• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo
সুলতান মেলায় ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই
নড়াইলে সুলতান মেলায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে।  মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) শহরের কুড়ির ডোব মাঠে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ প্রতিযোগিতা।  বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সুলতান মেলায় ঐতিহ্যবাহী এ ষাঁড়ের লড়াই অনুষ্ঠিত হয়।  জেলা প্রশাসন ও এস এম সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এ প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ২৬টি ষাঁড় অংশ নেয়। লড়াইয়ে অংশ নেওয়া প্রতিটি ষাঁড়ই ছিল সুঠাম দেহের ও বাহারি রঙের। লড়াই দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসেন নানা বয়সী মানুষ। এ সময় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মাঠটি।  যশোরের অভয়নগর থেকে আসা সূর্য কুমার বলেন, অনেক কষ্ট করে প্রতিবছর সুলতান মেলায় ষাঁড়ের লড়াই দেখতে আসি। ষাঁড়ের লড়াই দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে এসেছি। সমীরণ বিশ্বাস বলেন, ষাঁড়ের লড়াই আগে অনেক জায়গায় হতো, এখন হয় না। এই সুলতান মেলায় প্রতিবছর হয়। তাই অনেক মানুষ এসেছে। ষাঁড়ের লড়াই দেখছি, খুব ভালো লাগছে।  এ দিকে নতুন প্রজন্মের মাঝে হারিয়ে যাওয়া বাঙালির ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া উৎসবের নবজাগরণের উদ্দেশ্যে সুলতান মেলায় এসব খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।  সুলতান মেলার ‘কিউট গ্রামীণ’ ক্রীড়া উৎসব উদযাপন পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ মন্নু বলেন, এই আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির হারিয়ে যাওয়া যে ক্রীড়া উৎসব রয়েছে সেগুলোর নবজাগরণ সৃষ্টি করা। নতুন প্রজন্মকে আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করা। তারা মাদক থেকে সরে এসে খেলাধুলা, লেখাপড়ার ভেতরে আসুক এবং নিজেরা আলোকিত মানুষ হিসেবে তৈরি হোক সেই প্রত্যাশা নিয়েই আমাদের এই প্রচেষ্টা। উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল নড়াইলের সুলতান মঞ্চে ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলা মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ও সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী। মেলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী কুড়ির ডোব মাঠে ‘কিউট গ্রামীণ’ ক্রীড়া উৎসব শিরোনামে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন খেলার আয়োজন করা হয়। নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে আগামী ২৯ এপ্রিল এ মেলা শেষ হবে।
২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৭

হিলিতে প্রাণিসম্পদ মেলা অনুষ্ঠিত
‘প্রাণিসম্পদে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে দিনাজপুরের হিলিতে দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীর মেলা উদ্বোধন করা হয়েছে।  বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে  উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটিরিনারী হাসপাতালের আয়োজনে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিত রায়।  উদ্বোধনের পরপরই হাকিমপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে জমে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। ৪০টি স্টলে প্রদর্শন করা ১২ প্রজাতির প্রাণী। মেলা দেখতে ভিড় করেন ছোট বড় সকলেই। মেলা দেখে অনেকেই হতে চান উদ্যোক্তা। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অংশগ্রহণ করেন এই মেলাতে। এমন আয়োজনে খুশি অংশগ্রহণকারীসহ দর্শনার্থীরা।  এ সময় উপস্থিত ছিলেন হাকিমপুর উপজেলার চেয়ারম্যান হারুন-উর রশিদ হারুন, ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুর রেজা শাহিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারুল নাহার, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী মাহবুবুর রহমান, উপজেলা কৃষি অফিসার আরজেনা বেগমসহ অনেকেই। এ সময় বক্তারা বলেন, দেশে প্রাণিজ ও আমিষের চাহিদা পূরণ ও বেকারত্ব দূর করার জন্য এমন আয়োজন করাই প্রাণিসম্পদ বিভাগ আরও এগিয়ে যেতে হবে। তাহলে দেশে মাংসের চাহিদা পূরণ হবে।  উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে হিলিতে ছোট-বড় ৮০০ শতাধিক খামারে গরু ও ছাগল ৯০ হাজার, হাঁস-মুরগি ৬ লাখ এবং অন্যান্য প্রাণী ২০ হাজারের বেশি পালন করছে খামারিয়া। অনুষ্ঠান শেষে সেরা খামিরেদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
১৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:১৭

নড়াইলে ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলা শুরু
বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৯তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে নড়াইলে ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে শহরের সুলতান মঞ্চ চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ও সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জেলা পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান, সুলতান ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মিকু, নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হাসানুজ্জামান প্রমুখ।  মেলা উপলক্ষে সুলতানের সংগ্রহশালায় সুলতানের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান ও সেখান থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি শুরু করে সুলতান মঞ্চ চত্বরে শেষ হয়।  উদ্বোধনী দিনে দর্শক উপস্থিতি কম থাকলেও সুলতান মঞ্চ প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ মেলায় মনোহারি পণ্য সম্ভারে সাজানো স্টলে স্টলে কেনাকাটা, ঘোরাফেরাসহ নানান আনন্দ উপভোগ করতে আগামী দিনে নানান বয়সের মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে বলে জানান আয়োজক কমিটি। আগামী ২৯ এপ্রিল এ উৎসব মেলা শেষ হবে।   
১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৭

চাঁদপুরে শুরু হয়েছে লেংটা পাগলের মেলা
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের বদরপুরের বেলতলীতে ৫ দিনব্যাপী হজরত শাহ্ সোলেমান লেংটা পাগলের মেলা। লেংটা পাগলের মেলায় এসে সোলেমান শাহ ল্যাংটার অনুকরণ করছে তার ভক্তরা। এবার পালিত হচ্ছে শাহ্ সোলেমান লেংটার ১০৫তম ওরশ শরীফ। মেলায় প্রতিদিন লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। অসংখ্য ভক্ত  ল্যাংটা বাবার মাজার জিয়ারত করছেন এবং জিকির আসকার করে ঢোল বাদ্য, বাজনা বাজিয়ে মাজার ত্যাগ করছেন।  কারণ তাদের মতে, ল্যাংটা ফকির ছিলেন একজন ভালো মানুষ। মেলাকে ঘিরে গতকাল শনিবার থেকেই অসংখ্য পাগল ও ভক্তবৃন্দদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে মতলবের বেলতলী। রোববার (৩১ মার্চ) থেকে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এ মেলা।  শাহ্ সোলেমান লেংটার ওফাত দিবস উপলক্ষে গত ১০৫ বছর যাবত উদযাপিত হয়ে আসছে এ মেলা। স্থানীয়দের মতে বেলতলীর বদরপুর গ্রামে সোলেমান শাহ্ নামে এক ফকিরের মাজার আছে। এই মাজারই ল্যাংটা ফকিরের মাজার হিসেবে পরিচিত। কথিত আছে, সোলেমান শাহ্ জীবদ্দশায় একটুকরো কাপড় দিয়ে লজ্জাস্থান ঢেকে রাখতো বলে তাকে লেংটা পাগল ডাকতো সবাই। প্রতি বছরে অসংখ্য ভক্তরাই লেংটার মেলার আয়োজন করে থাকেন। নামে লেংটা হলেও আদতে এখানে আসা পাগলেরা কেউই লেংটা নন। তবে তারা ভাবের পাগল। শাহ্ সোলেমান শাহ্ জন্মস্থান কুমিল্লা জেলার বর্তমান মেঘনা থানার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আলা বঙ্গ ভূঁইয়া।  তার জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছেন মতলবের বদরপুরের বেলতলীর তার বোনের বাড়িতে। সেখানে থেকে নারায়ণগঞ্জের বক্তাবলী গ্রামে তিনি বিয়ে করেন। অনেকেই দাবি করেন তার বংশধর এখনও আছে। সোলেমান শাহ্ কাউকে মুরিদ করেননি। তবে মতলব তথা দেশের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি ও অগণিত ভক্ত।  কয়েকজন ভক্ত জানান, তার বোনের বাড়িতেই হজরত শাহ্ সোলেমান লেংটা পাগলের মাজার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এরপর থেকেই শুরু হয়ে যায় লেংটা পাগলের মেলা।  দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছোট-বড় লঞ্চ, ট্রলার, বাস, মিনি বাস, ট্রাক, মেক্সী, প্রাইভেটকার, সিএনজি, অটোবাইক যোগে ওরশে আসে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ মানুষ। তারা নিয়ে আসেন গরু, মহিষ, ছাগল, মোরগ, ডিম, ডাল, চাউল, নগদ অর্থসহ বিভিন্ন মানতি জিনিসপত্র। এই মেলাকে ঘিরে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পকেটমার, ছিনতাই, মলমপার্টি, হিজরা, প্রতারকদের তৎপরতা বেড়ে যায়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভক্তরা লেংটা বাবার দরবারে পুণ্য, রোগমুক্তিসহ বিভিন্ন কামনা—বাসনা নিয়ে আসেন। এ ছাড়াও ঢোল—কারার মাধ্যমে বাবার উদ্দেশ্যে ধর্মীয় গান ও মজমা বসায় পুণ্যের আশায়। ল্যাংটার মেলায় একদিকে আনন্দের হিল্লোল অন্যদিকে বসে গাঁজার রমরমা আসর। মাজারে প্রতিদিন উঠছে কয়েক লাখ টাকা। সব মিলে এখানে বাণিজ্য হচ্ছে কয়েক কোটি টাকা। মাজার কমিটি প্রতিবছর ভালো অংকের টাকাও উপার্জন করে থাকে। আর এ মাজারে দেওয়া মানতি টাকা কতিপয় কয়েকজনের পকেটে। এ টাকার কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। এ টাকায় অনেকেই আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। সারা বছর এ মাজারটি অর্থ পাওয়ার সেক্টরে পরিণত হয়েছে। দোকান বসে প্রায় ৩/৪ সহস্রাধিক। বিগত বছরগুলোর মতো এবারও এই মেলা যেন মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে এমন দৃশ্য শনিবার  সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে। মেলার চারদিকে ঘুরে কয়েক লক্ষাধিক লোকের সমাগম ও মাদকের স্বর্গরাজ্য চিত্র দেখা যায়। অনেকে নারী—পুরুষ, স্কুল কলেজের ছেলেরা পর্যন্ত মাদক ও অশ্লীলতার মাঝে নিজেকে ডুবিয়ে রাখে। ছোটখাটো অসংখ্য আসর বসে যার বেশির ভাগ স্থানেই নারী পুরুষ অশ্লীল নৃত্যে মগ্ন থাকতে দেখা গেছে। মাজারের পশ্চিম পাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে গাঁজা সেবনের মহোৎসব। এ যেন গাঁজার স্বর্গরাজ্য নিরাপদ স্থান। যেন দেখার কেউ নেই। লেংটার মেলায় প্রতিদিন লক্ষাধিক লোকের ভিড় ও দূর—দূরান্তে থেকে আসা অসংখ্য লোকের তত্ত্বাবধানকরতে সমস্যা হয় কি না প্রসঙ্গে মাজারে দীর্ঘ ৪৩ বছর যাবত খাদেম হিসেবে দায়িত্ব পালন করা খাদেম লাল মিয়া সরকার বলেন, প্রথম দিকে কিছুটা সমস্যা হলেও দীর্ঘদিনের অভ্যাসের কারণে এখন আর কোনো সমস্যা মনে করি না। তাছাড়া স্থানীয় লোকজন এ কাজে অনেক সহযোগীতা করে থাকেন। প্রতি বছর মেলা ৭ দিন হলেও এবার পবিত্র মাহে রমাজন মাসের কারণে একটু ছোট করা হয়েছে। লাখ লাখ লোকের মিলন মেলায় আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী আছে বিধায় প্রতিবছর শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।  মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো, শহীদ জানান, ওরশের পবিত্রতা রক্ষা ও নির্ভিঘ্নে ওরশ পালন করার স্বার্থে কোনো প্রকার মাদক বিক্রি করতে দেয়া হবে না। এর সঙ্গে কারও জড়িত পাওয়া গেলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে আমরা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি। বাংলা ১৩২৫ সালের ১৭ চৈত্র সোলেমান শাহ বেলতর্লী বদরপুর তার বোনের বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৮ চৈত্র তাকে বদপুরের এই বেলতলীতে (যেখানে মাজার) সেখানে তাকে দাফন করা হয়।
৩১ মার্চ ২০২৪, ১৬:৫১

জমে উঠেছে ৫১৫ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার মেলা
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ঐতিহ্যবাহী গোপিনাথপুর মেলায় ঘোড়ার হাট জমে উঠেছে। বাহাদুর, মহারাজা, রানি, সুইটি, সোনার চাঁদ, সোনার তরী আরও কত যে বাহারি নাম! ঘোড়াগুলোর চলনে বিদ্যুৎ গতি, চোখের পলকে যেন মাইল পার। এমন নানামুখী গুণের কারণে দেশি-বিদেশি ঘোড়াগুলোর কদরও যথেষ্ট। পছন্দের ঘোড়া পেতে ক্রেতাদের মধ্যেও রীতিমতো কাড়াকাড়ি। প্রতি বছর দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে জয়পুরহাটে শুরু হয় মাসব্যাপী মেলা। মূল মেলা ১৩ দিন হলেও পশুর মেলা হয় পাঁচ দিন। ঘোড়া ছাড়াও মহিষ, গরু, ভেড়া ও ছাগল বেচাকেনা হয় এ মেলায়। আয়োজকরা বলছেন, দেশের একমাত্র ঘোড়া বেচাকেনার হাট এটি। এ কারণে সারাদেশ থেকে আনা কয়েক হাজার ঘোড়া জড়ো করা হয় এখানে। একে ঘোড়ার মিলনমেলা বললেও অত্যুক্তি হবে না। ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর ঐতিহ্যবাহী গোপীনাথপুর মেলার ঘোড়ার হাট। দরদাম ঠিকঠাকের পর একটি খেলার মাঠে ঘোড়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ক্রেতাকে দেখানো হয় ঘোড়ার দৌড়। দোল পূর্ণিমা মেলা কমিটি জানায়, ৫১৫ বছরের পুরনো এ মেলা শুরু থেকেই ঘোড়ার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। স্বাধীনতার পরও মেলায় নেপাল, ভুটান, ভারত, পাকিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে উন্নত জাতের ঘোড়া আসতো। বর্তমানে সেসব এখন স্মৃতির পাতায় হলেও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঘোড় সওয়ারি ও ঘোড়া মালিকরা এ মেলায় আসেন। স্থানীয়রা জানান, এ মেলায় ময়মনসিংহ, জামালপুর, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, পাবনা, রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘোড়ার আমদানি হয়। এখানে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ৯ লাখ টাকার পর্যন্ত ঘোড়া রয়েছে। ক্রেতারা দেখেশুনে পছন্দ মত কিনছেন ঘোড়া। এদিকে মেলায় ঘোড়া ছাড়াও গরু-মহিষ, গৃহস্থালি সামগ্রী, মণ্ডা-মিঠাইসহ নানা দোকানের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা। নওগাঁ থেকে মেলায় এসেছেন আব্দুল মজিদ। তিনি বলেন, বাড়িতে ঘোড়া পালন করি। আর প্রতিবছর এ মেলায় আসি ঘোড়া বিক্রি করার জন্য। আমার সবচেয়ে বড় ঘোড়ার নাম বাহাদুর। এটি তাজি জাতের একটি ঘোড়া। দাম চাচ্ছি ৯ লাখ টাকা। কিন্তু ক্রেতারা দাম বলছে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মহারাজা নামে একটি ঘোড়া নিয়ে এসেছেন আব্দুল বারী নামে একজন। তিনি বলেন, বড় ঘোড়া নিয়ে আসছি তিনটা ও ছোট ঘোড়া দুইটা। আমাদের সবচেয়ে বড় ঘোড়া মহারাজা। এর দাম ৭ লাখ টাকা। বিভিন্ন জন বিভিন্ন দাম বলছে, ৩ লাখ-৪ লাখ। এখন শেষ পর্যন্ত দেখি দামে হলে বিক্রি করবো। গোপীনাথপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির প্রধান কর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, প্রশাসনের পাশাপাশি মেলা কমিটিও সার্বিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। এত বড় পুরনো এবং ঐতিহ্যবাহী বৃহৎ মেলা উত্তরবঙ্গের কোথাও নেই। আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, মেলায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩০ মার্চ ২০২৪, ১৪:৩২

১৫ এপ্রিল নড়াইলে শুরু হবে ‘সুলতান মেলা’
নড়াইলে ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলা আগামী ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হবে।  বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে মেলা শুরু উপলক্ষে নড়াইল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও সুলতান ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।  নড়াইল জেলা প্রশাসক ও সুলতান ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাশ্বতী শীল, সুলতান ফাউন্ডেশনের সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মিকু, নড়াইল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার,  অ্যাডভোকেট আলমগীর সিদ্দিকী, সুলতান ফাউন্ডেশনের সদস্য ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।  
২৭ মার্চ ২০২৪, ২৩:৪৫

লালন স্মরণোৎসব আজ, থাকছে না মেলা
রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় এবার লালন স্মরণোৎসব শুধুমাত্র একদিনের আলোচনা সভা ও লালন ফকিরের রীতি পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। প্রতিবছর উৎসব তিন দিনব্যাপী চললেও এবার হবে এই এক দিন। বাউল মেলা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান বাদ দেওয়া হয়েছে।  রোববার (২৪ মার্চ) বিকেল ৩টায় ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়াবাড়ীর অডিটোরিয়ামে লালন ফকিরের জীবন ও কর্ম নিয়ে এ আলোচনা সভা হবে। প্রায় দু’শ বছর আগে বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁই তার জীবদ্দশায় প্রতি বছর চৈত্রের দৌলপূর্নিমা তীথিতে বাউলদের নিয়ে সাধু সঙ্গ করতেন। খাটি করে গড়ে তুলতে নানা আনুষ্ঠানিকতায় শিষ্যদের জ্ঞান দিয়ে মহাগুরু লালন। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তার দেহত্যাগের পরও এ উৎসব চলে আসছে।  জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি এহেতেশাম রেজা বলেন, এবার দৌলপূর্নিমা তীথি রমজান মাসে পড়ায় রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় লালন স্মরণোৎসব শুধুমাত্র আলোচনা সভাতেই শেষ করা হচ্ছে। সেখানে প্রধান অতিথি থাকবেন কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। এছাড়াও বিশিষ্ট লালন গবেষকরা আলোচনায় অংশ নেবেন।  অন্যদিকে লালন অনুসারী ভক্তরা তাদের সাইঁজীর রীতি অনুযায়ী অডিটোরিয়ামের নিচে সাধু সঙ্গ করবেন। ইতিমধ্যেই নিজেদেরকে খাটি করতে কিছু লালন অনুসারী, ভক্তরা আখড়াবাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বলছেন, লালন ফকির মানুষের পক্ষে, শান্তির পক্ষে। তাই তারাও শান্তির পক্ষে। স্বল্প পরিসরে তারা লালনের বাণী প্রচার করছেন। আগামী উৎসবে এসে সাইজির ভবের হাটে মানবতার মুক্তির উৎসব করবেন বলে প্রত্যাশা তাদের।  
২৪ মার্চ ২০২৪, ১১:৫১

নওগাঁয় তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন
নওগাঁয় তিন দিনব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে।  রোববার (৩ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে ফিতা কেটে ও ফেস্টুন উড়িয়ে এর উদ্বোধন করেন সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন। পরে একটি আনন্দ র‌্যালী বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শওকত মেহেদী সেতু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ইলিয়াস তুহিন রেজা, সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুনরুল ইসলামসহ প্রমুখ। আধুনিক প্রযুক্তির সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মেলায় প্রায় ৫০টি স্টল রয়েছে।
০৩ মার্চ ২০২৪, ১৫:৫৪

দেশ-বিদেশের বাউল সাধকদের পদচারণায় মুখর মেঘনার তীর
নরসিংদীতে মেঘনার তীরে বসেছে ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা। ভারতসহ দেশ-বিদেশের শতাধিক বাউল সাধকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মেলা। আত্মশুদ্ধি আর আত্মমুক্তির লক্ষ্যে বাউলদের কীর্তন, গীতা পাঠসহ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সরব হয়ে উঠেছে মেঘনা পাড়ের বাউল আখড়াধাম। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মানব ধর্ম ও সাম্যের জয়ধ্বনী করছেন বাউল সাধকরা। দেশ-বিদেশের ভক্তদের উপস্থিতিতে বাউল ঠাকুরের আখড়া পরিণত হয়েছে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল ধর্মাবলম্বীদের মিলনমেলায়।  নরসিংদী শহরের কাউরিয়া পাড়ায় মেঘনা নদীর তীরে বাউল আখড়াধামে গত শুক্রবার সকালে প্রথম বাতি ও যজ্ঞানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ৭০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মেলার আনুষ্ঠানিকতা। এরই মধ্যে দেশ বিদেশের শতাধিক বাউল সমবেত হয়েছেন আখড়ায়। ৭ দিনব্যাপী এই মেলা চলবে আগামী বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সরেজমিনে নরসিংদী বাউল মেলা ঘুরে দেখা যায়, মেলা উপলক্ষে মেঘনার পাড়ে শিশুদের হরেক রকমের খেলনা, খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাঝিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। বাউল ঠাকুরের আখড়াবাড়ি সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছরই মাঘী পূর্ণিমার দিনে শ্রী চৈতন্য দেবের জন্ম তিথী উপলক্ষে এই মহাযজ্ঞের আয়োজন করা হয়। প্রায় ৭০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মেলাকে ঘিরে নরসিংদীর কাউরিয়া পাড়া এলাকার মেঘনা নদীর তীরে সমাগম ঘটে লক্ষাধিক নারী-পুরুষের। নদীতে চলে পূণ্যস্নান। পাশেই রয়েছে বাউল ঠাকুরের আখড়া। যেখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাউল শিল্পীরা এসে বসিয়েছে বাউল গানের আসর। মেলাকে ঘিরে মেঘনা নদীর পার ঘেঁষে জমে উঠেছে খেলনা, কুটির শিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠ-বাঁশ ও মাটির তৈরি কুটির শিল্প সামগ্রীর বেচাকেনা। এছাড়াও শিশুদের আকৃষ্ট করতে মেলায় বসেছে পুতুল নাচ, নাগর-দোলাসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক রাইডস। এদিকে বাউল ভক্তরা সারি বেঁধে মহাযজ্ঞানুষ্ঠানে ঘি-প্রদীপ, মোমবাতি ও আগরবাতি জ্বালিয়ে পুজো দিচ্ছেন আর প্রার্থনা করছেন পরিবার ও দেশের সকল মানুষের কল্যাণসহ সব ধরনের অশুভ শক্তি, অসাম্প্রদায়িকতা ও বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে নিস্কৃতি পেতে। কথিত আছে, ৭০০ বছর আগে নরসিংদীতে এক বাউল ঠাকুর ছিলেন। তিনি নিজেকে শুধু বাউল বলেই পরিচয় দিতেন। এজন্য বাউল ঠাকুরের প্রকৃত নাম জানেন না এখানকার কেউই। সেই বাউল ঠাকুরের স্মরণে তার আখড়া ধামে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই বাউল মেলা। তবে কে প্রথম এখানে বাউল মেলার আয়োজন করেন তার প্রকৃত তথ্য কারোই জানা নেই । সর্বশেষ ব্রিটিশ শাসনামল থেকে এখন পর্যন্ত মেলার আয়োজন করছেন রাম চন্দ্র বাউল, জিতেন্দ্র চন্দ্র বাউল, ডা. মনিন্দ্র চন্দ্র বাউল ও তার পরবর্তী প্রজন্ম। গত দুই বছরের মধ্যে নরসিংদীর বাউল আখড়াবাড়ির সেবায়েত তত্ত্বাবধায়ক প্রাণেশ কুমার ঝন্টু বাউল ও মৃদুল বাউল, মিন্টু বাউল এ তিন ভাই মৃত্যুবরণ করায় তাদের স্থলে বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাধন চন্দ্র বাউল।  বাউল ভক্ত ও দর্শনার্থী জানায়, এ আখড়ায় বাউল ঠাকুরের অন্তর্ধান হয়েছিল। বাউল আখড়ায় জগন্নাথ দেবতার মন্দির রয়েছে। মন্দিরে মহাবিষ্ণুর পূর্ণাঙ্গ প্রতিমা, জগন্নাথ দেবতার প্রতিমা, মা গঙ্গার (৩৩ কোটি দেবতার) গট, নাগ দেবতার বিগ্রহ ও শিবলিঙ্গ রয়েছে, যা বাউল ঠাকুর নিজে প্রতিস্থাপন করে গেছেন বলে কথিত রয়েছে। পাশে রয়েছে বাউল ঠাকুর ও মাতাজির সমাধি মন্দির। সবার মধ্যিখানে রয়েছে উপাসনার জন্য বিশাল আটচালা বৈঠক ঘর। শুক্রবার দেবতা ব্রহ্মার পূজা মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়। মহাযজ্ঞে জগতের কল্যাণের জন্য ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবের পূজা করা হয়। ঠাকুরের কাছে দেশ ও মানুষের কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও মেলা উপলক্ষে আখড়াধামে হাজির হয়েছেন পাশের দেশ ভারতসহ দেশ-বিদেশের শতাধিক বাউল সাধক। এসব সাধকের কাছে সাধনাই মূল ধর্ম। আত্মশুদ্ধি আর আত্মমুক্তির জন্য এই মেলায় আসেন তারা। বাউল মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চিরায়ত গ্রামবাংলার মুখরোচক খাবার ও বাহারি পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে আমিত্তি, জিলেপি, সন্দেশ, বারো মিঠাই, দই, মুড়ালি, গুড়ের তৈরি মুড়ি ও চিড়ার মোয়া, তিলের মোয়া, তিলের সন্দেশ, খাস্তা, কদমা, নারকেলের নাড়ু, তিলের নাড়ু, খাজা, গজা, নিমকি, মনাক্কা, গাজরের হালুয়া, পিঠাসহ রকমারি খাবার। এছাড়া শিশুদের খেলনা, ঘরের তৈজসপত্র, আসবাবপত্র, বিভিন্ন ধরনের তৈরি পোশাক, মাটি ও বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যের স্টল নিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। বাউল আখড়াবাড়ির বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সাধন চন্দ্র বাউল বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও ঐতিহ্যবাহী এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। গত শুক্রবার সকালে যজ্ঞানুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। কোনও ধরনের প্রচার ছাড়াই প্রতিবছর ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে ওঠে এ মেলা। আগামী বৃহস্পতিবার এ মেলার সমাপ্তি ঘটবে। তিনি বলেন, জীবের মঙ্গলার্থে বাউল ঠাকুরের আবির্ভাব হয়েছিল। কীভাবে সহজে মানুষ নিজেকে চিনতে পারবে, সেই পথ তিনি দেখিয়ে গেছেন। আমরা তার পথ অনুসরণ করে ভেদাভেদ না করে ঈশ্বরের সৃষ্টিকে ভালোবেসে যাচ্ছি। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের মিলন ঘটানোর জন্যই শত শত বছর ধরে মেলার এ আয়োজন হয়ে আসছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:২২

যে মেলায় ডুব দিয়ে হয় ‘পাপমোচন’
টাঙ্গাইলের বাসাইল কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সৈয়দামপুর গ্রামে বংশাই নদীতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দিনব্যাপী ডুবের মেলা। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ডুবের মেলা যুগ যুগ ধরে পালিত হচ্ছে। মাঘী পূর্ণিমায় এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। যা মানুষের মুখে মুখে ডুবের মেলা নামে পরিচিত। স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এই মেলায় নদীতে পূণ্যস্নান করলে পাপমোচন হয়। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় জেলার দূর দূরত্ব থেকে আগত জনগণ পূজা ও স্নান পর্বে অংশগ্রহণ করে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলে স্নান উৎসব। নারী-পুরুষ ও কিশোর-কিশোরী ম্নান উৎসবে অংশ নেন। তারা জমির আইল ধরে ডুবের মেলা আসেন।  স্নান উৎসবে অংশ নেওয়া পূণ্যার্থীরা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের পাপ মোচন উপলক্ষে ভোরে মানত ও গঙ্গাস্নান পর্ব সমাপণ করেন। গঙ্গাস্নান করলে সাড়া বছরের পাপ মোচন হয়। মনের আশা ও বাসনা পূরণ হয়। এই স্নান অংশ নিলে পূর্ণ মিলে।দুর-দুরান্ত থেকে লোকজন আসে গঙ্গাস্নানে অংশ নিয়ে তাদের মনের বাসনা পূরণ করে। এই মেলা ব্রিটিশ শাসনামলে বক্ত সাধু নামে খ্যাত এই সন্যাসীর (মাদব ঠাকুর) মূর্তি প্রতিস্থাপন করে পূজা অর্চনা শুরু করেন। এই পূজা উপলক্ষে তখন থেকে গঙ্গাস্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তখন থেকে এটা ডুবের মেলা নামে পরিচিত। ডুবের মেলায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ম্নান উৎসব চলে।  নারী-পুরুষ ও কিশোর-কিশোরী ম্নান উৎসবে অংশ নেন। সুজন সরকার বলেন, আজকে আমরা মাঘী পূর্ণিমার মেলায় আসছি। আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি পূর্ণ্য স্থান। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত গঙ্গাস্নান হয়। ১০০ বছর ধরে এই গঙ্গাস্নান চলে আসছে। ডুবের মেলায় যারা আসে তারা মনের বাসনা নিয়ে গঙ্গাস্নান করতে আসেন। গঙ্গাস্নান করলে মনের বাসনা পূরণ হয়। দেবাশীষ দাস বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করে যে আজকে এই মাঘীপূর্ণিমার তিথিতে উত্তর বাহিত জলে স্নান করলে সাড়া বছরের পাপ মোচন হয়। অনেকের মনে আশা থাকে যে স্নান করলে তাদের মনের আশা পূরণ হয়। পুরোহিত রবিন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, পূর্ব পুরুষ থেকে এই গঙ্গাস্নান শুরু হয়েছে। এই গঙ্গাস্নানকে বলে মাঘীপূর্ণিমার গঙ্গাস্নান। ৩০-৪০ জন পুরোহিত এই গঙ্গাস্নানে এসেছে। দূর-দুরান্ত থেকে লোকজন এসেছেন গঙ্গাস্নানে অংশ গ্রহণ করে। পূণ্যার্থীরা তাদের মনের বাসনা নিয়ে এখানে আসেন। তারা ডুব দিলে তাদের মনের বাসনা পূর্ণ হয়। কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামীম আল মামুন বলেন, পূর্বপুরুষ থেকেই এই মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মাঘীপূর্ণিমায় ডুবের মেলা পালন করে থাকেন। মেলা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক মানুষ আসেন।  
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২১:৫০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়