• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo
সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির নজির, বেনজির ও দায়মুক্তি
সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতির খবর নতুন নয়৷ তবে এ নিয়ে আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে পুলিশের সাবেক প্রধান বেনজীর আহমেদের সম্পদ নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে৷ পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের বিপুল সম্পদের খোঁজ পাওয়ার দাবি করেছে, যা তার চাকরিজীবনের বৈধ আয়ের চেয়ে বহুগুণ বেশি৷ যিনি কিনা দারিত্বরত অবস্থায় রাষ্ট্রের শুদ্ধাচার পুরস্কার লাভ করেছেন, আবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন৷ বেনজীর আহমেদকে নিয়ে প্রতিবেদন নিয়েও নীতিনির্ধারণী মহলে এখন পর্যন্ত তেমন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে না৷ বরং সামাজিক মাধ্যমে কেউ কেউ বলছেন, এই খবর অসাধুদের সরকারি চাকরির প্রতি আরো উৎসাহী করবে৷ এমন উচ্চপদে আসীন হয়ে কত সম্পদ গড়া যায় খবরটি তার বিজ্ঞাপন হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যৎ বেনজীর আহমেদদের কাছে৷ ২০২২ সালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি তাদের এক জরিপে দেখিয়েছে, ২০২১ সালে বাংলাদেশে ৭০ দশমিক নয় শতাংশ খানা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হয়েছে৷ তাদের জরিপে উঠে আসা ১৭টি খাতের মধ্যে শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা (সে সময় পুলিশের আইজিপি বা মহাপরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন বেনজীর আহমেদ)৷ জরিপে ঘুষদাতা খানার ৭২ শতাংশ কারণ হিসেবে বলেছে ঘুস না দিলে সেবা পাওয়া যায় না৷ অর্থাৎ, সরকারি সেবা পেতে ঘুস দেয়াই অনেকটা প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মে পরিণত হয়েছে৷ টিআইবির হিসাবে সেই সময়ে দেয়া মোট ঘুসের পরিমাণ ছিল প্রায় ১০ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা, যা ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের (সংশোধিত) পাঁচ দশমিক নয় শতাংশ৷ গত বছর উদ্বোধন হওয়া কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ খরচের চেয়েও যা বেশি৷ অথচ দুর্নীতি কমবে এমন প্রত্যাশায় ২০১৫ সালে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন শতভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছিল৷ তাতে বহু তরুণের কাছে সরকারি চাকরি পাওয়া জীবনের লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে৷ বর্তমানে বেতন ও অবসরভাতা মিলিয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের পেছনে বছরে সরকারের ব্যয় দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ৷ এত সুবিধার পরও কর্মচারীদের দুর্নীতির প্রবণতা ঠেকাতে সরকারের পদক্ষেপ ও সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে৷ আবার যতটুকু ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে সেখানে উচ্চপদের কর্মকর্তারা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে৷ ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর একটি পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্নীতির মামলায় ২০১৬ সাল থেকে সে বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭৯৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক৷ তাদের মধ্যে ৩৯০ জন ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, যার মধ্যে ৯৭ শতাংশের বেশি ছিলেন নিম্ন পদের চাকরিজীবী৷ দুদকের বাইরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অন্য সংস্থাগুলোর ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে আইনি বাধা আছে৷  সরকারি চাকরি (সংশোধন) বিল অনুসারে ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না৷ দুর্নীতি, দায়িত্বে অবহেলা সম্পর্কিত ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য৷ গত বছর এই আইন পাস করেছে সরকার৷ নতুন খবর হলো কর্মচারীদের সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা ছিল সেটিও তুলে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ এজন্য সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়৷ আগে প্রতি বছর সম্পদ বিবরণী জমা দেয়ার বিধান থাকলেও সরকার সেটি শিথিল করে পাঁচ বছর পর পর দেওয়ার বিধান করে৷ এখন এই বাধ্যবাধকতাও সরিয়ে দেয়া সরকারি কর্মচারিদের দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠতে ব্যাপক উৎসাহ দেবে বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে টিআইবি৷ সব মিলিয়ে কঠোর অবস্থানের বদলে সরকার ক্রমাগতভাবে দুর্নীতির পথ যেন উল্টো প্রশস্ত করছে৷ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকের আচরণ ও বক্তব্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর চেয়ে তাদের দলীয় পরিচয়ই বেশি প্রকাশিত হয়েছে৷ যে অভিযোগ ছিল বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধেও৷ তাদের এবং সার্বিকভাবে আমলাতন্ত্রের উপর সরকারের অতি নির্ভরশীলতা উচ্চপদের কর্মকর্তাদের দুনীতি ও দায়মুক্তির বাড়বাড়ন্ত সুযোগ করে দিচ্ছে কিনা ভেবে দেখা প্রয়োজন৷
০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২০

রাজধানীতে এলডিডিপির কর্মকর্তাদের মানববন্ধন
আউটসোর্সিং থেকে মুক্ত করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় আত্তীকরণের মাধ্যমে নিয়োগের দাবি জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পরিষদ (এলডিডিপি)। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা রাজধানী ঢাকায় মানববন্ধন করেছে। সোমবার রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করা হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত কর্মকর্তারা বলেন, আউটসোর্সিং থেকে মুক্ত করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় আত্তীকরণের মাধ্যমে পুনরায় নিয়োগ দিতে হবে। এছাড়াও বর্তমান বাজার মূল্যের সাথে সমন্বয় করে বেতন বৃদ্ধি করে নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করতে হবে। ২০১৯ সাল থেকে শুরু হয়ে একই বেতনে চাকরি করাতে সকল কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ এবং ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। মানববন্ধনে উপস্থিত প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি মো. রতন রহমান বলেন, আমরা স্থায়ী নিয়োগ চাই। এভাবে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে আমরা কৃষিবিদরা আর কাজ করতে পারছি না। ২০১৯ সালে আমাদের আউটসোর্সিং ভিত্তিতে প্রকল্পে যুক্ত করা হয়। সেই থেকে অদ্যাবধি আমাদের একই বেতন রয়েছে। বর্তমানে এই দুর্মূল্যের বাজারে এই বেতনে চলা কষ্টকর হয়ে গেছে। আমরা আমাদের বেতন বাড়ানোর দাবিও জানিয়েছি। এলইও কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ.এন.এম মোস্তাকিম মুকুট বলেন, আমাদের ফিল্ড লেভেলে কাজে সবসময় যাতায়াত করতে হয়, কিন্তু আমাদের এ জন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয় না। এ নিয়ে আমরা কয়েকবার স্মারকলিপি প্রদান করলেও শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এবার দেশের সব প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ এবং মাঠ সহকারী কর্মকর্তা একত্র হয়েছি আমাদের দাবিগুলো আদায় করতে। কোনো অতিরিক্ত চাওয়া-পাওয়া নয় এগুলো আমাদের অধিকার।’ তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত মেয়েদের জন্যে মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ (ছয়) মাস বরাদ্দ থাকলেও এই প্রকল্পে মাত্র ১০৫ দিন, যা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘোষণার বরখেলাপ, এই দাবীও রাখা হয়। তারা জানান, বিষয়গুলো নিয়ে মহাপরিচালক মহোদয়ের সঙ্গে প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ হয়েছে। কিন্তু দাবী মানার ব্যাপারে কোনো সদুত্তর আসেনি। তবে দাবীর ব্যাপারে সমর্থন জানিয়েছেন বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশনের মহাসচিব কৃষিবিদ ড. মো. হাবিবুর রহমান মোল্লা।
১৮ মার্চ ২০২৪, ২২:৩৭

পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের শাহাদাৎবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালিত
রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের ১৫তম শাহাদাৎবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়েছে। দিনটি উপলক্ষে রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বনানীস্থ সামরিক কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শাহাদত বরণকারী সেনা কর্মকর্তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের পক্ষে অতিরিক্তি সচিব মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা।  এ সময় পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং কর্মরত সামরিক সদস্যরা স্যালুট প্রদান করেন। পরে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এ সময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, জেসিও এবং অন্যান্য পদবির সেনাসদস্য, শহীদ পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয় এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এদিন সকল সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে সব স্তরের সেনাসদস্যদের উপস্থিতিতে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৫১
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়