‘আরটিভি অদম্য সুর’ : চ্যাম্পিয়ন ওয়াদুদুর রহমান রাহুল
দীর্ঘ পথপরিক্রমায় দর্শক-শ্রোতাদের ভালো লাগাকে প্রাধান্য দিয়ে সংবাদ ও অনুষ্ঠানমালা সাজিয়েছে দেশের জনপ্রিয় বেসরকারি টিভি চ্যানেল আরটিভি। সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যয়ে দর্শকদের নানান প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টায় প্রতি মুহূর্তে এগিয়ে চলেছে চ্যানেলটি। বাংলা ভাষার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বর্ণাঢ্য রিয়েলিটি শো’র মাধ্যমে ইতোমধ্যেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে আরটিভির রিয়েলিটি শোগুলো। তারই প্রেক্ষিতে এবার ‘প্রতিবন্ধী মানে প্রতিভা, বন্দি নয়’-এই স্লোগানে আরটিভিতে শুরু হয়েছিল প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণে মিউজিক্যাল রিয়েলিটি শো ‘আরটিভি অদম্য সুর।’
নানা ধাপ শেষে সব প্রতিযোগিকে পিছনে ফেলে বিজয়ের মালা গলায় তুলে নিলেন ওয়াদুদুর রহমান রাহুল। রোববার (১৪ জানুয়ারি) ‘আরটিভি অদম্য সুর’র ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের প্রতিযোগিতায় যৌথভাবে ফার্স্ট রানার আপ হয়েছেন ফারহিম আঞ্জুম সোহানা ও মোঃ সাইফ উদ্দিন রাফি। সেকেন্ড রানার আপ হয়েছেন মো: আশরার বিল্লাহ খান।
গ্র্যান্ড ফিনালের আয়োজনে আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্ত সৈয়দ আশিক রহমান বলেন, গেয়ে উঠার এই তো সময় স্লোগান সামনে রেখে প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহনে আরটিভি প্রথমবারের মত আয়োজন করেছে রিয়েলিটি শো ‘আরটিভি অদম্য সুর’। এমন আয়োজন বিশ্বে এই প্রথম। বাংলাদেশের অনেক অঞ্চল থেকে কয়েক হাজার প্রতিযোগি ‘আরটিভি অদম্য সুর’এ অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘ জার্নি শেষে আজ আমরা পৌছে গিয়েছি চূড়ান্ত পর্বে। বাংলাদেশে ৪৬ লাখের মত মানুষ আছে যারা কোন না কোন ভাবে প্রতিবন্ধী। এই বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব নয়। সরকার ২০৪১ সালের মাঝে যে উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ ঠিক করেছে টা অর্জন করতে হলে এই বিপুল সংখ্যক জনবলের প্রতিভাকে কাজে লাগাতে হবে।
দারাজের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার, এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস রুশো তার বক্তব্যে বলেন, এমন একটি সুন্দর আয়োজনের জন্য প্রথমেই আরটিভিকে সাধুবাদ জানাই। সারা পৃথিবীতেই এখন অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের এখন সময় এসেছে পরিবর্তন আনার। আর ঠিক সময় আরটিভি এমন একটি আয়োজন করেছে। আরটিভি সব সময় নতুন কিছু নিয়ে কাজ করে আর তাই চ্যানেলটি সবার প্রিয়।
বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালি হক চৌধুরী বলেন, বার্জার পেইন্টস অনেক দিন ধরেই ১০-১২টি স্কুল চালাই। কিন্ত জাতীয় পর্যায়ে এমন প্রতিভাবান মানুষদের সামনে নিয়ে আসার সাহস আমাদের কখনোই হত না আরটিভি এগিয়ে আসতো। টাকাতো সবাই দিতে পারে কিন্ত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের সবচেয়ে বেশি দরকার ভালোবাসা। আর তাই আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে সবার এগিয়ে আসা উচিত।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু বলেন, অসাথ্যকে সাধন করা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। যেটি আরটিভি তার দক্ষ জনবল নিয়ে জাতীর সামনে উপস্থাপন করেছেন। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বিশাল জনবলকে যদি কর্মক্ষম মানব সম্পদে রুপান্তর না করতে পারি তাহলে আমাদের লক্ষভ্রস্ট হওয়ায়র সম্ভাবনা থাকে। আমরা আশাবাদি ২০৪১ সালের মাঝে এদেরকে নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।
আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শফি মন্ডল, ইমন সাহা, ইলিয়াস কাঞ্চন , সাইফ উদ্দিন নাসির (ব্যবস্থাপনা পরিচালক - এস এম সি),কবির বকুল, মেহরীন, হায়দার হোসেন, শাহিদুল ইসলাম হেলাল, অধ্যাপক জিয়াউল হাসান কিসলু (বীরমুক্তিযোদ্ধা ও নাট্যব্যাক্তিত্বি, ডঃ এস চক্রবতী (চেয়ারম্যান এস পি হসপিটাল) , হাসনাত মিয়া (এ.আর.ডাব্লু কনস্যুলেট, বাংলাদেশ অনারারি কনস্যুলেট) সহ আরও অনেকে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ১ম বার এর মত আয়োজিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে মিউজিকাল রিয়েলিটি শো বার্জার পেইন্টস প্রেজেন্টস ‘গেয়ে ওঠার এই তো সময়’ স্লোগানে “আরটিভি অদম্য সুর” পাওয়ার্ড বাই-দারাজ, দিস প্রোগ্রাম ব্রট টু ইউ বাই-ইয়ামাহা, এসোসিয়েট পার্টনার- জয়া স্যানেটারি ন্যাপকিন, লিলি সৌন্দর্য্যরে সংজ্ঞায় তুমি এবং এস পি হসপিটাল। বাংলাদেশের প্রায় সব অঞ্চল থেকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে প্রায় তিন হাজার প্রতিযোগীর ভিডিও থেকে প্রাথমিক বাছাই করে ১হাজার প্রতিযোগীর ভিডিও বিচারকগণ বিশ্লেষণ করেন।
আরটিভি বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া ষ্টুডিওতে ১ হাজার থেকে ২০০ জন প্রতিযোগী নিয়ে শুরু হয় ‘অদম্য সুর’ এর ‘ষ্টুডিও অডিশন’ রাউন্ড। আরটিভি অদম্য সুর-এর পুরো আয়োজনে বিচারকার্য সম্পন্ন করছেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম, আলম আরা মিনু এবং প্রতিবন্ধিতাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সৈয়দা মুনীরা ইসলাম।
সৈয়দা মুনিরা ইসলামের পরিকল্পনা ও নির্বাহী প্রযোজনায় মাহমুদা মাহা’র সঞ্চালনায় আরজু আহমেদেও প্রযোজনায় আরটিভির পর্দায় ৮ ডিসেম্বর ২০২৩ থেকে প্রতি শুক্রবার ও রবিবার বিকাল ৫.৩০ মিনিটে পর্বগুলো সম্প্রচার হয়।
১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ২০:২৮