• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
ইরানের হামলার জবাব কীভাবে দেবে ইসরায়েল, জানাল যুক্তরাষ্ট্র
ইরানের হামলার জবাবে ইসরায়েল দেশটিতে ‘সীমিত আকারে’ হামলা চালাতে পারে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এ তথ্য দিয়েছেন। খবর সিএনএনের।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ইরানের ভূখণ্ডে ছোট ও সীমিত আকারে হামলা চালানোর চিন্তাভাবনা করছে ইসরায়েল। দেশটি মনে করছে, ইরানের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের একধরনের সামরিক শক্তি প্রয়োগ করেই জবাব দেওয়া দরকার। বাইডেন প্রশাসনের ওই প্রশাসনিক কর্মকর্তা অবশ্য এও বলেছেন, নিজেদের পরিকল্পনা কী এবং সেটি কখন ঘটতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে দাপ্তরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে এখনো কোনো সতর্কবার্তা দেয়নি ইসরায়েল। সঙ্গে যোগ করেন, ‘তবে, আমরা আশা করব, তারা (ইসরায়েল) আমাদের একধরনের সতর্কবার্তা দেবে; যাতে আমাদের সেনাদের সুরক্ষায় আমরা প্রস্তুত থাকি। এটি শুধু সামরিক বিষয়েই নয়; বরং পুরো অঞ্চলে আমাদের কূটনৈতিক মিশনের জন্যও জরুরী।’ অবশ্য ইরানে হামলা চালানোর আগে ইসরায়েল যে তাদের মিত্রদেরকে অবগত করবেই সে নিশ্চয়তা নেই বলেও জানিয়েছেন মার্কিন ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের প্রস্তুতির জন্য ইসরায়েল যে আমাদের আগাম বার্তা দেবে এ নিশ্চয়তা নেই। কখন আমাদের তারা বার্তা দেবে কিংবা আদৌ দেবে কি না, তা শুধু তারাই জানে। তবে ইসরায়েল যা করতে যাচ্ছে, সে বিষয়ে আমরা সম্ভবত আবারও আমাদের আপত্তির কথা জানাব।’ মার্কিন এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘যদি ইসরায়েল পাল্টা হামলা না চালায়, উত্তেজনা কমে আসবে এবং পরিস্থিতি আগের অবস্থায় ফিরবে বলে  বিশ্বাস করে যুক্তরাষ্ট্র। এই মুহূর্তে এমন এক পরিস্থিতি বিরাজ করছে যে যেকোনো অতিরিক্ত পদক্ষেপ অন্যান্য পাল্টাপাল্টি ঘটনার দুয়ার খুলে দেবে; যার কয়েকটি খুবই ভয়ংকর।’ প্রসঙ্গত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় কনস্যুলেট ভবনটি। হামলায় নিহত হন দেশটির ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডের (আইআরজিসি) শীর্ষস্থানীয় দুই কমান্ডারসহ সাতজন সামরিক কর্মকর্তা। জবাবে গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে একযোগে তিনশ'র বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে হামলা চালায় ইরান। ইসরায়েলের ভূখন্ডে এর আগে আর কখনও সরাসরি হামলা চালায় নি দেশটি।  ইতিমধ্যে ইরানের হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। তবে কোথায় ও কীভাবে হামলা চালানো হবে, এ নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত পৌঁছাতে পারেনি তারা। আজ বুধবার এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো বসবে মন্ত্রিসভা। দুই চিরশত্রু দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ দেখা দিয়েছে নতুন করে। ইরানে পাল্টা হামলা না করার জন্য ইসরায়েলকে আহ্বান জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের অন্যান্য পশ্চিমা মিত্ররাও। এদিকে ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালালে পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। আর দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাগেরি কানি বলেছেন, ইসরায়েল হামলা চালালে এবার জবাব দিতে আর ১২ দিন অপেক্ষা করবে না তেহরান। সেকেন্ডের মধ্যে পাল্টা আঘাত করবে তারা।  
১৭ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৪৭

মাকে ছাড়া কীভাবে থাকব : পূজা
না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন চিত্রনায়িকা পূজা চেরির মা ঝর্ণা রায়। রোববার (২৪ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে মিরপুরের নিজবাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন ঝর্ণা রায়। মাকে হারিয়ে শোকে কাতর পূজা। মা হারানোর বেদনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি। গণমাধ্যমে পূজা জানান, এমন শোক সহ্য করার শক্তি আপাতত খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। পূজা বলেন, এভাবে মামুনি আমাকে একা করে চলে যাবে আমি কল্পনাও করতে পারছি না। এই শোক কীভাবে ভুলব আমি। বুকে আটকে থাকা এই কষ্ট নিয়ে কীভাবে আমি সারাজীবন পার করব। মাকে ঘিরে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। এখন যুদ্ধ করে একাই আমাকে সেগুলো পূরণ করতে হবে। ভালো থেকো মা আমার। সবাই আমার মামুনির জন্য প্রার্থনা করবেন।   বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন পূজার মা। ফেসবুক পোস্টে মায়ের অসুস্থতার বিষয়টি জানিয়েছিলেন নায়িকা। অভিনেত্রীর মা ডায়াবেটিসের রোগী ছিলেন। কয়েক সপ্তাহ আগে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এরপর রাজধানীর মিরপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে রাখা হয় তাকে। কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে বাসায় এনে চিকিৎসকের পরামর্শে রাখা হয়। অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মেনে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। প্রযোজনা সংস্থা জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ বলেন, ঝর্ণা আন্টি দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ডায়াবেটিসের রোগী তিনি। কয়েক সপ্তহ আগে তার শারীরিক অবস্থার অবণতি হতে থাকে। ফলে মিরপুরের একটি হাসপাতালে তাকে নেওয়া হয়। সেখানে আইসিইউতে রাখা হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে বাসায় আনা হয়। আজ হুট করেই সবাইকে ছেড়ে চলে যান তিনি।  প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ‘ভালোবাসার রঙ’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে রুপালি জগতে আত্মপ্রকাশ করেন পূজা। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে ‘নূর জাহান’র মাধ্যমে বড় পর্দায় নায়িকা চরিত্রে অভিষেক হয় তার। একই বছর তিনি ‘পোড়ামন টু’ সিনেমায় পরী চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান এই নায়িকা। এরপর বেশ কয়েকটি সিনেমায় কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন পূজা। এখনও কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
২৪ মার্চ ২০২৪, ১৮:৫৪

মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কীভাবে থামাবেন?
গরুর মাংস, দেশি পেয়াজ, ছোলা, ব্রয়লার মুরগিসহ ২৯ নিত্যপণ্যের দাম বেঁধে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। মনিটরিংয়ে গেলে সেই দামে বিক্রির দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু ক্রেতারা বলছেন, সেই মূল্যের পণ্য কিনতে পারছেন না তারা। এবিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, অভিযান চালিয়ে চলে আসার পরে যদি ব্যবসায়ীরা আবারও দাম চড়িয়ে দেন সেক্ষেত্রে করণীয় ঠিক করতে পারছে না তারা। ফলে মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকারের নেওয়া নানাবিধ উদ্যোগের পরেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেই বাজার। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ এর ৪ (ঝ) ধারা এর ক্ষমতা বলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কর্তৃক কতিপয় নিত্য প্রয়োজনীয় কৃষি পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হলো। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত উল্লেখিত দামে কৃষি পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের অনুরোধ করা হলো। অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ব্রয়লার মুরগি কেজিতে উৎপাদন খরচ ১৪৬ টাকা। তারা উৎপাদনকারী, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে মুনাফা যোগ করে এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দর নির্ধারণ করে দিয়েছে ১৭৫ টাকা। যদিও ঢাকার চারটি বাজার এবং বিভাগীয় শহরের বাজার ঘুরে গতকাল কোথাও নির্ধারিত দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হতে দেখা যায়নি।  বিক্রেতাদের নির্ধারিত দামের কথা বলা হলে তারা বলেন, সেই দামে বিক্রি করলে লাভ থাকে না। লাভ থাকে না নাকি বেশি লাভ থাকে না প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মুরগি কেবল মুরগি না, সেটার সঙ্গে আনুষঙ্গিক খরচ যুক্ত করে দাম নির্ধারণ করি আমরা। সরকারি সংস্থা বাজারে অভিযানে আসলে তারা কোন দামে বিক্রির কথা বলবেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, অবশ্যই তাদের ঠিক করে দেওয়া দামই উল্লেখ করা হবে। কিন্তু আমাদেরও পরিবার নিয়ে টিকে থাকতে হয়। ওই দামে বিক্রি করলে লাভ থাকে না। তিন থেকে চার বছর ধরে তরমুজ কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ঢাকা শহরে। যিনি তরমুজ ফলাচ্ছেন, সেই কৃষক তো কেজিতে বিক্রি করছেন না। তিনি বিক্রি করছেন শ হিসাবে (১০০ পিস হিসাবে)। সে কৃষক থেকে পিস হিসেবে ক্রয় করে কেন সেটা কেজিতে বিক্রি করতে হবে ভোক্তাদের কাছে? কারওয়ানবাজারের থেকে একটু এগিয়ে এসে বাজারগুলোতে বেল এর দাম হাঁকেন বিক্রেতারা ৩শ টাকা। সম্ভব হলে পাশের দোকানের চেয়ে দুই টাকা হলেও বেশি দামে কোন সবজি বিক্রি করতে পারলে দোকানী খুশি হন।  কেনো একটি পণ্যের দাম একই থাকবে না এবং সেই বাজার ব্যবস্থাপনায় করণীয় কী তা নিয়ে কথা হয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচএম শফিকুজ্জামান এর সঙ্গে। ব্যবসায়ীদের এই দ্বিচারিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের কাজ করি। আমরা এটাও বুঝতে পারি, কোন কোন জায়গায় অভিযান চালিয়ে আসার পরে আবারও একই অবস্থা হয়তো ফেরত আসে। মানুষ যদি এটুকু সততা না দেখাতে পারে তাহলে ব্যাপারটা কঠিন হয়ে যায়।’ এই মুনাফালোভীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কী হবে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আরও বেশি বেশি অভিযোগ করুন ভোক্তা অধিকারের জন্য। সার্বিক বাজার মনিটরিংয়ে যা যা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে লোভী আরও বেশি লোভী হবে এবং ভুক্তভোগী হবে জনগণ।’
১৯ মার্চ ২০২৪, ১৬:০২

কীভাবে বুঝবেন চুলার গ্যাস লিকেজ হয়েছে
দৈনন্দিন চাহিদার মধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস অন্যতম। কিন্তু প্রয়োজনীয় এই গ্যাস ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলেই ঘটে মারাত্মক দুর্ঘটনা। ছোট ছোট দুর্ঘটনা থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়ে থাকে। ফলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে। তার জন্যই বাসা বা বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা, সেটি জানা জরুরি। সমস্যা শনাক্ত করতে পারলে ঝুঁকি রোধ করা সম্ভব হয়। এ জন্য গ্যাস লিকেজ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এবার তাহলে কনস্টেলোশনের এক প্রতিবেদনের বরাত গ্যাস লিকেজ শনাক্ত এবং সমাধানের উপায় জেনে নেওয়া যাক। জেনে নিন গ্যাস লিকেজের লক্ষণ কী কী- পচা ডিমের মতো দুর্গন্ধ: কয়েক প্রকার হাইড্রোকার্বনের এক ধরনের মিশ্রণ হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস। প্রকৃত অর্থে এটি গন্ধহীন হলেও এতে মার্কেপ্টেন নামক একপ্রকার গান্ধব পদার্থ যুক্ত করা হয়। ফলে গন্ধ হয়ে থাকে। এ কারণে বাসা-বাড়িতে কোথাও গ্যাস লিকেজ হলে অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ আসে নাকে। এ থেকে সহজেই বুঝতে পারা যায় কোথাও গ্যাস লিকেজ রয়েছে। হিস হিস শব্দ: পাইপে বা সিলিন্ডারে উচ্চ চাপে গ্যাস আবদ্ধ থাকে। এ জন্য গ্যাস লিকেজ হলে পাইপ বা সিলিন্ডারের উচ্চ চাপের জায়গা থেকে গ্যাস ক্রমশ বের হতে থাকে। এ কারণে গ্যাস বের হওয়ার সময় প্রচুর হিস হিস শব্দ হয়। এ ধরনের শব্দ হলে সতর্ক হতে হবে। বাসা-বাড়ির ছোট ছোট গাছ মরে যায়: বাসা-বাড়িতে অনেকেই ছোট ছোট গাছ রাখেন সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য। কিন্তু গ্যাস যদি লিকেজ থাকে তাহলে বাগানের বা সৌন্দর্যের জন্য আনা ছোট ছোট গাছগুলো মরে যেতে থাকে। এ থেকেও বুঝতে পারেন গ্যাস লিকেজ হয়েছে কিনা। বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা: গ্যাস লিকেজ হলে অক্সিজেনের পরিমাণ ক্রমশ কমে যায়। এতে শরীর চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন পায় না। যা থেকে মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব ও মাথাব্যথার মতো নানা শারীরিক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গ্যাস লিকেজ হলে করণীয়- স্থান ত্যাগ করা: বাড়িতে গ্যাস লিকেজ হওয়ার বিষয়টি বুঝতে বা শনাক্ত করতে পারলে তাৎক্ষণিক ওই জায়গা ত্যাগ করে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে হবে। ঘর থেকে দূরত্বে ফাঁকা জায়গায় আশ্রয় নিতে পারেন। আগুন জ্বালানো ও বৈদ্যুতিক যন্ত্র চালু না করা: আবদ্ধ ঘরে যদি কখনো গ্যাস লিকেজ হয় তাহলে তা ঘরে বা রুমে জমে থাকে। এ অবস্থায় ছোট্ট একটি আগুনের ফুলকি বা শিখা থেকেও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হতে পারে। এ জন্য লিকেজ শনাক্ত হলে কখনোই আগুন জ্বালাবেন না এবং বৈদ্যুতিক কোনো যন্ত্র চালু করবেন না। ঘরের দরজা-জানালা খুলে দেওয়া: আবদ্ধ জায়গায় জমে থাকা গ্যাস থেকেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। এ জন্য ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকলে তা খুলে রাখুন। গ্যাস উন্মুক্ত হয়ে যাবে। বাইরে থেকে বাতাস প্রবেশ করবে ভেতরে। বিপদের কোনো ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে। গ্যাস সরবরাহের মূল জায়গা বন্ধ করা: পাইপলাইন বা সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিকেজ যদি শনাক্ত করা সম্ভব হয়, তাহলে গ্যাসের যে মূল সরবরাহ রয়েছে সেটি বন্ধ করুন। ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করা: গ্যাস লিকেজে শনাক্ত করতে পারলে কালক্ষেপণ না করে নিকটস্থ ফায়ার সার্ভিস বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করতে হবে। প্রয়োজনে তারা ওই স্থানে আসবে এবং এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা মোকাবিলা রোধ করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নিয়মিত গ্যাসলাইন রক্ষণাবেক্ষণ করা, অপ্রয়োজনে গ্যাস লাইন ব্যবহার না করা, গ্যাস সরবরাহের লাইন বন্ধ রাখার সুইচ হাতের কাছে রাখা, বাসা-বাড়িতে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা ও সম্ভব হলে কার্বন মনোক্সাইড শনাক্তকারী যন্ত্র রাখতে পারেন।
০৪ মার্চ ২০২৪, ১৩:০৩

বিডিআর বিদ্রোহের সময় সরকারের ভেতর কী চলছিল, কীভাবে সামাল দিয়েছিল?
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী হয়েছিল দেশ। বিভিন্ন জায়গায় একযোগে বিদ্রোহ করে বসেন তৎকালীন বিডিআর সদস্যরা। নরকে পরিণত হয় রাজধানীর বিডিআর সদর দপ্তর। মাত্র ৩৬ ঘণ্টার ব্যবধানে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করা হয় এ বিদ্রোহে।   তীব্র গুলির শব্দে আশপাশের এলাকার মানুষ তখন হতবিহবল। কোথায় গোলাগুলি হচ্ছে এবং কেন হচ্ছে সেটি কেউ বুঝে উঠতে পারছিলেন না। শহরজুড়ে বেশ দ্রুত ঘটনা ছড়িয়ে যায় সবার মুখে মুখে। ঢাকার রাস্তায় সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান ও সৈন্যদের আনাগোনা দেখে কারো বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। একপর্যায়ে জানা গেল গোলাগুলি চলছে পিলখানার ভেতরে। সেখানে বিডিআর সদস্যরা বিদ্রোহ করেছেন এমন খবর বেশ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ১৫ বছর আগে সেই বিডিআর বিদ্রোহে ৫০ জনের বেশি সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার ৫০ দিনের মধ্যেই তাদের সামনে এক কঠিন চ্যালেঞ্জ আসে। তখন সরকারের ভেতর কী চলছিল এবং সেই পরিস্থিতি তারা কিভাবে সামাল দিয়েছিল? এই লেখায় সেদিকে ফিরে তাকানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তৎপরতা পিলখানায় বিদ্রোহের খবর যখন ছড়িয়ে যায় তখন মন্ত্রীরা সচিবালয়ে গিয়ে তাদের দাপ্তরিক কাজ শুরু করেছন। পিলখানার ঘটনা তৎকালীন মহাজোট সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা তৈরি করেছিল। বিদ্রোহের খবর শোনার পর মন্ত্রীরা একে একে সচিবালয় থেকে বের হয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন যমুনার দিকে রওনা হন। মন্ত্রীরা সচিবালয়ে তাদের অফিসে যাবার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই বিডিআর বিদ্রোহের খবর শুনতে পান। এ সময় তারা নিজেদের নানা কর্মসূচি বাতিল করে দ্রুত মিন্টুরোডে অবস্থিত প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন যমুনায় যান। সেখানে কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বৈঠক করেন। তখন মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মূলত তিনটি জায়গা। প্রথমত; পিলখানায় কী ঘটছে? দ্বিতীয়ত; ক্যান্টনমেন্টে এর প্রতিক্রিয়া কী হয়েছে? তৃতীয়ত; প্রধানমন্ত্রী কী বলছেন? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বাস করতের মিন্টুরোডে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায়। পিলখানার বিদ্রোহের খবর ছড়িয়ে যাবার সাথে সাথে তিনি দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। প্রথম বৈঠকটি তিনি করেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সাথে। প্রায় দেড়-ঘণ্টা এই বৈঠক চলে। সে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতি নিয়ে জাতীর উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। বিদ্রোহ দমন করার নানা খুঁটিনাটি এবং এর রাজনৈতিক দিক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আলোচনা করেন মন্ত্রীদের সাথে। শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্রোহ দমন করতে গেলে সেটির পরিণতি কী হতে পারে তা নিয়েও আলোচনা হয়। শক্তি প্রয়োগের বিষয়টিকে সর্বশেষ উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হয় সরকারের তরফ থেকে। যার প্রতিফলন পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছেন সেখানে দেখা যায়। এরপর প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানদের সাথে। সে বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শরীক অন্যান্য দলের নেতাদের সাথে। বিভিন্ন বৈঠকে যেসব আলোচনা হয় তার মধ্যে উঠে আসে যে বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যদের হাতে ভারি অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। তাছাড়া পিলখানার অবস্থান ঢাকার অন্যতম জনবহুল এলাকায়। বিদ্রোহীদের দমনের জন্য সেনাবাহিনী যদি শক্তি প্রয়োগ করতে যায় তাহলে বিডিআর সদস্যরাও সেটি প্রতিহত করবে। ফলে সংঘাত আরো বড় আকার ধারণ করতে পারে। এতে সাধারণ মানুষের অনেক প্রাণহানি হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছিল। সেজন্য আলোচনার মাধ্যমে সংকট নিরসনের ওপর জোর দেয়া হয় বৈঠকগুলোতে। তৎকালীন বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টে জানা যায়, তিন বাহিনী প্রধান বিকেলের দিকে আবারো প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে বসেন। আলোচনার উদ্যোগ বেলা এগারোটা থেকে সাড়ে এগারোটার মধ্যে তৎকালীন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং হুইপ মির্জা আজম পিলখানার দিকে যান। তখন পিলখানার ভেতর থেকে গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। এমন অবস্থায় তারা পিলখানার কাছাকাছি যেতে পারেননি। তারা কয়েক ঘন্টা বেশ খানিকটা দূরত্বে অবস্থান করেন। হ্যান্ড মাইকে নিজেদের পরিচয় দিয়ে তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের পাঠিয়েছেন আলোচনার জন্য। গোলাগুলি বন্ধ করে বিদ্রোহী জওয়ানদের আলোচনায় বসার আহবান জানান জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম। এসব ঘটনা যখন ঘটছিল বিবিসির এই সংবাদদাতা তখন সেখানেই ছিলেন। হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দিয়ে তখন তারা দুটি মোবাইল টেলিফোন নম্বরও দেন এবং সে নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করার আহবান জানান তারা। কিন্তু তাদের এসব কথায় গুরুত্ব দেয়নি বিদ্রোহী জওয়ানরা। তবে বেলা তিনটার দিকে জাহাঙ্গীর কবির নানকের সাথে যোগাযোগ করেন একজন বিডিআর কর্মকর্তা। এরপর বিদ্রোহী জওয়ানরা ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসেন এবং গুলির শব্দ কমে আসে। বিকেল তিনটার দিকে জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম সাদা পতাকা হাতে পিলখানার ভেতরে প্রবেশ করেন। যমুনায় বৈঠক সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন যমুনায় বৈঠকে বসেন বিডিআর-এর ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এই বৈঠক চলে। দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের মাধ্যমে জানা যায়, বিদ্রোহীদের প্রতিনিধি দল যখন প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে বসেন তখন যমুনায় উপস্থিত ছিলেন তিন বাহিনীর প্রধান। কিন্তু তারা সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। বৈঠক শেষে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী বিডিআর জওয়ানদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। তাদের সব দাবি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তৎকালীন স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রধানমন্ত্রী পক্ষে এসব কথা গণমাধ্যমকে জানান। এসব বৈঠকে বিডিআর-এর তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক তৌহিদও উপস্থিত ছিলেন। বিডিআর সদস্যরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তারা অস্ত্র জমা দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকের পরে বিডিআর-এর প্রতিনিধি দলটি পিলখানায় ফিরে আসলেও বিদ্রোহী জওয়ানদের একটি অংশকে শান্ত করতে পারেনি। সে বৈঠকের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন পিলখানার ভেতরে যান অস্ত্র জমা নিতে। কিন্তু ভিন্ন আরেকটি পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিদ্রোহী জওয়ানদের একটি অংশ বলে যে সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহার না করা হলে তারা অস্ত্র সমর্পণ করবেন না। এ অবস্থা চলে রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত। এদিকে পিলখানার ভেতরে অবস্থানরত বিদ্রোহী বিডিআর জওয়ানদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানকার বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। এছাড়া টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয় যাতে তারা বাইরে যোগাযোগ করতে না পারে। এছাড়া বেলা এগারোটার দিকে পিলখানা ও রাজধানীর বাইরে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখা হয়েছিল। বিকেল চারটা পর্যন্ত এই নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখা হয়। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বিদ্রোহের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ প্রচার করা হয়। জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ ভাইয়ের বুকে গুলি চালাবেন না। প্রতিশোধ নিতে গিয়ে আপনার বোনকে বিধবা করবেন না। পিতা-মাতাকে সন্তানহারা করবেন না। অস্ত্র সংবরণ করে ব্যারাকে ফিরে যান।” প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে একই সাথে সতর্ক করে দেন বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যদের। অস্ত্র সমর্পণ করে ব্যারাকে ফেরত না গেলে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে বলে তিনি হুশিয়ারি দেন। “আপনাদের সমস্যা সম্পর্কে সজাগ থেকে ধৈর্য সহকারে তা সমাধানের চেষ্টা করছি। এমন পথ বেছে নেবেন না যে আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায়।” প্রধানমন্ত্রী বলেন তিনি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চান। “আমি শক্তি প্রয়োগের বদলে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের প্রচেষ্টা চালাতে থাকি। ইতোমধ্যে তাদের সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছি,” ভাষণে বলেন প্রধানমন্ত্রী। অস্ত্র সমর্পণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই হুঁশিয়ারির পর থেকেই থেকেই খবর আসতে শুরু করে যে বিদ্রোহীরা অস্ত্র সমপর্ণ করবে। একের পর এক বৈঠক ও নানা উত্তেজনার মধ্যে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় বিদ্রোহীরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের কাছে অস্ত্র সমর্পণ শুরু করেন। তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিলখানার ভেতরেই ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও পুলিশের তৎকালীন মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন। পিলখানার ভেতরে বিভিন্ন বিডিআর কর্মকর্তাদের অনেক পরিবার আটক ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন অনেকের ফ্ল্যাটের দরজায় নক করে তাদের ডেকে বের করে আনেন। তবে বিদ্রোহীদের একটি গ্রুপ অস্ত্র সমর্পণের ক্ষেত্রে কিছুটা দ্বিধায় ছিল। দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিদ্রোহীদের একটি গ্রুপ খুবই ধীর গতিতে অস্ত্র জমা দিচ্ছে. যাতে তাদের অস্ত্র জমা নিতে ভোর হয়ে যায়। তাদের মধ্যে ভয় মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে যে অস্ত্র জমা দেবার পর তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেয়া হতে পারে অথবা আক্রমণ হতে পারে। “ যে মুহূর্তে ব্রিদ্রোহীদের একটি অংশ অস্ত্র সমর্পণ করছে, ঠিক সে মুহূর্তেই অন্য আরেকটি অংশ মাইকে ধানমন্ডি এলাকাবাসীর উদ্দেশে ঘোষণা দিচ্ছে তারা যাতে সেনাবাহিনীর কাউকে আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেন। কোন ভবনে সেনাবাহিনীর কাউকে আশ্রয় দেয়া হলে মর্টার ও গ্রেনেড মেরে সে ভবন উড়িয়ে দেবারও হুমকি দেয় তারা।” তবে পুলিশের কাছে পিলখানার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে বেশিরভাগ বিডিআর সদস্য পিলখানা থেকে পালিয়ে যায়। এরপর সেনাবাহিনী পিলখানার দায়িত্ব নেয়ার পর পালিয়ে যাওয়া সব বিডিআর সদস্যকে পিলখানায় হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হয়। পিলখানায় বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে সংসদও সে সময় সরগরম হয়ে ওঠে। তখন বিরোধী দলে ছিল খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব বিএনপি। সেদিন সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত হননি কেন সে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা। তারা সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি বিবৃতি দাবি করেন। তৎকালীন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক সংসদে বলেন, “ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল সংসদই সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু সেই সংসদে এই ঘটনা নিয়ে কোন বিবৃতি দেয়া হয়নি।” সরকারি দলের তরফ থেকেও পাল্টা জবাব দেয়া হয়। সরকারি দলের তৎকালীন চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি গণমাধ্যমে জানিয়েছেন এবং সংসদেও বিবৃতি দেবেন। মি. শহীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সমস্যা সমাধানের জন্য দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন এবং বিডিআর সদস্যদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিডিআর সদস্যদের প্রতি সরকারের সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা একটি কৌশলগত ভুল। খালেদা জিয়া বলেন, পরিবার পরিজন আটক থাকা অবস্থায় সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা ছিল সরকারের কৌশলগত বিরাট ভুল। “এতে হতাহতের সংখ্যা আরো বেড়ে গেছে বলে আমি জানতে পেরেছি। জাতি জানতে চায়, সাধারণ ক্ষমার পর অস্ত্র সমর্পণ করে হত্যাকারীরা কিভাবে পালিয়ে যেতে পারলো? ” পিলখানার ভেতরে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবার ও অনেকে জিম্মি ছিলেন। অস্ত্র সমর্পণের পর তাদের মুক্ত করা হয়। সেনা কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক ২৭শে ফেব্রুয়ারি রাতে তৎকালীন সেনাপ্রধান মঈন ইউ আহমদের নেতৃত্বে ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে তার সাথে বৈঠক করেন। সেখানে সেনাবাহিনীর তরফ থেকে কিছু দাবি তুলে ধরা হয়। বৈঠক শেষে মঈন ইউ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, সারাদেশ থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে কিছু পয়েন্টস বা দাবি তারা সংগ্রহ করেছেন এবং সেগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রী সেসব দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। সে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা তাদের প্রতিবেদনে লিখেছিল, প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে সেনাবাহিনীতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ না করা, সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার ঘটনায় জড়িতদের কোর্ট মার্শাল করে সাজা দেবার দাবি তুলে ধরা হয়। এই বৈঠকের পরে সেনাবাহিনীর তৎকালীন প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল এম এ মোবিনের একটি বিবৃতি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার করা হয়। সেখানে তিনি বলেন, বিদ্রোহীদের দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জেনারেল মোবিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার অর্থ এই নয় যে যারা সেনা কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে, বিদ্রোহ সংগঠিত করেছে এবং অগ্নিসংযোগ ও অন্যান্য জঘন্য অপরাধ করেছে তাদের জন্য তা প্রযোজ্য হবে।’ জেনারেল মোবিনের এই বিবৃতি স্পষ্টতই সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যদের আশ্বস্ত করার জন্যই দেয়া হয়েছিল। কারণ, বিষয়টি নিয়ে সেনা সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। অন্যদিকে দিনের বেলায় পিলখানার ভেতরে গণকবর থেকে ৩৮ সেনা কর্মকর্তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সবমিলিয়ে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন।   সূত্র : বিবিসি
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৩:২০

‘আমারে কীভাবে ভুলে থাকতেছো, আমাকে কি বাঁচাইবা না’ 
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রাম থেকে নিখোঁজ প্রবাসীর স্ত্রী খাদিজা আক্তার ময়না (২৫) গত ১৯ জানুয়ারি তার শ্বশুরবাড়ি থেকে হারিয়ে যান। প্রায় এক মাস পেরিয়ে গেলেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। জানা গেছে, ময়না কাঞ্চনপুর গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মো. রাসেল মিয়ার স্ত্রী। তিনি একই উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতরপুর গ্রামের সেলিম মিয়ার মেয়ে। নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের লোকজন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িসহ অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও ময়নার খোঁজ পাননি। ময়নার পাঁচ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। এদিকে হারিয়ে যাওয়ার প্রায় ১৫ দিন পরে ময়নার প্রবাসী স্বামীর ইমো নাম্বারে একটি ভয়েস রেকর্ড পাঠানো হয়। যেখানে কাতর সুরে ময়নাকে বলতে শোনা যায়- ‘আমারে কীভাবে ভুলে থাকতেছো, আমাকে কি বাঁচাইবা না? আমি কোথায় আছি বলতে পারছি না, চারপাশে পাহাড় আর প্রচণ্ড ঠান্ডা। আম্মা (শাশুড়ি) এবং আপা (স্বামীর ছোট বোন) জানে আমি কোথায় আছি। আমার মোবাইল পপি আপা কোথায় জানি রাখছে। তুমি পপি আপার সঙ্গে কথা বলো। এখানে অনেক ঠান্ডা। এখানে থাকলে আমি মরে যাবো।’ প্রবাস থেকে এই ভয়েস পাওয়ার পরে স্বামী রাসেল মিয়া ময়নার বাবার বাড়িতে এই ভয়েস পাঠিয়ে দেন। তিনি পরামর্শ দেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। পরে ময়নার মা সুমি বেগম বাদী হয়ে বিজয়নগর থানায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এ ব্যাপারে ময়নার মা সুমি বেগম জানান, থানায় মেয়ের সন্ধানে জিডি করা হয়েছে। আমি আমার মেয়েকে ফেরত চাই। জড়িত অপরাধীদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক। এদিকে শনিবার সকালে ময়নার শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে পুলিশি হেফাজতে আনা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহের কাজ করছে পুলিশ। বিজয়নগর থানার ওসি (তদন্ত) হাসান জামিল গণমাধ্যমকে জানান, জিডি গ্রহণ করা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৩৭
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়