• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo
নিপুণের প্যানেলে ভাঙন
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে যেনো আলোচনা ও উন্মাদনা শেষ নেই। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে শিল্পীদের মাঝে উত্তেজনা। ইতোমধ্যেই নতুন-পুরোনো অনেক তারকারই নির্বাচনের প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন। এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে নির্বাচনের নতুন তারিখ। এবারের নির্বাচনে মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও মিশা সওদাগর থাকবেন এক প্যানেলে। অন্যদিকে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন।  একজন রাজনীতিবিদের অনুরোধে গতবার সভাপতি পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন জানিয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, নিপুণ শুধু আমাকে না, আমার ছেলেকেও ম্যানেজ করেছে। তবু আমি দাঁড়াতাম না। আমাদের দেশের বড় একজন রাজনীতিবিদ অনুরোধ করেছিলেন। কারণ, তার প্রতি আমার একটা ভালোবাসা-শ্রদ্ধা রয়েছে, যার কারণে আমার এ জায়গায় আসতে হয়েছে। ইলিয়াস কাঞ্চন ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেয়ার পর  বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ আক্তার সভাপতি খোঁজে আছেন। শাকিব খান থেকে শুরু করে প্রস্তাব দিয়েছেন অনন্ত জলিলকেও। কিন্তু সবাই তাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত তিনি সভাপতি পাননি তবে বার বারই বলছেন নির্বাচনে চমক নিয়ে আসছেন তিনি।   এদিকে নিপুণের প্যানেলে ভাঙন দেখা যাচ্ছে। গেলবার যাদের নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন তাদের অনেকেই এবার নিপুণের সঙ্গ ত্যাগ করছেন। কেউ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না আবার কেউবা মিশা-ডিপজল প্যানেলে নাম লিখিয়েছে ইতোমধ্যে। যাদের মাঝে ইতোমধ্যে জানা গেছে গেলবার কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে ছিলেন নায়িকা শাহনূর। এবার তিনি নাম লিখিয়েছেন অন্য প্যানেলে। কারণ হিসেবে এই নায়িকা বলেন, কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদ দায়িত্ব দেয়ার পর অনেক কিছুই তারা তাদের একক সিদ্ধান্ত করেছে। কাউকে জিজ্ঞাসা করার মনে করেননি। একজনের সিদ্ধান্তই কমিটিতে চূড়ান্ত ছিল।  শাহনূর আরও বলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও দুই বছর সমিতির মিটিং ছাড়া আমাকে ডাকেনি এবং কিছুতে রাখেনি। সবকিছু থেকে আমাকে দূরে রাখা হয়েছে। শিল্পীদের প্রাপ্য সম্মান চাই। গত দুই বছরে আমরা শিল্পীরা যে, সম্মান হারিয়েছি তা ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে চাই। যার কারণে এই প্যানেলে আসা। ওই কমিটি থেকে দুই বছর তেমন কিছুই করতে পারিনি। এই কমিটিতে থেকে একসঙ্গে সবাই মিলে কাজ করব।  এদিকে কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদে কার্যকরী পরিষদে ছিলেন অভিনেতা নানা শাহ। তিনিও এবার নাম লিখিয়েছেন মিশা-ডিপজল প্যানেলে। বেশ আক্ষেপ করেই এই অভিনেতা বলেন, আগেরবার আমি ও ডি এ তায়েব নিপুণের সঙ্গে নির্বাচন করেছিলাম। ভালো কিছু কাজের আশা করেই তাদের সঙ্গে নির্বাচন করেছিলাম। তারা কথা দিয়েছিল সিনেমা নির্মাণ করবে। একটি কথা মনে রাখবেন শিল্পী সমিতি কিন্তু সিনেমা নির্মাণ করতে পারে না। কিন্তু নিপুণ কথা দিয়েছিল ৬টি সিনেমা নির্মাণ করবে। আমি তার কথা অনুযায়ী এগিয়ে ছিলাম। দুটি সিনেমা এন্টি করেছিলাম। কিন্তু তারা আমার পাশে কেউ আসেনি। আমরা শিল্পীরা সম্মান ও ভালোবাসা চাই। এটা যখন আমরা হারিয়ে ফেলি তখন খুব কষ্ট পাই। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে আমাদের অনেক শিল্পী এখন বেকার। তাদের জন্য শিল্পী সমিতি দুই বছর কি করতে পেরেছে? দুই বছরে শিল্পী সমিতির সফলতা দেখছি না।  দুই বছরে কাঞ্চন-নিপুণ প্যানেলের কাজের সফলতা না দেখলেও অদ্ভুত সফলতা দেখেছেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমাদের টেলিভিশনের নায়ক চঞ্চল চৌধুরী ভারতে পুরস্কার পেয়েছে সেটি নাকি শিল্পী সমিতির আবেদন। এখানে শিল্পী সমিতি কী? এটি তো তার কর্মে পেয়েছে। কাজ করতে হবে, এরকম অদ্ভুত কথা বলে লাভ নেই। ওই কমিটিতে আমরা গিয়ে ভুল করেছি। তাই এবার আগেই ঠিক করেছি মিশা-ডিপজল প্যানেলে আসব। যারা কিছু করতে পারবে তারাই এই প্যানেলে আছে। এদিকে কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদে সহ-সভাপতি ছিলেন অভিনেতা  ডি এ তায়েব। তিনিও বেশ সাবেক প্যানেলের কর্মকান্ডে বিরক্ত হয়েই এবার মিশা-ডিপজল পরিষদ থেকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত  নিয়েছে।  কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদে কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচন করে ভোটে পরাজিত হলেও কো-অপ্টের মাধ্যমে কমিটিতে জায়গা পান চলচ্চিত্র অভিনেতা সীমান্ত আহমেদ। তবে নিজের প্যানেলের সভাপতির ওপর অনেকটাই বিরক্ত এই অভিনেতা। জানান, ইলিয়াস কাঞ্চনের জন্য দুই বছর কাজ করতে পারেননি তারা।  সীমান্ত বলেন, সভাপতির অনুমতি ছাড়া তো কিছু করা সম্ভব না। আমরা কমিটিতে আসার পর সেভাবে আসলে কিছু করা হয়নি, করতে পারিনি। যখন শিল্পীরা বলে তোমাদের অনেক আশা নিয়ে ভোট দিয়েছি, তখন তাদের কিছু বলতে পারি না। শিল্পীদের জন্য কিছু করতে না পারায় তাদের মুখ দেখাতে পারি না। নিপুণের প্যানেলের সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক। তিনি সহ-সাধারণ সম্পাদকের পদে নির্বাচন করে জয়ী হন। তিনি সম্প্রতি ক্ষোভ ঝেড়ে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি দেন। এদিকে তিনি নির্বাচন করছেন না বলেও জানিয়ে দিয়েছে। তবে কেন নির্বাচন করবেন না তা পরিষ্কার করেননি এই নায়ক। জানা যায় অনেকটা ক্ষোভ আর অভিমান নিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। এদিকে  নিপুণের প্যানেলের দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক আরমান গত নির্বাচনে নিপুণের হয়ে কাজ করেছেন। এবার তিনি ডিপজল-মিশা প্যানেলে যোগ দিয়েছেন। অন্যদিকে সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক ইমনও নির্বাচন থেকে দূরে রয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।  নিপুণের প্যানেলে কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন নায়ক ফেরদৌস আহমেদ। সদ্য নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচণে অংশ নিচ্ছেন না। নিপুণ তাকে সভাপতি পদে নির্বাচনের অনুরোধ করলে তিনি প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।    
১৬ মার্চ ২০২৪, ১৩:২৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়