• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের মৃত্যু যেন এক নক্ষত্রের পতন
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগদান করেছি দু’দিন হলো মাত্র; আমার রিপোর্টিং বস প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব স্যারের সঙ্গে পরিচয়ের পর খুব ফর্মাল কিছু কথাবার্তা হয়েছে। অফিসে কাজ করছি এমন সময় স্যারের টেলিফোন। রাশভারী কণ্ঠস্বর, ‘ইমরুল, তুমি কি অফিসে?’ তটস্থ হয়ে উত্তরে বললাম, ‘ইয়েস স্যার।’ আবার সেই মায়াবী কণ্ঠ, ‘তোমার গাড়ি কি অফিসে আছে?’ আমার প্রত্যুত্তর, ‘ইয়েস স্যার।’ স্যারের আবারও প্রশ্ন, ‘তুমি কি এখন বাইরে কোথাও যাবে?’ আমার উত্তর, ‘নো, স্যার।’ অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে স্যার আমাকে আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমার ভাবি দেশের বাইরে থেকে কিছুক্ষণের মধ্যে এয়ারপোর্টে নামবে; তোমার গাড়িটি কি একটু পাঠাতে পারবে?’ ক্যাডার সার্ভিসের অফিসার হিসেবে বসের সার্বক্ষণিক নির্দেশ পালন করতেই অভ্যস্ত আমরা; এ পরিস্থিতিতে স্যারের ভদ্রতা পরম মুগ্ধতায় গ্রাস করল আমাকে। এভাবেই প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম হেলাল স্যারের সঙ্গে আমার পথ চলা শুরু। ১০ মার্চ। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে প্রেস সচিব স্যারের মিসেস আমাকে ফোন করে জানালেন, স্যারের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভাবির কণ্ঠস্বর আমাকে উতলা না করে পারল না। আবার মনে মনে এটাও ভাবছিলাম-স্যার তো গ্রেট ফাইটার, বারবার নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে তিনি ফিরে এসেছেন, এবারও নিশ্চয়ই আমাদের হতাশ করবেন না। কিন্তু রাত ৮টার দিকে বাস্তবিকভাবেই সেই নির্মম সংবাদটা পেলাম! টানা ২ মাস ১০ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে আমাদের প্রিয় স্যার ইহসানুল করিম হেলাল মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি অবিশ্বাস করার জন্য বারবার জিজ্ঞেস করছিলাম, ডাক্তাররা কনফার্ম করেছে কিনা। নিরুপায় হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানালাম। নিঠুর হৃদয়ে অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে প্রধানমন্ত্রীর শোক বার্তাটি টাইপ করা শুরু করলাম। দু’চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছিল, কোনো শব্দ খুঁজে পাচ্ছিলাম না! হন্তদন্ত হয়ে ছুটলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। দীর্ঘ প্রায় ৫২ বছরের বর্ণাঢ্য সাংবাদিকতার ক্যারিয়ার। ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান দুই ব্যক্তি মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উভয়েরই প্রেস সচিব। তার আপন চাচা জাওয়াদুল করিমও ছিলেন ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব। ১৯৭২ এ যে প্রতিষ্ঠানে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন, সেই বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার প্রধান হন ২০০৯ সালে। তিনি ভারতের নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যুরো চিফ ছিলেন। বিবিসি, জাতিসংঘ, ওআইসি এবং কমনওয়েলথসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেছেন। ভারতীয় পত্রিকা দি স্টেটসম্যান, ইন্ডিয়া টুডে এবং প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া নিউজ এজেন্সিতে কাজ করেছেন। এছাড়া ইহসানুল করিম অস্ট্রেলিয়ার সিডনি মর্নিং হেরাল্ড এবং বেলারোট কুরিয়ার পত্রিকায়ও কাজ করেন। ইহসানুল করিম পড়াশোনা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ভারতের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব নিউজ এজেন্সি জার্নালিজম এর ডিগ্রি নিয়েছেন, সেখানে পেয়েছেন বেস্ট অ্যাওয়ার্ড। কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়নের বৃত্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায়ও পড়ালেখা করেন তিনি। ১৯৬৭ সালে তিনি তৎকালীন কুষ্টিয়া সদর মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। আমাদের জীবনের মহোত্তম অর্জন বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠতম পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়; সেই স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। দীর্ঘ ৮ বছর ৩ মাস স্যারের সঙ্গে কাজ করেছি আমি। তিনি ছিলেন আমার ডাইরেক্ট বস, অথচ কোনদিন ঘুণাক্ষরেও বসিং অনুভব করিনি। আমার পিতার চেয়ে বছর কয়েকের বড় হয়েও তিনি আমাদের সঙ্গে মিশেছেন বন্ধুর মতো অথচ কাজকর্মে ছিলেন দায়িত্বশীল। প্রেস ম্যাটারগুলি বুঝিয়ে দিতেন সহজ সাবলীলভাবে। আমাদের ভুলত্রুটি নির্দ্বিধায় শোল্ডারিং করতেন পরম মমতায়। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সৎ, চরম পরোপকারী ও প্রচণ্ড ক্ষমাশীল একজন মানুষ। আমার নিজের চোখে দেখা, স্যারকে নিয়ে কটূক্তি করা কিংবা তার অমঙ্গল কামনা করা ব্যক্তির জন্যও তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন নির্দ্বিধায়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস টিমকে নেতৃত্ব দিয়েছেন একজন যোগ্য ও দক্ষ ক্যাপ্টেনের ন্যায়। দেশে-বিদেশে স্যারের সঙ্গে আমার শত শত স্মৃতি! কোনটা রেখে কোনটা বলি! অফিসে প্রায়ই তিনি আমার রুমে আসতেন; তার বিশাল অভিজ্ঞতার গল্প শুনাতেন। কতবার বলেছি, স্যার আপনার এই বিরল অভিজ্ঞতাগুলি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য লিখে রেখে যান। ছাত্র জীবনে তিনি ক্রিকেট ও ফুটবল দু’টিই খেলতেন সমান তালে; ছিলেন ফার্স্ট ডিভিশনের প্লেয়ার। মঞ্চ নাটকেও করতেন অভিনয়। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রতিটি খেলা দেখতেন খুব আগ্রহ নিয়ে। দলের যে কোন বিজয়ে যদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন বার্তা দিতে দেরি করতাম, সঙ্গে সঙ্গে স্যারের ফোন-‘ইমরুল, সবকিছুই কি আমার খেয়াল রাখতে হবে?’ কোন বিষয়ে শোক বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটতো।  বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশের প্রতি ছিল তার নিখাদ দরদ ও অনুভব। জাতির পিতাকে হত্যার পর শেখ হাসিনা যখন পরিবার নিয়ে ভারতে ৬ বছর বাধ্যতামূলক নির্বাসিত জীবন যাপন করেন, তখন স্যার বঙ্গবন্ধুকন্যাদ্বয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তাদের নয়াদিল্লির বাসায় যেতেন। বঙ্গবন্ধু পরিবারের প্রতি তার ছিল নিরন্তর ভালোবাসা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি নির্দেশ পালন করতেন অক্ষরে অক্ষরে। নেত্রীর ব্র্যান্ডিং ও সংবাদ প্রচারের জন্য প্রতিনিয়ত আমাদের দিকনির্দেশনা দিতেন। কীর্তিমান ইহসানুল করিম ১৮ জুন ২০১৫ হতে ১০ মার্চ ২০২৪ পর্যন্ত প্রায় ৯ বছর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবেন এই কারণে যে, এ বিশেষ সময়টাতে জননেত্রী শেখ হাসিনা তার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব গুণে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল; বাংলাদেশ রূপান্তরিত হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশে; জাতিসংঘ আমাদের স্বীকৃতি দিয়েছে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আর সারাবিশ্বে আমরা আজ আত্মমর্যাদাশীল জাতির পরিচিতি পেয়েছি। মহান সৃষ্টিকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিম হেলাল স্যারের ইহকালের সকল নেক কর্মকাণ্ডের পুরস্কার নিশ্চয়ই পরজনমে পরিপূর্ণভাবেই দেবেন-এ প্রার্থনা করি। লেখক: প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব
৩১ মার্চ ২০২৪, ১৯:৪৫

‘রোজার পর সরকারের পতন আন্দোলন জোরদার করতে হবে’
রোজার পরে এই স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন আন্দোলন জোরদার করতে হবে বলে জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।  বুধবার (২০ মার্চ) এবি পার্টি আয়োজিত মাসব্যাপী গণইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন বিজয় একাত্তর চত্বরে চলছে মাসব্যাপী এই গণইফতার কার্যক্রম। মান্না বলেন, দেশের মানুষ খেতে পায় না, আওয়ামী লীগ নেতারা লুট করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ছে। দশ হাজার কোটি টাকা পাচারের তদন্ত হয় না, অপরাধীদের বিচার হয় না। রোজার পরে এই স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন আন্দোলন জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইফতার পার্টি বন্ধ করেছেন, তার গুন্ডা বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ইফতার পার্টি করলে সেখানে হামলা চালাচ্ছে। দেশে প্রায় ১০ কোটি হতদরিদ্র মানুষ রয়েছে, তাদের মাসিক ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে বি এম নাজমুল হক বলেন, ঢাকা শহরে লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন, খাদ্যহীন, যার দায়িত্ব সরকারের। অথচ আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের দায়িত্ব নিয়ে নির্বিকার। তারা জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে, দেশের সম্পদ লুট করে বিলাবহুল জীবন যাপন করছে। এমপিদের বউরা বেগম পাড়ায় থাকে। এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত জনগণ তার অধিকার ফিরে পাবে না। এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব শাহ আব্দুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক। বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার, সাংগঠনিক সম্পাদক কবির হাসানসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।
২০ মার্চ ২০২৪, ২০:৫০

অবশ্যই এই সরকারের পতন ঘটবে : আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, সরকারের পতন না-হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন কখনও ব্যর্থ হয়নি। আর অবশ্যই এই সরকারের পতন ঘটবে। শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা আব্বাস বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হলেও কখনও ব্যর্থ হয়নি। আজ নাহয় কাল এই ফ্যাসিস্ট দখলদার সরকারের পতন ঘটবেই। জনগণের আন্দোলনের মুখে কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার টিকে থাকতে পারে নাই তিনি বলেন, এই সরকার জোর করে জনগণের ভোটের বাইরে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা লুটপাট করতে, চুরি করতে ক্ষমতায় টিকে আছে। তারা শুধু এদেশের মানুষকে কষ্ট দিতেই জানে। বিএনপির এই নেতা বলেন, আন্দোলন করতে করতে আমরা এই পর্যন্ত এসেছি। আমাদের বয়স হয়ে গেছে। তাই পরবর্তী প্রজন্মকে এই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের মনোবল ঠিক রাখতে হবে, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।  আব্বাস বলেন, এই সরকারের পতন ঘটানোর জন্য ঐক্যের কোনো বিকল্প নাই। আপনারা অনেক সহ্য করেছেন, আরও সহ্য করতে হবে। যদি বলেন, কতদিন সহ্য করতে হবে, এটা বলা সম্ভব না। তিনি বলেন, কারাগারে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম নিপীড়ন-নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এই নির্যাতন ও অত্যাচার যেভাবে সীমা ছাড়িয়ে গেছে এটা আর সহ্য করা যায় না, বর্ণনা করা যায়। তারপরও নেতাকর্মীরা মনোবল হারায়নি। তারা এই সরকারের পতন ঘটিয়ে ছাড়বে। সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সাসের জাকির হোসেন রোকন, স্বেচ্ছোসেবক দলের সাদরেজ জামান, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব, তাঁতীদলের আবুল কালাম আজাদসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
০৯ মার্চ ২০২৪, ১৬:৪৮

জান্তার পতন হলেই নিজভূমে ফিরতে পারবেন রোহিঙ্গারা? 
২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলের পর থেকেই মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘাত চলছে স্বাধীনতাকামী জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর স্বশস্ত্র বাহিনীর। সাম্প্রতিক সময়ে এই সংকট সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে দেশটির জান্তা বা সামরিক শাসকরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে এখন জান্তা সরকার। আভাস পাওয়া যাচ্ছে ক্ষমতার রদবদলের। ফলে অনেকেই মনে করছেন, জান্তা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার সময় আসছে প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সামনে। ভারমুক্ত হওয়ার সুযোগ আসছে বাংলাদেশের সামনেও।  তবে, শুধুমাত্র জান্তা সরকারের পতন হলেই কি নিজভূমে ফিরে যেতে পারবেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা? আরাকান আর্মি কি আসলেই ভরসাযোগ্য? কিংবা অং সান সুচি মুক্তি পেলে সুগম হবে রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তনের পথ?          স্বাধীনতার পর থেকে সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সংঘাত চলমান থাকলেও,  গত বছরের অক্টোবরে হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে হাজার হাজার সৈন্য তাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিদ্রোহী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দখলে থাকা অনেক শহর ও এলাকা বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলেও খবর প্রকাশ হয়েছে। মিয়ানমারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের একটি দল 'স্পেশাল অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল ফর মিয়ানমার'। তাদের তথ্য অনুযায়ী, এই মূহুর্তে দেশটির জান্তা সরকারের 'পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ' রয়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ ভূখণ্ডের উপর, ২৩ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে এবং আরাকান আর্মিসহ বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের দখলে রয়েছে ৫২ শতাংশের মতো ভূখণ্ড। থাইল্যান্ড ভিত্তিক মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীতে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, সামরিক বাহিনী জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বিভিন্ন প্রদেশে ৩৩টি শহরের দখল হারিয়েছে। এর মধ্যে চিন, সাকাই, কিয়াং প্রদেশ এবং উত্তরাঞ্চলের শান এবং শিন রাজ্য উল্লেখযোগ্য। সর্বশেষ বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যেরও দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি। জানুয়ারির শেষ দিকে এসে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন ও আরাকান রাজ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ করে যুদ্ধ-পরিস্থিতি। আরাকান আর্মির হামলায় পর্যুদস্ত হয়ে চলতি মাসের ৪ তারিখ থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সশস্ত্র সদস্যরাও। এর আগে শত শত সৈন্য সীমান্ত দিয়ে চীন ও ভারতে পালিয়েছে। যুদ্ধ না করেই আত্মসমর্পণ করেছে জান্তা সমর্থিত হাজার হাজার সৈন্য। অভ্যুত্থানের পর থেকে এ পর্যন্ত ত্রিশ হাজারের মতো সেনা হারিয়েছে জান্তা সরকার। যেখানে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীতে সেনার সংখ্যা মাত্র দেড় লাখ। মিয়ানমারে প্রতিদিনই পরাজয়ের মুখে পড়ছে সামরিক বাহিনী এবং দখল হয়ে যাওয়া ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতেও ব্যর্থ হচ্ছে তারা। সব দিক দিয়েই এখন কোণঠাসা জান্তা সরকার। একের পর এক এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে দেশটির সেনা সরকার। নিশ্চিত তথ্য পাওয়া না গেলেও, বলা হচ্ছে আরাকানের বেশির এলাকাই এখন বিদ্রোহী আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে।  এমন অবস্থায় দ্রুতই জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হারাচ্ছে জান্তা সরকার। এরপরও নিজভূমে ফেরার স্বপ্ন দেখার সাহস পাচ্ছেন না বাংলাদেশের শরণার্থী রোহিঙ্গারা। আরাকান আর্মি সব নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীকেই স্বীকৃতি দেয়ার কথা বললেও বিশ্বাস করতে পারছেন না তারা। বলছেন, এখন যে আরাকান বাহিনী জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে, রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগের পেছনে তাদেরও ভূমিকা ছিলো।  রোহিঙ্গা নেতা ও সাধারণেরা বলছেন, আরাকান আর্মির বেশিরভাগ সদস্যই রাখাইন জাতি গোষ্ঠীর সদস্য। আর এ রাখাইনরাই রোহিঙ্গাদের বেশি নির্যাতন করেছিলো। তাদের ভিটে মাটি দখলে নিয়েছিলো।  রোহিঙ্গাদের একটা অংশ আবার আশা করছেন সুচির নেতৃত্বাধীন এনইউজি ক্ষমতায় এলেই অবসান হবে রোহিঙ্গা সংকটের। তবে, ইতিহাস বলছে, সুচিও রোহিঙ্গাদের দূরে ঠেলেছেন। গণহত্যা অস্বীকার করেছেন। এমনকি সুচির এনইউজি সরকারেও রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে রাখা হয়নি কোনও প্রতিনিধি। এমন অবস্থায় মিয়ানমারের জান্তা সরকার বিরোধী জোট রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার যে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, সেটির লিখিত দলিল চান রোহিঙ্গারা।  
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:০২

সরকারের শিগগিরই পতন হবে : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ডামি নির্বাচন, ডামি ভোটার, ডামি প্রার্থী, ডামি এমপি, ডামি শপথের মাধ্যমে একটি কৃষ্ণতম সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে। ডামি সরকারের পতনের আন্দোলন চলছে, চলবে এবং শিগগিরই সরকারের পতন ঘটবে। বর্তমান সরকার তাসের ঘরের মতো অবস্থায় আছে। ভোট না দিয়ে জনগণ চূড়ান্তভাবে আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। তাড়াহুড়ো করে এমপি ও মন্ত্রীদের শপথই প্রমাণ করে অজানা আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে ক্ষমতাসীনদের। এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, মির্জা ফখরুল ও আমিন খসরু বর্তমানে তারা কারাগারে প্রচণ্ড অসুস্থ। তারপরেও তাদের মুক্তি দিচ্ছে না সরকার। জেলখানা এখন আরেকটি হিটলারের কনসানট্রেশন ক্যাম্প। জেলখানা আরেকটি গ্যাস চেম্বারের পরিণত করেছে সরকার।
১২ জানুয়ারি ২০২৪, ১৫:২৮

‘২০২৪ সালেই সরকারের পতন হবে’
নির্বাচন বর্জন করে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষা এবং রাজবন্দিদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। বুধবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংগঠনটি নির্বাচন বর্জনের এই কর্মসূচি পালন করে। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বক্তব্য দেওয়ার পর মিছিল নিয়ে শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের সমন্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, এই সরকার মানুষের ভোটাধিকার হরণ করে একদলীয় শাসনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। দেশের সব বিরোধী দল ও জনগণ এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ আধুনিক বাকশাল কায়েম করে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকিতে ফেলে ভারতের স্বার্থ বাস্তবায়ন করছে। ৭ তারিখের নির্বাচন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ধ্বংসের নির্বাচন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছরে ৩ হাজারের অধিক বিচারবহির্ভূত হত্যা, ৭ শতের অধিক গুম, ৫০ লাখেরও বেশি মানুষকে মামলা করে পুরো বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। আমরা ছাত্র অধিকার পরিষদ জীবন দিয়ে হলেও দেশ ও জনগণের জন্য দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব। ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার এই বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছে। এই সরকার বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা ও শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। তারা বাংলাদেশের ইতিহাসের একমাত্র নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মিথ্যা মামলায় আদালতে বিচারিক হয়রানি করে সাজা দিয়েছে, আমরা তার প্রতি সংহতি জানাই।  তিনি আরও বলেন, এই সরকার ছাত্রলীগকে দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দখলদারিত্ব কায়েম করেছে। এই আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর এই ছাত্রলীগকে বাংলাদেশের মানুষ মীর জাফরের মতো ঘৃণাভরে স্মরণ করবে। জনগণ এই বাকশালী সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই ২০২৪ সালেই সরকারের পতন হবে, ইনশাআল্লাহ। বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সাব্বির হোসাইন, নাহিদ উদ্দিন তারেক, নেওয়াজ খান বাপ্পি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, জোবায়রুল আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন অর্থ সম্পাদক প্রিয়ম আহমেদ, প্রচার সম্পাদক মো. আবু রায়হান সোহান, বিজ্ঞান সম্পাদক আখতারুজ্জামান সম্রাট, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আসাদ বিন রনি, উত্তরের সভাপতি আবির ইসলাম সবুজ, তিতুমীর কলেজ সভাপতি আফতাব মাহমুদ, ঢাকা কলেজ সভাপতি কামাল হোসেন সুমন সাধারণ সম্পাদক নজরুল করিম সোহাগসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৪:৫৬
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়