ্রামের দেড়চালা ও চান্দের চালা। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও রাস্তাঘাটে পা রাখলেই চোখে পড়ে বাগান, বসতবাড়ি ও রাস্তার পাশে লিচু গাছগুলোতে মুকুলের সমাহার। প্রতিটি লিছু গাছ ভরে গেছে ফুলে ফুলে। দেড়চালা ও চান্দের চালা এলাকায় গোলাপী, চায়না-২, চায়না থ্রি, বোম্বাই, বেদানাসহ বিভিন্ন জাতের প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার লিচু গাছ রয়েছে।  লিচু চাষি হানিফ ও সিরাজুলের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রতিবছর তাদের ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। এতে লাভ হয় ৫ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা। তবে গত বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় লাভের সংখ্যা কিছুটা কম ছিল। এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।  কালিয়াকৈর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ভালো ফলনে চাষিদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। লিচুর মুকুল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মৌ খামারিরা দূর-দূরান্ত থেকে আসতে শুরু করেছেন। এরমধ্যে তিনটি খামারে প্রায় ১৯২টি মৌ-বাক্স নিয়ে এসেছেন তারা। এতে একদিকে যেমন মধু সংগ্রহ করতে পারবেন মৌয়ালরা অন্যদিকে পরাগায়নের মাধ্যমে অধিক ফলনের আশা চাষিদের।
২৯ মার্চ ২০২৪, ২১:২৬

হাবিপ্রবি শিক্ষকের আবেদনে দিনাজপুরে হচ্ছে লিচু চত্বর
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘লিচু চত্বর’ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ। লিচু চত্বর নির্মাণের জন্য শহরের প্রবেশমুখ দিনাজপুর সরকারি কলেজ মোড়কে প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, আদিকাল থেকে বাংলাদেশের মধ্যে দিনাজপুরে প্রথম লিচু চাষ শুরু হয়। তবে নির্দিষ্ট কোনো তারিখ বা সন জানা যায়নি। জনশ্রুতি রয়েছে ব্রিটিশ আমলে কোন একসময় সদর উপজেলার ৬নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের মাশিমপুর গ্রামের আব্দুল হক ভারতের বোম্বাই থেকে বেদানা লিচুর চারা নিয়ে এসে রোপণে করেন। সেই থেকে দিনাজপুরে লিচু চাষ শুরু হয়। একে একে বোম্বাই, মাদ্রাজি, হারিয়া বেদানা, কাঁঠালি, চায়না-থ্রি, গোলাপিসহ বিভিন্ন জাতের লিচু চাষ শুরু হয়। দিনাজপুরের লিচু দেশ-বিদেশে কদর অর্জন করলেও লিচু নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা বা কাজ হয়নি। অথচ এ জেলায় লিচু চাষে রয়েছে দেড়শ বছরের ইতিহাস। সারাদেশে লিচু চাষ হলেও দিনাজপুরের লিচুর কদর আলাদা। দেশের মানুষ দিনাজপুরের লিচুকে প্রাকৃতিক রসগোল্লা হিসেবেও আখ্যায়িত করেন। কৃষিপ্রধান এদেশের একেকটি জেলা একেকটি পণ্য উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। দিনাজপুর জেলার জন্য একটি লোগো তৈরি করেছে প্রশাসন। যেখানে স্লোগান দেওয়া হয়েছে- ‘চাল লিচুতে ভরপুর, জেলার নাম দিনাজপুর’। যে লোগোটি জেলা উপজেলাসহ সব প্রশাসনিক দপ্তরে শোভা পাচ্ছে। তবে চাল, লিচু চাষের জন্য বিখ্যাত হলেও এ জেলায় নেই কোনো চাল বা লিচু চত্বর।  গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর জেলায় লিচু চত্বর স্থাপনের জন্য আবেদন করেন দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার কৃতি সন্তান হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের এনাটমি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের প্রফেসর ড. নাজমুল হাসান পারভেজ। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদনের সঙ্গে তিনি দিনাজপুর সরকারি কলেজ মোড়ে লিচু চত্বরের একটি নকশা সংযুক্ত করে দেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক লিচু চত্বর বাস্তবায়নের জন্য ২৯ নভেম্বর ডাক যোগে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন। এর আগেও বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে দীর্ঘ দিন থেকে দিনাজপুরের মানুষ লিচু চত্বর স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছেন। লিচু চত্বরের আবেদনের ব্যাপারে প্রফেসর ড. নাজমুল হাসান পারভেজ বলেন,   নিজের এলাকার তথা দেশের জন্য ভালবাসার অনুভূতি থেকেই আমার এই উদ্যোগ গ্রহণ। দিনাজপুর জেলা চাল ও লিচুর জন্য বিখ্যাত।  কিন্তু এই জেলায় প্রাপ্ত লিচুফলের কোন ভাস্কর্য নেই। বাংলাদেশের রাজশাহীতে যেমন রয়েছে আম চত্বর  এবং টাঙ্গাইলের মধুপুরে আনারস চত্বরের মত আমাদের দিনাজপুরে এমন লিচু চত্বর তৈরী করা বিশেষ প্রয়োজন যা আমাদের দিনাজপুর জেলাকেও বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বে লিচুর জন্য আরো নতুন করে পরিচিত করে তুলবে। লিচু চত্বর স্থাপনের ব্যাপারে দিনাজপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলওয়ার হোসেন বলেন, দিনাজপুরে একটি লিচু চত্বর করার সিদ্ধান্ত ছিল। শিক্ষকের আবেদন আমাদের কাজকে আরও তরান্বিত করবে। প্রাথমিকভাবে দিনাজপুর সরকারি কলেজ মোড়ে লিচু চত্বরটি করার প্রস্তুতি চলছে। তবে এর থেকে আরও ভালো জায়গা যদি পাওয়া যায় সেখানেও এটি করা যেতে পারে। যার মাধ্যমে দিনাজপুরের লিচু চাষের ইতিহাসকে তুলে ধরা হবে। দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নূরুজ্জামান বলেন, জেলায় পাঁচ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। এ বাগানগুলোতে লিচু উৎপাদন হয় প্রায় ৪৫ হাজার মেট্রিক টন; যা দিনাজপুরের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে। আমরাও চাই দিনাজপুরে লিচু চত্বর স্থাপিত হোক।
১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:১০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়