• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo
‘মিয়ানমার ইস্যুতে আমরা কখনোই আগ্রাসী ভূমিকায় যাবো না’
মিয়ানমার ইস্যুতে আমরা কখনোই আগ্রাসী ভূমিকায় যাবো না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক। মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৪’ এর তৃতীয় দিনের কার্য অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যাচ্ছে। তবে আমাদের ওপর আগ্রাসনের কোনো আশঙ্কা দেখি না। তারপরও আমরা প্রস্তুত। আমরা বিশ্ব শান্তির জন্য কাজ করবো। আমরা কখনোই আগ্রাসী ভূমিকায় যাবো না। তিনি বলেন, মিয়ানমারে বিভিন্ন বহিঃশক্তি সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে। কোথাও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি হলে সবাই এখন নাক গলাতে চায়। আমরা ওই ব্যাপারে (মিয়ানমার পরিস্থিতি) মোটেও নাক গলাতে চাই না। আমাদের জনগণ যাতে শান্তিতে থাকে এবং রোহিঙ্গা যারা আছে তাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সজাগ থাকি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে, আমরা বিশ্ব শান্তির জন্য কাজ করবো, আমরা কখনোই আগ্রাসী ভূমিকায় যাবো না। এজন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের খুবই ভালো সম্পর্ক। তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে পরিস্থিতি অনেক উদ্বেগজনক। ওখানে সিভিল প্রশাসন যেমন সম্পৃক্ত, তেমনি বিজিবিও সম্পৃক্ত। সেনাবাহিনী ততটা সম্পৃক্ত নয়। কারণ, এখনও যুদ্ধ লাগেনি যে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত হতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আমরা কোনো সময় আগ্রাসী ভূমিকা নেবো না। কিন্তু আমরা প্রস্তুত, আমাদের ওপর যদি কোনো রকম আক্রমণ আসে, আমরা ব্যবস্থা নেবো। এটা নিয়ে আলাপ হয়েছে। সীমান্ত হত্যার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, এটা তো পরিকল্পিত কিছু না। এখানে দুই পক্ষেরই দোষ থাকে। আমাদেরও দোষ, বর্ডারের ওপারে যারা থাকে তাদেরও দোষ। এটাকে কিলিং না বলে ইনসিডেন্ট বলা যায়। চোরাচালানকারিরা এতটাই ফেরসাস হয় যে, মাঝে মধ্যে তারা বিএসএফকে আক্রমণ করে বসে। তখন তারা গুলি করতে বাধ্য হয়। আমাদের পক্ষ থেকেও গুলি হয় মাঝে মধ্যে। ডিসিদের হেলিকপ্টার ব্যবহারের প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা হেলিকপ্টার ব্যবহার অনেক কমিয়ে দিয়েছি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তেলের ওপর প্রভাব পড়েছে। যার কারণে হেলিকপ্টার ব্যবহার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিসিরা বলছিলেন, তারা চাহিদা অনুযায়ী পান না। এটা হয়তো সাময়িক। তবে যেকোনো সময় যে কারও অসুবিধা হলেই হেলিকপ্টার সাপোর্ট দেওয়া হবে। সিভিল মিলিটারি রিলেশনশিপের (সিএমআর) বিষয়ে তারিক আহমেদ সিদ্দিক বলেন, সিএমআর যেন আরও উন্নত হয় সেজন্য আলোচনা হয়েছে। এ আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ ছিল। ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাব এসেছে। এটা আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেবো। ওনারাও (ডিসি-বিভাগীয় কমিশনার) চাচ্ছে আমাদের কাছাকাছি আসতে, আমরাও চাচ্ছি ওনাদের কাছাকাছি যেতে। আমাদের মধ্যে সৌহার্দ্য অনেক বেশি। ওনারা আমাদের এখানে ট্রেনিং করতে আসেন, আমরাও যাই। এতে আমাদের বন্ধুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। উল্লেখ্য, এবারের জেলা প্রশাসক সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে থাকছে ৩৫৬ প্রস্তাব। প্রস্তাবগুলোর জনসেবা বাড়ানো, জনদুর্ভোগ হ্রাস করা, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনে বিকাশ, আইনকানুন বা বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে।   
০৫ মার্চ ২০২৪, ১৫:১৬

সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেবে মিয়ানমার সরকার
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের কথা বলে সেনাবাহিনীতে নিচ্ছে জান্তা সরকার। এ জন্য অনেক গ্রাম এবং ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা পুরুষদের ধরে আনা হচ্ছে।  শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) থাইল্যান্ড থেকে পরিচালিত দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ইরাবতি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। রাখাইনের অধিকারকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, যেসব রোহিঙ্গা পুরুষ সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন তাদের এক বস্তা চাল, নাগরিকত্বের একটি পরিচয়পত্র এবং মাসিক ১ লাখ ১৫ হাজার কিয়াট বেতন দেওয়া হবে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরাকান আর্মির কাছে হারানো শহরগুলো পুনরায় নিজেদের দখলে নিতে রোহিঙ্গা পুরুষদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হচ্ছে। জান্তার পক্ষে যুদ্ধে যোগদানের জন্য বিভিন্ন ক্যাম্প এবং গ্রাম থেকে ৪০০ রোহিঙ্গাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জান্তা বাহিনী ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সকলের তালিকা তৈরির জন্য বুচিডং, মংডু এবং সিত্তের গ্রাম প্রশাসক ও নেতাদের চাপ দিয়েছে।এরমধ্যে ছোট গ্রাম থেকে অন্তত ৫০ জন, বড় গ্রাম ও প্রতিটি শরণার্থী ক্যাম্প থেকে অন্তত ১০০ জনের তালিকা দেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নে সান বলেছেন, প্রশিক্ষণের সময় মাত্র দুই সপ্তাহ। যাদের দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাদের জান্তা বাহিনী শুধুমাত্র মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি বুধবার পর্যন্ত সিত্তের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে ৩০০ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তারা এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এর আগে বুচিডং থেকে গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি শতাধিক মুসলিম রোহিঙ্গা পুরুষকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়। প্রসঙ্গত, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সব নারী-পুরুষের সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। 
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:৪৭

এবার বুড়ো ঘোড়াদের যুদ্ধে পাঠাচ্ছে মিয়ানমার জান্তা!
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের জান্তা সরকার ও জাতিগত স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাত প্রকট আকার ধারণ করেছে। সশস্ত্র বিদ্রোহীদের আক্রমণে একের পর এক ঘাঁটি হারিয়ে কোণঠাসা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা; পালিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছে বহু জান্তা সৈনিক। এ অবস্থায় অবসরপ্রাপ্ত সৈন্যদের আবারও যুদ্ধের ময়দানে ফেরত পাঠাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় এবার রিজার্ভ ফোর্সেস আইন সক্রিয় করেছে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। আর এর মাধ্যমে অবসরে চলে যাওয়া প্রবীণ সেনা সদস্যদের আবারও যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনে ফেরত পাঠানোর ক্ষমতা পেয়েছেন জেনারেল মিন অং হ্লাইং। জান্তা প্রধান গত মঙ্গলবার বলেছেন, প্রবীণ সেনাদের ইচ্ছাতেই তিনি এই পদক্ষেপ নিচ্ছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে ওইদিন বৈঠকে তিনি আরও বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সৈন্যরা জাতীয় প্রতিরক্ষার স্বার্থে আবারও দায়িত্বে ফিরতে চান। জেনারেল মিন অং হ্লাইং মিয়ানমার ওয়ার ভেটেরান্স অর্গানাইজেশনেরও সভাপতি। মঙ্গলবারের সেই বৈঠকের পর একইদিন রাতে তিনি আইনটিতে স্বাক্ষর করেন। মূলত ‘রিজার্ভ ফোর্সেস ল’ আইনটি ২০১০ সালে তৎকালীন স্বৈরশাসক থান শোয়ের নেতৃত্বাধীন জান্তা সরকার জারি করেছিল, কিন্তু কখনও ব্যবহার করা হয়নি। এবারই প্রথম আইনটি সক্রিয় করা হলো। মিয়ানমার ওয়ার ভেটেরান্স অর্গানাইজেশনের ওয়েবসাইট অনুসারে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মিয়ানমারের এই সংগঠনটির দেশব্যাপী ৯১ হাজার ৬৭৭ সদস্য এবং ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭২ জন সহায়ক সদস্য ছিলেন। এছাড়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির ৩৩০টি শহরের মধ্যে ৩০৮টিতে এই সংগঠনের শাখা রয়েছে। জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেন, অবসরে যাওয়া সমস্ত প্রবীণ সৈনিককে সক্রিয় দায়িত্বে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। যারা যোগ্য এবং উপযুক্ত তাদেরই যুদ্ধের ময়দানে ফেরত পাঠানো হবে। এর ব্যাখ্যায় জান্তার মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুনকে উদ্ধৃত করে জান্তা মিডিয়াতে বলা হয়েছে, ‘যারা গত পাঁচ বছরে সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণের অনুমতি পেয়েছে তারা রিজার্ভ ফোর্সে কাজ করার জন্য বাধ্য। তবে, তাদের সবাইকে সক্রিয় দায়িত্বে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। যাদের সত্যিকার অর্থে দেশের জন্য প্রয়োজন তাদেরকেই ‘সেবা করার’ অনুমতি দেওয়া হবে।’ এই আইনের অধীনে সাবেক সব সামরিক কর্মীকে পাঁচ বছরের জন্য রিজার্ভ বাহিনীতে কাজ করতে হবে। তবে সামরিক বাহিনীর প্রধান ‘রাষ্ট্রের স্বার্থে’ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় তাদের চাকরিতে বাধ্য করতে পারবেন। আইনে অবশ্য তাদের সেবার মেয়াদ কতদিন বাড়ানো যাবে তা বলা হয়নি। শুধু তাই নয়, রিজার্ভ ফোর্সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তিন বছরের জেল বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন সাবেক সেনা সদস্যরা। ইরাবতী বলছে, যাদের ফ্রন্টলাইনে ফেরত পাঠানো হবে তারা তাদের পেনশনের পাশাপাশি সামরিক প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত অন্যান্য সুবিধা পাবেন। অবসর গ্রহণ বা পদত্যাগ করার সময় যারা যে পদে ছিলেন তাদের একই পদে নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও আইনে বলা হয়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করেছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধাদের সঙ্গে একের পর এক যুদ্ধে তাদেরকে পরাজিত হতে দেখা যাচ্ছে। এর আগে মিয়ানমারে প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জন্য সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করে দেশটির জান্তা সরকার। নতুন সেই ঘোষণা অনুযায়ী, এখন থেকে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সব পুরুষকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়ে অন্তত দুই বছর কাজ করতে হবে। আর নারীদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৭ বছরেরে মধ্যে, তাদেরকেও একই মেয়াদে সামরিক বাহিনীতে চাকরি করতে হবে। এ বিষয়ে আর কোনও বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি জান্তা সরকার। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অঞ্চলে জাতগত স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীগুলোর কাছে একের পর এক শোচনীয় পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। ২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল জান্তা সরকার। সম্প্রতি সেই জরুরি অবস্থা আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তা বাহিনীর ক্ষমতা পুনর্দখলের পর থেকেই মিয়ানমারে যুদ্ধ ও সহিংসতা চলে আসছে। এসব সহিংসতায় এ পর্যন্ত দেশটির হাজার হাজার নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন এবং দশ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। মূলত স্বাধীনতার পর থেকে সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সংঘাত চলমান থাকলেও, সাম্প্রতিক সময়ের মতো এতোটা চ্যালেঞ্জের মুখে আর কখনও পড়েনি দেশটির জান্তা বা সামরিক শাসকরা।  
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:২৬

ভেঙে পড়েছে মিয়ানমার সেনা ঐক্য, বাড়ছে আত্মসমর্পণ
মিয়ানমারে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির প্রবল আক্রামণে টিকতে না পেরে দেশটির সেনাবাহিনীতে ঐক্য ভেঙে পড়েছে। অনেকের মনোবল ভেঙে গেছে। এর ফলে বাড়ছে আত্মসমর্পণের ঘটনা। অন্তত ৩০ জনের বেশি সেনার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এমন খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি ও ওয়াশিংটন পোস্ট। গত বছরের ২৭ অক্টোবর ‌‘১০২৭’ নামে অপারেশন শুরুর পর থেকে গত তিন মাস ধরে আত্মসমর্পণ কিংবা পালিয়ে যাওয়া সেনারা জানান, বিদ্রোহী আক্রমণের ফলে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর মনোবল ভেঙে গেছে। একই সঙ্গে তারা অস্ত্র সংকটেও ভুগছেন। যা তাদের ব্যাপকভাবে আত্মসমর্পণে বাধ্য করছে। এ ছাড়া বিদ্রোহীদের সাম্প্রতিক যুদ্ধক্ষেত্রের সাফল্য কেবল অঞ্চল দখলেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সামরিক জান্তা রক্ষাকারী বাহিনীর সংহতিকেও ক্ষুণ্ন করছে। এদিকে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী হারানো সেনা ঘাঁটতি পূরণ করতে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে জান্তা সরকার। আগামী এপ্রিল থেকে যুবকদের সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করছে দেশটির সরকার। একইসঙ্গে গত পাঁচ বছরের মধ্যে যারা অবসরে গেছেন, তাদেরও সেনাবাহিনীতে আবার যোগ দিতে হবে।  গত শনিবার জান্তা সরকার ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী পুরুষ এবং ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী নারীদের অন্তত দুই বছর বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হবে– এ-সংক্রান্ত একটি আইন ঘোষণা করে। যা এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন বলেছেন, যোগদানের ক্ষেত্রে মেডিকেল পরীক্ষা করা হবে। প্রতি ধাপে লোক নিয়োগ হবে ৫ হাজার।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:০৮

পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীদের দু-এক দিনের মধ্যে ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মিয়ানমার থেকে আর কাউকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সৈন্যদের জাহাজযোগে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে রয়েছেন। এখন রোহিঙ্গা বা যেই আসুক না কেন, মিয়ানমার থেকে আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সীমানায় আরাকান আর্মির সঙ্গে তাদের বাহিনীর যুদ্ধ চলছে। আমরা দেখছি তাদের এই যুদ্ধ এতটাই তীব্র হয়েছে যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি), সরকারি কর্মকর্তা, ধারণা করছি দু-একজন সেনা সদস্য আমাদের এখানে ঢুকে পড়েছেন। এদের মধ্যে কেউ অস্ত্র নিয়ে এসেছেন, কেউ অস্ত্র ছাড়া ঢুকেছেন। তবে তারা এসেছেন জীবন রক্ষার জন্য, যুদ্ধের জন্য না। ‘এরপর আমাদের বিজিবি সদস্যরা তাদের অস্ত্রগুলো রেখে আটক অবস্থায় আমাদের এখানে রেখেছেন। এদের মধ্যে যারা আহত, তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা তাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারকে জানিয়েছি।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার অতি শিগগিরই জাহাজযোগে তাদের নিয়ে যাবে বলে বার্তা পাঠিয়েছে। আশা করছি ২-১ দিনের মধ্যেই তাদের সদস্যদের ফেরত নিয়ে যাবে। আমাদের সঙ্গে তাদের কোনো কনফ্লিক্ট নেই, কোনো রকম যুদ্ধ নেই, তারা আত্মরক্ষার্থে এখানে এসেছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি এমনিতেই ১২ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের এখানে রয়েছে। রোহিঙ্গা বা অন্য যে কেউ আসুক, মিয়ানমার থেকে আমরা কাউকে আর এখানে সেটেল হতে দেবো না।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:৫৮

চীনা নববর্ষেই মিয়ানমার থেকে জান্তা উৎখাতের হুঁশিয়ারি বিদ্রোহীদের
চীনা নববর্ষেই মিয়ানমার থেকে সামরিক সরকার বা জান্তাকে  উৎখাত করার প্রত্যয় ঘোষণা করেছে দেশটির সশ্রস্ত্র বিদ্রোহীদের জোট ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। চলতি বছরই সামরিক শাসনের মূলোৎপাটন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জোটটি। আর এজন্য ইতোমধ্যে কোণঠাসা জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঘোষণা এসেছে জাতিগত স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র জোটটির পক্ষ থেকে। খবর ইরাবতীর। চীনা নববর্ষের আগে প্রকাশিত এক বার্তায় ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স বলেছে, এবারের বছরটি ড্রাগনের। চীনা জনগণ ড্রাগনের বছরকে সবচেয়ে শুভ রাশিচক্র হিসেবে বিবেচনা করে। আমরা আশা করি, ড্রাগন বর্ষের তাৎপর্য ও আশীর্বাদ মিয়ানমারের জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে মিলে যাবে। আমরা বিশ্বাস করি, সামরিক স্বৈরাচার নির্মূলে মিয়ানমারের জনগণের মুক্তির আকাঙ্খা এই ড্রাগন বছরেই সম্পন্ন হবে। মিয়ানমারের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এ বার্তায় বলা হয়, ‘ড্রাগনে প্রবেশ করুন, জান্তা থেকে বের হন’।  গত বছরের ২৭ অক্টোবর ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরু করার পর থেকে কয়েক ডজন শহর দখল করেছে  ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামে জাতিগত স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র জোটটি। জোটের তিনটি সংগঠন হলো- মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) ও আরাকান আর্মি (এএ)।  রাখাইন, চিন এবং উত্তর শান রাজ্যে চার শতাধিক জান্তা ঘাঁটি এবং ফাঁড়ি দখল করেছে তারা। এছাড়াও চীনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথও দখল করেছে জোটটি।  আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইউএস ইনস্টিটিউট অব পিস তাদের এক রিপোর্টে বলছে, ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স এবং আরও দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠী মিলে এরই মধ্যে ‘ব্রিগেড ৬১১’ নামে আরেকটি বাহিনী গঠন করেছে।  সামরিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অপরিবর্তিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জোটটি বলেছে, মিয়ানমারের জনগণের আকাঙ্খা বাস্তবায়ন করছেন তারা। সেই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিদিন নতুন নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।  
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:০০

তরুণ-তরুণীদের সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করল মিয়ানমার
মিয়ানমারে তরুণ বয়সী সব নারী-পুরুষের সেনাবাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে জান্তা সরকার। এমন একটি সময় এই ঘোষণা আসলো যখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে দেশটির সামরিক বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।    মিয়ানমারে আগে থেকেই চালু থাকা বাধ্যতামূলক নিয়োগসংক্রান্ত একটি আইনকে কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, এখন থেকে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সকল পুরুষকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়ে অন্তত দুই বছর কাজ করতে হবে। আর নারীদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৭ বছরেরে মধ্যে তাদেরকেও একই মেয়াদে সামরিক বাহিনীতে চাকরি করতে হবে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি জান্তা সরকার। সেনাবাহিনীতে তিন বছর থাকতে হবে। চলমান রাষ্ট্রীয় জরুরি পরিস্থিতি বিবেচনায় এ নিয়োগ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর কাছে একের পর এক অপমানজনক পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। ২০২৩ সালের শেষের দিকে মিয়ানমারের তিনটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিলে হামলা চালিয়ে শান রাজ্যের সীমান্ত ক্রসিং এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো দখল করে নেয়। অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই রাজ্যটি মিয়ানমারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি দিয়েই সড়কপথে চীনের সঙ্গে বেশির ভাগ বাণিজ্য সংঘঠিত হয়ে থাকে। গত মাসে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) জানায় যে, তারা মিয়ানমারের চিন রাজ্যের পালেতোয়া এবং মিওয়াতে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত শেষ সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এর আগে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে সতর্ক করেছিলেন যে, বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে দেশ ভাগ হয়ে যেতে পারে। দেশের সামরিক বাহিনীতে নাগরিকদের বাধ্যতামূলক যোগদানের বিধান রেখে ২০১০ সালে মিয়ানমারে একটি আইন চালু করা হয়। কিন্তু এতদিন তা কার্যকর করা হয়নি। নাগরিকদের কেউ এই আইন না মানতে চাইলে একই মেয়াদে জেল খাটতে পারে বলেও আইনে বলা হয়েছে। ২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল জান্তা সরকার। সম্প্রতি সেই জরুরি অবস্থা আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে। ২০১১ সালের গণতন্ত্রের দিকে অগ্রসর হওয়ার আগে মিয়ানমার প্রায় ৫০ বছর নিপীড়নমূলক সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। এরপর একটি গণতান্ত্রিক সরকার দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল। কিন্তু ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির সামরিক বাহিনী পুনরায় ক্ষমতা দখল করে নেয়। এরপর থেকেই মিয়ানমারে যুদ্ধ ও সহিংসতায় চলে আসছে। এতে দেশটির হাজার হাজার নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে এবং ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকেই উত্তেজনা চলতে থাকলেও এতোটা কোনঠাসা পরিস্থিতিতে দেশটির সেনাবাহিনীকে এর আগে আর পড়তে হয়নি।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:১৬

মিয়ানমার সংকট : বাংলাদেশের গলার কাঁটা
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানবতাবাদী বিশ্ব নেত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক দিক বিবেচনা করে রাখাইন রাজ্যের প্রায় দশলক্ষ মুসলিম নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছেন।  আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতায় তাদের নিজ ভূমিতে ফিরিয়ে নেয়ার কথা থাকলেও তাদের ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক মহল তেমন কোন কার্যকরী উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।  একদিকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যেমন মানবেতর জীবন যাপন করছে, তেমনি বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতিতে এই চাপ বুকের মধ্যে জগদ্দল পাথরের মত চেপে আছে। হালে যুক্ত হয়েছে মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ। বাংলাদেশের সীমান্ত অনিরাপদ হয়ে পড়ছে।  মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের সীমান্তে। প্রায়ই গুলি কামানের গোলার সাথে বাংলাদেশের ভিতর ঢুকে পড়ছে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নরত মিয়ানমারের বর্ডারগার্ড। এমনিতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে।  বিভিন্ন সংঘাত ও অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি তাদের কেউ কেউ বাংলাদেশের পাসপোর্ট পর্যন্ত জোগাড় করে নিচ্ছে। পরিবেশগত বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে অপরিকল্পিত ভাবে প্রবেশকৃত এই জনগোষ্ঠী। এই প্রভাব হচ্ছে দীর্ঘস্থায়ী।  এত বড় জনগোষ্ঠীর ভরণপোষণ বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ কতদিন বইতে সক্ষম, সে নিয়ে আশংকা আছে। এই অঞ্চলের নিরাপত্তার আলোচনায় চীন, ভারত গভীরভাবে জড়িয়ে আছে। মিয়ানমার বিষয়ে চীন ও ভরতের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও একটা নিজস্ব অবস্থান আছে।  মার্কিন সিনেটে ‌‘বার্মা এক্ট’ পাশের বিষয়টিও আমরা জানি। এত কিছুর পরও স্পষ্ট নয় যে, আন্তর্জাতিক মহল মিয়ানমার বিষয়ে কি করতে চাইছে।  শুধু রোহিঙ্গা ইস্যু নয়, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ গৃহযুদ্ধও বাংলাদেশে নিরাপত্তার জন্য মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারমধ্যে যুক্ত হয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিভিন্ন গোষ্ঠী। আর তাদের সংঘর্ষের খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।  বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী এমনকি সীমান্তে বসবাসকারী সাধারণ জনগোষ্ঠী চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছে। এর আশু সমাধান জরুরী। মাদক, চোরাচালান এসব তো আছেই।  মোটকথা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সমস্যাটি মায়ানমার তৈরি করেছে, আর সমাধান তাদেরই করা উচিত। বছর গড়াচ্ছে, কিন্তু সমাধানের আলো দেখা যাচ্ছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে খবরদারি করলেও তাদের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা আমাদের অবাক করছে।  একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা শুধুমাত্র বাংলাদেশের ঘাড়ে ছাপিয়ে দেয়া একধরনের কাপুরুষতা। আন্তর্জাতিক বিশ্বের এহেন পলায়নপর মানসিকতা আমাদের ভাবাচ্ছে।  এই সংকটকে আরও জিইয়ে রাখছে সারা বিশ্বের সংকট ডেকে আনবে। বিশ্বের বিভিন্ন সংকটের মধ্যে রোহিঙ্গা সমস্যা একটি গুরুতর সমস্যা। এই আধুনিক বিশ্বে একটি দেশের মানুষ গৃহহীন হয়ে অন্য একটি দেশে মানবেতর জীবন যাপন করছে এটি মেনে নেয়া যায় না।  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক বিশ্বের হয়ে এই গৃহহীন মানুষদের আশ্রয় দিয়েছেন এবং অন্ন সংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন সেটি তার উদারতা ও মানবতার প্রতিফলন, কিন্তু বাংলাদেশের সাথে বিশ্বমোড়লদের একত্রে কাজ করে এই সংকটের সমাধান করতে হবে।  বিশ্বমানবতার সবচেয়ে বড় বোঝা রোহিঙ্গা ইস্যু এটি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলকে বুঝতে হবে। বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলে ও মিয়ানমারের কাছে দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের দাবী জানিয়ে আসছে। সেই সাথে বাংলাদেশের সক্ষমতাকেও আমলে নিতে হবে।  মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যার বলী বাংলাদেশ হতে পারে না। ১০ লক্ষ রোহিঙ্গার রাষ্ট্রীয়  ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত করার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক বিশ্বের। বাংলাদেশের একক না। আমরা এই সংকটের স্থায়ী সমাধান চাই। মায়ানমার ইস্যুতে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ আরও কার্যকর হোক। লেখক : ডিন, কলা ও মানবিক অনুষদ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:০৩

মিয়ানমার সীমান্ত নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতির দাবি চুন্নুর
জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, মিয়ানমারের সংঘাত ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকার ধৈর্য ধারণের নির্দেশ দিয়েছে। ধৈর্য ধরব, ঠিক আছে। কিন্তু ধৈর্য কতটুকু ধরব? দ্রুত কার্যকর কূটনৈতিক উদ্যোগ না নিলে বড় সমস্যা হয়ে যাবে। মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দরকার। বুধবার সংসদের বৈঠকে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এ দাবি জানান। তবে এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। মুজিবুল হক বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি এমন যে, ওখানকার গুলিতে দুইজন মারা গেছেন। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৬৪ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে ঢুকতে বাধ্য হয়েছে। তারা আত্মসমর্পণ করে বিজিবির তত্ত্বাবধানে রয়েছে। আরাকানদের সঙ্গে যুদ্ধটা যেভাবে শুরু হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে, এটি অনেক দীর্ঘ হবে। যদি তা-ই হয়, তাহলে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয় অনেকটা অনিশ্চিত। দেখা যাবে, এমনভাবে লোক আসবে যে, আমরা পুশব্যাক করেও পারব না বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন চুন্নু।  স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:৫২

রাজধানী রক্ষায় সাধারণ মানুষকে অস্ত্র দিচ্ছে মিয়ানমার জান্তা
মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের তৎপরতা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধে না পেরে আত্মসমর্পণ করেছে মিয়ানমারের অনেক সেনা। অনেকে বিদ্রোহীদের হাতে নিহতও হয়েছেন। একের পর এক ঘাঁটির দখল হারিয়ে এবার রাজধানী নেইপিদো হারানোর শঙ্কায় মিয়ানমার জান্তা সরকার। ফলে দেশটির সাধারণ মানুষের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে তারা। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) থাইল্যান্ড থেকে পরিচালিত মিয়ানমারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইরাবতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের জান্তা সরকার আশঙ্কা করছে রাজধানীতেও ঢুকে পড়তে পারে বিদ্রোহীরা। তাদের হাত থেকে রাজধানীকে রক্ষায় ‘পিপলস মিলিশিয়া’ নামের একটি মিলিশিয়া বা আধাসামরিক বাহিনী গঠন করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। ইয়াঙ্গুন, বাগো এবং তানিনথারি অঞ্চল এবং মুন রাজ্যেও মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হয়েছে। আর এ বাহিনীতে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করতে সাধারণ মানুষকে অস্ত্র, নগদ অর্থ এবং খাবার দেওয়া হচ্ছে। এদিকে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম নারিনজারা নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমারে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) রাখাইন রাজ্যের মিনবায়ারে তিনটি ঘাঁটির সবকটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। সেনাসহ তাদের পরিবারের পাঁচ শতাধিক সদস্য বিদ্রোহীদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের মধ্যে  জান্তা সরকারের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, জান্তা বাহিনীর ডিভিশন কমান্ডার, নন-কমিশন্ড কর্মকর্তা এবং আহত ১০০ সেনা রয়েছে।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ২৩:৪৬
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়