• ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১
logo
বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চীনের নানজিং ইউনিভার্সিটিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপন
চীনের নানজিং শহরের নানজিং ইউনিভার্সিটি অফ পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনের (এনজেইউপিটি) বাংলাদেশি কমিউনিটির আয়োজনে পহেলা বৈশাখ- ১৪৩১ উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, দেশীয় ঘরোয়া খেলা, আবৃত্তি, বাংলা লোকসঙ্গীত পরিবেশনসহ বাংলাদেশি নানান পদের খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নানান পর্বে বিদেশিদের অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। রোববার (১৪ এপ্রিল) চীনের নানজিং শহরের নানজিং ইউনিভার্সিটি অফ পোস্ট অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনের বাংলাদেশি কমিউনিটির এই আয়োজনে চীন, পাকিস্তান, ভারত, মরক্কো, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিল। মরক্কোসহ কয়েকটি দেশের শিক্ষার্থীরা বাংলা ভাষায় গান ও নাচে অংশগ্রহণ করেন। এনজেইউপিটির পিএইচডি শিক্ষার্থী নাঈম মণ্ডল পুরো অনুষ্ঠানের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মাস্টার্স শিক্ষার্থী তাজবিদ শ্রিজন। অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ-চায়না ইয়ুথ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ বি সিদ্দিক, সাবেক সেক্রেটারি খাইরুল ইসলাম, প্রথম আলো বন্ধুসভার সভাপতি আহনাফ আনন, সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ-চায়না ইয়ুথ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও নানজিং ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক এ বি সিদ্দিক বলেন, ‘দেশীয় সংস্কৃতি সবার মাঝে আমরা ছড়াতে চাই। আমরা যে তা করতে পারছি, এর প্রমাণ হলো আজকের অনুষ্ঠানে বিদেশিদের অংশগ্রহণ।’ প্রথম আলো বন্ধুসভা চীনের সভাপতি আহনাফ আনন সবাইকে ধন্যবাদ জানান এমন সুন্দর আয়োজনের জন্য। তিনি জোর তাগিদ দেন এমন আয়োজন প্রতিবছর করার প্রতি। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও লোক সংগীতে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে ‘পহেলা বৈশাখ উদযাপন’ অনুষ্ঠানে সমাপ্ত করা হয়।
১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:০০

চীনে ঈদ পুনর্মিলনী ও পহেলা বৈশাখ উদযাপন
লোকায়ত সংস্কৃতির ডালা সাজিয়ে বর্ণিল আয়োজনে চীনে ঈদ পুনর্মিলনী এবং বাংলা বর্ষবরণ উৎসব উদযাপিত হয়েছে। ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’র কোরাস উপস্থাপন করে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানান প্রবাসী বাংলাদেশিরা। রবিবার (১৪ এপ্রিল) গুয়াংঝু শহরের সানইউয়ালি পার্কে বাংলাদেশি কমিউনিটি গুয়াংঝু (বিসিজি) এর আয়োজনে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানটি কয়েকটি পর্বে অনুষ্ঠিত হয়। হাজার মাইল দূরে থেকেও বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি কোনো কিছুরই কমতি ছিলা না এই আয়োজনে। কিছুক্ষণের জন্য হলেও মনে হয়েছে এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ।  আড়ম্বর আয়োজনে ছিল- নববর্ষের র‌্যালি, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বড়দের দেশীয় ঘরোয়া খেলা, কবিতা আবৃত্তি, বাংলা লোকসঙ্গীত পরিবেশন, আলোচনা সভা এবং ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি নানা পদের খাবারের মাধ্যমে মধ্যাহ্নভোজ। গোলাম কাদের সিদ্দীকি এবং আবু সায়েদ সায়েমের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটি কোরআন তেলাওয়াত এর মাধ্যমে শুরু হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে সবাই সম্মিলিতভাবে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- ড. মিরাজ আহম্মেদ, হুমায়ন কবির দুলাল, কল্লোল কান্তি দেবনাথ, মামুন শিকদার, সাখাওয়াত হোসেন, আতিকুল্লাহ, মাহাদী অমিতসহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃতি ও লোক সংগীতে অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করা হয়। তাছাড়া, দুই শতাধিক বাংলাদেশি ও চীনা নাগরিক এই প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলেন।
১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:০৯

তারকাদের পহেলা বৈশাখ
আজ পহেলা বৈশাখ। দিনটি উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন সবাই। পিছিয়ে নেই শোবিজ তারকারাও। ফেসবুকে তারা লিখছেন মনের কথা। এ রকম বেশ কয়েকজন তারকার ফেসবুক পোস্ট নিয়ে আমাদের এই আয়োজন। চঞ্চল চৌধুরী এপার বাংলা-ওপার বাংলার এই জনপ্রিয় অভিনেতা ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘শুভ নববর্ষ ১৪৩১। সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। নতুন বছর মঙ্গলময় হোক। ’ তারিন জাহান অভিনেত্রী তারিন জাহান বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে নিজের ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করে তার ক্যাপশনে লিখেছেন, শুভ নববর্ষ ১৪৩১। পূর্ণতা পাক সব স্বপ্ন ,আশা ও আনন্দময় হউক জীবন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন। বছর ঘুরে আবার এলো বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। সব অশুদ্ধ দূর হোক, বছর শুরু হোক বিশুদ্ধতায়, সাজুক বাঙালিয়ানায়।’ শাহনাজ খুশি বাংলা নববর্ষে অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি নিজের ফেসবুকে তিনটি ছবি পোস্ট করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘শুভ নববর্ষ। অনন্ত শুভ কামনা সবার জন্য। ১লা বৈশাখ, ১৪৩১।’ সাজু খাদেম অভিনেতা সাজু খাদেম তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে সবাইকে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনটি ছবি পোস্ট করে তার ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘মঙ্গল হোক সবার...শুভ নববর্ষ ১৪৩১।’ এফ এস নাঈম অভিনেতা এফ এস নাঈম মাত্র দুটি শব্দে সবাইকে জানিয়েছেন বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন,‘শুভ নববর্ষ ।’
১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪:২৯

বাঙালির প্রাণের পহেলা বৈশাখ আজ
‘এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ। মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।’ কবিগুরুর কালজয়ী এই গানের সুরে সুরে বাঙালীর জীবনে এসে পড়লো আরেকটি পহেলা বৈশাখ; আরেকটি নতুন বছর। বিদায়ী ১৪৩০ এর সব ভুল-ত্রুটি, ব্যর্থতা, গ্লানি আর না পাওয়াকে ভুলে নতুন উদ্যমে ১৪৩১কে স্বাগত জানানোর প্রহর গুণছে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পুরো জাতি। ভোরের আলো ফুটলেই প্রাণের উৎসবে মাতবে সারাদেশ।  বাংলা নববর্ষের অন্যতম অনুষঙ্গ বৈশাখী মেলা। তাই বৈশাখ মাসকে বলা হয় মেলার মাস। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে যে বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয় তা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। তাই পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের চিরন্তন উৎসব, বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এই দিন আমাদের আপন শিকড়ের প্রাণশক্তিতে উজ্জীবিত হওয়ার দিন, বাঙালির প্রাণের উৎসবের দিন। আবহমান এই লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্যে বর্ষবরণ উৎসবে মেতে ওঠে দেশের প্রতিটি শহর-গ্রাম-নগর-বন্দর। রাজধানীর বর্ষবরণের অনুষ্ঠান রমনা বটমূল ছাড়িয়ে এখন ছড়িয়ে পড়েছে নগরজুড়ে। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বৈশাখের প্রথম দিনটিতে ঢাকা পরিণত হয় উৎসবের নগরীতে। বর্ষবরণের আনন্দ-উৎসবে মুখরিত থাকে সমগ্র দেশ। শুধু আনন্দ-উৎসবই নয়, পহেলা বৈশাখের সঙ্গে মিশে আছে গ্রামীণ অর্থনীতিও। প্রাচীনকাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠানোর পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে হালখাতা খোলার চল আছে গ্রামীণ জনপদে। বৈশাখি মেলা, উৎসবের আয়োজন, হালখাতা তৈরি, মিষ্টান্ন বিতরণ, ভালো ভালো খাবার পরিবেশন—এসব বাংলার লোকায়ত ঐতিহ্যেরই অংশ। এই একটি দিনে কোনো ভেদাভেদ থাকে না বাংলার মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মাঝে। নববর্ষের উৎসব হয়ে ওঠে সর্বজনীন।  অতীতে আমরা দেখেছি কিছু ধর্মান্ধ মানুষ সাম্প্রদায়িক বিভেদের দেয়াল তুলে দিতে চেয়েছে বর্ষবরণের উৎসবে। কিন্তু বাঙালি জাতি কোনো দিনই তা মেনে নেয়নি। সব ভ্রুকুটি উপেক্ষা করেই বাংলার প্রতিটি প্রান্তে, প্রতিটি ঘরে উদযাপিত হয়েছে নববর্ষের উৎসব। বাঙালির সংস্কৃতি ধ্বংসের যে অপচেষ্টা তদানীন্তন পাকিস্তানে শুরু হয়েছিল, তার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ১৯৬৭ সালে রমনার বটমূলে যে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেছিল ছায়ানট, তা আজও বাঙালির এক অমলিন ঐতিহ্য। অপশক্তির বোমা হামলাও ছায়ানটের এই যাত্রাকে থামাতে পারেনি। বরং বাঙালির প্রাণের এই উৎসব আজ বিশ্ব ঐতিহ্যেরই অংশ হয়ে গেছে।  কল্যাণ ও নতুন জীবনের বার্তা বয়ে আনে নববর্ষ। বাংলার ঘরে ঘরে আজ তাই উৎসবের আমেজ। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পথে নেমে আসার অপেক্ষায় দেশবাসী। ভোরের আলোয় গান গেয়ে আর মানুষের মঙ্গল কামনায় শোভাযাত্রা বেরুবে রাজধানীসহ সারাদেশে। নতুন বছরটিকে বরণ করে নিতে দেশব্যাপী থাকছে নানা আয়োজন। সরকারি ছুটি ঘোষণা করে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার।  ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। ভোরে রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে ছায়ানট। এছাড়াও যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন। আবশ্যিকভাবে জাতীয় সংগীত ও ‘এসো হে বৈশাখ’ গান পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হবে নববর্ষের মূল অনুষ্ঠান। বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস ও ইউনেস্কোর এটিকে বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরে এদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। এছাড়া নববর্ষ উপলক্ষে উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের আয়োজন করা হবে সব কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা)।  এক সময় নববর্ষ পালিত হতো আর্তব উৎসব বা ঋতুধর্মী উৎসব হিসেবে। তখন এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল কৃষির, কারণ কৃষিকাজ ছিল ঋতু-নির্ভর। পরে কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে বাংলা সন গণনা শুরু হয়। হিজরি চান্দ্রসন ও বাংলা সৌর সনের ওপর ভিত্তি করে প্রবর্তিত হয় নতুন এই বাংলা সন। অতীতে বাংলা নববর্ষের মূল উৎসব ছিল হালখাতা। এটি পুরোপুরিই একটি অর্থনৈতিক ব্যাপার। গ্রামে-গঞ্জে-নগরে ব্যবসায়ীরা নববর্ষের প্রারম্ভে তাদের পুরোনো হিসাবনিকাশ সম্পন্ন করে হিসাবের নতুন খাতা খুলতেন। এ উপলক্ষে তারা নতুন-পুরোনো খদ্দেরদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মিষ্টি বিতরণ করতেন এবং নতুনভাবে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগসূত্র স্থাপন করতেন। চিরাচরিত এ অনুষ্ঠানটি আজও পালিত হয়। মূলত ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথমদিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে। পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজের সঙ্গে বাংলাবর্ষের ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে। পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। আর ষাটের দশকের শেষে তা বিশেষ মাত্রা পায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে। এসময় ঢাকায় নাগরিক পর্যায়ে ছায়ানটের উদ্যোগে সীমিত আকারে শুরু হয় বর্ষবরণ। মহান স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে এই উৎসব স্বমহিমায় নিজের স্থান করে নেয় নাগরিক জীবনে। পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ধীরে ধীরে বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে বাঙালির অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক চেতনার। কালক্রমে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন শুধু আনন্দ-উল্লাসের উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, উৎসবের পাশাপাশি অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পয়লা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয় ইউনেস্কো।
১৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৫৪

রমনার বটমূলে বোমা হামলার ২৩ বছরেও হয়নি বিচার
২৩ বছর আগে রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ১০ জন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছিলেন। চাঞ্চল্যকর এই বোমা হামলার এখনো বিচার হয়নি। ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনার বটমূলে বোমা হামলার পর হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এর মধ্যে হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন আটজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে নিম্ন আদালত রায় ঘোষণা করে। আদালতে রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। একইসঙ্গে কারাবন্দি আসামিরা আপিল করে। উভয় আবেদনের ওপর ২০১৭ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। আদালত বদল হওয়ায় শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে মামলাটি। ১০ বছরে অন্তত ৪০০ বার পিছিয়েছে শুনানি। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ওই বেঞ্চের একজন বিচারপতি আইনজীবী হিসেবে এই মামলায় কাজ করেছিলেন। তাই তিনি শুনানি করতে পারেননি। এ কারণে হয়ত কিছুটা সময় লেগেছে। তবে এবার তার বেঞ্চে শুনানি হবে। আমরা প্রস্তুত আছি।   অন্যদিকে বিস্ফোরক মামলাটি এখনো বিচারিক আদালতের গণ্ডি পার হতে পারেনি। কারণ হিসেবে সাক্ষী হাজির না হওয়ার কথা বলছে রাষ্ট্রপক্ষ।   আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুলাহ আবু বলেন, সাক্ষীরা একবার সাক্ষ্য দিয়ে গেছেন। কিন্তু পরবর্তীকালে ওই সাক্ষীদের সহজেই পাওয়া যায়নি। দীর্ঘদিন হয়ে গেছে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিচার কাজ শেষ হওয়া উচিত। ২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল (পহেলা বৈশাখ ১৪০৮ বঙ্গাব্দ) ভোরে রমনার বটমূলে সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানস্থলে দুটি বোমা পুঁতে রাখা হয় এবং পরে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে সেগুলোর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নৃশংস ওই বোমা হামলায় প্রাণ হারান ১০ জন। আহত হন আরও অনেকেই। এ ঘটনায় হুজি নেতা মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনকে আসামি করে ওইদিনই রমনা থানার পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুটি মামলা করেন। ২০০৮ সালের ২৯ নভেম্বর শীর্ষ হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করে সিআইডির পরিদর্শক আবু হেনা মো. ইউসুফ আদালতে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে আলাদা দুটি সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রুহুল আমিন হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আট জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক। বিস্ফোরক আইনে করা মামলায় ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন মামলার অন্যতম আসামি মুফতি হান্নানসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী হত্যা মামলায় ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রাতে মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হয়। বর্তমানে মামলাটিতে মোট ১১ জন আসামি রয়েছেন। তারা হলেন- মাওলানা তাজউদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম বদর, মুফতি আব্দুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান, মাওলানা আবু বকর, হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা আকবর হোসাইন, মাওলানা শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল, হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা সাব্বির ও মাওলানা শওকত ওসমান। এর মধ্যে তাজউদ্দিন, আবদুল হাই ও জাহাঙ্গীর পলাতক।
১৪ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৯

নতুন বছর অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে : প্রধানমন্ত্রী
বাংলা নতুন বছর ১৪৩১ আমাদেরকে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে (১৩ এপ্রিল) দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, শুভ নববর্ষ ১৪৩১। উৎসবমুখর বাংলা নববর্ষের এই দিনে আমি দেশবাসীসহ সব বাঙালিকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন। এটি সর্বজনীন উৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। আবহমান কাল ধরে নববর্ষের এই উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণ স্পন্দনে, নব-অঙ্গীকারে। সারা বছরের দুঃখ-জরা, মলিনতা ও ব্যর্থতাকে ভুলে বাঙালি রচনা করে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য, আনন্দ ও ভালোবাসার মেলবন্ধন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যে ‘পহেলা বৈশাখ’ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনা হয় মূলত মুঘল সম্রাট আকবরের সময় থেকে। কৃষি কাজের সুবিধার্থে সম্রাট আকবর ‘ফসলি সন’ হিসেবে বাংলা সন গণনার যে সূচনা করেন, তা কালের পরিক্রমায় সমগ্র বাঙালির কাছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে। পহেলা বৈশাখ বাঙালিয়ানার প্রতিচ্ছবি। এই উদ্যাপন আমাদের শেকড়ের সন্ধান দেয়। এর মধ্য দিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় জাতিসত্তার পরিচয়। তিনি বলেন, বাঙালির প্রতিটি ঘরে, জনজীবনে এবং আর্থসামাজিক সংস্কৃতিতে পহেলা বৈশাখ এক অনন্য উৎসব। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে হালখাতার পাশাপাশি যাত্রাগান, পালাগান, পুতুলনাচ, অঞ্চলভিত্তিক লোকসংগীত, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন পসরা নিয়ে মেলার বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে যেমন লোকজ-সংস্কৃতি প্রাণ ফিরে পায় তেমনি দেশের অর্থনীতি তথা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমৃদ্ধ হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসে। শেখ হাসিনা বলেন, পহেলা বৈশাখ পূর্ণপ্রাণ নিয়ে অবারিতভাবে বেড়ে ওঠার বাতায়ন। এটি ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে ধারণ ও লালন করতে শেখায়। অসাম্প্রদায়িকতার চর্চা ও অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পহেলা বৈশাখ আমাদের মনে আনে নতুন তেজ। এ কারণেই আমরা দুর্বার প্রতিরোধে রুখে দিতে পেরেছি পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক অপশক্তিকে, যারা বাঙালির ঐতিহ্য নস্যাৎ করতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, আত্মপরিচয় ও স্বীয় সংস্কৃতির শক্তিতে বলিয়ান হয়ে আমরা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম মুক্তির সংগ্রামে। সংস্কৃতি ও রাজনীতির মিলিত স্রোত পরিণত হয়েছিল স্বাধিকার ও স্বাধীনতার লড়াইয়ে। এভাবেই বিশ্বের বুকে অভ্যুদয় ঘটেছে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি লালনের মাধ্যমে বিশ্বসমাজে বাঙালি শ্রেষ্ঠ জাতি হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করে সরকারপ্রধান বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ইউনেস্কো ২০১৬ সালে পহেলা বৈশাখের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। নববর্ষের-এ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সারাবিশ্বের বাঙালির জন্য নিঃসন্দেহে বিরাট অর্জন। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক, উদারনৈতিক, জাতীয়তাবাদী ও গণতন্ত্রের ভাবাদর্শে আজীবন যে সংগ্রাম করে গেছেন তার মূলমন্ত্র জাতিগত ঐতিহ্য ও অহংকার। একারণেই  বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন এবং দেশ পুনর্গঠনে কাজ করেছে তার অভিন্ন চেতনা। আমরা বীরের জাতি, এ জাতিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। কাল (রোববার) থেকে কালান্তরের পথ পরিক্রমায় বাঙালির অর্জন ও অগ্রগতি চির ভাস্বর হয়ে থাকবে, এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তথা উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসুন আমরা বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে চলি। সুখী, শান্তিময়, আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি। বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। সূত্র : বাসস
১৩ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৩৩

‘বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশে পহেলা বৈশাখ অবিনাশী শক্তি’
বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও মুক্তি সাধনায় পহেলা বৈশাখ এক অবিনাশী শক্তি বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখ আমাদের উদার হতে শেখায় এবং জাতীয়তাবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্বমানবের সঙ্গে মিশে যাওয়ার শক্তি যোগায়। ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।  রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালি জাতির শাশ্বত ঐতিহ্যের প্রধান অঙ্গ পহেলা বৈশাখ। পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির জীবনে একটি পরম আনন্দের দিন। আনন্দঘন এ দিনে আমি দেশে ও দেশের বাইরে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে জানাই বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। তিনি বলেন, বৈশাখের আগমনে বেজে ওঠে নতুনের জয়গান। দুঃখ, জরা, ব্যর্থতা ও মলিনতাকে ভুলে সবাই জেগে ওঠে নব-আনন্দে, নব-উদ্যমে। ফসলি সন হিসেবে মোঘল আমলে যে বর্ষ গণনার সূচনা হয়েছিল, সময়ের পরিক্রমায় তা আজ সমগ্র বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে। পহেলা বৈশাখের মাঝে বাঙালি খুঁজে পায় নিজস্ব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও চেতনার স্বরূপ। বৈশাখ শুধু উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের আত্মবিকাশ ও বেড়ে ওঠার প্রেরণা। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও মুক্তি সাধনায় পহেলা বৈশাখ এক অবিনাশী শক্তি। বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও গণতন্ত্রের বিকাশে সংস্কৃতির এই শক্তি রাজনৈতিক চেতনাকে দৃঢ় ও বেগবান করে। রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকলে মিলে নাচ-গান, শোভাযাত্রা, আনন্দ-উৎসব, হরেক রকম খাবার ও বাহারি সাজে বৈশাখকে বরণ করে নেয় উৎসবপ্রেমী বাঙালি জাতি। নতুন বছরে যাত্রাপালা, পুতুলনাচ, লোকসংগীত, গ্রামীণ খেলাধুলা, মেলাসহ নানাবিধ বর্ণিল আয়োজন মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয় আনন্দ ও সম্প্রীতির নতুন বার্তা। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রা বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। জাতীয় সংস্কৃতির এই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি জাতি হিসেবে বাঙালির জন্য পরম গৌরব ও মর্যাদার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাষ্ট্রদর্শন ও আদর্শের অন্যতম ভিত্তি ছিল দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশ ও জাতীয় চেতনার উন্মেষ। সেই চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধু কারারুদ্ধ জীবনে সহবন্দিদের নিয়ে নববর্ষ উদযাপন করেছিলেন। মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, পহেলা বৈশাখ আমাদের উদার হতে শেখায় এবং জাতীয়তাবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্বমানবের সঙ্গে মিশে যাওয়ার শক্তি যোগায়। এই উদারনৈতিক চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রদর্শন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আদর্শ এবং রাষ্ট্রভাষা চেতনার বহ্নিশিখা অন্তরে ধারণ করে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ হোক সকলের অঙ্গীকার। তিনি বলেন, সকল অশুভ ও অসুন্দরের ওপর সত্য ও সুন্দরের জয় হোক। ফেলে আসা বছরের সব শোক-দুঃখ-জরা দূর হোক, নতুন বছর জাতীয় ও ব্যক্তিজীবনে নিয়ে আসুক অনাবিল সুখ ও সমৃদ্ধি- এ প্রত্যাশা করি।  
১৩ এপ্রিল ২০২৪, ২০:০১

বর্ষবরণে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি 
দরজায় কড়া নাড়ছে পহেলা বৈশাখ। পুরনোকে বিদায় জানিয়ে আসছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করবেন বাঙালি। বৈশাখকে বরণ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা।  নববর্ষ বরণে ঢাবির চারুকলা অনুষদের দেয়ালে ইতোমধ্যে বিভিন্ন চিত্র অঙ্কন করা হয়েছে। দেয়ালে দেয়ালে ফুটে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক, বুড়িগঙ্গার নৌকা, মা ও প্রকৃতির বিভিন্ন চিত্র। শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রে ঠাঁই পেয়েছে ফুল, মাছ, নৌকা, বাঘ, ময়ূরসহ নানা ফুল-পাখি। দর্শকরা ঘুরে ঘুরে চারুশিল্পীদের আঁকা বিভিন্ন চিত্র দেখছেন। এ ছাড়া মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য চারুকলার ভেতরে চলছে মুখোশ, পুতুল ও ছবি আঁকার কাজ।  চারুকলার শিল্পী ইলহাম গণমাধ্যমকে বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশা করি, বাকি কাজ রাতের মধ্যেই শেষ হবে। এদিকে ঢাবির চারুকলা অনুষদ থেকে রোববার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও চারুকলা অনুষদ পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। রোববার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হবে। শোভাযাত্রাটি চারুকলা থেকে শুরু হয়ে ঢাকা ক্লাব ও শিশু পার্ক ঘুরে টিএসসিতে এসে শেষ হবে। এ ছাড়া বিকেল ৫টা পর্যন্ত চারুকলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলবে। এদিকে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জেলায় জেলায় বর্ষবরণের প্রস্তুতি নিয়েছে। এবার তাদের পহেলা বৈশাখের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠানটি হবে যশোরে। এ ছাড়া খুলনা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, নেত্রকোনা, বরিশালে নববর্ষ পালনের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ছায়ানটের বর্ষবরণ সফল করতে আমরাও সহযোগিতা করছি। বর্ষবরণে উদীচী কার্যালয়ে ঘরোয়াভাবে আনন্দ আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে। নববর্ষ আয়োজনের নিরাপত্তা সম্পর্কে পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর জানান, পহেলা বৈশাখ বাঙালির ঐতিহ্য। বর্ষবরণ প্রস্তুতির শুরু থেকেই এবার সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পহেলা বৈশাখের সব আয়োজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। ছায়ানটের অনুষ্ঠানকে নির্বিঘ্ন করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রমনা পার্কে সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে। এ ছাড়া আশপাশের ভবনের সিসি ক্যামেরাগুলোও আমরা মনিটরিং করব।
১৩ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:০৪

চাল বিক্রিতে নতুন নির্দেশনা, না মানলে শাস্তি
চাল বিক্রিতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা অনুযায়ী, চালের বস্তায় ধানের জাত ও মিলগেটের মূল্য লিখতে হবে। সেই সঙ্গে লিখতে হবে উৎপাদনের তারিখ ও প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের নাম। এমনকি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের অবস্থান (জেলা ও উপজেলা) উল্লেখসহ থাকবে ওজনের তথ্যও; যা রোববার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ থেকে কার্যকর হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে রয়েছে প্রয়োজনীয় শাস্তির ব্যবস্থা।  শনিবার (১৩ এপ্রিল) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশের চাল উৎপাদনকারী কয়েকটি জেলায় পরিদর্শন করে নিশ্চিত হওয়া গেছে বাজারে একই জাতের ধান থেকে উৎপাদিত চাল ভিন্ন ভিন্ন নামে ও দামে বিক্রি হচ্ছে। চালের দাম অযৌক্তিক পর্যায়ে গেলে বা হঠাৎ বৃদ্ধি পেলে মিলার, পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা একে অপরকে দোষারোপ করছেন। এতে ভোক্তারা ন্যায্যমূল্যে পছন্দমতো জাতের ধানের চাল কিনতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থার উত্তরণের লক্ষ্যে চালের বাজার মূল্য সহনশীল ও যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে ধানের নামেই যাতে চাল বাজারজাতকরণ করা হয় তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এবং এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম মনিটরিংয়ের সুবিধার্থে নির্দেশনায় কয়েকটি বিষয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।   এর মধ্যে রয়েছে, চালের উৎপাদনকারী মিলমালিকদের গুদাম থেকে বাণিজ্যিক কাজে চাল সরবরাহের প্রাক্কালে চালের বস্তার ওপর উৎপাদনকারী মিলের নাম, জেলা ও উপজেলার নাম, উৎপাদনের তারিখ, মিল গেট মূল্য এবং ধান বা চালের জাত উল্লেখ করতে হবে। বস্তার ওপর এসব তথ্য কালি দিয়ে লিখতে হবে, যা আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে কার্যকর হবে।   খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, চাল উৎপাদনকারী মিল মালিকের সরবরাহ করা সকল প্রকার চালের বস্তা ও প্যাকেটে ওজন উল্লেখ থাকতে হবে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও একই নির্দেশনা প্রতিপালন করতে হবে। এক্ষেত্রে মিলগেট দামের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান চাইলে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য উল্লেখ করতে পারবে।    এর ব্যত্যয় ঘটলে খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩-এর ধারা ৬ ও ধারা ৭ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার সুযোগ রয়েছে। আর ধারা-৭-এর শাস্তি হিসেবে রয়েছে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড অথবা ১৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান।
১৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:১০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়