• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo
বেনজীরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সাবেক আইজিপির দুর্নীতি অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে সংস্থাটির  উপপরিচালক হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে। সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দুদকের একটি সূত্র।   এর আগে বেনজীর আহমেদের দুর্নীতির অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাউদ্দিন রিগ্যান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিটটি দায়ের করেন। দুদক চেয়ারম্যান, সচিবসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে তাতে। রিটে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।  বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রিটের শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানা গেছে। এর আগে রোববার (২১ এপ্রিল) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে গত ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদ তার স্ত্রী ও কন্যাদের নামে অঢেল সম্পত্তি অর্জন করেছেন, যা তার আয়ের বিচারে অভাবনীয়।  চিঠিতে সাবেক আইজিপির দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত দাবি করেন ব্যারিস্টার সুমন। পাশাপাশি দুদক কোনো ব্যবস্থা না নিলে, উচ্চ আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন। প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘ঢাকায় বেনজীরের জন্ম আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে নতুন করে আলোচনায় উঠে আসেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদে। প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ত্রী জিশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে অঢেল সম্পদ গড়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেনজীরের অঢেল সম্পদের মধ্যে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামে এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে তার বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি। অথচ গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা।
২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:১২

বেনজীর আহমেদের দুর্নীতি অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দুর্নীতি অনুসন্ধান চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাউদ্দিন রিগ্যান সোমবার (২২ এপ্রিল) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিটটি দায়ের করেন। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চে এই রিটের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।  এরই মধ্যে রিটের একটি কপি হাতে পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। সেখানে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। রিটে দুদক চেয়ারম্যান ও সচিবসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে। এর আগে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি দেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ ৩৪ বছর ৭ মাস চাকরি করে গত ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অবসরে যান। অবসর গ্রহণের পর দেখা যায়, বেনজীর আহমেদ তার স্ত্রী ও কন্যাদের নামে অঢেল সম্পত্তি অর্জন করেছেন, যা তার আয়ের বিচারে অভাবনীয়। প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘ঢাকায় বেনজীরের জন্ম আলাদীনের চেরাগ’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হলে নতুন করে আলোচনায় উঠে আসেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও র‌্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদে। প্রতিবেদনে বলা হয়, স্ত্রী জিশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে অঢেল সম্পদ গড়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেনজীরের অঢেল সম্পদের মধ্যে গোপালগঞ্জের সাহাপুর ইউনিয়নে সাভানা ইকো রিসোর্ট নামে এক অভিজাত ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে। এ ছাড়াও তার স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ছয়টি কোম্পানির খোঁজ পাওয়া গেছে। পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে তার বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঢাকার অভিজাত এলাকাগুলোতে বেনজীর আহমেদের দামি ফ্ল্যাট, বাড়ি আর ঢাকার পাশে বিঘার পর বিঘা জমি রয়েছে। দুই মেয়ের নামে বেস্ট হোল্ডিংস ও পাঁচতারা হোটেল লা মেরিডিয়ানের রয়েছে দুই লাখ শেয়ার। পূর্বাচলে রয়েছে ৪০ কাঠার সুবিশাল জায়গাজুড়ে ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার আনুমানিক মূল্য কমপক্ষে ৪৫ কোটি টাকা। একই এলাকায় আছে ২২ কোটি টাকা মূল্যের আরও ১০ বিঘা জমি।  অথচ গত ৩৪ বছর সাত মাসের দীর্ঘ চাকরিজীবনে বেনজীর আহমেদের বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার ২০০ টাকার মতো হওয়ার কথা। এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি পাঠিয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনও জানান, বেনজীর আহমেদ তার পদের অপব্যবহার করে তার আয়ের তুলনায় প্রতিবেদনে উল্লিখিত সম্পত্তিগুলো অধিগ্রহণ করেছেন বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক এই মহাপরিদর্শক, তার স্ত্রী, বড় মেয়ে এবং ছোট মেয়ের নামে থাকা অঢেল সম্পদ কীভাবে অর্জিত হয়েছে, তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুদককে অনুরোধ করেছেন তিনি।
২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৬:০৮

দুর্নীতি আছে, তবে বিএনপির মুখে এ অভিযোগ মানায় না : হানিফ
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, দুর্নীতি সব দেশেই আছে। এখানে যে নেই তা বলব না। তবে বিএনপির মুখে অন্য কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ মানায় না। কারণ, তাদের আমলে পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে ১ নাম্বার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ।  রোববার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বৈশাখী আড্ডা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।  দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজার অস্থিতিশীল। এর ঢেউ এখানেও আছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ পেলেই বাজার অস্থির করে ফেলেন। তবে সরকার এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে আশ্বস্ত করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এ নেতা।  সিন্ডিকেট প্রসঙ্গে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ব্যবসায়ীরা রাজনীতি করতে পারেন, এতে কোনো বাধা নেই। ব্যবসায়ী হলেই যে সিন্ডিকেটে যুক্ত থাকবেন এ অভিযোগ সঠিক না।
১৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৩৭

খালেদা জিয়ার নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য ১৪ মে
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজন আসামির বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ১৪ মে ধার্য করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ছিল। এদিন খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তারপক্ষে আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া হাজিরা দেন। এদিন জব্দ তালিকার সাক্ষী আব্দুল বাকী ও চুক্তির সময় খসড়া তালিকার সদস্য এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে সাক্ষ্য দেন। এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। এর মধ্যে আনোয়ারুলের জেরা শেষ হলেও অপর সাক্ষী আব্দুল বাকীর জেরা শেষ হয়নি। আদালত আংশিক জেরা ও পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৪ মে দিন ধার্য করেন। খালেদা জিয়ার আইনজীবী হান্নান ভূঁইয়া বিষয়টি জানিয়েছেন। গত বছর ১৯ মার্চ একই আদালত খালেদা জিয়াসহ ৮ আসামির অব্যাহতির আদালত নাকচ করে চার্জগঠনের আদেশ দেন।  অপর আসামিরা হলেন তৎকালীন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সিএম ইউসুফ হোসাইন, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এমএএইচ সেলিম। তাদের মধ্যে প্রথম তিনজন পলাতক রয়েছেন। ২০০৭ সালে দুদক খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করে। দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সরকারে থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান এবং উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেয়। আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। 
০৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:৪৭

স্ত্রীসহ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকার মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়ের সাথে ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকা মূল্যের অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ থাকায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গাড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করেছে।  এছাড়া ৩৪ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়ের সাথে ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা মূল্যের সম্পদ অসঙ্গতিপূর্ণ থাকায় চেয়ারম্যানের স্ত্রী মোছা. জোমেলা খাতুনের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে।  বুধবার (২০ মার্চ) দুর্নীতি দমন কমিশন পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ সহকারি পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন।  মামলায় উল্লেখ করা হয়, সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হলে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে পাবনা কার্যালয় তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারি করে। গত বছরের ১২ মে তিনি তার সম্পদের বিবরণী দাখিল করেন। সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর মিলে সর্বমোট ২ কোটি ৫৫ লাখ ৯২ হাজার ৪৮৪ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য দেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে তার নামে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৩৪৩ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। অর্থাৎ সাইফুল ইসলাম দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ৩ কোটি ২০ লাখ ৭ হাজার ৮৫৯ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।  এছাড়াও  তার নামে পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ১৮ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে তার মোট সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ৯৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৪৩ টাকা। কিন্তু উল্লেখিত সম্পদের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় মোট ১ কোটি ৬০ লাখ ২২ হাজার ৬৭৯ টাকা। অর্থাৎ সাইফুল ইসলাম জ্ঞাত আয়ের সাথে ৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৪ হাজার ৬৬৪ টাকা মূল্যের অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন।  একইভাবে সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মোছা জোমেলা খাতুনের দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর ও অস্থাবর মোট ১ কোটি ৫ লাখ ২৬ হাজার ২১৯ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য দিয়েছেন। দুদকের অনুসন্ধানে তার নামে ১ কোটি ৩৯ লাখ ৫৭ হাজার ১৮ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। তাছাড়া তার নামে পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় পাওয়া যায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে তার মোট অর্জিত সম্পদের মূল্য ১ কোটি ৩৮ লাখ ১৬ হাজার ৭৪৪ টাকা। এসব সম্পদ অর্জনের বিপরীতে তার গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় মাত্র ১৩ লাখ ৫৫ হাজার ৮৩০ টাকা। অর্থাৎ জোমেলা খাতুন ১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার ৯১৪ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করেছেন।  পাবনা দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক খায়রুল হক মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার দুটির তদন্ত চলছে। এ বিষয়ে গাড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনও লিখিত কোনো চিঠি পাইনি। ফলে বিষয়টি আমার জানা নেই। আগামীকাল অফিস টাইমে দুদক অফিসে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর এবিষয়ে বিস্তারিত জানাবো। 
২০ মার্চ ২০২৪, ২৩:০৪

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি ও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আগামীকাল  মঙ্গলবার (১৯ মার্চ)। সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে গত ৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার। আবেদনে তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর অনুমতিও চাওয়া হয়। পরে সেই আবেদনের বিষয়ে মতামত নিতে সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য পরিবারের আবেদনের বিষয়ে কী করা হবে, জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে, এই চিঠিতেও তারা আগের মতোই স্থায়ী মুক্তি চাচ্ছেন। আমি বুঝলাম না স্থায়ী মুক্তি মানে কী? এছাড়া, বিদেশ যাওয়ার অনুমতি চাচ্ছেন। আমার কাছে আজকে সচিব ফাইলটা দিয়েছেন। ওনারা (খালেদার পরিবার) কী আবেদন করেছেন, সেটি দেখে ভালো করে বিবেচনা করে আমি অতিসত্বর নিষ্পত্তি করব। আগামীকাল (মঙ্গলবার) নাগাদ হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ। আনিসুল হক বলেন, ফাইলটা আজকেই পেয়েছি। আমাকে বিবেচনা করতে হবে, পড়তে হবে, দেখতে হবে। তবে, একটা বিষয় বলতে পারি, সেটি হলো খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন হবে না।  এর আগে, ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না— এ দুটি শর্তে বিএনপি চেয়ারপারসনের দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ আটবার বাড়ানো হয়েছে। এবার বাড়ানো হলে নয়বারের মতো খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়বে। সর্বশেষ গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়েছিল। এই মেয়াদ আগামী ২৪ মার্চ শেষ হবে। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা শেষে গত ১৪ মার্চ গুলশানের বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এর আগে, ১৩ মার্চ রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস ও চোখের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয় তাকে। এরপর একই বছরের ৩০ অক্টোবর এই মামলায় আপিলে তার সাজা আরও ৫ বছর বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত। রায়ে কারাদণ্ড ছাড়াও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় তাকে। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এরপর ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয় সরকার। এরপর আরও ৭ মেয়াদে বাড়ে তার এই মুক্তির মেয়াদ। 
১৮ মার্চ ২০২৪, ১৭:২১

শক্তভাবে দুর্নীতি হ্যান্ডেল না করলে দেশ খালি হয়ে যাবে : চুন্নু
বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হাজার ৩০০ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়ম। সব থেকে বেশি অনিয়ম হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। সরকার যদি শক্তভাবে এগুলো হ্যান্ডল না করে, তাহলে তো দেশ খালি হয়ে যাবে। ব্যাংক তো খালি হয়ে গেছে। ব্যাংকের মাধ্যমে এই যে এসব অর্থ যায়, নিশ্চয়ই এটা ওভার ইনভয়েস বা আন্ডার ইনভয়েস? বৃহস্পতিবার(২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীকে কঠিন হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চুন্নু বলেন, এগুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, এগুলো দেখার দায়িত্ব কার? অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা যদি এগুলো না দেখেন, বাংলাদেশ ব্যাংক চুপচাপ বসে থাকে। আমরা কোথায় যাব? এই যে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাচার, এটা তাদেরই রিপোর্ট (বাংলাদেশ ব্যাংক)। তাহলে এতদিন তারা কী করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক কেন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি, প্রশ্ন রেখে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, তারা কি জানে না কোন আইটেমের প্রাইস কত? কোন ব্যবসায়ী কোন হিসাব থেকে এলসি করে? এটা ওভার ইনভয়েস হচ্ছে না আন্ডার ইনভয়েস হচ্ছে, তারা কি জানে না? দেশে আমদানি-রপ্তানির একটি বিভাগ আছে। তিনি বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে নেগেটিভ নিউজ দেখলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। হাসপাতালে অ্যান্ডোস্কপি করতে গিয়ে মারা যায়। তাকে অস্ত্রোপচার কক্ষে ঢোকানো হলো, তারপর বলা হলো মারা গেছে। খতনা করাতে গিয়ে শিশুর মৃত্যু, মনে হয় সব এলোমেলো হচ্ছে।
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:২৯

নাইকো দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ ৪ মার্চ
নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৪ মার্চ দিন ধার্য করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমানের আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দেন। মামলায় সাক্ষ্য দিতে একজন সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হন। দুদক সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য প্রস্তুত না থাকায় সময়ের আবেদন করেন। আদালত সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ৪ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নতুন দিন ধার্য করেন। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) খালেদা জিয়ার আইনজীবী জিয়া উদ্দিন জিয়া ও হান্নান ভূঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়। ২০২৩ সালে ১৯ মার্চ কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত ঢাকার ৯ নম্বর (অস্থায়ী) বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ গঠন করেন। মামলার অন্য সাত আসামি হলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলা থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:০৭

দুর্নীতি আর দুর্নীতির ধারণা যারা এক করছে, তাদের উদ্দেশ্য স্বচ্ছ নয়
এবারও দুর্নীতির ধারণা সূচকের প্রতিবেদন প্রকাশ করলো ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল। এবার ২৪ স্কোর পেয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ নম্বর। ২০২৩ সালে ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী বিশ্বের ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৭ নম্বরে। অর্থাৎ বিশ্বে বাংলাদেশের চেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ মাত্র ১৭০টি। এভাবেই বলা হয় সবসময়। অথচ প্রতিবেদনে লেখা হয় এটা দুর্নীতির ধারণা সূচক। কিন্তু উপস্থাপন করা হয় দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসাবে। খুব সুক্ষ্মভাবে ধারণা শব্দ এড়িয়ে যাওয়া হয়। পরিস্কার করে বলা হয় না যে দুর্নীতি ও দুর্নীতির ধারণার বিষয়টি এক নয়। এবারও তাই হয়েছে।  এ নিয়ে সুন্দর একটি উদাহরণ দিয়েছেন কয়েকজন গবেষক। তারা বলছেন এটা অনেকটা, আপনার একটি বাড়ির মূল্য নির্ধারণ করতে গিয়ে ব্যাংক, ইন্সুরেন্স কোম্পানি এবং সিটি কর্পোরেশন ভিন্ন ভিন্ন ধারণা তৈরি করার মত। তারা প্রত্যেকেই যার যার প্রয়োজন অনুযায়ী আপনার বাড়ীর দাম ঠিক করবে এবং কারো সঙ্গে কারণা ধারণা মিলবে না। একটি বাড়ীর ভিন্ন ভিন্ন দাম। এপ্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সবচেয়ে প্রচলিত জোকসটি হলো অনেকটা এরকম। আমার বন্ধুবান্ধবের ধারণা আমার বেতন কোটি কোটি টাকা। আর আমার পরিবারের ধারণা আমাকে অফিস থেকে কোনো বেতনই দেওয়া হয় না। অথচ ব্যক্তি কিন্তু সেই আমি।  অর্থাৎ বাস্তবতা আর ধারণা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ভিন্ন হতে পারে। একই ভাবে একটি দেশের দুর্নিতী নিয়ে একটি দেশের সম্পর্কে একেক সংগঠনের ধারণা একেক রকম হতে পারে। বাংলাদেশ নিয়ে গত ১৪/১৫ বছর ধরে টিআইবির দুর্নীতির ধারণা সূচক একই জায়গায় স্থির হয়ে আছে। অথচ এর মধ্যে বাংলাদেশে নীতি এবং কাঠামো উভয় ক্ষেত্রেই অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসেই দুদকের ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। ডিজিটাল কেস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম প্রবর্তন, অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা এবং সচেতনতামূলক কর্মসূচি প্রসারিত করেছে। শুধু তাই নয়, হুইসেল ব্লোয়ার আইন, তথ্য অধিকার আইন ও কমিশন প্রতিষ্ঠা নিয়ে অনেক নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সাথে সারাদেশে ডিজিটাইজেশন করা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে দুর্নীতি ও হয়রানি অনেক কমানো হয়েছে।  কিন্তু টিআইবি’র রিপোর্ট দেখে মনে হয় গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে কোনো কাজই হয়নি। অথচ এর মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৫৪৩ ডলার থেকে ২৭৯৩ ডলারে বৃদ্ধি পেয়েছে, জিডিপি ৪ লক্ষ কোটি টাকা থেকে ৫০ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। মুড়ির টিনের লক্করঝক্কর জার্নি থেকে দেশ মেট্রোরেলে ব্যবস্থায় রূপান্তর হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন, শিশুস্বাস্থ্য, দুর্যোগ মোকাবেলা এবং সামাজিক নিরাপত্তায় বাংলাদেশের সাফল্যের স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব সংস্থাগুলো। অথচ টিআইবির প্রতিবেদনে উল্টো চিত্র।  বিশ্বজুড়ে টিআইবির মূল সংগঠন টিআই এর সমালোচকরা বলেন, এদের রিপোর্ট সব সময় একটি রাজনৈতিক দল বা বিশেষ কোন গোষ্ঠীর পক্ষে যায়।  অবশ্য এটা প্রমাণের জন্যে বাংলাদেশের চেয়ে বড় উদাহরণ তো আর হয় না। ২০১২ সালে দূার্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের পয়েন্ট যেখানে ছিল ২.৬, ২০২৪ সালে এসে তা কমে হয়েছে…। বিএনপির চরম দুর্নীতিগ্রস্ত ২০০৬ সালেও বাংলাদেশের পয়েন্ট এমনই ছিল। অথচ ২০০৬ সালের বাংলাদেশ আর ২০২৪ সালের বাংলাদেশের মধ্যে আকাশপাতাল ব্যবধান। অথচ টিআই এরকমই ধারণা সূচক তৈরি করছে বছরের পর বছর। তাই সারা পৃথিবীর একাডেমিশিয়ান এবং উন্নয়ন গবেষকরা এই ধারণা সূচক নাকচ করে দিয়েছেন। তাদের মূল অভিযোগ, টিআই কেন, কার কাছ এবং কিভাবে এই ধারণার তথ্য নিচ্ছে, তার কোনো ব্যাখ্যা দেয় না।  বিশ্ববিখ্যাত ব্রিটিশ উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ অ্যালেক্স কোবহ্যাম বলেন, টিআই-এর রিপোর্টগুলো সুশীল সমাজের কথা বলে দুর্নীতির জনপ্রিয় ও বিভ্রান্তিকর ধারণাগুলো সামনে নিয়ে আসে, যা একটি রাষ্ট্র সম্পর্কে অন্য রাষ্ট্রের কাছে ভুল বার্তা দেয়। আরেক বিশ্ববিখ্যাত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক পল হেইউড বলেন, অনেক বছর ধরেই টিআই রিপোর্ট করছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। পদ্ধতিগতভাবে টিআই-এর গবেষণায় অনেক ভ্রান্তি আছে। এই গবেষনা বরং সংশ্লিষ্ট দেশগুলিতে 'দুর্নীতির ফাঁদ' তৈরি করার ঝুঁকি বাড়ায়। এসব কারণেই বিশ্বব্যাপী টিআই-এর ধারণা সূচক একটি অগ্রহণযোগ্য প্রতিবেদনে পরিণত হয়েছে।  গত কয়েক বছরে টিআই নিজেই অনেক দুর্নীতিতে জড়িত ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এগুলো কোনো ধারণা নয়। প্রামাণ্য দুর্নীতি। যেমন ২০১৪ সালে সিমেন্স কোম্পানি থেকে ৩ মিলিয়ন ডলার ফান্ড টিআইবি নেয়। যে কোম্পানি ২০০৮ সালে বিশ্বে দুর্নীতির জন্য সর্বোচ্চ ১.৬ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিয়েছে। ২০১৫ সালে টিআইবির ‘ওয়াটার ইন্টেগ্রিটি নেটওয়ার্কের’ আর্থিক লেনদেন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায় মিজ আনা বাজোনি নামের এক কর্মকর্তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়। দুর্নীতির অভিযোগে টিআই-এর আমেরিকা এবং ক্রোয়েশিয়া চ্যাপ্টার বাতিল করা হয়। সংস্থার ভেতরে দুর্নীতি এবং হুইসেল ব্লোয়ারদের ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে সংস্থার এমডি প্যাট্রিসিয়া মোরেইরা ২০২০ সালে পদত্যাগ করেন। তার পূর্বসূরি আরেক এমডি ডি সোয়ার্ত ২০২১ সালে এই একই অভিযোগ নিয়ে একটা বই লিখেছেন। ২০২২ সালে ব্রাজিলে টিআই এর বিরুদ্ধে একটি নির্দিষ্ট দলের পক্ষ নিয়ে রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা চালানোর অভিযোগ ওঠে। টিআই ব্রাজিলের কয়েকজন কর্মকর্তার একটি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে টাকা নেয়ার প্রমাণ ও কথোপকথন ফাঁস হয়। এ অভিযোগে টিআই-এর বিরুদ্ধে মামলা চলছে ব্রজিলে। অথচ বাংলাদেশের টিআই এর প্রধান সব সময় বলার চেষ্টা করেন, টিআইবি কোন রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করে না। ড. ইফতেখারুজ্জামান ক’দিন আগে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরও এমন কথা বলেন। এবারও নিশ্চয়ই বলবেন।  যাই হোক লেখা শুরু করেছিলাম, দুর্নীতি এবং দূর্নীতির ধারণার সূচক বিষয়ক ধোঁয়াশা নিয়ে। এসে গেলো টিআইবির জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পেক্ষাপট। এবারের রিপোর্ট প্রকাশের আগেও তারা সেই ধোঁয়া পরিস্কার করেনি। আমার মনে হয় না করে ভালই করেছেন। এই সার্বিক আলোচনায় সাধারণ মানুষের কাছে তাদের এত সুশীল প্রীতির বিষয়টি নিশ্চয়ই পরিস্কার হয়েছে। সারা বিশ্বের মত তারাও নিশ্চয়ই এখন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ট্রান্সপারেন্সি বা স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন।      লেখক: গণমাধ্যমকর্মী।
৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩:৩৮

যেখানে দুর্নীতি সেখানেই ফেসবুক লাইভ করবেন : ব্যারিস্টার সুমন
যুবসমাজের উদ্দেশে হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, যেখানে দুর্নীতি হবে সেখান থেকেই আপনারা ফেসবুকে লাইভ করে প্রতিবাদ জানাবেন। সবাইকে একত্রিত হয়ে দুর্নীতিকে বিদায় করতে হবে। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বিকেলে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার রতনা চা বাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত প্রীতি ফুটবল ম্যাচের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যারিস্টার সুমন বলেন, কারও এলাকায় রাস্তার কাজে যদি বিটুমিন কম দেওয়া হয় আপনারা আপনাদের এমপিকে জানানোর জন্য লাইভ করবেন। এমপিকে বলবেন, আপনাদের রাস্তায় কাটিং কাটিং চলতেছে। তাতে যদি কাজ না হয় তাহলে আমাকে জানাবেন। আমি আপনাদের এমপির সঙ্গে কথা বলব।  তিনি আরও বলেন, আমি এমপি হয়েছি চুনারুঘাট ও মাধবপুরের মানুষের ভোটে। কিন্তু ফুটবলের জন্য আমি সারাদেশের মানুষের। খেলা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে আমি সবার সঙ্গে থাকব। আমি আমাদের দেশে এমন একটা ফুটবল দল চাই যারা হেসেখেলে জয় করতে পারবে। ৯০ দশকের মতো এমন খেলোয়াড় তৈরি করতে হবে যারা সাফ ফুটবলে জয়ী হয়েছিল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জুড়ী উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান রিংকু রঞ্জন দাস, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দিন লেমন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা প্রমুখ।
২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:০০
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়