• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা, জাতিসংঘের সতর্কবার্তা
হামাস নির্মূলের নামে টানা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। হামাসের সঙ্গে সম্পর্কের জেরে পশ্চিমা মদদপুষ্ট দেশটির লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে সিরিয়া ও লেবাননের ইরানপন্থী গোষ্ঠীগুলোও। ফলস্বরূপ গাজায় প্রতিনিয়ত হামলা ও অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি বিগত কয়েক মাসে সিরিয়া এবং লেবাননেও বিচ্ছিন্ন বেশ কয়েকটি হামলা চালায় দখলদার সেনারা। সবশেষ সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় তারা। এতে প্রাণ হারান ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডের (আইআরজিসি) দুজন শীর্ষস্থানীয় কমান্ডারসহ ৭ জন ইরানি কর্মকর্তা। এ ঘটনার জেরে এবার ফুঁসে ওঠে ইরান। গত শনিবার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সরাসরি ইসরায়েলের ভুখণ্ডে হামলা চালায় দেশটি।  অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জর্ডানের সহযোগিতায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে গেছে ইসরায়েল। এক্ষেত্রে দেশটির উন্নত প্রযুক্তির কয়েক স্তরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও বড় ভূমিকা রেখেছে। ইরানের নিক্ষেপ করা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের বেশিরভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে আকাশে। নয়টি ক্ষেপণাস্ত্র ও কয়েকটি ড্রোন ইসরায়েলে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।  হামলায় ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতি ততটা না হলেও মধ্যপ্রাচ্যে এর বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালালে তাতে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হতে পারে দুই দেশের মধ্যে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে ইরানে পাল্টা হামলা চালানোর জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী। এ পরিস্থিতিতে সব পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।  ইসরায়েলে ইরানের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার জরুরি সভা হয় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে। সেখানে গুতেরেস বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ একটি পূর্ণমাত্রার ধ্বংসাত্মক সংঘাতের মুখোমুখি। তারা যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে এই অঞ্চল বা বিশ্ব কেউই সামলাতে পারবে না। বিশেষ করে নিশ্চিতভাবে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে ইতোমধ্যে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় পর্যুদস্ত গাজাবাসীর ওপর। তাই এখনই সময় তাদের খাদের কিনারা থেকে ফিরিয়ে আনার। আর এ দায়িত্ব যৌথভাবে সবার।   এদিকে বিশ্ব ব্যবস্থায় বড় ধরনের অস্থিরতার শঙ্কায় ইরানে পাল্টা হামলা না চালানোর জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশটির পশ্চিমা মিত্ররাও। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন কোনো যুদ্ধ চায় না। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি গতকাল সোমবারও ইসরায়েলের নেতাদের প্রতি সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এখন পর্যন্ত ইরানের হামলার কঠিন জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল আছে। ইসরায়েল যদি এখন ইরানের ভূখণ্ডে পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে পরিস্থিতি দ্রুত জটিল হতে পারে বলে মনে করেন ব্রাসেলসভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইরানবিষয়ক প্রকল্পের পরিচালক আলী ভায়েজও। তিনি বলেছেন, এতে আগে থেকে অস্থিতিশীল থাকা একটি অঞ্চল আরও সংকটে পড়বে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক এই অধ্যাপক দাউদ কাত্তাব বলেন, ইসরায়েল ও ইরান যে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করছে, তা আরব বিশ্বের অন্যান্য দেশকে ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছে। ভয়টা হলো, ইতোমধ্যেই বিধ্বস্ত এই অঞ্চলে আরেকটি যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার। আর এমনটা সত্যিই যদি ঘটে, তার প্রভাব বিশ্বব্যাপী পড়বে। সূত্র : বিবিসি
১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৫৭

একমাত্র বাঙালি জাতি যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে : দুদু
এই উপমহাদেশে পাঠান-পাঞ্জাবসহ বহু জাতি থাকা স্বত্বেও একমাত্র বাঙালি জাতি যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সেগুনবাগিচা মেট্রো লাউঞ্জে এক ইফতার মাহফিলে তিনি এ মন্তব্য করেন। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘এই উপমহাদেশে পাঠান-পাঞ্জাবসহ বহু জাতি রয়েছে। সবাই সাহসী। তবে একমাত্র বাঙালি জাতি যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে। বাঙালি একমাত্র জাতি যারা উই রিভোল্ট বলে স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতা নিয়ে এসেছে। যারা মুক্তিযুদ্ধ করে বিশ্বের দরবারে বাঙালি জাতির নাম উঁচু করেছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।’ তিনি বলন, ‘দেশের যে জনগণের জন্য স্বাধীনতা তারাই আজ কোণঠাসা। শুধু তাই নয়, তারা এতটাই নির্যাতনের শিকার যে, এই উপমহাদেশের অন্য কোনো দেশে তা দেখা যায় না। আজ আমাদের শিশুরাও অসহায়। এমনকি রাষ্ট্র দ্বারাও নির্যাতনের শিকার। তাদের ভালো স্কুলে ভর্তি বা অর্থের যোগানটাও রাষ্ট্র কিংবা তাদের পিতা-মাতা দিতে পারে বলে আমার মনে হয় না।’ তিনি আরও বলেন, ‌‘দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। এর কারণে সমাজের সবক্ষেত্রে নীতিবান, বিবেকবান মানুষ উপেক্ষিত। আমার ভাবতে অবাক লাগে মসজিদের ইমাম কীভাবে খুতবা দেবেন সেটাও সার্কুলারের মাধ্যমে বলে দেওয়া হচ্ছে। যখন সমাজে অন্যায়-অবিচার থাকে তখন শিশুরা অবহেলিত হয়। আর আমাদের দেশে আজ গণতন্ত্র নেই বলেই এগুলো হচ্ছে।’
২৬ মার্চ ২০২৪, ২২:১৩

আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না। নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যাথিত করে। আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। টেকসই শান্তি বিরাজমান থাকলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তির নীতি অনুসরণ করি। ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে বিশ্বের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। অত্যন্ত দুঃখভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মরণ করি কালরাতে আত্মোৎসর্গকারী সেই সব শহীদদের, যাদের তাজা রক্তের শপথ বীর বাঙালিদের অস্ত্রধারণ করে স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না। নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যাথিত করে। আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। টেকসই শান্তি বিরাজমান থাকলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তির নীতি অনুসরণ করি। শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছর ধরে শৃঙ্খলিত বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার প্রয়াসে সারা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ প্রথম গ্রেপ্তার হন এবং কারাবরণ করেন। সেই থেকে ‘৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর একুশ দফা, ’৬২-এর আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলন সংগ্রামে অত্যন্ত দূরদর্শীতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ঘোষণা করেছিলেন, ‘আজ হতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় এদেশটির নাম হবে পূর্ব-পাকিস্তানের পরিবর্তে শুধুমাত্র বাংলাদেশ।’ তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মন্ত্রীত্ব ছেড়ে দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করেছিলেন এবং স্বাধীনতা অর্জনের জন্য পুরো জাতিকে প্রস্তুত করেছিলেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ’৭০-এর নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু, পাক-সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে নানা টালবাহানা শুরু করে। বৈঠকের মাধ্যমে সময় ক্ষেপণ করে নিরস্ত্র বাঙালি নিধনের উদ্দেশ্যে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ২ মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন; ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে দীর্ঘ ২৩ বছরের শাসন-শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রদান করেন এবং ১৫ মার্চ থেকে ৩৫ দফা নির্দেশনা পালনের আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নির্দেশ সারা পূর্ব-বাংলায় অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সব প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তার আদিষ্ট পথেই পরিচালিত হতে থাকে। বাংলাদেশে ইয়াহিয়ার শাসন সম্পূর্ণ অচল হয়ে যায়। ইয়াহিয়া-ভুট্টো বারবার সমঝোতার প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করে এদেশের মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে অটল থাকেন। ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সারাদেশে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যেই ইয়াহিয়া গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন। মধ্য রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা সাঁজোয়া ট্যাঙ্ক নিয়ে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ পরিচালনা করে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যা করতে শুরু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা এবং রাজারবাগে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষক, বাঙালি পুলিশ ও সামরিক সদস্যদের হত্যা করতে থাকে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করে। এর অব্যবহিত পূর্বেই জাতির পিতা স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা বার্তা লিখে যান- ‘ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। —চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও।’—যা প্রথমে ইপিআর এর ওয়্যারলেস মাধ্যমে প্রচারিত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে এই বার্তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানিরা বন্দি নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়; এমনকি তাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। ১৩ জুন পাকিস্তানি সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাস যুক্তরাজ্যের ‘দ্য সানডে টাইমস’ পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘জেনোসাইড’ শিরোনামে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানিদের নির্মম বর্বরতার বাস্তবচিত্র নির্ভর একটি বিস্তারিত নিবন্ধ প্রকাশ করলে বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টি ত্বরান্বিত হয়। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়, ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারায় এবং গোটা দেশ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তিনি বলেন, বাঙালি জাতির পিতা, রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের নির্জন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তার প্রাণাধিক প্রিয় স্বাধীন মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। শূন্য হাতে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর সহায়তা নিয়ে ছিন্নমূল মানুষকে পুনর্বাসন করেন, অবকাঠামো পুনঃস্থাপন ও উন্নয়ন করেন এবং উৎপাদন খাত ও অর্থনীতিকে একটি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করান। মাত্র সাড়ে তিন বছরেই জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের স্বীকৃতি প্রদান করে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, ’৭১-এর পরাজিত স্বাধীনতা বিরোধী চক্র বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাতে থাকে। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট আরেক কালরাতে ঘাতকদের নির্মম বুলেটের আঘাতে ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে শাহাদাতবরণ করেন। খুনি মোস্তাক-জিয়া ও তাদের উত্তরসূরিরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে দেশে স্বৈরশাসন কায়েম করে। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি ২৫ মার্চে নারকীয় হত্যাযজ্ঞের কুশীলব, মানবতাবিরোধী অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধী এবং জাতির পিতার খুনিদের মহান সংসদে বসিয়ে ও তাদের গাড়িতে স্বাধীন বাংলাদেশের পবিত্র পতাকা তুলে দিয়ে বাঙালি জাতির গর্বিত ইতিহাসকে কলঙ্কিত করে। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জনগণের বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। ১৯৯৮ সালের ৫ অক্টোবর আমরা জাতিসংঘের গণহত্যা বিরোধী কনভেনশন অনুস্বাক্ষর করি। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে শান্তির সংস্কৃতির ওপর রেজুল্যুশন গ্রহণের প্রস্তাব করি, যা ১৯৯৯ সালে গৃহীত হয়। সে অনুযায়ী জাতিসংঘ ২০০০ সালকে ‘আন্তর্জাতিক শান্তির সংস্কৃতির বর্ষ’ এবং ২০০১-২০১০ সময়কে ‘শান্তির সংস্কৃতি এবং অহিংস দশক’ ঘোষণা করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ২০০৮ সাল থেকে সবকটি নির্বাচনে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে গত ১৫ বছরের বেশি সময় একটানা তাদের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি, ফলে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ হয়েছে। ২০১৩ সালে প্রকাশিত ‘দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম : নিক্সন, কিসিঞ্জার অ্যান্ড এ ফরগটেন জেনোসাইড’ -শীর্ষক গ্রন্থে তৎকালীন ঢাকাস্থ আমেরিকার কনসাল জেনারেল আর্চার কে ব্লাড-এর স্টেট ডিপার্টমেন্টে লেখা নিয়মিত প্রতিবেদনেও বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের পরিচালিত বর্বরতম গণহত্যার ভয়াল চিত্র উঠে এসেছে। তিনি বলেন, আমরা ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছি। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যা এড়াতে ভীত-সন্ত্রস্ত ১১ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি। বিশ্বের যেকোন স্থানে সংঘটিত গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। আমরা ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছি; ভবিষ্যত প্রজন্ম এই পরিকল্পনাকে সময়োপযোগী করে বাস্তবায়ন করতে পারবে। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণহত্যা দিবস উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন। একইসঙ্গে তিনি সব প্রকার বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত ও সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
২৫ মার্চ ২০২৪, ১১:৪৯

এগারো বছর পর জন্ম নেওয়া যমজ সন্তানকে হত্যা করল ইসরায়েল
দীর্ঘ ১১ বছর পর মা হয়েছিলেন ফিলিস্তিনি নারী রানিয়া আবু আনজা। তিন দফা ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সন্তান ধারণের চেষ্টার পর জমজ সন্তানের জন্ম দেন তিনি। তবে ইসরায়েলি বিমান হামলায় মুহূর্তের মধ্যেই তার দুই সন্তান নিহত হয়েছে। সোমবার (৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। গত শনিবার রাত ১০টার দিকে ওই পরিবারের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, শনিবার ওই নারীর শিশু ছেলে, মেয়ে ও স্বামীসহ পরিবারের ১১ সদস্য নিহত হয়েছেন। এখনো বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছে ওই পরিবারের আরও ৯ জন। গাজা-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর কয়েক সপ্তাহ পর জন্ম নেওয়া উইসাম ও নাঈমকে রোববার দাফন করা হয়।  সন্তানের ব্যবহৃত একটি কম্বল বুকে জড়িয়ে রোববার রানিয়া জানান, তিনি তার বাচ্চা এবং স্বামীর জন্য চিৎকার করে ওঠেন। তারা সবাই মৃত। সন্তানদের নিয়ে তাদের বাবা চলে গেছে। মা হওয়ার স্বপ্ন পূরণের জন্য বন্ধ্যত্ব সমস্যা ঘুচানোর জন্য আমি দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা নিয়েছিলাম। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল গাজার আবাসিক ভবনগুলোতেও নিয়মিত বিমান হামলা চালিয়েছে, এমনকি রাফাতেও। যদিও গত অক্টোবর মাসে ইসরায়েল রাফাকে নিরাপদ জোন ঘোষণা করেছিল। এখন রাফাই হচ্ছে ইসরাইলের পরবর্তী স্থল অভিযানের টার্গেট।
০৫ মার্চ ২০২৪, ১৪:৪২

মিউনিখ সম্মেলনে সকল প্রকার যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছি : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে আমি উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করি। বক্তব্যে সকল প্রকার যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করার জোর আহ্বান জানিয়েছি। শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবনে এক তিনি সংবাদ সম্মেলন এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বক্তব্যের শুরুতে আমি গাজা ও বিশ্বের অন্যান্যপ্রান্তে চলমান যুদ্ধবিগ্রহ, অবৈধ দখলদারিত্ব এবং নিরস্ত্র মানুষের বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের অমানবিক হত্যার কবল থেকে মুক্ত করে সকল প্রকার যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করার জোর আহ্বান জানিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘অর্থনীতির নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার বিরূপ প্রভাব যুদ্ধ ক্ষেত্রের চেয়েও বহুদূর পর্যন্ত অনুভূত হওয়ায় এ বিষয়ে আমি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। অস্ত্র প্রতিযোগিতার সমাপ্তি ঘটিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় রসদ ও অর্থায়ন সহজলভ্য এবং কার্যকর করার জন্য সকলকে অনুরোধ করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানবতার অস্তিত্বের সংকটকালে ক্ষুদ্রস্বার্থ যে শুধু অনর্থই বয়ে আনে এগুলোর বাস্তবতা আমি সকলের সামনে তুলে ধরি। আর তাই জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা, ঝুঁকি এবং তা মোকাবিলায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’ এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে যোগ দিতে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ছাড়েন। মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের সভাপতির আমন্ত্রণে সেখানে যান তিনি। জার্মানিতে অবস্থানকালে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে বৈঠক করেন। তাদের মধ্যে ছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলৎজ, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ, কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন। এ ছাড়াও সফরে জার্মানিতে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি নাগরিক সংবর্ধনায়ও অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশে ফিরে আসেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:২৭

যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন ভেটো শতাব্দীর সেরা কূটনীতিক বিপর্যয় : ইরান
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) নিরাপত্তা পরিষদে ওই খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এই প্রসঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন ভেটো শতাব্দীর সেরা কূটনীতিক বিপর্যয়। এক্সে তিনি বলেন, মার্কিন সরকার কর্তৃক গাজায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির জন্য খসড়া প্রস্তাবের ভেটোর পুনরাবৃত্তিকে শতাব্দীর সেরা কূটনৈতিক বিপর্যয় বলা উচিত। তিনি আরও বলেন, বারবার ভেটো প্রয়োগ করায় স্পষ্টতই গাজায় নকল ইসরায়েলি সরকার কর্তৃক পরিচালিত গণহত্যা এবং পশ্চিম তীরে যুদ্ধাপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক দায় হোয়াইট হাউসের। বিশ্বকে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রকে জবাবদিহি করতে হবে। গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) একটি খসড়া প্রস্তাবে গতকাল যুক্তরাষ্ট্র আবারও ভেটো দেয়। গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে এটি তৃতীয় মার্কিন ভেটো। অবরুদ্ধ গাজা থেকে সব ইসরায়েলি বন্দির মুক্তির সঙ্গে সাময়িক যুদ্ধবিরতিকে যুক্ত করে ওয়াশিংটন একটি প্রস্তাব প্রচার করার একদিন পর যুক্তরাষ্ট্র এই ভেটো দিল। উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) নিরাপত্তা পরিষদে ওই খসড়া প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। মার্কিন মিত্ররা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হোয়াইট হাউজের ভেটো দেয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব রেজ্যুলেশনে রাফাহ শহরে আগ্রাসন না করার জন্য এর আগে ইসরায়েলকে সতর্কও করেছিলো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর আগে জাতিসংঘের যুদ্ধের বিষয়ে ভোটের সময় ‘যুদ্ধবিরতি’ শব্দটি এড়িয়ে গেছে। তবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাম্প্রতিক এই ইস্যুতে প্রায় একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের মধ্যে ১৩টিই আলজেরিয়ার প্রস্তাবিত এই খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। ভোটদানে বিরত ছিল আরেক স্থায়ী সদস্য যুক্তরাজ্য। নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য পাঁচটি। এর মধ্যে রাশিয়া, ফ্রান্স ও চীন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। স্থায়ী সদস্য দেশগুলোর এককভাবে কোনও প্রস্তাবে ভেটো প্রয়োগ করে তা বাতিলের ক্ষমতা রয়েছে। যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে নতুন খসড়া প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর অর্থ হলো প্রস্তাবটি গৃহীত হবে না।  
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:১১

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উপায় খোঁজার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের উপায় খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  স্থানীয় সময় শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জার্মানির মিউনিখে সিকিউরিটি কনফারেন্স (এমএসসি) ২০২৪-এর ফাঁকে হোটেল বেয়েরিশার হফে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এক বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি। খবর বাসসের। বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‌প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় বলেন আমরা সব ধরনের যুদ্ধের বিরুদ্ধে। জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার সময় কীভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করা যায়, সে বিষয়েও তিনি বারবার আলোচনা করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে তারা গাজায় নিরপরাধ নারী-পুরুষের ওপর হামলা কীভাবে বন্ধ করা যায়, তা নিয়েও আলোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন যে যুদ্ধ কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধের মাধ্যমে অন্যরা উপকৃত হতে পারে। কিন্তু যুদ্ধ লিপ্ত দেশগুলোর জন্য তা কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না এবং তাদের জনগণকে যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভোগ এবং তিনি নিজেও যে দুর্ভোগের শিকার হয়েছিলেন তার স্মৃতি স্মরণ করেন। তিনি যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বন্দিদশায় তার অমানবিক কষ্ট এবং তার একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মের কথা স্মরণ করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী ও জেলেনস্কির মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি : ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’ স্পষ্টভাবে উঠে আসে। এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।  তিনি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক খুবই চমৎকার। মুক্তিযুদ্ধের সময় রাশিয়া আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং যুদ্ধের পর বাংলাদেশের পুনর্গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশ শুধু যুদ্ধ বন্ধের জন্য এ আলোচনা করেছে। জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মো. নূর এলাহী মিনা ব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ যোগ দিতে তিনদিনের সরকারি সফরে ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মিউনিখে পৌঁছান। সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীর ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে।
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:৫০

নায়ক মান্নার প্রয়াণের ১৬ বছর আজ
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় প্রয়াত নায়ক মান্না। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এই অভিনেতার চলে যাওয়ার ১৬ বছর পূর্ণ হলো। ২০০৮ সালের আজকের এই দিনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই অভিনেতা। মাত্র ৪৪ বছর বয়সেই নিভে যায় তার জীবনপ্রদীপ।     তবে মান্নার মৃত্যুর ১৬ বছর পার হলেও তার জনপ্রিয়তার এতটুকুও ভাটা পড়েনি। এখনও শ্রদ্ধাভরে তাকে স্মরণ করেন ভক্তরা। আজও অভিনেতার সিনেমাগুলো দর্শকদের মনে দাগ কেটে আছে।      ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি প্রবল ঝোঁক ছিল মান্নার। ১৯৮৪ সালে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। মূলত এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই রুপালি জগতে পা রাখেন মান্না। এসময় ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত ছিলেন তিনি।  মান্না অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘তওবা’ হলেও তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার নাম ‘পাগলি’। তবে ১৯৯১ সালে মোস্তফা আনোয়ার পরিচালিত ‘কাসেম মালার প্রেম’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকডের নজরে আসেন মান্না।  এরপরই ধীরে ধীরে চলচ্চিত্রে নিজের শক্ত অবস্থান গড়ে তোলেন মান্না। কাজী হায়াত নির্মিত ‘দাঙ্গা’ ও ‘ত্রাস’ সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয় করে তিনি হয়ে ওঠেন পরিচালক-প্রযোজকদের ভরসার নাম।    মোস্তফা আনোয়ার নির্মিত ‘অন্ধ প্রেম’, মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘প্রেম দিওয়ানা’, ‘ডিস্কো ড্যান্সার’, কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দেশদ্রোহী’ সিনেমাগুলো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তুমুল জনপ্রিয় করে তোলে মান্নাকে।  ১৯৯৯ সালে মান্না ‘কে আমার বাবা’, ‘আম্মাজান’, ‘লাল বাদশা’র মতো সুপার-ডুপারহিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সাড়ে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন জনপ্রিয় এ সুপারস্টার।   অভিনেতা হিসেবে সফলতা পাওয়ার পর নিজে প্রযোজক হয়ে কৃতাঞ্জলি কথাচিত্র থেকে একাধিক সুপারহিট সিনেমা প্রযোজনা করেছিলেন মান্না। সিনেমাগুলো হচ্ছে— ‘লুটতরাজ’,  ‘লাল বাদশা’, ‘আমি জেল থেকে বলছি’, ‘স্বামী স্ত্রীর যুদ্ধ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী’, ‘মনের সাথে যুদ্ধ’, ‘মান্না ভাই’ ও ‘পিতা মাতার আমানত’।  সিনেমায় অবদানের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, তিনবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার, পাঁচবার বাচসাস পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননা পেয়েছেন মান্না।  তবে মৃত্যুর এতো বছর পরও নায়ক মান্নার শেষ সিনেমা ‘জীবন যন্ত্রণা’ আলোর মুখ দেখেনি। শোনা যাচ্ছে, সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছর বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) সিনেমাটি মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান প্রযোজক।   যৌথভাবে মান্না অভিনীত ‘জীবন যন্ত্রণা’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু এবং জাহিদ হোসেন। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন— মৌসুমী, পপি, শাহনূর, মুক্তি, দীঘি, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, আনোয়ারা, শহিদুল আলম সাচ্চু, মিশা সওদাগর প্রমুখ।   ১৯৬৪ সালের ১৪ এপ্রিল টাংগাইল জেলার কালিহাতীতে জন্মগ্রহণ করেন মান্না।  ব্যক্তিগত জীবনে শেলী কাদেরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এই দম্পতির সিয়াম ইলতিমাস মান্না নামে এক পুত্রসন্তান রয়েছে।
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৫৬

বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
৬০তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের জলবায়ু অর্থায়ন বিষয়ক প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি বলেন, পরাশক্তিদের মধ্যে অস্ত্রের ঝনঝনানি কাম্য নয়। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জার্মানিতে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্স ২০২৪-এ "ফ্রম পকেট টু প্ল্যানেট : স্কেলিং আপ ক্লাইমেট ফাইন্যান্স" শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তিনি তার প্রস্তাবিত পরামর্শ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অর্থহীন অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে এবং এর পরিবর্তে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের জন্য সম্পদের সংস্থান করা দরকার। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, মানবতার অস্তিত্ব যখন হুমকির মুখে পড়বে, তখন সংকীর্ণ স্বার্থ রক্ষার পথ অনুসরণ করলে তা কোনো সুফল বয়ে আনবে না। আলোচনায় তিনি ছয়টি পরামর্শ তুলে ধরেন। তার প্রথম পরামর্শ উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সঠিক পথে রাখতে জলবায়ু অর্থায়নের বরাদ্দ ছাড় করার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। উন্নত দেশগুলিকে পরিকল্পনার ভিত্তিতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত দুই বছরে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে হবে। এই বছরের শেষ নাগাদ আমাদের সকলকে অবশ্যই বৈজ্ঞানিক প্রমাণের ভিত্তিতে বিশেষ করে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওপরে ২০২৫-পরবর্তী একটি নতুন জলবায়ু অর্থায়ন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে একমত হতে হবে। দ্বিতীয় প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বকে যুদ্ধ ও সংঘাত, অবৈধ দখলদারিত্ব এবং নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নির্মম হত্যাকাণ্ড থেকে পরিত্রাণ পেতে হবে যা গাজা ও অন্যত্র বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করছেন। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব সংঘাতের অনুভূতির বোধ থেকেও অনেক দূরে অনুভূত হয়।  তৃতীয় পরামর্শে তিনি বলেন, জলাযায়ু প্রভাব প্রশমন ও অভিযোজনের জন্য অর্থায়নের তীব্র ভারসাম্যহীনতা দূর করার জন্য অভিযোজন অর্থায়নের বর্তমান পর্যায় অন্তত দ্বিগুণ করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে, অভিযোজনে সহায়তার জন্য বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ইউরো প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁকে ধন্যবাদ জানান। চতুর্থ পরামর্শে তিনি বলেন, বিদ্যমান আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিল থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলির অর্থ প্রাপ্তি সুগম করার জন্য দীর্ঘকালের অমীমাংসিত সমস্যাটি তাদের সক্ষমতায় বিনিয়োগ করার সুযোগসহ সমাধান করতে হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে, গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড থেকে অর্থায়ন পাওয়ার জন্য আমাদের শুধুমাত্র দুটি যোগ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং আরও দুটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পঞ্চম পরামর্শে শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক অর্থায়নের ব্যবস্থাপনায় সংস্কারের ক্ষেত্রে বিশেষ করে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ঋণের বোঝা দূর করতে তাদের জন্য অনুদান ও সুবিধাজনক ঋণ লাভের সুযোগ বাড়ানোর মাধ্যমে অর্থপূর্ণ ফলাফল দেখাতে হবে। সর্বশেষ ও ষষ্ঠ পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু কর্মসূচি জন্য বেসরকারি পুঁজি প্রবাহের জন্য সরকারগুলোকে সঠিক পরিকল্পনা, নীতি ও ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রকল্পগুলির জন্য বেসরকারি পুঁজি আকৃষ্ট করার জন্য উদ্ভাবনী, মিশ্র অর্থায়নের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। এটি সুস্পষ্ট যে, বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ ছাড়া জলবায়ু অর্থায়নের বিপুল পরিমাণ ঘাটতির কার্যকর সমাধান করা যাবে না। শেখ হাসিনা বলেন, সকলেই জলবায়ু প্রভাব প্রশমন ও অভিযোজনে বিনিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক জলবায়ু অর্থায়নের বর্তমান মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করে। তিনি বলেন, দুঃখের বিষয় প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়ন এখনও গুরুতরভাবে অপর্যাপ্ত। 'জলবায়ু অর্থায়ন' এবং এর অ্যাকাউন্টিং পদ্ধতির বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত সংজ্ঞার অনুপস্থিতির কারণে এটি আরও জটিল। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৪৮ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ে প্রায় ৮০০ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, সবগুলোই নিজস্ব সম্পদ থেকে। তবে আমাদের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রতি বছর যে ৭-৮ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন তার তুলনায় এটি এখনও অপর্যাপ্ত। তিনি আরও বলেন, অভিযোজনের জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত বার্ষিক ২১৫-৩৮৭ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। এটা সুস্পষ্ট যে, অর্থায়নের বিপুল ব্যবধান বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। এখন বাংলাদেশ জলবায়ু অভিযোজন এবং সহিষ্ণুতার জন্য বার্ষিক বাজেটের প্রায় ৪.৬ শতাংশ এবং জিডিপির ০.৭৪ শতাংশ ব্যয় করে, যার ৭৫ শতাংশ আসে অভ্যন্তরীণ সম্পদ থেকে। বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড ২০০৯ সালে নিজস্ব সম্পদ থেকে গঠিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তহবিল এ পর্যন্ত প্রায় ৪৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে ৮০০টির বেশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। সূত্র : বাসস
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৫৯

ইরানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ নয়: হোয়াইট হাউস
জর্ডানে ইরানের মদত পুষ্ট সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী মার্কিন ঘাঁটিতে আক্রমণ করেছে বলে পেন্টাগনের অভিযোগ। কিন্তু ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয়, জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, ইরানকে কীভাবে জবাব দেওয়া হবে তা ঠিক করবেন প্রেসিডেন্ট নিজে। কবে কীভাবে একাজ করা হবে তা সম্পূর্ণ প্রেসিডেন্টের হাতে। তবে এই মুহূর্তে নতুন করে কোনো যুদ্ধে জড়াতে চায় না আমেরিকা। ফলে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামবে না যুক্তরাষ্ট্র। বরং যে পরিমাণ ক্ষতি ইরানের মদত পুষ্ট গোষ্ঠী করেছে, সেভাবেই তাদের জবাব দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। বস্তুত, রোববারের এই আক্রমণের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছিলেন, ইরানকে এর জবাব দেওয়া হবে। পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ইরান যুদ্ধে যেতে চাইছে, এমনটা তাদের মনে হচ্ছে না। আমেরিকা সরাসরি যুদ্ধে না গেলেও যোগ্য জবাব তেহরানকে দেওয়া হবে। এবং তা অতি দ্রুতই দেওয়া হবে। এদিন সিং একটি নির্দিষ্ট সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর নামও বলেছেন। তার বক্তব্য, যারা জর্ডানে মার্কিন ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়েছে, তাদের নাম কাতাইব হেজবোল্লাহ। তারা যে আক্রমণ চালিয়েছে, তাতে ইরানের মদত স্পষ্ট। আমেরিকার হাতে নির্দিষ্ট প্রমাণ আছে। যদিও ইরান এই হামলায় তাদের যোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। জর্ডানও জানিয়েছে, ঘটনাটি তাদের এলাকায় হয়নি। সীমান্তের অন্য ধারে সিরিয়ার ভিতর ঘটেছে। আমেরিকা অবশ্য নির্দিষ্ট করে জানিয়েছে, সীমান্তে জর্ডানের দিকে তাদের যে ঘাঁটি আছে সেখানেই ড্রোন হামলা চালানো হয়েছিল। সোমবার মৃত সৈনিকদের পরিচয়ও প্রকাশ করেছে পেন্টাগন। আমেরিকার রিসার্ভ ফোর্সের সেনাদের মৃত্যু হয়েছে রোববারের ড্রোন আক্রমণে। তাদের বেস জর্জিয়ায়। এর মধ্যে ২৪ বছরের এক নারী আছে। তার বাবা দেহ চিহ্নিত করেছেন। ওই নারী স্বেচ্ছায় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। এদিকে আহতের সংখ্যা ৪০ ছাড়িয়েছে বলে এদিন জানিয়েছে পেন্টাগন।
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪৫
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়