• ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo
ঢাকায় মিলছে উটের দুধের চা
চা আসলেই চমৎকার পানীয়। বলা যায় পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয় চা। বাজারে বিভিন্ন ধরনের চা মেলে। চায়ের কত ধরণ আর স্বাদ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বাদে আলাদা হলেও এর কদর কিন্তু কোথাও কম নয়। আর এ রোজার সময় সারা দিনের ক্লান্তি নিমিষেই দূর করতে চা প্রেমিদের ইফতারের পর এক কাপ চা যেন জাদুর মত কাজ করে। আর সেটা যদি হয় ভিন্ন স্বাদের উটের দুধের চা, তাহলে তো কথাই নেই। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এই ভিন্ন স্বাদের উটের দুধের চা এখন পাওয়া যাচ্ছে রাজধানীর গুলশান এলাকার ৫২ নম্বর রোডে “ব্যাচেলর এক্সপ্রেস” নামের একটি দোকানে। তবে অন্যান্য চায়ের চেয়ে বেশ ব্যতিক্রম এই চা। উপকরণ ও প্রস্তুতকরণেও আছে ভিন্নতা। এই চা খেতে প্রতিদিন অনেকেই ভিড় করছেন বলে জানান রেস্টুরেন্টটির উদ্যোক্তা তরুণ দুই বন্ধু আমিনুল ইসলাম ও মাহবুব হাসান। এ ব্যাপারে তারা দেশের এক গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ বিষয়ে মাহবুব হাসান জানালেন, তিনি আগে দুবাই প্রবাসী ছিলেন। সেখানেই প্রথম এই চা খান। উটের গুড়া দুধ দিয়ে মূলত এই চা তৈরি করা হয়। এরপর দেশে যখন ব্যবসা শুরু করলেন, তখন এই চা বিক্রির চিন্তা মাথায় আনেন। তিনি জানান, আমি দুবাইতে থাকাকালে এটা খেয়েছিলাম। তো এটা গরুর দুধের মতো না। পরে যখন দেশে আমি রেস্টুরেন্ট দিলাম তখন এটা রাখলাম। বাংলাদেশের মানুষ খাবার পিপাসু। নতুন কিছু পেলেই লোকজন আসে। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এটা বাংলাদেশে আর কোথাও পাওয়া যায় না। তারা সবসময় তো খাবে না। তাই শখের বশে ৪০০ টাকা খুব বেশি না। মাহবুব জানান, দুবাইয়ের সঙ্গে তাদের ব্যবসা আছে। সেখান থেকেই আনেন এই দুধ। আগের দিন জানালে পরের দিন এই গুঁড়া দুধ তার হাতে চলে আসে বলেও জানান তিনি। প্রতি প্যাকেট উটের গুঁড়া দুধের মেয়াদ এক বছর বলে জানান এই ব্যবসায়ী। কামাল উদ্দীন নামে এক ক্রেতা বলেন, জীবনে অনেক রকম চা খেয়েছি। পরে যখন পত্রিকায় খবর দেখলাম উটের দুধের চা পাওয়া যাচ্ছে, তখন এটার স্বাদ নিতে আসলাম। বলা হয়েছিল এই চা নাকি ব্যতিক্রম। তো এসেও তাই-ই দেখলাম, একটু ব্যতিক্রম। নাসির উদ্দীন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, এটার স্বাদ একটু ব্যতিক্রম, ঘ্রাণটাও আলাদা। না খেলে বুঝা যাবে না। গুলশানের এই ক্যাফেটি খোলা থাকে বেলা ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত। এই সময়ে গেলেই পাওয়া যাবে উটের ‍দুধের চা।
০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:৪৮

১০০ টাকার বেগুন বগুড়ায় বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, মিলছে না ক্রেতা
বগুড়ার বাজারে আলু ছাড়া কমেছে অধিকাংশ শাকসবজির দাম। তবুও মিলছে না ক্রেতা। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সবজি ব্যবসায়ীরা।  রোজা শুরুর আগের দিনও রাজাবাজার ও ফতেহ আলী বাজারে ৫০ টাকা কেজি দরের বেগুনের দাম ওঠে ১০০ টাকায়। ৪০ টাকার শিম বিক্রি হয় ৮০ টাকায়। এভাবে টমেটো, গাজর, খিরা, শসা ও লেবুসহ প্রায় সব ধরনের শাকসবজি দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয়। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে বেগুনের দর খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ২০ টাকায় নেমেছে। অন্য শাকসবজির দামও নেমেছে অর্ধেকে। এ দিকে রোজার আগের দিন থেকে শিম ১০০, গাজর ৪০, টমেটো ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। লেবুর হালি ছিল সর্বনিম্ন ৪০ টাকা। শসার কেজি ১০০ টাকা, খিরা ৮০ টাকা।  সরেজমিনে কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, কয়েকদিনের ব্যবধানে শিমের দাম চাওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা, গাজর ১৫ টাকা ও টমেটো ২৫ টাকা, শসা ও খিরা ৪০ টাকা। লেবুর হালি ২০-২৫ টাকা। এ বিষয়ে রাজাবাজারের একজন ব্যবসায়ী জানান, গত সোম থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সব ধরনের শাকসবজির দাম চড়া ছিল। শুক্রবার ধস নামে। ১০০ টাকা কেজির বেগুন ২০ টাকা হলেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।  দাম কমার বিষয়ে এ ব্যবসায়ী বলেন, আমদানি বেশি। সেই তুলনায় ক্রেতা নেই। এ কারণে কম দামেও পণ্য বিক্রি করা যাচ্ছে না। যেখানে দেশি নতুন পেঁয়াজের কেজি ছিল ৮০ টাকা। গতকাল থেকে সেই পেঁয়াজ ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে আলুর দাম কেজিতে ছয় টাকা বেড়ে ৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচের দাম কমেছে অর্ধেক। রোজার এক দিন আগে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ৮০ টাকা কেজি দরে। অথচ রোববার আবার আগের দামেই কাঁচামরিচ বিক্রি হয়। ফতেহ আলী বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, আলুর দাম তিন দিন আগেও কেজিপ্রতি ৩০ টাকা ছিল। শুক্রবার ৩৬ টাকায় বিক্রি হয়। মাঠে কৃষকের খেতে আলু নেই। এ কারণে সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে। কৃষি বিপণন বিভাগ বগুড়ার মাঠ ও বাজার পরিদর্শক আবু তাহের জানান, বেগুন, শিম, খিরা, শসা ও লেবুর দাম যেভাবে বেড়েছিল সেভাবেই কমেছে। বাজারে সরবরাহের তুলনায় ক্রেতা না থাকায় দাম কমেছে।
১৮ মার্চ ২০২৪, ১৪:৪৫

সরকারের বেধে দেওয়া দামে মিলছে না কোনো পণ্য
রমজান এলেই যেন দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন ব্যবসায়ীরা। এবারও ব্যতিক্রম ঘটছে না তার। রমজানের বেশ আগ থেকে মজুতদার ও অসাধু ব্যবসায়ীদের দমনে সরকার কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে এলেও রমজানে বাজার পরিস্থিতি তথৈবচ। রোজার প্রথম সপ্তাহেই ভোক্তা সাধারণের পকেটে পড়েছে টান। সরবরাহ কম, ভ্যাট বেশি, ডলার সংকট- বিভিন্ন অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়েই চলেছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। শেষ পর্যন্ত গতকাল শুক্রবার গরুর মাংস, ছোলা, ব্রয়লার মুরগিসহ ২৯ নিত্যপণ্যের দাম বেধে দেয় সরকার। এরপরও শনিবার (১৬ মার্চ) বাজার ঘুরে দেখা যায়, আগের মতোই বাজার চড়া। সরকারের বেধে দেওয়া দামে মিলছে কিছুই।  বাজারের এমন অব্যবস্থাপনায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ ক্রেতা সাধারণ। তাদের অভিযোগ, শুধু দাম নির্ধারণ করে দিয়েই দায় সারছে সরকার। সিন্ডিকেটের লাগাম টানতে সরকার যে কঠোর হুঁশিয়ারির কথা বলে আসছে তার প্রয়োগ নেই বাজারে। নিয়মিত তদারকি ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের অভাবে বাজারের নিয়ন্ত্রণ এখনও লাগামহীন সিন্ডিকেটের হাতেই।   শনিবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার, শ্যামবাজার, রায়সাহেব ও নয়াবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা মেলে অব্যবস্থাপনার এই চিত্রের।  বাজারে এখনও গরুর মাংস ৭৮০ টাকা, মুরগির মাংস ৩৫০ টাকা, মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মুগডাল ১৬০ টাকা, পেঁয়াজ ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে। এ ছাড়া সবজি ও মাছসহ সবকিছুই আগের মতো উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে।   কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের নির্ধারিত দাম না মানার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের অজুহাত, অতিরিক্ত গাড়িভাড়া ও ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি বন্ধ না হলে দাম কমানো সম্ভব নয় তাদের পক্ষে।   রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি আলু মানভেদে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, করলা ১০০, পটল ১০০, ঝিঙা ৮০, টমেটো ৬০-৭০ টাকা, শিম ৪০-৬০, শসা ৬০ টাকা, ক্ষিরা ৫০ টাকা, মরিচ ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, ধনে পাতা ৮০-১০০ টাকা, পেঁয়াজ কলি ৪০ টাকা, আদা ২০০ টাকা ও রসুন ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০-৬০ টাকায়।   মাংসের বাজারেও আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের মাংস। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ২২০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩৫০টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যাচ্ছে।   মাছের বাজারেও একই অবস্থা। প্রতি কেজি রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০ টাকা, পাঙাস মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা,  পাবদা ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, টেংরা মাছ ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, পুঁটি মাছ ৫০০ টাকা, মেনি মাছ ৬০০ টাকা, বেলে মাছ ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় মাছ ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, চিতল মাছ ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে শনিবার। এ ছাড়া প্রকারভেদে প্রতি কেজি মুগডাল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা, মুসুর ডাল ১১০ থেকে ১৩৫ টাকা, মটরডাল ১৬০ টাকা, খেসারি ডাল ১৪০ টাকা এবং ছোলা ১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল, প্রতি কেজি চিনি টাকা। চড়ামূল্যে বিক্রি হচ্ছে ডিমও। প্রতি ডজন মুরগির ডিম ১৩৫-১৮০ টাকা ও হাঁসের ডিম ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে বাজারভেদে।  সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন সে ব্যাপারে জানেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকার দাম বেধে দিলেও আগের দামেই পণ্য কিনতে হচ্ছে তাদের। তার সঙ্গে আছে শ্রমিক খরচ, গাড়িভাড়া, খাবার খরচ। সব মিলিয়ে বেশি দামেই পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।  কয়েকজন খুচরা বিক্রেতা বলেন, আড়তদার যে দাম রাখে তার ওপর নির্ভর করে তারা বিক্রি করেন। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ভালো কথা। কিন্তু তারাও যেন সঠিক দামে পণ্য কিনতে পারেন সেদিকে সরকারের খেয়াল রাখা দরকার।  এদিকে শনিবার কারওয়ান বাজারে সদাই কিনতে আসা মফিজুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, শুধু দাম নির্ধারণ করে দিলেই তো ব্যবসায়ীরা মানছে না। বেধে দেওয়া দামে যেন তারা পণ্য বিক্রি করেন, সেজন্য কঠোর নজরদারি দরকার। সিন্ডিকেট নিয়ে শুধু হুঁশিয়ারিই শুনি। কিন্তু আজ পর্যন্ত সিন্ডিকেট করে কারা, তাই জানতে পারলাম না।   লাগামহীন সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, সরবরাহ ও চাহিদা বাজারে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে। মুক্তবাজারের সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি না হলে নির্ধারণ করে দিয়ে মূল্য কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, তা নিয়ে সংশয় থেকে যায়। সবচেয়ে বড় কথা ঘাটে ঘাটে চাঁদাবাজি হচ্ছে। সেটা বন্ধে সরকারকে আগে নজর দিতে হবে৷ প্রসঙ্গত, শুক্রবার সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিমের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ এর ৪ (ঝ) ধারার ক্ষমতাবলে কতিপয় নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হলো। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত দামে কৃষিপণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের অনুরোধ করা হলো। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।  প্রজ্ঞাপনে গরুর মাংস, ছোলা, ব্রয়লার মুরগিসহ ২৯টি নিত্যপণ্যের দাম বেধে দেয় কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।   এদিকে রমজানের বাজারে বাড়তি মুনাফা কামিয়ে নিতে চালবাজিতে মেতে উঠেছে চালকল মালিকরাও। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে হুট করে গরিবের সব ধরনের চালের দাম বস্তাপ্রতি ১০০-২০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে তারা। যার প্রভাব গিয়ে পড়েছে পাইকারি ও খুচরা বাজারেও। পেটে এক মুঠো ভাত জুটাতে গিয়ে চোখে সরষে ফুল দেখছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। অটোরাইস মিল মালিক সমিতি সূত্র বলছে, ধান থেকে চাল তৈরিতে ব্যাঘাত হওয়ায় সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে একটু। এ ছাড়া সরকার চাল কিনে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রি করছে ও সহায়তা কর্মসূচির আওতায় সাধারণ মানুষকে দিচ্ছে। এ কারণে দাম তুলনামূলক বাড়ছে। মিল মালিক সমিতির এই খোঁড়া যুক্তির ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছেন না খোদ পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ের চাল ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, রোজার মাসকে টার্গেট করে যৌক্তিক কোনও কারণ ছাড়াই মিল পর্যায়ে সব ধরনের চালের দাম বাড়ানো হয়েছে।  রাজধানীর কাওরান বাজারের আল্লাহ দান রাইস এজেন্সির মালিক ও পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কয়েকদিন ধরে মিল পর্যায় থেকে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে না। যে পরিমাণ চাল অর্ডার করা হচ্ছে, দিচ্ছে তার কম। এক ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে মিল মালিকরা। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বাজার তদারকি সংস্থা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চালের দাম কেন বেড়েছে, তা তদারকি করে বের করা হবে। মিল থেকে শুরু করে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে তদারকি করা হবে। অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনা হবে।  
১৭ মার্চ ২০২৪, ০১:১৯

ইভিএমে আঙুলের ছাপ মিলছে না, ভোট দিতে পারছেন না বয়স্করা
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এ আঙুলের ছাপ মিল না পাওয়ার কারণে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) নির্বাচনে ভোট দিতে পারছেন না অনেক বয়স্ক ভোটার। এতে পুরুষের চেয়ে ভুক্তভোগী নারীদের সংখ‍্যা বেশি। এ নিয়ে নগরের অনেক ভোটকেন্দ্রে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে।   শনিবার (৯ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর ১২টা পযর্ন্ত নগরের বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র। সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা ১১টার দিকে নগরের ৩১ নং মহাখালী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন থানারঘাট এলাকার বাসিন্দা বকুলি (৬৫) নামের এক বয়স্ক নারী। কিন্তু ইভিএমে এই ভোটারের হাতের আঙুলের ছাপ না মিলার কারণে তিনি ভোট দিতে পারছেন না। বকুলি বলেন, আমি তিনবার গেছি কিন্তু আঙুলের ছাপ মিলছে না।  একই অবস্থা থানারঘাট এলাকার মোছা. শাহিদা বেগম (৭০), ছুফিয়া বেগম (৬১) ও জমেলা খাতুনসহ (৪৫) এই কেন্দ্রের আরও অনেক নারী ভোটারের। তারাও এই সমস্যার কারণে ভোট দিতে পারছে না। জানতে চাইলে ৩১ নম্বর মহাখালী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মৃণাল কান্তি রায় বলেন, কিছু নারীর গৃহস্থলী কাজ করা এবং বার্ধক্যের কারণে তাদের আঙুলের ছাপে সমস্যা হচ্ছে। তারপরও হাত ধুয়ে বা ভেসলিন ব‍্যবহার করে ভোট করার চেষ্টা করছি। শেষ পর্যন্ত না হলে কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের ভোটার তথ‍্য যাচাই করে ভোট নিশ্চিত করা হবে।   তিনি আরও জানান, এই কেন্দ্রের মোট ভোটার ১৫৬০ জন। এর মধ‍্যে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২১৬ ভোট কাস্ট হয়েছে। একই অবস্থা নগরের ১১ নং ওয়ার্ডের নওমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ‍্যালয় কেন্দ্রে। এই কেন্দ্রে আঙুলের ছাপ না মিলায় ভোট দিতে না পেরে অনেক ভোটারকে ফিলে যেতে দেখা গেছে। এই কেন্দ্রের ভোটার ও মসিকের ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী রোকসানা শিরিন এই তথ‍্য নিশ্চিত করে জানান, আমার বাবা-মাসহ অনেক বয়স্ক ভোটার ইভিএমে আঙুলের ছাপ না মেলার কারণে ভোট দিতে পারছে না। সেই সঙ্গে সার্ভারের সমস্যা হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন। নগরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের খাগডহর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রেও একই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সেখানেও অনেক ভোটার ভোট দিতে না পেরে বাড়িতে চলে যাচ্ছে অনেকেই।  এ বিষয়ে জানতে চাইলে মসিকের সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তা ও জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, বয়স্কদের আঙুলের রেখা মুছে যাওয়ার কারণে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে একাধিকবার চেষ্টাল পর অনেকের ভোট হয়েছে। তারপরও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ি বয়স্ক ভোটারদের ভোট নিশ্চিতের চেষ্টা করছি। প্রসঙ্গত, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের এই দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন পাঁচজন প্রার্থী। তারা হলেন- ঘড়ি প্রতীক নিয়ে মসিকের সদ্য সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু, ঘোঢ়া প্রতীকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, হাতি প্রতীকে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. সাদেকুল হক খান মিল্কি (টজু), হরিণ প্রতীকে কৃষকলীগ নেতা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এবং জাতীয় পার্টির মনোনীত নাঙ্গল প্রতীকে মো. শহীদুল ইসলাম (স্বপন মন্ডল)।   
০৯ মার্চ ২০২৪, ১৪:১৯

গোপনে নারীর গোসলের ভিডিও ধারণ, অভিযোগ দিয়েও মিলছে না প্রতিকার
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে এক নারীর গোসলের ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রিফাত (১৮) নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। রিফাত উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নের নান্দুরিয়া গ্রামের খন্দকার রিপনের ছেলে। এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওই নারীর বাড়ির গোসলখানা থেকে ভিডিও ধারণ করে রিফাত। এ বিষয়ে ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ওই নারীর বাবা বলেন, গোপনে আমার মেয়ের ভিডিও ধারণ করে প্রতিবেশী রিফাত। তারপর ওই ভিডিও তার বন্ধুর নিকট পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করে। রিফাতের ওই বন্ধু আমার মেয়ের ইমো নাম্বারে ধারণকৃত ভিডিও পাঠিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। তাতে রাজি না হওয়ায় ৬ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেয়। মেয়ের স্বামী সৌদি আরব থেকে এই ভিডিও দেখার পর আমার মেয়েকে তালাক দিতে চায়। এ ঘটনায় আমার মেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ভুক্তভোগী নারীর বাবা আরও বলেন, ঘটনার পরদিন থানায় অভিযোগ দিলে দেলদুয়ার থানার এসআই মো. ইউসুফ আলী তদন্তে আসে। তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন রিফাত এসএসসি পরীক্ষার্থী তাই আপাতত কিছু করা যাবে না, পরীক্ষা শেষে ব্যবস্থা নেবো। এ ছাড়াও ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলেও জানান এসআই ইউসুফ। এদিকে অভিযোগ দেওয়ায় রিফাতের বাবা, চাচা খন্দকার মনোয়ার ও স্থানীয় সাবেক মহিলা মেম্বার আঞ্জুমানারা মিলে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। তারা বলে অভিযোগ তুলে না নিলে তাদের মেরে লাশ গুম করে ফেলবে। তিনি বলেন, আমার মেয়েকে চোখে-চোখে রাখতে হয়, কখন যেন আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেয়। অপরদিকে আসামীদের ভয়ে থাকতে হয় কখন যেন আমাকে প্রাণে মেরে ফেলে। ভুক্তভোগী ওই নারীর চাচা জানায়, রিফাতের বাবা খন্দকার রিপন ভুল স্বীকার করেছে। সেই সঙ্গে অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। সমাজে নিরীহ হওয়ায় আমরা কি বিচার পাব না। ভুক্তভোগী নারী বলেন, তিনি দুর্নামের ভয়ে এসএসসি পাস করেও কোনো কলেজে ভর্তি হননি। লেখাপড়া বাদ দিয়ে ঘরে বসে থেকেও আমার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটল। এ ঘটনার সঠিক বিচার না পেলে তিনি আত্মহত্যার পথ বেঁছে নেবেন। অভিযুক্ত রিফাতের বাবা খন্দকার রিপন জানান, ঘটনাটি সামাজিকভাবে বসে মীমাংসার চেষ্টা করছি। এ ঘটনায় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. আব্দুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ঘটনাটি অত্যান্ত ন্যাক্কারজনক। এ বিষয়ে দেলদুয়ার থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. ইউসুফ আলী মুঠোফোনে জানান তিনি কোন বক্তব্য দিতে পারবে না। দেলদুয়ার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। অভিযুক্তকে সনাক্ত করতে না পরায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
০৭ মার্চ ২০২৪, ১২:২৯

মিলছে না ফাইনালের টিকিট
বিপিএলের দশম আসরের ফাইনালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল। শিরোপার এই লড়াই দেখতে মুখিয়ে রয়েছেন ক্রিকেট-ভক্তরা। তবে ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট পাচ্ছেন না তারা। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা ৩০ মিনিট থেকে টিকিট বিক্রি করার কথা ছিল। প্রিয় দলের খেলা দেখতে তাই ভোর থেকেই টিকিট নিতে মিরপুরের ইনডোর এবং স্টেডিয়ামের ১ নম্বর গেটে ভিড় জমাতে থাকেন ক্রিকেট-ভক্তরা। কিন্তু বেলা ১২টা বাজলেও শুরু হয়নি টিকিট বিক্রি। এতে বিসিবির প্রতি ক্ষুব্ধ দর্শকরা। এ সময় বিসিবিকে 'ভুয়া ভুয়া' বলে স্লোগান দিতে থাকেন তারা। টিকিট বিক্রিতে অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের প্রতিবাদে ক্রীড়া-ভক্তদের বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে নিয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়। অন্যদিকে মিরপুরের স্থানীয় ও টিকিট প্রত্যাশীদের ভাষ্য, আমরা কাছে থেকে যদি টিকিট না পাই, তাহলে দূরে যারা রয়েছে; তারা কিভাবে খেলা দেখবে। ২৫ হাজার টিকিট কোথায় গেল, আমরা জানতে চাই। উল্লেখ্য, বিপিএলের ফাইনালে আগামী ১ মার্চ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হবে ‘মিনি জাতীয় দল’ খ্যাত বরিশাল। এর আগে, ২০২২ সালের বিপিএল ফাইনালেও মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। যেখানে কুমিল্লা শেষ হাসি হেসেছিল।
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৪০

মাদক নিরাময় কেন্দ্র ওয়েসিসে মিলছে আন্তর্জাতিক মানের সেবা
দেশের একটি নামকরা মেডিকেল কলেজের ছাত্র আতিকুর রহমান (ছদ্মনাম)। প্রথম বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন এক ছাত্রীর প্রেম পড়ে পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে রেজাল্টও খারাপ করেন তিনি। এরপর মানসিক অবসাদে ভুগে ধীরে ধীরে ভয়াবহ মাদকসেবী হয়ে পড়েন আতিক। মাদক সেবনের পাশাপাশি মাদক কারবারেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। আরেকজন যুবকের নাম রানা হোসাইন (ছদ্মনাম)। পড়ালেখার পাশাপাশি গরুর খামার গড়ে অল্পদিনে সফলতা পান তিনি। এরপর নামেন ইজারা ব্যবসায়। স্থানীয় বন্ধুদের মাধ্যমে ফেনসিডিল সেবন শুরু করেন তিনি, কয়েকদিন পর হেরোইনে আসক্ত হয়ে পড়েন রানা। তার পরিবর্তন দেখে পরিবারের লোকেরা তাকে বিয়ে দিয়ে দেন। বিয়ের পর সংসারে দুই সন্তান এলেও তিনি মাদক থেকে বের হতে পারেননি। সেই সঙ্গে ব্যবসায়েও ধ্বস নামে তার। এক যুগ পরে রানা বুঝতে পারেন সকলের ভালোর জন্য তাকে সংশোধন হওয়া দরকার, নিজ উদ্যোগে ভর্তি হন মাদক নিরাময় কেন্দ্রে।  আতিক ও রানা মাদকের অন্ধকার জগত থেকে ফিরতে চিকিৎসা নেন আড়াই বছর আগে বাংলাদেশ পুলিশের উদ্যোগে নির্মিত ‘ওয়েসিস’ মাদক নিরাময়, পুনর্বাসন ও স্বাস্থ্য পরামর্শ কেন্দ্রে। তাদের মত অনেক মানুষের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে ‘ওয়েসিস’। ‘ওয়েসিস’ এর বাংলা হলো মরূদ্যান। ঊষরপ্রান্তরে মনোরম স্থান; নিরানন্দ জীবনে আনন্দের স্মৃতি বা অভিজ্ঞতা। দেশের নড়বড়ে মাদকাসক্তির চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের বিপরীতে ‘ওয়েসিস’ এসেছে মরুভূমির মধ্যে সবুজ আর বারিবিন্দু নিয়ে মাদকাসক্তদের সেবার প্রতিষ্ঠান হিসেবে। জানা গেছে, পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে রাজধানীর অদূরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পে ২০২১ সালের অক্টোবরে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ‘ওয়েসিস’। অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর ও নান্দনিক পরিবেশে উন্নত ব্যবস্থাপনায় গড়ে ওঠা দেশের একমাত্র অত্যাধুনিক মাদক নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র এটি। এখান থেকে এখন পর্যন্ত দুই শতাধিকের বেশি মাদকাসক্ত নারী-পুরুষ চিকিৎসা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বে আছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার  হাবিবুর রহমান।  মাদকাসক্ত সব রোগীই এখানে চিকিৎসা নিতে পারেন। যারা চিকিৎসা নিতে আসেন তাদের সবসময় কাউন্সিলিং করা হয়। কেন মাদকে জড়ালেন, তাকে যেসব ওষুধ দেওয়া হচ্ছে সব ঠিক মতো কাজ করছে কি না, এসব বিষয় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখা হয়। চার মাস চিকিৎসা শেষে কেউ ফিরে গেলেই ওয়েসিসের কাজ শেষ হয়ে যায় না। একজন সিনিয়র কর্মকর্তা প্রতিনিয়ত রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন এবং তারা ওয়েসিসে এলে বিনামূল্যে ফলোআপ চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। ফলোআপে যদি আমাদের সন্দেহ হয় তাহলে ডোপ টেস্ট করা হবে। এই ভয়ে কেউ পুনরায় মাদকে জড়ান না। ওয়েসিসে একসঙ্গে ৪৬ জন পুরুষ ও ১৪ জন নারী মিলিয়ে মোট ৬০ জনকে একসঙ্গে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। এছাড়া বহির্বিভাগে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়া হয়। তাছাড়া টেলি-মেডিসিনের মাধ্যমেও অনেকে সেবা নেন; যেখানে অভিভাবকরা বেশি ফোন করেন। সন্তান বা পরিবারের কোনো সদস্য মাদক সেবন করছে বা লক্ষ্মণ আছে এমন সন্দেহ থেকে অনেকে ফোন করেন। তখন ওয়েসিসের বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন পরামর্শ দেন, যা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হয়। প্রতিমাসে দেড় শতাধিকের বেশি মানুষ টেলি-সেবা নিয়ে থাকেন। এজন্য ফোন করতে হয় ০১৯৩০-৪০৪০৪০ এই নম্বরে। ওয়েসিসে চিকিৎসা নেওয়া আতিকের পরিবার জানিয়েছে, আতিকের অবস্থা জানতে পেরে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। তবে কিছুদিন পর সেখান থেকে ফিরে সেবনের সঙ্গে মাদক বিক্রিতে জড়িয়ে পড়ে। কয়েকটি নিরাময় কেন্দ্রে তাকে চিকিৎসা করানো হলেও কোনো সুফল পাননি। এরপর তাকে ওয়েসিসে ভর্তি করানো হয়। আতিক বলেন, আমি আমার অতীতের সব ভুল বুঝতে পেরেছি এখানে এসে। এখন আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, হাদিসের বই পড়ি, জিম করি। এখানের খাওয়ার মান উন্নত। এখানকার সবাই খুব ভালো। মনে হয় এখন আমি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই বসবাস করছি। প্রতিষ্ঠানটির মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোর্তজা হাসান বলেন, এখানে বেশিরভাগ হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ হরেক মাদকে আসক্ত রোগীরা আসেন। প্রকারভেদে তাদের বিভিন্ন চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে এখানে ইয়াবা আসক্ত রোগী বেশি। এরপর রয়েছে গাঁজাসেবীরা। ইয়াবা ও গাঁজা বহন করা সহজ, এ জন্য এসব নেশায় মানুষ বেশি আসক্ত হয়। ওয়েসিসের সক্ষমতা নিয়ে তিনি বলেন, দেশের অন্য সব হাসপাতাল বা নিরাময় কেন্দ্রের চেয়ে আমরা বেশি সেবা দিকে পারবো। দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা তুলনা করতে পারি। আমাদের এখানে সপ্তাহে নয়, প্রতিদিন সাইক্রেটিস্টরা রোগী দেখেন। রাতের বেলায়ও চিকিৎসকরা সেবা দেন। অন্য প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা নিয়ে আসা অনেকে এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সেখানকার চিকিৎসা ব্যবস্থা আর এখানকার চিকিৎসা পুরোপুরি ব্যতিক্রম বলে তারাই জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সরেজমিনে ওসেসিসে ঘুরে দেখা গেছে, সাততলা ভবনটির নিচতলায় নিরাপত্তা কর্মীদের কক্ষ। যেখানে পুলিশও শিফট ভেদে ডিউটি করেন। এরই পাশে আউটডোরে রোগী দেখার রুম ও পাশে রোগীদের জন্য তৈরি রান্নাঘর। ভবনটির ১ থেকে ৩ তলা পর্যন্ত রোগীদের আবাসিক ব্যবস্থায় চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। সর্বাধুনিক প্যাথলজি ল্যাবের পাশাপাশি বিশেষ কেবিন ও ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা ও লাইব্রেরির সুব্যবস্থা আছে। এখানে এসি ফ্লোর, জেনারেল বেডের ওয়ার্ড,  নার্সিং স্টেশন, ফায়ার ফাইটিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোগীদের ঘোরার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে সুসজ্জিত বাগান। সেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশে বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোগীদের জন্য ইয়োগা ও মেডিটেশন করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বাগানের পাশেই রয়েছে ব্যায়ামাগার। মাদকাসক্তদের পরিপূর্ণ সেবা দিতে সরকারের সব বিধিমালা মেনেই গড়ে তোলা হয়েছে ওয়েসিস নামক প্রতিষ্ঠানটি। এখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও বিশেষজ্ঞ মনোরোগ চিকিৎসক, সাইকোলজিস্ট, সাইকোথেরাপিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট, ইয়োগা এক্সপার্ট এবং অভিজ্ঞ অ্যাডিকশন কাউন্সিলরদের মাধ্যমে সেবা পাচ্ছেন সেবা প্রত্যাশীরা। প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেন পুলিশের পরিদর্শক সুশান্ত নারায়ণ দে বলেন, ‘পত্রপত্রিকার মাধ্যমে আমরা দেখি মাদক নিরাময়ের নামে রোগীদের আটকে রাখা, নির্যাতন করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের প্রধান লক্ষ্য রোগীদের সেবা দেওয়া। আন্তজার্তিক মানদণ্ড অনুযায়ী একজন রোগীর জন্য যা যা দরকার সবই এখানে আছে। অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান স্যার সরাসরি এটা তদারকি করেন। এখানে কোনো কিছুর ব্যত্যয় যাতে না হয় সেক্ষেত্রে তিনি খুবই কঠোর। আমাদের এখানে বাইরের খাবারের অনুমোদন নেই। টাটকা খাবার এখানেই রান্না করা হয়; যা রোগী ও স্টাফ মিলে প্রতি-বেলায় প্রায় ৭০ জনের। ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, ওয়েসিসে চিকিৎসার মান ও পরিবেশ আন্তর্জাতিক মানের গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি অনেকে বিসিএস পরীক্ষারও জন্য পড়াশোনা করছেন। নারীদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের কাছে যারা সেবা নিতে এসেছেন তারা চিকিৎসা শেষে ফিরে যাওয়ার পরেও তাদেরকে মনিটরিং করা হয়। ফোনে রোগী বা তার স্বজনদের কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনি সুস্থ আছেন কি না। যদি সমস্যা হয় সেটা কী ধরনের সমস্যা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে আমরা পরামর্শ দিই তিনি যাতে সুস্থ থাকেন।  তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার এই সময়ে যতটুকু কাজ আমরা করেছি সবই সাক্সসেসফুলি হয়েছে। এটাকে সমাজের পজিটিভ দিক হিসেবে মনে করি যে পুলিশ আইনের প্রয়োগ না করেও এমন কাজে সফল হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বলেন, ওয়েসিসের কার্যক্রম বড় পরিসরে করার জন্য মানিকগঞ্জে একটি জায়গা নেওয়া হয়েছে। সেখানে রিসোর্ট টাইপের নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। সেখানে খেলার মাঠ, উ-মুক্ত জায়গা ও পাশে কালিগঙ্গা নদীতে নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। সেখানকার যে চিকিৎসা পদ্ধতি থাকবে তা সম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক মানের। আমরা মনে করি মাদক নিরাময়ের ক্ষেত্রে এটি বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।  
২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৪৫

হিলিতে দেখা মিলছে না সূর্যের, দুর্ভোগে মানুষ
দিনাজপুরের হিলিতে গত দুই দিন থেকে ঘন কুয়াশাতে ঢেকে আছে চারপাশ, দেখা মিলেনি সূর্যের। অতিরিক্ত শীতের কারণে দুর্ভোগে দরিদ্র নিন্ম আয়ের মানুষগুলো, বইছে হিমেল বাতাস। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।  বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নির্ধারণ করেছে আবহাওয়া অফিস।  হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা সম্পা বেগম বলেন, আমার ছেলের বয়স ১০ মাস। হঠাৎ করে স্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিয়েছে। যার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসলাম। অতিরিক্ত শীতের কারণে ডায়রিয়াও হয়েছে, খুব চিন্তায় আছি। ডাক্তার নিয়মিত চিকিৎসা দিচ্ছে। এখন কিছুটা কমেছে।  হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ইলতুতমিস বলেন, এক সপ্তাহ থেকে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্ক রোগী বেশি। আমরা নিয়মিত চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি এবং শীত থেকে রক্ষার জন্য গরম কাপড় ব্যবহারের প্রতি বেশি নজর দিচ্ছি। 
১১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:০৩

কুড়িগ্রামে দুপুরেও মিলছে না সূর্যের দেখা
পৌষের শেষে এসে কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশার দাপট বেড়েছে। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে উত্তরের হিমেল হাওয়া। ফলে শীতের তীব্রতা বেড়েছে এ জেলায়। এদিকে দুপুর পর্যন্ত দেখা মিলছে না সূর্যের দেখা। গতকাল সোমবার বিকেল থেকেই শীতের তীব্রতা বাড়তে থাকে এ জেলায়। রাতভর বৃষ্টির ফোঁটার মত ঝরে শিশির। মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এদিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত ঠান্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এ অবস্থায় শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে সময় মতো কাজে বের হতে পারছে না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের কিছুটা উত্তাপ ছড়ালেও বিকেল হতেই তাপমাত্রা আবারও নিম্নগামী হতে থাকে।  নাগেশ্বরী উপজেলার দিনমুজুর কাশেম আলী জানান, শীতে তাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। ঠান্ডায় তাদের কাজে যেতে কষ্ট হয়।  সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের বানিয়া পাড়া এলাকার হাফিজুদ্দি বলেন, ঠান্ডায় আমার অবস্থা শেষ। হাতে টাকা পয়সা নাই, শীতের কাপড় কিনতে পারি নাই। মানুষ একটা জ্যাকেট দিছে সেটা দিয়ে একটু ঠান্ডা কমছে। একই এলাকার মান্নান মিয়া বলেন, আজ কুয়াশা কম কিন্তু সেই ঠান্ডা। হাত পা বরফ হয়ে যাচ্ছে। মাঠে কাজ করা যাচ্ছে না। বাতাসে কাবু করে ফেলছে। সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বাতেন সরকার বলেন, কিছুদিন আগে মাদরাসার ছাত্রদের জন্য ২০০ কম্বল পেয়েছি তা বিতরণ করা হয়েছে। আর কোন শীতবস্ত্র পাইনি। তবে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।  নাগেশ্বরী উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোফাখ্খারুল ইসলাম জানান, এ উপজেলায় প্রথম ধাপে ৬ হাজার ১শ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আবার ১৬শ কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এগুলো বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম।  কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, এরকম তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন থাকবে। তবে এ মাসের মধ্যে আরও একটি শৈত্য প্রবাহ এ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে। 
০৯ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:৩৬
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়