• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo
বাংলাদেশে ভারত-বিরোধী প্রচারের নেপথ্যে কি?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ইন্ডিয়া আউট’ নামে ভারত বিরোধী এক ধরনের প্রচারণা চলছে। সেখানে ভারতীয় পণ্যসহ দেশটিকে 'বয়কট' নিয়ে করা বিভিন্ন ধরনের ক্যাম্পেইন চলছে। যারা এসব প্রচারণা চালাচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই সরকারবিরোধী হিসেবে পরিচিত। এর সঙ্গে কয়েকটি ছোটখাটো  রাজনৈতিক দলও যুক্ত রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশিরভাগ পোস্টদাতা বলছেন, ‘বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে ভারত অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করেছে। এই কারণে তারা ভারতীয় পণ্য বয়কটেরও ডাক দিচ্ছেন।’ এখন প্রশ্ন হলো- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোন দেশ কী কী পদক্ষেপ নিয়েছিল? যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ভারতের অবস্থান কেমন ছিল? আর কেনই বা শুধু ভারত-বিরোধী প্রচারণা চলছে? চীন ও রাশিয়া বর্তমান সরকারকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছিল। এই দুই দেশের ব্যাপারে নীরবতা কেন? দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বেশি তৎপর ছিল আমেরিকা। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিএনপির পক্ষে প্রকাশ্যে তৎপরতা চালিয়েছিলন পিটার হাস। সরকারকে চাপে রাখতে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একা না, তার মিত্রদেরকেও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন রকম তৎপরতায় সামিল করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই তৎপতারার বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ‘স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলা হলেও আড়ালে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো।’ বাংলাদেশ সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিল চীনও। ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছিলেন, ‘সংবিধান ও আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে নির্বাচন চায় চীন। বাংলাদেশের জনগণই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। তাই নির্বাচন নিয়ে বাইরের কোনো দেশের হস্তক্ষেপ আমরা চাই না।’ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছিল, বাংলাদেশের নির্বাচন কিভাবে হবে সেটি দেশটির জনগণই ঠিক করবে।  বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এক দিকে প্রকাশ্যে বিরোধীতা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। আর প্রকাশ্যে ক্ষমতাসীন সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিল চীন, রাশিয়া এবং ভারত। অথচ গত ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারকে সমর্থন করার দায়ে ‘ইন্ডিয়া আউট’প্রচারণা চলছে। স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠেছে, শুধু ভারত বিরোধী কেন? ‘চীন আউট‘এবং রাশিয়া আউট’প্রচারণা চলছে না কেন? তারাও তো প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল। বাংলাদেশে ভারত বিরোধী এই অবস্থান নতুন নয়। মূলত ধর্মীয় কারণে ভারত বিরোধী এবং পাকিস্তান প্রেমী মানুষের সংখ্যা বাংলাদেশে অনেক। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা রাখার কারণেও তারা ভারতকে পছন্দ করে না। আবার চীন মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে থাকলেও এ বিষয়ে তাদের কোনও ক্ষোভ দেখা যায় না। ভারত বিরোধীতা বাংলাদেশে ট্রাম কার্ড হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত পদ্ধতি। ভারত বিরোধী এই রাজনীতি তীব্র হয় ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর থেকে। জিয়াউর রহমানের আমল থেকে এরশাদ বা তার পরবর্তী সময়েও ভারত বিরোধীতা চলে এসেছে। নব্বই দশকে রাজনীতিতে ভারত বিরোধিতা কার্ডটি খুব বেশি ব্যবহৃত হয়েছে। সেই সময় ভোট আসলেই প্রচার চালানো হতো- ‘ভারতের বিভিন্ন স্থানে নৌকা টাঙানো রয়েছে’, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায় গেলে ঢাকা হবে দিল্লি’ কিংবা ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে মসজিদে আযানের পরিবর্তে উলুধ্বনী শোনা যাবে’। এ ধরনের অপপ্রচারের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে এক ধরনের ভারত বিরোধিতা এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী বীজবপণ করার চেষ্টা করা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর বিএনপিকে ভারত ইস্যুতে সরব হয়েছিল। আর ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে দুই দেশের চুক্তি সম্পাদনের প্রতিবাদে মাঠে নেমেছিল বিএনপি। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে টানা ১৫ বছর আন্দোলন করে জনসমর্থন না পেয়ে ‘ভারত বিরোধী’সেই পুরোনা কার্ড ব্যবহার করছে বিএনপি। দলটির নেতাদের কথাতেও তাই ফুটে উঠেছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ভারত সরকারের ক্ষমতার জোরে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছে। আওয়ামী লীগ এখন একটি ভারতীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের জনগণ ও গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বাকশালী শাসনের পক্ষে সহযোগিতা করছে। সরকারও এ সুযোগে দেশকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য বানিয়েছে।’ আর বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন স্পষ্টতই বাধাগ্রস্ত করছে ভারত সরকার। তারা তাদের পছন্দের বাইরে যেতে পারছে না।’ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের সংবিধানকে সমর্থন করায় ভারতের ওপর এতো রাগ বিএনপির। কিন্তু একই কারণে চীন বা রাশিয়ার বিষয়ে কিছু বলছে না তারা। চীন বা রাশিয়ার পণ্য বয়কট নিয়ে মুখে রা নেই বিএনপি নেতাদের। তারা জানেন বিরোধীতার ক্ষেত্রে ধর্ম একটা বড় হাতিয়ার। পাকিস্তানকে এখনও বাংলাদেশের যত মানুষ বন্ধু ভাবে, তার মূল কারণ ধর্ম। একাত্তরে পাকিস্তানিদের গণহত্যা তাদের কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতির মাঠে ধর্মকে হাতিয়ার হিসেবে বারবার বেছে নিয়েছে বিএনপি। এবারের নির্বাচন ঠেকাতে না পেরে আবারও ভারত বিরোধী মনোভাব কাজে লাগাতে চাইছে দলটি। যাকে ‘প্রেসার ডিপ্লোমেসি’ বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন,  প্রকাশ্যে ভারতের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি একটি বার্তা দিতে চাইছে যে, আওয়ামী লীগই বাংলাদেশে শেষ কথা নয়। যার ফলে ভারত তার নিজের স্বার্থের জন্যই যেন বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করে- এটাই তাদের কৌশল। লেখক : গণমাধ্যমকর্মী
০৭ মার্চ ২০২৪, ১৬:২০

মাঠে বন্ধ থাকলেও ফেসবুকে থেমে নেই প্রচার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে প্রচারের সময় শেষ হয়েছে গতকাল। ভোট চেয়ে আর কোনো কর্মসূচি পালনের সুযোগ নেই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। তবে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের সুযোগ শেষ হয়নি এখনও। আছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক।  শুধু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দল কিংবা তাদের প্রার্থীরাই নয়, ফেসবুকে ব্যাপক সরব নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি ও তার সমমনা দলগুলো এবং তাদের নেতারাও। সাধারণ প্রচারমূলক পোস্ট ছাড়াও বিজ্ঞাপনেও বেশ খরচ করছে রাজনৈতিক দলগুলো। আরও পড়ুন : শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত, ২ শিক্ষক আটক   ফেসবুকের মালিক প্রতিষ্ঠান মেটার অ্যাড লাইব্রেরিতে পাওয়া গেছে গত ১৫ মাসে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বাবদ বাংলাদেশ থেকে তাদের আয়ের হিসাব। ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বাবদ অর্থ আয়ের হিসাব দিচ্ছে মেটা। যেখানে শুধু সর্বশেষ ৭ দিনেই তাদের প্রায় ৪৫ হাজার মার্কিন ডলার আয় হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রার্থীরা নিজেরা যেমন ব্যয় করেছেন তেমনি খরচ করা হয়েছে বিভিন্ন দল, সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের ফেসবুক পেজ থেকে।  মেটার গত ১৫ মাসের হিসাবে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বাবদ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সবার ওপরের নামটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের। এরপর রয়েছেন তথ্য ও যোগযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য এম এ রাজ্জাক খান।   গত এক মাস ধরে ফেসবুকে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের পেছনে প্রথম স্থান ধরে রেখেছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম। তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান যথাক্রমে সালমান এফ রহমান ও জুনাইদ আহমেদ পলকের। এই সময়ে ফেসবুকে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের পেছনে বাংলাদেশ থেকে মোট ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ডলার বা ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আরও পড়ুন : অগ্নিদগ্ধ ৮ জনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক   মেটার সর্বশেষ ৭ দিনের হিসেবে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনে প্রায় পাঁচ হাজার ডলার খরচ করে সালমা ইসলামের অবস্থান একই থাকলেও দুই নাম্বারে উঠে এসেছেন এম এ রাজ্জাক খান। ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি ফেসবুকে খরচ করেছেন প্রায় দুই হাজার ডলার। এবারের নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তিনি। আর এক হাজার ৭০০ ডলার ব্যয় করে এই এক সপ্তাহের হিসাবে তালিকার তৃতীয় অবস্থানে আছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জামালপুর-২ আসনে দলের প্রার্থী মোস্তফা আল মাহমুদ।   এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ফেসবুক পেজ থেকে সারা বছরই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। তিনি ঢাকা-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। সাত দিনে তার নামের পেজ থেকে ব্যয় করা হয়েছে ৯৪১ ডলার। মেটার হিসাব বলছে, ডিজিটাল রাজনৈতিক প্রচারণার ক্ষেত্রে, ২০২২ সাল থেকে এক হাজার ৬৫৩টি বিজ্ঞাপনভিত্তিক পোস্টে বিনিয়োগ করেছে আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০২৩ সালে এই প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদায়ী বছরে  এক হাজার ৪৫০টি বিজ্ঞাপনভিত্তিক পোস্ট অন্তর্ভুক্ত করেছে তারা। শুধুমাত্র ডিসেম্বর মাসেই ৮৪টি পোস্ট করেছে ক্ষমতাসীন দলটি, গড় হিসেবে প্রতিদিন করা হয়েছে পাঁচটি করে পোস্ট।  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার পোল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নেপোলিয়নক্যাটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ফেসুবক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ কোটির কিছু বেশি। আর মেটার হিসাবে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বেশি দেওয়া হয়েছে ঢাকা বিভাগকে কেন্দ্র করে। আরও পড়ুন : সড়কে গাড়ি কম, ভোগান্তিতে যাত্রীরা   ফেসবুকে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনদাতা প্রার্থীদের মধ্যে আরও রয়েছেন ঢাকা-৯ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী, জামালপুর-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আবুল কালাম আজাদ, নোয়াখালী-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোরশেদ আলম, ঢাকা-১৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরী, গাইবান্ধা-৫ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হোসেন, ঢাকা-৪ আসনে কল্যাণ পার্টির প্রার্থী ইয়াসিন পাভেল, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী প্রমুখ। অবশ্য তথ্যব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইট লিমিটেড (ডিআরএল) গত মাসে এক গবেষণায় জানায়, অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন শনাক্তে ভুল করে মেটা। অর্থাৎ মেটা যে তথ্য দিচ্ছে, তার বাইরেও অনেকভাবেই রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। তাই প্রকৃত ব্যয়ের অঙ্ক আরও বেশি হতে পারে বলেই অনুমান প্রতিষ্ঠানটির।
০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৩৭

নির্বাচনী প্রচার শেষ হচ্ছে কাল
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ৮টায়। ওই সময়ের পর কোনো প্রার্থী জনসভা, পথসভা, মিছিল বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না। তবে চালাতে পারবেন নির্বাচনি প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) এর ৭৮ ধারায় নির্বাচনে প্রচারের সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ভোটগ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা এবং ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় জনসভা আহ্বান, অন্য কারও জনসভায় অংশ নেওয়া যাবে না। এমনকি মিছিল, শোভাযাত্রা বা এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজন বা অংশগ্রহণ কোনোটিই করা যাবে না। তারা আরও বলেন, ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। তার আগের ৪৮ ঘণ্টা হিসাবে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে সব ধরনের প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। ওই সময়ের পর ভোট চেয়ে মাইকিংও করা যাবে না। এদিকে প্রচারের শেষদিকে বৃহস্পতিবার দিনভর ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রার্থী ও তাদের নেতাকর্মীরা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চেয়েছেন। এদিকে, নওগাঁ-২ আসনে একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় ওই আসনের ভোট বাতিল করেছে ইসি। প্রসঙ্গত, ১৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ওইদিন থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হয়। এ নির্বাচনে ১৮ দিন প্রচারের সময় পেলেন প্রার্থীরা। ২৮টি রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে এক হাজার ৯৬৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এই নির্বাচনে। ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২৯৯টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:২২

মুন্সীগঞ্জে নৌকার প্রচার ক্যাম্পে হামলা, গুলি ও ভাঙচুর
মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের নৌকার প্রচার ক্যাম্পে হামলা, ভাঙচুর ও গুলির ঘটনা ঘটেছে।  মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টায় সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়সাল বিপ্লবের সমর্থকরা এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এদিকে এ ঘটনার পর নৌকা সমর্থকদের পাল্টা হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক অয়ন দেওয়ান নামের একজনসহ উভয়পক্ষের ৩ জন আহত হয়। আহত অয়ন মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ২ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে ৩৫ থেকে ৪০ জন কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফয়সাল বিপ্লবের কর্মী-সমর্থক মোটরসাইকেলযোগে বজ্রযোগিনী বটতলায় আসে। এ সময় একজন পিস্তল বের করে নৌকা প্রতীকের ক্যাম্প ও সমর্থক স্থানীয় বাবু মুন্সীর দিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে‌। তবে গুলিতে কেউ আহত না হলেও এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর এলাকায় ডাকাত বলে মাইকিং করলে হামলাকারী কাঁচির সমর্থক নৌকা সর্মথকদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় স্থানীয় নৌকার সমর্থকরা প্রতিরোধ করে পাল্টা হামলা করলে অয়ন দেওয়ান নামের একজন আহত ও বাকিরা পালিয়ে যায়। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর আহত সমর্থক অয়নকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। নৌকার সমর্থক বাবু মুন্সী অভিযোগ করে বলেন, কাঁচির সমর্থক পৌরসভার কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন সাগরের নেতৃত্বে হোন্ডার বহর নিয়ে ক্যাম্পে আসে। আমাকে দেখেই অকথ্য ভাষায় বকা দিয়ে গুলি চালায়। ভাগ্যক্রমে গুলি আমার শরীরে লাগেনি। পরে এলাকার লোকজন কাঁচির সমর্থকদের প্রতিহত করে। এ বিষয়ে পৌর কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন সাগরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খাইরুল হাসান জানান, ঘটনার খবর পেয়েই ফোর্স নিয়ে পৌঁছাই। বটতলা এলাকায় নৌকার ক্যাম্প থেকে ২ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:৩৪
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়