• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
স্বাধীন বাংলায় নারী কেন্দ্রিক যত চলচ্চিত্র
একজন নারী তার পরিপূর্ণ অধিকার আদায়ের দাবিতে দীর্ঘকাল ধরে যে আন্দোলন চালিয়ে আসছে, তারই সম্মানস্বরূপ প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ৮ মার্চ নারী দিবস পালন করা হয়।উপমহাদেশের বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই নায়ককেন্দ্রিক ছবি, বাংলা চলচ্চিত্রও এর ব্যতিক্রম নয়। এর মাঝেও এই দেশে নির্মিত হয়েছে বেশ কিছু নারীকেন্দ্রিক চলচ্চিত্র, যার বেশিরভাগই হয়েছে দর্শকনন্দিত, পেয়েছে প্রশংসা, পুরস্কারও। আর্ন্তজাতিক নারী দিবসে তেমনি অন্যতম সেরা কয়েকটি চলচ্চিত্র নিয়ে আরটিভির বিশেষ আয়োজন— রূপবান (১৯৬৫) বাংলার নারীর ধৈর্য, ত্যাগ ও সংগ্রামের অনবদ্য গাঁথা এটি। একজন নারীর আশা-আকাঙ্ক্ষা ও মর্যাদাবোধের সফল চলচ্চিত্র রুপায়ন ‘রূপবান’। সালাউদ্দিন পরিচালিত এই ছবিটি ছিল প্রথম লোককাহিনীনির্ভর ও সুপারহিট চলচ্চিত্র। সুজাতা রূপবান চরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি খ্যাতি পান। সত্য সাহার সঙ্গীতায়োজনে এবং আব্দুল আলীম ও নীনা হামিদের কণ্ঠে গাওয়া এই ছবির গান মানুষের মুখে মুখে ফিরত। সারেং বউ (১৯৭৮) শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে ‘সারেং বউ’ পরিচালনা করেন আবদুল্লাহ আল মামুন। এই ছবিতে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের এক নারীর জীবন সংগ্রাম স্থান পেয়েছে। ছবিতে দেখা যায়, কদম সারেং ভালোবেসে বিয়ে করে নবিতনকে। বিয়ের কিছুদিন পরে আবার চলে যান জাহাজে। কদম মাঝেমধ্যেই নবিতনের কাছে চিঠি ও টাকা পাঠায়। কিন্তু গ্রামের মোড়ল ডাক পিয়নকে হাত করে সেই সব নিয়ে নেয়। তিনি অভাবের সুযোগে নবিতনকে লালসার শিকার বানাতে চান। কিন্তু নবিতন ঢেঁকিতে ধান ভানার কাজ করে সংসার চালান। কোনোভাবে মোড়লের ফাঁদে পা দেন না। এভাবে এগিয়ে যায় কাহিনী। স্বামী ফিরে আসার পর নবিতন নতুন বাস্তবতার মুখোমুখি হন। একদম শেষ দৃশ্যে থাকে দারুণ চমক। ফারুকী কবরী অভিনীত এই ছবিটিতে আব্দুল জব্বারের কন্ঠে ‘ওরে নীল দরিয়া’ গানটি এখনো সমান জনপ্রিয়। নবিতন চরিত্রে অভিনয়ে কবরী জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন। গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮)  নিজের লেখা উপন্যাস অবলম্বনে আমজাদ হোসেন নির্মান করেন ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’। আমাদের সমাজের বাস্তবতায় একজন খেটে খাওয়া গ্রামীণ নারীকে পদে পদে কত সমস্যায় পড়তে হয়, তা দেখানো হয়েছে এই ছবিতে। কিন্তু দৃঢ়প্রত্যয়ী নারী নিজের মর্যাদাবোধ নিয়ে এগিয়ে চলেন। ববিতা, ফারুক, আনোয়ার হোসেন, আনোয়ারা অভিনীত এই ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন আলাউদ্দিন আলী। গানগুলোও বেশ জনপ্রিয় হয়। ছবিটি সেরা চলচ্চিত্রসহ মোট ১২টি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। ববিতার ক্যারিয়ারে এটি সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে বিবেচিত হয়। সূর্য দীঘল বাড়ী (১৯৭৯)  আবু ইসহাকের কালজয়ী উপন্যাস অবলম্বনে ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ যৌথভাবে নির্মাণ করেন মসিউদ্দিন শাকের ও শেখ নিয়ামত আলী। এটি বাংলাদেশের প্রথম সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। বাংলা ১৯৫০ সনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে অবিভক্ত ভারতের বাংলায় ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে ‘পঞ্চাশের আকাল’ নামে যে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, সেই দুর্ভিক্ষে লক্ষ দরিদ্র মানুষ প্রাণ হারায়। যারা কোনোমতে শহরের লঙ্গরখানায় পাত পেতে বাঁচতে পেরেছিল তাদেরই একজন স্বামী পরিত্যক্ত জয়গুন। সঙ্গে তার মৃত প্রথম স্বামীর ঘরের ছেলে ও দ্বিতীয় স্বামীর ঘরের মেয়ে। আরো আছে মৃত ভাইয়ের স্ত্রী-পুত্র। তারা গ্রামে ফিরে এসে এমন এক খন্ড জমিতে ঘর তৈরি করে যেটি অপয়া ভিটে বলে পরিচিতি ছিল। দুর্ভিক্ষ, দারিদ্রতা, মাতৃত্ব সর্বোপরি এক নারীর জীবন সংগ্রামের দৃশ্য ফুটে উঠেছে এই চলচ্চিত্রে। ছবিটি সেরা চলচ্চিত্রসহ মোট ৬টি শাখায় জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম শক্তিশালী নারী জয়গুন চরিত্রে ডলি আনোয়ারের অনবদ্য অভিনয় তাকে এনে দেয় জাতীয় পুরস্কার। ভাত দে (১৯৮৪)  আমজাদ হোসেনের পরিচালনায় ‘ভাত দে’ ছবিতে দেখা যায়, জরি একজন গরিব বাউলের মেয়ে। ছোটবেলায় অভাবের কারণে মা চলে যায়। অন্ধ বাউল বাবার অভাব-অনটনের সংসারে সে বড় হতে থাকে। জরি যখন বড় হয়,একদিন বাবাও ভাত যোগাড় করতে গিয়়ে মারা যায়। এর পর শুরু হয় সহায়-সম্বলহীন এক দরিদ্র নারীর জীবন সংগ্রাম। আসে প্রেম ও অতঃপর করুণ পরিণতি। আলমগীর, শাবানা, আনোয়ার হোসেন অভিনীত সিনেমাটি শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার সহ মোট ৯টি শাখায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করে। জরি চরিত্রে অভিনয় করে শাবানা তার সেরা চলচ্চিত্র দিয়ে ঘরে তুলে নেন জাতীয় পুরস্কার। এছাড়া বাংলা ছবির মধ্যে ‘ভাত দে’ প্রথম কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেয়। হাঙর নদী গ্রেনেড (১৯৯৭) কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনে সরকারি অনুদানে ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন চাষী নজরুল ইসলাম। মুক্তিযুদ্ধে নারীর ত্যাগ-তিতিক্ষার অসাধারণ রুপায়ন এই চলচ্চিত্র। গল্পের কেন্দ্রে থাকে হলদি গাঁ আর সেই গ্রামের এককালের দস্যি মেয়ে বুড়ি। বয়সে অনেক বড় চাচাতো ভাই গফুরের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের ফলে রাতারাতি গফুরের আগের পক্ষের দুই ছেলে সলিম ও কলিমের মা হয়ে যায়। বুড়ির কোলে আসে নিজের সন্তান রইস। কিন্তু আর ১০টি শিশুর মতো স্বাভাবিক নয়। ১৯৭১ সালে কিছু মুক্তিযোদ্ধাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের সন্তানকেই মুক্তিযোদ্ধা বলে পাকিস্তান আর্মিদের হাতে তুলে দেন। সুচরিতা, সোহেল রানা,অরুণা বিশ্বাস অভিনীত এই ছবিটি চারটি বিভাগে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করে। বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম শক্তিশালী নারী চরিত্র বুড়ি চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় স্বরুপ জাতীয় পুরস্কার ঘরে তুলেন সুচরিতা। নিরন্তর (২০০৬)  হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘জনম জনম’ অবলম্বনে আবু সাইয়ীদের অন্যতম সেরা একটি চলচ্চিত্র ‘নিরন্তর’। বাবার অন্ধত্বের কারণে তিথিদের পরিবারে আকস্মিক দুর্যোগ নেমে আসে। কোনো চাকরি যোগাড় করতে না পেরে তিথি অন্ধকার পথে পা বাড়ায়। এই ছাড়া বয়ে বেড়ায় শৈশবের নির্যাতনের স্মৃতি। ছোট ভাইয়ের ব্যবসায় এক সময় তিথিদের পরিবার সচ্ছলতা ফিরে পায়। তিথিও দেহব্যবসা ছেড়ে দেয়। কিন্তু তার জীবন দিন দিন ফ্যাঁকাসে হতে থাকে। কোথাও কথা বলার একজন মানুষ খুঁজে পায় না। শাবনূর, লিটু আনাম, ইলিয়াস কাঞ্চন, ডলি জহুর অভিনীত এই ছবিটি বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক সম্মাননাসহ বাংলাদেশের হয়ে অস্কারে প্রতিনিধিত্ব করে। চিত্রনায়িকা শাবনূরের ক্যারিয়ারে এই ছবিটি অনন্য হয়ে থাকবে। থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার (২০০৯) আলোচিত নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর চলচ্চিত্র ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’ এর প্রধান চরিত্র রুবা। নানা সামাজিক সঙ্কটে বেড়ে ওঠা তরুণী বেছে নেয় লিভ টুগেদার। একটি খুনের ঘটনায় সঙ্গী জেলে গেলে নানা ধরনের বিপদে পড়ে। এর মধ্যে সাহায্য করে এক কণ্ঠশিল্পী বন্ধু। ত্রিমুখী এক দ্বন্দ্বে ছবিটি এগিয়ে যায়। রুবা চরিত্রে তিশার অনবদ্য অভিনয়ের পাশাপাশি এই ছবিতে আরো ছিলেন মোশাররফ করিম ও তপু। জনপ্রিয় এই ছবিটি বাংলাদেশের হয়ে অস্কারে প্রতিনিধিত্ব করে। গেরিলা (২০১০)  সৈয়দ শামসুল হকের ‘নিষিদ্ধ লোবান’ ও পরিচালকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে নির্মিত নাসিরউদ্দিন ইউসুফের চলচ্চিত্র ‘গেরিলা’। মুক্তিযুদ্ধ সময়কার গ্রামীন ও শহুরের প্রেক্ষাপটে অপূর্ব সংমিশ্রন এই ছবিতে প্রধান চরিত্র বিলকিস। সেও নানাভাবে মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে,দেশের জন্য নিজের জীবন দিয়ে দেয়। সরকারি অনুদানে নির্মিত অনন্য এই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রটি সেরা চলচ্চিত্রসহ মোট ১১টি বিভাগে জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম শক্তিশালী নারী চরিত্র বিলকিস রুপদানদারী জয়া আহসান জিতে নেন জাতীয় পুরস্কার। সুতপার ঠিকানা (২০১৫)  একজন নারীর শৈশব থেকে বৃদ্ধ পুরো জীবন কাটে বাবা, স্বামী, সন্তানদের আশ্রয়ে। এর মাঝেও কিছু নারী নিজের ঠিকানা খুঁজতে চেষ্টা করে। তেমনিই এক নারী সুতপা। দর্শকদের মাঝে এইরকম-ই গল্প উপহার দিয়েছেন প্রসূন রহমান। সরকারি অনুদানে নির্মিত এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছে অপর্ণা ঘোষ। পুরো ছবি তিনি একাই টেনেছেন, কুমার বিশ্বজিতের সঙ্গীতায়োজন ছিল প্রশংসনীয়, ধারা বর্ণনায় আসাদুজ্জামান নূর অন্যরকম আবহ সৃষ্টি করেছে। ছবিটি বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে। রেহানা মরিয়ম নূর (২০২১)  বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম এক নাম ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। যার মধ্য দিয়ে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথমবার অফিশিয়াল সিলেকশনে স্থান করে নেয় বাংলাদেশের কোনো ছবি। তরুণ নির্মাতা আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের হাত ধরে আসে এই গৌরবান্বিত মুহূর্ত! প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করেই এই সিনেমার গল্প। যেখানে রেহানা একজন মা, মেয়ে, বোন ও শিক্ষক হিসেবে জটিল জীবনযাপন করে। এরমধ্যে এক সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বেরোনোর সময় রেহানা একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সাক্ষী হয়। এরপর থেকে সে এক ছাত্রীর পক্ষ হয়ে সহকর্মী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ঘটনার প্রতিবাদ করতে শুরু করেন এবং ক্রমশ একরোখা হয়ে ওঠেন। কিন্তু একই সময়ে তার ৬ বছর বয়সী মেয়ের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে রূঢ় আচরণের অভিযোগ করা হয়। এমন অবস্থায় অনড় রেহানা তথাকথিত নিয়মের বাইরে থেকে সেই ছাত্রী ও তার সন্তানের জন্য ন্যায় বিচারের খোঁজ করতে থাকেন। যে চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। এই ছবির জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও! হাওয়া  (২০২২)   ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া বক্স অফিস কাঁপানো মেজবাউর রহমান সুমনের ছবি ‘হাওয়া’। এক দল জেলের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার গল্পে নির্মিত হলেও শেষ পর্যন্ত ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র একজন নারী! বেদের মেয়ে গুলতি। মাছ ধরতে গিয়ে জাল ফেলে জেলের সেই দলটি যাকে সমুদ্র থেকে নৌকায় তোলে! এরপর থেকে ট্রলারে রহস্যময় সব ঘটনা ঘটতে থাকে। তাদের জালে কোন মাছ ওঠে না এবং গভীর সমুদ্রে হারিয়ে যায়। তার হাতেই একে একে শিকার হয় মাঝির দলের সদস্যরা! কেন জেলের এই দলটিকে গুলতির শিকারে পরিণত হতে হয়, তার পেছনে আছে করুণ আরেকটি গল্প! বেদের মেয়ে গুলতির চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাজিফা তুষি। শিমু  (২০২২)   ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া রুবাইয়াত হোসেন পরিচালিত আলোচিত ছবি ‘শিমু’। ২৩ বছর বয়সী যুবতী শিমুকে নিয়ে ছবির কাহিনী। ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন তিনি। স্বভাবতই মালিকপক্ষের শোষণের শিকার হন। নিজের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হন শিমু। তার সহকর্মীদের সাথে নিয়ে একটি ইউনিয়ন শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। ব্যবস্থাপনার হুমকি এবং স্বামীর অসম্মতি সত্ত্বেও শিমুর এগিয়ে যাওয়া এবং লড়াইয়ের মানসিকতা উঠে এসেছে ছবিতে। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিকিতা নন্দিনী শিমু। বিউটি সার্কাস  (২০২২)   সার্কাসের মালিক ও প্রধান নারী যাদুশিল্পী বিউটির গল্প নিয়ে নির্মিত মাহমুদ দিদারের ছবি ‘বিউটি সার্কাস’। বিউটির যাদু প্রদর্শনীর কারিশমা আর রূপে পাগল এলাকার তিন প্রভাবশালী ব্যক্তি। বিউটিকে নিজের করে পাবার প্রতিযোগিতায় নামে তারা। এতে এক সময় হুমকির মুখে পড়ে যায় পুরো বিউটির সার্কাসটি। কিন্তু কৌশলী বিউটি হাল ছাড়বার পাত্রী নয়। বুদ্ধির জোরে সে শেষ পর্যন্ত কাটিয়ে ওঠে গভীর সংকট। বিউটির চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। এই ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কারও অর্জন করেন জয়া। এদিকে দেশে ডিজিটাল চলচ্চিত্রের জোয়ার শুরু হলে জাজ মাল্টিমিডিয়া বানায় ‘অগ্নি’, ‘অগ্নি ২’ ও ‘রক্ত’। এছাড়া চিত্র নায়িকা ববি বানান তার নিজের প্রযোজনায় ‘বিজলী’। এসব ছবি একই সঙ্গে নারীপ্রধান এবং অ্যাকশনধর্মী। ‘ন’ ডরাই’, ‘দেবী’  নারীপ্রধান বাংলাদেশি ছবি হিসেবে আলোচিত। পাশাপাশি সর্বশেষ বাংলাদেশের প্রথম নারী কবি বলা হয় চন্দ্রাবতীকে। মলুয়া, দস্যু কেনারামের পালা এবং রামায়ণ তার অন্যতম সৃষ্টি। তবে তার সৃষ্টির চেয়ে ঢের বেশি নাটকীয় এবং একইসঙ্গে বিয়োগান্তক তার নিজের জীবন। ষোড়শ শতকের অসম্ভব প্রতিভাবান ও সংগ্রামী এই নারীকে নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘চন্দ্রাবতী কথা’। যা দর্শক মহলে সাড়া ফেলেছে।  
০৮ মার্চ ২০২৪, ১৭:০২

পাঞ্জাবের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথে মরিয়ম নওয়াজ
পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ পাঞ্জাবের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথে অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কন্যা ও পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর জেষ্ঠ্য সহ-সভাপতি মরিয়ম নওয়াজ। গত ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পাঞ্জাব প্রাদেশিক পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে  পিএমএল-এন এবং আজ সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করতে চলেছে পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলি। যেখানে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মরিয়ম নওয়াজের নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি। নির্বাচিত হলে তিনিই হবেন পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী।  সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।  প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার বেলা ১১টায় পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলির অধিবেশন ডাকা হয়েছে এবং এতে পাঞ্জাবের নবনির্বাচিত স্পিকার মালিক আহমেদ খান সভাপতিত্ব করছেন। প্রাদেশিক পরিষদে ২২৪ সদস্যের সমর্থন পেয়েছে পিএমএল-এন। মুখ্যমন্ত্রী পদে মরিয়মের প্রতিদ্বন্দ্বী সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিল (এসআইসি) ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সিনিয়র নেতা আফতাব আহমেদ খান। তার পেছনে সমর্থন রয়েছে ১০৩ জন সদস্যের। আফতাব ১৯৮৮, ১৯৯৩ এবং ২০০২ সালে পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলিতে তিন মেয়াদে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এমপিএ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ২০১৩ সালে পিটিআইতে যোগদান করেন এবং বর্তমানে তিনি তার চতুর্থ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলিতে বর্তমানে ৩২৭টি আসন রয়েছে এবং এখানে মুখ্যমন্ত্রী পদে জিততে হলে হাউসের ন্যূনতম ১৮৭ সদস্যের সমর্থন পেতে হবে। এছাড়া পাকিস্তানের আরেক প্রদেশ সিন্ধেও সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করতে চলেছে প্রাদেশিক পরিষদ। এতে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থী মুরাদ আলি শাহ তৃতীয়বারের মতো কাঙ্খিত পদ পেতে চলেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬:৩৮

পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন মরিয়ম নওয়াজ
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ। তিনি সাত দশকের বেশি সময়ের ইতিহাসে প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন। পিএমএল-এনের নেতা ও পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ। খবর জিও নিউজের। পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষই পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা। এখানে বাস করে প্রায় ১২ কোটি ৭০ লাখ মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হলে মরিয়মের কাঁধে পড়বে পাঞ্জাবের এই বিশাল জনগোষ্ঠির দায়িত্ব। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) লাহোরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তার দলের পক্ষে ভোট দেওয়ার জনগণকে ধন্যবাদ জানান মরিয়ম নওয়াজ। তিনি বলেন, আপনাদের আস্থা ও সমর্থনই আমার প্রকৃত সম্পদ। এ সময় ‘সর্বোত্তম উপায়ে’ জনগণের সেবা করার জন্য দোয়া চান তিনি। তার নেতৃত্বে পাঞ্জাব প্রদেশে নতুন যুগের সূচনা হবে বলেও আশাবাদ প্রকাশ করেন মরিয়ম নওয়াজ। প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার এ সম্মান দেশের প্রতিটি মা, মেয়ে ও বোনকে উৎসর্গ করতে চান মরিয়ম। পাঞ্জাব শাসনের নতুন পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মরিয়ম নওয়াজ বলেন, সরকার ও দলীয় পর্যায়ে কোন কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, সে জন্য পৃথক একটি রূপরেখা তৈরি করেছে তার দল। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামো, আইনশৃঙ্খলা, কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি ও অন্যান্য খাতগুলোর ওপর সমান জোর দেওয়ার কথা বলে বলেন পিএমএল-এন নেত্রী। প্রসঙ্গত, ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে পাঞ্জাবের একটি আসন থেকে জয়লাভ করেন মরিয়ম নওয়াজ। কেন্দ্র ও প্রদেশগুলোয় জোট সরকার গঠন নিয়ে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ও পিএমএল–এনের টানা কয়েক দিনের আলোচনার পর মঙ্গলবার সমঝোতা হয়। এরপর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদে পিএমএল-এন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় মরিয়মকে।
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৫২
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়