• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo
ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ‘গোশত সমিতি’
ঈদের আগে অস্থির হয়ে উঠেছে মাংসের বাজার। সারাদেশে গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা। নিম্নবিত্তদের সাধ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে গরুর মাংস। নিম্ন-মধ্যবিত্তও পড়ছেন দুচিন্তায়, এত দাম দিয়ে গরুর মাংস কেনা কঠিন হয়ে পড়ছে। গরুর মাংস কিনতে গিয়ে ঈদের আনন্দ যেন ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে তাদের। ভাটা পড়ছে ঈদের আনন্দে।  তবে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার আশার আলো ব্যতিক্রমী ‘গোশত সমিতি’। সমিতির মাধ্যমে টাকা সঞ্চয় করে, পশু কিনে গোশতের চাহিদা পূরণ করে এলাকার সাধারণ মানুষ। এতে এককালীন টাকা দিয়ে মাংস কেনার চাপ যেমন কমে। আবার নির্ধারিত দামও অনেক কম পড়ে। পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে গ্রামের পাড়া-মহল্লায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এই ‘গোশত সমিতি’। ফজরের পরই শুরু হয় গরু জবেহ। আনন্দে মুখরিত হয়ে ওঠে পাড়া-মহল্লা। রাস্তার পাশে দেখা যায় মানুষের জটলা। জায়গায় জায়গায় সাজানো থাকে গোশতের পসরা। এভাবে গরু কিনে ঈদের পূর্ব মুহূর্তে কম দামে গোশত ভাগাভাগি করে। ‘গোশত সমিতি’ এমন উদ্যোগে খুশি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। নিম্ন আয়ের বেশ কয়েকজন মিলে একটি সমিতি বা সংগঠন তৈরি করে। যার নাম দেওয়া হয় ‘গোশত সমিতি’। সমিতির সদস্যরা সাপ্তাহিক বা মাসিকভাবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করে। ঈদ, শবে বরাত, শবে কদর, যে কোনো উৎসব এবং গ্রামীণ মেলাকে কেন্দ্র করে সেই সমিতির মাধ্যমে জমাকৃত টাকায় গরু কিনে গোশত ভাগাভাগি করে নেয়া হয়। এতে গোশতের দাম বাজারের তুলনায় অনেক কম হয়। কম দামে ভেজালমুক্ত গোশত পেয়ে সমিতির সকল সদস্যদের মুখে দেখা যায় হাসির ঝিলিক। গোশত সমিতির আইডিয়া নতুন হলেও  ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এই সমিতি। বাজারে গরুর গোশতের দাম বেশি হওয়ায় মূলত এই সমিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ পদ্ধতিতে গরিুর গোশতের দাম কম পড়ে। পাশাপাশি নগদ টাকা দেওয়ার চাপ থাকে না। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাড়া-মহল্লায় প্রচলন ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাড়া-মহল্লায় ঘুরে গোশত সমিতির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জনা য়ায়, তারা সমিতিতে সাপ্তাহিক অথবা মাসিক হারে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখেন। এভাবে জমাকৃত টাকায় কেনা হয় গরু। ঈদের দু-একদিন আগে ক্রয়কৃত পশু জবাই করে গোশত সমিতির প্রত্যেক সদস্য তা ভাগ করে নেন। এতে ঈদ উদযাপনে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের আর্থিক চাপ যেমন কমে, তেমনি ঈদের আগে সবার বাড়িতে বাড়তি আনন্দ যোগ হয়। সাধারণত এই সমিতিতে ৩০ থেকে ৭০ জন সদস্য হয়ে থাকে। গোশত সমিতির সদস্য একজন দিন মজুর রহিম (ছদ্মনাম) জানান, ঈদে ধনী গরীব সব পরিবারেই কম বেশি গরুর গোশতের চাহিদা থাকে। দিনমজুরের কাজ করে একসঙ্গে অনেক টাকায় গোশত কেনা কষ্টসাধ্য। গত বছর সন্তানদের গোশত কিনে খাওয়াতে না পেরে এ বছর সমিতির সদস্য হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, সদস্যরা দৈনিক ২০ টাকা হারে মাসে ৬০০ টাকা করে জমা রাখেন। বছর শেষে ঈদের আগে সবার জমাকৃত টাকায় গরু কিনে সমহারে বন্টন করা হয়। তাদের গ্রামে এরকম একাধিক সমিতি আছে। কেউ ১০ টাকা, কেউ ২০ টাকা কেউ ৫০ টাকা কমা রাখেন। যারা ধনী তারাও সমিতির সদস্য । তারা বেশি টাকা জমা করেন। বেশি দাম দিয়ে গরু কেনেন।
১০ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৪

ঈদযাত্রা স্বস্তি করতে ১৫ বছরে আ.লীগ সরকারের যত উদ্যোগ 
দেশে গত ১০ বছর আগেও ঈদযাত্রা যেন ছিল এক দুঃস্বপ্নের নাম। পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দময় মুহূর্ত ভাগ করে নিতে পোহাতে হতো নানা দুর্ভোগ। রাস্তাঘাট, মহাসড়ক এবং অবকাঠামো নির্মাণ করে সেই দুর্ভোগ কমিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ সরকার। এখন মানুষ অনেকটা সস্তিতেই ঈদে বাড়ি যেতে পারেন। পথে ভোগান্তি কমাতে এবং ঈদযাত্রা আরও স্বস্তির করতে এবারও নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। তাই আশা করা যাচ্ছে, এবার তেমন কোনো ভোগান্তি হবে না।   দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এখন আর ঈদে বাড়ি যেতে পদ্মা নদীতে ফেরি পার হওয়ার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা লাগে না। ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণের ১৯টি জেলার সরাসরি সংযোগ চালু হয়। আর এতে করে কোনো প্রকার বিঘ্ন ছাড়া এসব এলাকার মানুষ ঈদে বাড়ি যাচ্ছে। পদ্মা নদীতে ফেরি পার হয়ে দক্ষিণের জেলাগুলোতে ঈদের সময় বাড়ি যেতে সময় লাগত অন্তত ১২ থকে ১৬ ঘণ্টা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই সময় ২৪ ঘণ্টাও ছাড়িয়ে যেত। ফেরি ঘাট এলাকায় পড়ে যেত দীর্ঘ অপেক্ষার লাইন। এখন সেই সময়ে কমে এসেছে মাত্র কয়েক ঘণ্টায়। দক্ষিণের অনেক জেলাতেই এখন দিনে গিয়ে দিনে ফেরত আসা যায়। পদ্মা সেতুর ফলে সারাদেশে অবাধ যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে একটি নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য, টেকসই ও সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে এটি হবে ট্রান্সন্যাশনাল এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের অংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর পদ্মা বহুমুখী সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত রেলওয়ে উদ্বোধন করার ফলে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের অনেকগুলো জেলা রেল সংযোগের আওতায় এসেছে। একসময় সড়ক পথে ঢাকা থেকে বরিশাল হয়ে সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটা যেতে ১০টি নদীতে ফেরি পারাপার হতে হতো। নদী পারাপারে দীর্ঘ সময় লাগার পাশাপাশি যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হতো। সেই প্রতিবন্ধকতা দূর করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। পটুয়াখালির লেবুখালি এলাকায় পায়রা নদীর ওপর নির্মিত পায়রা সেতু এখন কুয়াকাটার সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপন করেছে। এখন আর কুয়াকাটা যেতে কোন ফেরি পার হতে হয় না। অর্থাৎ ঢাকা থেকে কুয়াকাটা এখন নিরবিচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগের আওতায়।    চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের ফলে চট্টগ্রামের পতেঙ্গার সঙ্গে আনোয়ারাকে সংযুক্ত করে কমিয়ে আনা হয়েছে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের সড়ক পথের দূরত্ব। এক্ষেত্রে পথ কমেছে অন্তত ৫০ কিলোমিটার এবং সাশ্রয় হবে এক ঘণ্টা। এই টানেল তৈরি করার ফলে কক্সবাজার যেতে এখন আর চট্টগ্রাম শহরে প্রবেশ করতে হয় না।    ২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওলা-ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করার মাধ্যমে বাংলাদেশ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জগতে প্রবেশ করেছে। একই বছরের ১১ নভেম্বর বহুল প্রতীক্ষিত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন উদ্বোধন করা হয়েছে। এ রেলপথ চালু হওয়ায় মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ এবং কক্সবাজার একটি স্মার্ট সিটিতে পরিণত হবে। ইতোমধ্যেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই রেল সেবা। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগ সরকার সড়ক মহাসড়কের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করেছে এই দীর্ঘ সময়ে। বিশ্বমানের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য নেওয়া হয়েছে আরও বেশ কিছু মেগা প্রকল্প। বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট, ক্রস-বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট উল্লেখযোগ্য। নিরবচ্ছিন্ন মহাসড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিগত দেড় দশকে ৫ হাজার ৬৫৯টি সেতু ও ৬ হাজার ১২২টি কালভার্ট নির্মাণ-পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে।   সড়ক মহাসড়কের পাশাপাশি বিস্তৃত হয়েছে রেল নেটওয়ার্ক। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে রেলওয়ের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ দ্রুত ও সহজীকরণের লক্ষ্যে পদ্মা সেতু দিয়ে নির্মিত রেলসংযোগ উদ্বোধন করা হয়েছে। দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলার সঙ্গে ঢাকা থেকে সরাসরি রেলসংযোগ স্থাপিত হয়েছে এবং কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলা রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। জনগণের প্রত্যাশা পূরণ এবং সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের নিমিত্ত রেলওয়ের সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন রুটে মোট ১৪২টি নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু করা হয়েছে এবং ৪৪টি ট্রেনের রুট বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি স্মার্ট করা হয়েছে রেলওয়ের টিকেটিং সিস্টেম। এখন ঈদযাত্রায় শতভাগ টিকেট অনলাইনে বিক্রি করা হয়। আর তাতে আগের দিন রাত থেকে স্টেশনে লাইন দিয়ে টিকেটের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরের যানজট নিরসনে ইতোমধ্যে ছোট- বড় বহুসংখ্যক উড়ালপথ বা ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে।  এ ছাড়া ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। আর তাতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের যাত্রা সময় কিছুটা কমে এসেছে। অন্যদিকে উত্তরাঞ্চলে যাত্রা স্বস্তির করতে নেওয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।   রাজধানীর বিমানবন্দর থকে টঙ্গী হয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত চলমান বিআরটি প্রকল্পের আটটি ফ্লাইওভারের মধ্যে সাতটি ফ্লাইওভার গত ২৫ মার্চ যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ফ্লাইওভারগুলোকে দেশবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।   ফ্লাইওভারগুলো হলো ৩২৩ মিটার দৈর্ঘ্যরে এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (বাম পার্শ্ব), ৩২৩ মিটার দৈর্ঘ্যরে এয়ারপোর্ট ফ্লাইওভার (ডান পার্শ্ব), ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের জসীমউদদীন ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ইউ-টার্ন-১ গাজীপুরা ফ্লাইওভার, ১৬৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ইউ-টার্ন-২ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ফ্লাইওভার, ২৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের ভোগড়া ফ্লাইওভার ও ৫৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যরে চান্দনা চৌরাস্তা ফ্লাইওভার।  ওবায়দুল কাদের বলেন, সব ফ্লাইওভার উন্মুক্ত করায়, বিশেষ করে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলে ঈদযাত্রা আরও সহজ ও স্বস্তিদায়ক হবে। বিগত দিনে ঈদের সময় গাজীপুরে যে ভোগান্তি হয়েছে এবার আর তা হবে না। ইতোমধ্যেই এ প্রকল্পের ৯১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই বিআরটি প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। সাউথ এশিয়া সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রকল্পের আওতায় নির্মিত চার লেন মহাসড়ক ‘জয়দেবপুর-এলেঙ্গা’২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের মহাসড়কটি তৈরি করা হয়েছে। মূল মহাসড়কটি চার লেনের। এর সঙ্গে দুই পাশে ধীরগতি ও স্থানীয় যানবাহন চলাচলের জন্য আরো দুটি লেন তৈরি করা হয়েছে। দ্রুতগতি আর ধীরগতির গাড়ি একসঙ্গে চললে দুর্ঘটনার একটি আশঙ্কা থাকে। চার লেনের দুই পাশে ‘গার্ডরেল’ দেওয়া হয়েছে। এত স্থানীয় মানুষ কিংবা কোনো গবাদিপশু চার লেনের সড়কে প্রবেশ করতে পারবে না। মহাসড়কটিতে সাতটি ফ্লাইওভার ও ১১টি আন্ডারপাস তৈরি করা হয়েছে। মহাসড়কের পাশে যেসব বাজার রয়েছে, বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো রয়েছে, সেগুলোতে সড়ক প্রতিবন্ধক দেয়া হয়েছে। অনেকগুলো ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করা হয়েছে। এসব অবকাঠামো ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের যানজট লাঘবের পাশাপাশি মহাসড়কের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও উন্নত করেছে।    বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত চার লেন চালু করা হয়েছে এবার। প্রতি বছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সময় বঙ্গবন্ধু সেতু গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল মোড় পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার মহাসড়ক পাড়ি দিতে যাত্রী ও চালকদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে থাকতে হয়। তবে এ বছর মহাসড়কের নকলা ব্রিজ, ফ্লাইওভার ও চার লেনের কাজ অনেকাংশে শেষ হওয়ায় অনেকটাই স্বস্তি পেতে পারেন উত্তরবঙ্গের ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ, যাত্রী ও চালকেরা। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়ক থেকে বগুড়ার মোকামতলা হয়ে রংপুর পর্যন্ত পুরোটাই চার লেনের ফ্যাসিলিটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক-৩) সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কর্মকর্তারা।  প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, সাসেক সড়ক প্রকল্প এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত চলছে। প্রতিবার যেটা হয় উত্তরবঙ্গের ঈদযাত্রা নিয়ে শঙ্কা থাকে। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। গত বছরের তুলনায় সড়ক ব্যবস্থা অনেক ভালো। গত বছরও কোনো সমস্যা হয়নি। এবছরও হবে না। বঙ্গবন্ধু সেতুপশ্চিম সংযোগ সড়ক থেকে বগুড়ার মোকামতলা হয়ে রংপুর পর্যন্ত পুরোটাই চার লেনের ফ্যাসিলিটি দেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম গোলচত্বর থেকে হাটিকুমরুল পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার সড়কের কিছু কিছু জায়গায় ছয় লেনও নির্মাণ করা হয়েছে। পাঁচলিয়া, সয়দাবাদ, কড্ডার মোড় ওভারব্রিজ চালু করে দেওয়া হয়েছে। আর হাটিকুমরুল থেকে বগুড়ার মির্জাপুর পর্যন্ত কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। সড়কে যেখানে যেখানে খানাখন্দ ছিল তাও সংস্কার করে দেওয়া হয়েছে। ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ যাতে ভোগান্তিতে না পড়তে হয়, এজন্য খুলে দেওয়া হবে পাঁচলিয়া ওভারব্রিজ। কাজ ও প্রায় শেষের দিকে। আগামী ৪ এপ্রিলের মধ্যে পুরো সড়ক চার লেনে উন্নীত হবে।  সরকারের নানা উদ্যোগে ঈদ যাত্রা ভোগান্তিবিহীন হয়েছে গেল বছর। সেই প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য এর চেয়ে ভোগান্তিহীন যাত্রা অনেক বছর ধরে হয়নি। ঘরমুখী যাত্রা যেমন স্বস্তিদায়ক ছিল, তেমনি ফিরে আসাটাও স্বস্তিদায়ক হয়েছে।   সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে জেলা আঞ্চলিক ও জাতীয় পাকা মহাসড়ক প্রায় ৩ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।  
০৪ এপ্রিল ২০২৪, ২১:৩১

কাশ্মীরে জাফরান বাঁচাতে বৈজ্ঞানিক উদ্যোগ
বিরিয়ানি-কোরমার মতো অনেক পদই জাফরানের ছোঁয়ায় বিশেষ রং ও গন্ধে বাড়তি মাত্রা পায়৷ অত্যন্ত দামী সেই উপকরণের ভবিষ্যৎ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হুমকির মুখে পড়ছে৷ কাশ্মীরের বিজ্ঞানীরা সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন৷ যতদূর চোখ যায়, উজ্জ্বল বেগুনি রংয়ের সম্ভার৷ কাশ্মীরের পাম্পোর গোটা বিশ্বে জাফরানের শহর হিসেবে পরিচিত৷ সেখানে জাফরান ক্রোকাস বা আঁশ প্রায় ৩০,০০০ পরিবারের আয়ের উৎস৷ বহু প্রজন্ম থেকে সেই ঐতিহ্য চলে আসছে৷ ফিরোজ আহমাদের পরিবারও সেই কাজ করে৷ শরৎকালে ক্রোকাস ফসল তোলার সময়ে তাঁর ছোট মেয়েও সাহায্য করে৷ ফিরোজও নিজের বাবা-মাকে সেই কাজে সাহায্য করতেন৷ কিন্তু তিনি কেসর নামে পরিচিত জাফরানের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আজ উদ্বিগ্ন৷ ফিরোজ বলেন, ২০০৩, ২০০৪ সালের হিসেব অনুযায়ী এক কানাল বা শূন্য দশমিক এক দুই একর জমি থেকে এক কিলো কেসর পাওয়া যেতো৷ আর এখন এক কিলো পেতে ১৫ কানাল জমি লাগে৷ ফলে বুঝতে পারছেন, বিগত বছরগুলিতে কতটা অবনতি ঘটেছে৷ একই পরিমাণ জাফরান উৎপাদন করতে আরো বেশি জমির প্রয়োজন পড়ছে৷ ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইন্টিগ্রেটিভ মেডিসিনেও সে বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে৷ গবেষক হিসেবে নাশিমান আশরফ কাশ্মীরে জাফরানের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছেন৷ সেই পাহাড়ি এলাকায় এই মশলা শুধু কোনো সাংস্কৃতিক সম্পদ নয়, মানুষের আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎসও বটে৷ ড. আশরফ বলেন, গত ১৩ বছর ধরে আমি স্যাফরন বায়োলজির বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করছি৷ চাষিদের ফিডব্যাক অনুযায়ী জাফরান উৎপাদনের অবনতির তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে৷ প্রথমত উচ্চ মানের রোপণের উপাদানের অভাব রয়েছে৷ দ্বিতীয় কারণ কর্ম-রট রোগ৷ তৃতীয় কারণ সেচের ব্যবস্থার অভাব৷ দশ বছরেরও বেশি আগে তিনি এক বড় জিন তথ্যভাণ্ডার সৃষ্টি করেছিলেন৷ তাতে ৬০,০০০-এরও বেশি জাফরান ক্রোকাসের সিকুয়েন্স জমা রয়েছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নতুন পরিস্থিতিতেও টিকে থাকতে পারে, এমন গাছ সৃষ্টি করাই সেই উদ্যোগের লক্ষ্য৷ ড. নাশিমান আশরফ জানান, আমরা জিনগুলি শনাক্ত করেছি৷ এখন আমরা উন্নত স্মার্ট জাফরান সৃষ্টির প্রক্রিয়া চালাচ্ছি৷ খরা এবং অন্যান্য অ্যাবায়োটিক চাপ সামলাতে এবং কম রট রোগও প্রতিরোধ করতে পারবে সেই জাফরান৷ ইরানের পর ভারতই বিশ্বের সবচেয়ে বড় জাফরান উৎপাদনকারী দেশ৷ ফুলের মধ্য থেকে জাফরানের উপকরণ বার করার জন্য অত্যন্ত দক্ষতার প্রয়োজন৷ এক কেজি খাঁটি জাফরান পেতে হলে দুই থেকে তিন লাখ ক্রোকাস ফুলের প্রয়োজন হয়৷ সে কারণে জাফরানের আকাশছোঁয়া দাম৷ এক কিলোর দাম প্রায় দুই হাজার ইউরো হতে পারে৷  নাশিমান আশরফ কাশ্মীরের উত্তরে ইয়ারিখাহ তাংমার্গ অঞ্চল পরিদর্শন করছেন৷ তাঁর টিম সেখানকার খেতের জন্য ল্যাবে ক্রোকাস টিউবার চাষ করেছে৷ সেগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা সামলাতে সক্ষম৷ এবার দীর্ঘ খরা বা আচমকা প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটলেও সেই গাছ টিকে থাকতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ সেইসঙ্গে এই গাছ কুখ্যাত কর্ম রট প্রতিরোধ করতে পারবে৷ ড. আশরফ বলেন, আমরা দশটি জেলাতেই সফলভাবে জাফরান চাষ করতে পারি৷ তবে এবার আমরা সেই ক্ষেত্র সম্প্রসারণের কথা ভেবেছি৷ আমরা এখান থেকে ফুল সংগ্রহ করে জম্মুতে আমাদের স্থাপনায় সেগুলির মান বিশ্লেষণ করবো৷ এখানে উৎপাদিত জাফরানের মধ্যে খাঁটি জাফরানের সমান পরিমাণ কম্পাউন্ড আছে কিনা, তা পরীক্ষা করবো৷ এখানে বহুকাল কোনো জাফরান চাষ হয়নি৷ কিন্তু জলবায়ু-প্রতিরোধী নতুন ফুলগুলি কিন্তু ভালোভাবে বেড়ে উঠছে৷
২২ মার্চ ২০২৪, ১৬:০১

রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ
রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং কর্পোরেশন বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে এক কোটি কার্ডধারীর কাছে কম দামে চাল-ডাল-তেল-চিনি-খেজুর বিক্রি করবে সরকার। এছাড়া ন্যায্য মুল্যে মাছ মাংস ডিম বিক্রি করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন।  পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিম্ন আয়ের এক কোটি উপকারভোগী কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে চালসহ টিসিবির পণ্যাদি (ভোজ্য তেল ও ডাল) সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রয় কার্যক্রম বিক্রয় ৭ মার্চ থেকে সারাদেশে শুরু হয়েছে। একটি কার্ডধারী পরিবার মাসে সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি ও এক কেজি খেজুর কিনতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম রাখা হচ্ছে ১০০ টাকা, প্রতিকেজি চিনি ১০০ টাকা ও মসুর ডাল ৬০ টাকা, খেজুর ১৫০ টাকা ও চাল ৩০ টাকায় বিক্রি করছে টিসিবি। বাজারে সরবরাহ পরিস্থিতি ও দাম ঠিক রাখতে চিনি এবং পেঁয়াজ আমদানি করছে সরকার। এছাড়া এই মুহূর্তে বন্ধ করা হয়েছে চাল রপ্তানি। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানিয়েছেন, আগামী বছর থেকে ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি না করে স্থায়ী দোকানের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। দুই একদিনের মধ্যে ভারত থেকে এক লাখ মেট্রিক টন চিনি এবং ৫০ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আসবে। তিনি আরও বলেন, ‘শুল্ক কমানোর জন্য ১০ টাকা কমেছে ভোজ্য তেলের তেলের দাম। রোজাকে সামনে রেখে সব পণ্যের যথেষ্ট পরিমাণ সরবরাহ আছে। রোজায় কোনও পণ্যের দাম বাড়বে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং বাজারে অব্যাহত আছে। কেউ এবার কারসাজি করতে পারবে না।’ রমজান মাস উপলক্ষে কম দামে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিম বিক্রিস শুরু করেছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে রবিবার (১০ মার্চ) সকালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রাঙ্গনে ভ্রাম্যমাণ দুধ ডিম ও মাংস বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।  মৎস্য অধিদপ্তরের তত্ত্ববধানে প্রথমবারের মতো ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪টি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪টি নির্ধারিত স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে ২৪০ টাকা কেজি দরে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ১০০ কেজি রুই, ৩০০ গ্রামের ১৩০ টাকা কেজি দরে ১০০ কেজি তেলাপিয়া, এক থেকে দেড় কেজির পাঙ্গাস ১৩০ টাকা দরে ৭৫ কেজি, ২০ পিসে ১ কেজি ওজনের পাবদা মাছ ২৫ কেজি বিক্রয় করা হবে। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ২ কেজি মাছ ক্রয় করতে পারবেন।  এছাড়া ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতে এবার গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯০০ টাকা, ড্রেসড (চামড়া ছাড়া) ব্রয়লার প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতিটি ৯ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া দুই সিটির পাঁচ জায়গায় অস্থায়ী দোকানে ৬৫০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস ও আট জায়গায় সুলভ মূল্যে মাছ বিক্রি হবে। গরু, খাসি, মুরগির মাংস এক কেজি করে কিনতে পারবেন ক্রেতারা।  মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকারের বিভিন্নমুখী পদক্ষেপের ফলে ইতোমধ্যে আমরা ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিকে অনেকাংশে সংযত করতে পেরেছি। আসন্ন রমজান মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর মূল্য যাতে সহনীয় থাকে সে লক্ষ্যে আমাদের এই পদক্ষেপ।’ বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের উদ্যোগে রমজান মাস উপলক্ষ্যে মাসব্যাপী সুলভ মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী  বিক্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। রোববার (১০ মার্চ) সকাল থেকে রাজধানীর শ্যামলী মাঠের সামনে অস্থায়ী এই বিক্রয় কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। সেখানে বেগুন ৪০টাকা, উস্তা ৭৫ কেজি, শিম ৫০ টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৩৫ টাকা, লাউ ৪০ টাকা পিস, কচুর লতি ৭৫ টাকা কেজি, গাজর ২৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, পুঁইশাক ১৫টাকা, ফুলকপি ২৫ টাকা, লালশাক ১০ টাকা আঁটি, বইতা শাক ১৫ টাকা আঁটি, পালংশাক ১০ টাকা আঁটি, ধনেপাতা ৮০ টাকা কেজি, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা কেজি, টমেটো ৩৫ টাকা কেজি, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা পিচ, কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।  জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘রমজান মাসে যেখানে বাজারদর কম হওয়া উচিত। সবকিছু সুলভ মূল্যে বিক্রি করা উচিত ব্যবসায়ীদের। সে জায়গা থেকে যারা উল্টো মানুষকে জিম্মি করে উপার্জনের পথ বেছে নিয়েছে, তাদেরকে আমি একটি সতর্কবাণী দিলাম। বাজার কারসাজি করলে কেউ রেহাই পাবে না।’   রমজানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, যানজট, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচিবদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। রমজানে কোনোভাবেই যেন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না পায়, সে বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে বাণিজ্য সচিবকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। মজুতদারি রোধে সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশও দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না ঘটে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বলা হয়। পাশাপাশি ইফতার ও সেহরিতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, ‘বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবারের রমজানে দেশে অনেক বেশি খাদ্য ও নিত্যপণ্যের মজুত আছে। এছাড়া পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাজারে আছে। রোজার প্রস্তুতি আমরা যথাযথভাবে নিতে পেরেছি। যখন যা প্রয়োজন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে কারও কোনো সমস্যা হবে না।’ এছাড়া বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে। অপরিশোধিত সয়াবিন, পরিশোধিত/অপরিশোধিত পাম তেল আমদানিতে আমদানি পর্যায়ে ১০% এবং উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে আরোপিত সমুদয় ভ্যাট হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। খেজুর আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিশোধিত ও অপরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্কহার পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।চাল আমদানিতে  আমদানি শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং রেগুলেটরি ডিউটি ২৫% এর পরিবর্তে ৫% নির্ধারণ করা হয়েছে। এবিষয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে দরিদ্র পরিবার, বয়স্ক, বিধবা, স্বামী নিগৃহীতা নারীসহ কম আয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় যেমন স্বস্তি আসবে, তেমনি পবিত্র রমজান মাসে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। এতে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামে লাগাম টানা সম্ভব হবে বলে আশা করেন তিনি।  
১০ মার্চ ২০২৪, ১৪:৪০

চিলমারীতে আন্তর্জাতিক নৌবন্দর করার উদ্যোগ 
ভারত-নেপাল-ভুটানের সঙ্গে নৌপথে বাংলাদেশের বাণিজ্য বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশের সঙ্গে এসব দেশের যোগাযোগে নদীপথে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র কুড়িগ্রামের চিলমারী বন্দর। এ নদীবন্দরকে ঢেলে সাজাতে আরও শতকোটি টাকা খরচের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রকল্পের আওতায় চিলমারী বন্দরের পার্কিং ইয়ার্ড, যাত্রী ছাউনি, স্টোরেজ হাউজ ও সড়কসহ নানা অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। বাংলাদেশ-ভারত নৌ-বাণিজ্য প্রটোকল রুটের আওতায় ভারতের আসাম, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রবর্তনে অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে চিলমারী বন্দরকে ঢেলে সাজানো হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে আরও শতকোটি টাকা ব্যয় করা হবে ‘চিলমারী এলাকায় (রমনা, দোড়গাছ, রাজিবপুর, রৌমারী, নয়ারহাট) নদীবন্দর নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায়। এ প্রকল্পের ব্যয়-মেয়াদ বাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা যায়, ভূমি অধিগ্রহণ, রেট শিডিউল বৃদ্ধি ও নতুন কিছু আইটেম যুক্ত হওয়ার কারণে ১০০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বেড়েছে চিলমারী নদীবন্দর নির্মাণ প্রকল্পে। মূল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ২৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এখন ১০০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩৬ কোটি ৩ লাখ টাকা। জুলাই ২০২১ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ডিসেম্বর ২০২৩ নাগাদ। নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে ডিসেম্বর ২০২৫ নাগাদ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, নৌপথে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে বাণিজ্যিক হাব হবে চিলমারী বন্দর। এ প্রকল্পের আওতায় পার্কিং ইয়ার্ড, যাত্রী ছাউনি ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে ভূমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান। ভারত-বাংলাদেশ নৌ প্রটোকল রুট অনুযায়ী উভয় দেশে নৌপথে বাণিজ্য বাড়বে। পাথর-কয়লা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পণ্য নৌপথে পরিবহন করা হবে। পাশাপাশি যাত্রীবাহী সার্ভিসও চালু করা হবে।  প্রকল্পের আওতায় রংপুর বিভাগের অপেক্ষাকৃত সুবিধাবঞ্চিত কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার কতিপয় এলাকার নৌপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে চিলমারী এলাকায় বন্দর অবকাঠামো সুবিধা নির্মাণ করা হবে। প্রকল্প সুত্রে জানা যায়, বর্তমানে স্থানীয়ভাবে অসংখ্য যাত্রী এবং পণ্য রৌমারী, রাজীবপুর, কোদালকাটি, নয়ারহাট, অষ্টমিরচর এলাকা থেকে চিলমারী এলাকায় আনা-নেওয়া করা হয়। স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ যাত্রী এ এলাকা দিয়ে যাতায়াত করে। শুধু রৌমারী ও চিলমারীর মধ্যেই প্রতিদিন বৃহদাকার ৮-৯টি জলযান আসা-যাওয়া করে। চিলমারী এবং রাজীবপুরের মধ্যেও একই সার্ভিস বিদ্যমান। ৬-৭টি বৃহদাকার ইঞ্জিনবোট বিভিন্ন স্থান (যেমন- কাওমারি, বড়চর, নয়ারহাট, অষ্টমির হাট ইত্যাদি) থেকে নিয়মিত চিলমারীতে চলাচল করে। এছাড়া প্রতিদিন এ বন্দর দিয়ে ৭০-৮০ টন পণ্য আনা-নেওয়া করা হয়।
০৬ মার্চ ২০২৪, ১৪:৪৯

রমজানে এক টাকা লাভে পণ্য বিক্রির উদ্যোগ ব্যবসায়ীর
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার ব্যবসায়ী শাহ আলম রমজান মাস এলেই প্রয়োজনীয় ইফতারসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী ১ টাকে লাভে বিক্রি করেন। এ মাসে দরিদ্রসহ সব মানুষের জন্য এটি তার বিশেষ আয়োজন। সোমবার (৫ মার্চ) সরেজমিনে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মো. শাহ আলম স্টোরে গিয়ে দেখা যায়, ক্রয় মূল্যের চাইতে ১ টাকা লাভে বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী বিক্রি করছেন তিনি। দেখা গেছে, প্রতিকেজি ছোলা ৯৯টাকা, খেসারি ১০৯ টাকা, চিড়া ৫৬ টাকা, চিনি ১৩৯ টাকা, বেসন ৮১ টাকা, মুড়ি ৬৩ টাকা, খেজুর একটি প্রতিকেজি ২৫৮টাকা এবং অপরটি প্রতিকেজি ২৫৮টাকা, ভোজ্য তেল (সয়াবিন) প্রতি লিটার ১৪০ টাকায় বিক্রি করছেন শাহ আলম।  পণ্য ক্রয় করতে আসা হাববুর রহমান বলেন, ২০২৩ সালের রমজান থেকে এই উদ্যোগ নিয়েছেন শাহ আলম। এলাকার প্রায় সব মানুষই তার কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করেন।  পৌর এলাকার সাদ্দাম হোসেন বলেন, আলম ভাইয়ের ১ টাকা লাভে বিক্রির বিষয়টি সবদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে গরিব লোকজন তার দোকানে চলে আসে। আমরা সবাই এখন উপকৃত হচ্ছি।  বুয়েট পড়ুয়া হাসান মাহমুদ বলেন, তার এ উদ্যোগ বিরল। আরব দেশের কথা শুনেছি মুনাফা ছাড়া রমজানে পণ্য বিক্রি করেন। মো. শাহ আলম ভাইয়ের উদ্যোগ দেশের সব মানুষের কাছে উদাহরণ। সাধারণ মানুষের কষ্ট লাগবে মুনাফা কমিয়ে বড় ব্যবসায়ীদেরও এগিয়ে আসা উচিত। ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। মানুষের কথা ভেবেই এমন উদ্যোগ নিয়েছি। অল্প লাভ হলেও বেশি বিক্রিতে আল্লাহ ভালো রাখছেন। এটি করতে গিয়ে গত বছর অনেক বিক্রি হয়েছে এবং এই বছরও মানুষ পণ্য সামগ্রী ক্রয় করে উপকৃত হচ্ছেন। আশাকরি যারা শহর ও গ্রামে বড় ব্যবসায়ী আছেন, তারাও যেন রমজান উপলক্ষে ১ টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করেন। তাহলে মানুষ রমজানে মনের মতো পণ্য কিনে খেতে পারবেন।  
১০ মার্চ ২০২৪, ২০:২৬

চিকিৎসায় বিদেশ গমন ঠেকাতে উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব
চিকিৎসার জন্য নাগরিকদের বিদেশ গমন ঠেকাতে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রস্তাব করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য রোগী চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছে। এতে করে দেশের প্রচুর অর্থ চলে যাচ্ছে বিদেশে।  এ অবস্থায় রোগীদের ঠেকাতে দূতাবাসকে পৃথক একটি সেল গঠনের মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। সোমবার (৪ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে সারাহ ইসলাম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সেল আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এই প্রস্তাব করেন তিনি। বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে ট্রান্সপ্লান্টের রোগীরা সেবা নিতে যাচ্ছে। এতে দেশের প্রচুর অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। যদি পার্শ্ববর্তী দেশে যেতে হয় সেজন্য দূতাবাসে একটি সেল গঠন করে বোর্ডের সুপারিশের মাধ্যমে যেতে হবে। এজন্য দূতাবাসগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে। শারফুদ্দিন আহমেদ এরপর বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার মানুষের কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সে অনুযায়ী আমাদের লোকবল নেই। এজন্য আমরা ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট টিম তৈরি করছি। ট্রান্সপ্লান্ট করার জন্য দক্ষ জনবল তৈরি করছি। তিনি বলেন, আমরা সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে প্রতি সপ্তাহে তিনটি করে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করতে পারি। কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের জন্য শিশু হাসপাতাল আমাদের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। হার্ট প্রতিস্থাপনের জন্যেও আমরা বিশেষজ্ঞ দল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। বিএসএমএমইউ উপাচার্য আরও বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামি দেশ যেমন ইরান, সৌদি আরব, কুয়েত  ইত্যাদি দেশেও ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে। এতে কোনো ধর্মীয় বাধা নেই। ইসলাম ধর্মসহ হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম, খ্রিস্টান ধর্মসহ সব ধর্মেই মানবকল্যাণের কথা বলা হয়েছে। মানুষের জীবন বাঁচানোর কথা বলা হয়েছে। তাই এই ধরনের মহৎকাজে অঙ্গদান করলে তাতে কোনো ধর্মীয় বিধি নিষেধ নেই। যাদের মাথায় চুল নেই, আগামীতে আমরণ তাদের জন্য হেয়ার ইমপ্ল্যান্টের ব্যবস্থাও করব।
০৪ মার্চ ২০২৪, ১৮:২৮

উপকূলে বিপন্ন বহু প্রজাতির বন্যপ্রাণী, রক্ষায় নেই উদ্যোগ
খাদ্য ও বাসস্থানের সংকট প্রকট হওয়ায় বিপন্ন হচ্ছে উপকূলের বহু প্রজাতির বন্যপ্রাণী। একটা সময় অহরহ বন্যপ্রাণীর দেখা মিললেও এখন সেই সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখন বসন্তে সুমধুর কণ্ঠে কোকিলের কুহুতান ধ্বনি শোনা যায় খুবই কম। পচা আর মরা কোনো প্রাণীদের খেতে শকুন আসে না। এমনকি শীত মৌসুমে আগের মতো অতিথি পাখিরাও আসছে না। উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা যথেষ্ট অভাব রয়েছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর সর্বত্র সঠিক প্রয়োগ, সকলের অংশগ্রহণ ও মানুষের সচেতনতাই পারে বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে এমনটাই বলছেন পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠনের দায়িত্বশীলরা। তাদের মতে নিষ্ঠুরভাবে বন উজাড়, অপরিকল্পিত নগরায়ন এবং পাখি শিকারীদের ফাঁদে উপকূল থেকে বন্যপ্রাণীদের আশংকাজনকভাবে বিলুপ্তি ঘটেছে। তথ্যমতে, ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের ৬৮ তম সাধারণ অধিবেশনে বন্যপ্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ২০১৪ সালের প্রথম এ দিবসটি পালন করা হয় বিশ্বের বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদগুলির প্রতি গণসচেতনা বৃদ্ধি করাই এ দিবসের মূল লক্ষ্য নিয়ে। প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএনের গবেষণামতে বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত প্রাণীর প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৩১টি। তবে এ সংস্থাটির দাবি বাংলাদেশে ১৬ শতাধিক প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, যাদের মধ্যে ৩৯০টি একেবারে শেষ হওয়ার পথে। মৌসুমি ফল রক্ষায় মানুষ আজ কারেন্ট জাল বিছিয়ে রাখে আর তাতে জড়িয়ে প্রাণ হারায় নিরীহ পাখিরা। কিছু মানসিক বিকারগ্রস্ত মানুষ আছে, যাদের হাজাররকম খাবার বাদ দিয়ে নজর পড়ে বন্যপ্রাণীর দিকে। আর তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য ঘৃণিত ও আইন-বহির্ভূত পেশা বেছে নিয়েছে কিছুসংখ্যক শিকারি। কিছু মানুষের আবার আছে বন্যপ্রাণীর দেহাংশ সংগ্রহ করে শো-পিস হিসেবে প্রদর্শন করার অভ্যাস। স্বেচ্ছাসেবী প্রাণিকল্যাণ ও পরিবেশবাদী সংগঠন অ্যানিম্যাল লাভার অব পটুয়াখালী ডাটা কালেক্টর বায়জিদ মুন্সী বলেন, আমাদের উপকূলে একটা সময় বিপুল পরিমাণ বন্যপ্রাণী বসবাস করতো। কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে। বন্যপ্রাণী বিলুপ্তর পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে মানুষের অসচেতনতা। তারা বন্যপ্রাণীর গুরুত্ব সম্পর্কে জানে না। বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কারের কারণে শিয়ালের মাংসসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী হত্যা করে মাংস খাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার বন্ধ হচ্ছে না। ফলে এদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কৃষকদের অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। পরিবেশ ও প্রাণী নিয়ে কাজ করা সিনিয়র সংবাদকর্মী মেজবাহ উদ্দিন মান্নু বলেন, বন উজাড়ের পাশাপাশি গ্রামের অধিকাংশ বাড়িতে বেশি বয়সের গাছ না থাকা এবং খাদ্যের অভাবে অস্তিত্ব সংকটে এ সব বন্যপ্রাণী। সচেতনতা তৈরি করে এ সব প্রাণীদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হবে সবার। পটুয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম বলেন, উপকূলীয় এলাকা থেকে প্রতিবছরই কমছে বন্যপ্রাণী। তবে আমরা সচেতন হলে কমে আসবে বিলুপ্তির পরিমাণ। পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপবন সংরক্ষক) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আধুনিক নগরায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আশংকাজনক হারে বন্যপ্রাণীদের উপস্থিতি কমছে। বন হচ্ছে বন্যপ্রাণীদের আবাসস্থল। আমরা সবসময় বন উজাড় বন্ধ করার চেষ্টা করছি।  
০৩ মার্চ ২০২৪, ১২:৩৪

পাঁচ লাখ শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ সরকারের     
সরকারি চাকরিতে বর্তমানে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৩৩৩টি পদ খালি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পর এসব পদে নিয়োগ দিতে উদ্যোগ নিচ্ছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য বলছে, সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদের প্রায় ২৬ শতাংশই খালি, যা সংখ্যায় পাঁচ লাখের বেশি। মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা যায়, প্রশাসনে মোট অনুমোদিত ১৯ লাখ ১৫১টি পদের বিপরীতে কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন ১৩ লাখ ৯৬ হাজার ৮১৮ জন। খালি পদ রয়েছে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৩৩৩টি। মন্ত্রণালয় ও বিভাগ পর্যায়ে ২১ হাজার ৭০৯টি পদের মধ্যে খালি রয়েছে ছয় হাজার ৮২১টি। সংস্থা ও অধিদপ্তর পর্যায়ে ১৪ লাখ ২২ হাজার ৮২৮টি পদের মধ্যে খালি রয়েছে তিন লাখ ২৫ হাজার ৩৩৬টি। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক অফিসে ৪০ হাজার ২৭৩টি পদের মধ্যে খালি রয়েছে ১৩ হাজার ৩৫৭টি। বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও কর্পোরেশনে মোট খালি পদ এক লাখ ৫৭ হাজার ৮১৯টি। এখানে মোট পদের সংখ্যা চার লাখ ১৫ হাজার ৩৪১টি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রথম থেকে নবম গ্রেডের (আগের প্রথম শ্রেণি) দুই লাখ ৪৪ হাজার ৯৬টি অনুমোদিত পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন এক লাখ ৭৯ হাজার ৫১৪ জন। খালি পদ ৬৪ হাজার ৫৮২টি। দশম থেকে ১২তম গ্রেডে (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) দুই লাখ ৯১ হাজার ১১১টি পদের বিপরীতে আছেন এক লাখ ৯৩ হাজার ৬৬৪ জন। খালি পদ ৯৭ হাজার ৪৪৭টি। ১৩ম থেকে ১৬তম গ্রেডে (আগের তৃতীয় শ্রেণি) সাত লাখ ৯৫ হাজার ৪০টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ছয় লাখ তিন হাজার ৪৩৩ জন। খালি রয়েছে এক লাখ ৯১ হাজার ৬০৭টি পদ। ১৭তম থেকে ২০তম গ্রেডে (আগের চতুর্থ শ্রেণি) পাঁচ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৯টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন চার লাখ ১৫ হাজার ১০৪ জন। খালি রয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ৩৬৫টি পদ। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে নির্ধারিত ও অন্যান্য কাজের জন্য ১১ হাজার ৪৩৫টি পদ রয়েছে। এসব পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন পাঁচ হাজার ১০৩ জন। খালি রয়েছে ছয় হাজার ৩৩২টি পদ। সরকারি চাকরির খালি পদগুলোতে নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সরকারি যেসব শূন্যপদ আছে, সেগুলোতে নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশনা দিয়েছেন।’ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. নাজমুছ সাদাত সেলিম জানান, ‘যেসব মন্ত্রণালয়ে শূন্য পদ আছে, তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সেগুলো দ্রুত পূরণের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এ নির্দেশনা যেসব মন্ত্রণালয় বা বিভাগে শূন্য পদ আছে, তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে। স্ব-স্ব মন্ত্রণালয়, স্ব-স্ব বিভাগ, সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো যাতে দ্রুত খালি পদগুলো পূরণ করতে পারে সে নির্দেশনা তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে।’ এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সম্প্রতি জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন, সরকারের শূন্য পদ পূরণ একটি চলমান প্রক্রিয়া। শূন্য পদ পূরণে সুনির্দিষ্ট বিধিমোতাবেক পদ পূরণের নিয়মিত কার্যক্রম চলমান। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগ এবং এর অধীন দপ্তর-সংস্থাগুলোর চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্মকমিশনের মাধ্যমে নবম (পূর্বতন প্রথম শ্রেণি) ও ১০ থেকে ১২তম গ্রেডের (পূর্বতন দ্বিতীয় শ্রেণি) শূন্য পদে জনবল নিয়োগ হয়ে থাকে। মন্ত্রী জানান, রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬–এর রুল ২৫ (১) অনুযায়ী প্রণীত মন্ত্রণালয়-বিভাগগুলোর ২০২৩ সালের নভেম্বরের কার্যাবলি সম্পর্কিত মাসিক প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রী সরকারের শূন্য পদ পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ অনুমোদন করেছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগে এটি পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক মন্ত্রণালয়-বিভাগগুলোতে নিয়োগ কার্যক্রম চলমান। 
০২ মার্চ ২০২৪, ১৭:১১

জিআই পণ্য ট্যাগসহ রপ্তানিতে উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশনা
জিআই নিবন্ধিত সব পণ্য জিআই ট্যাগ ব্যবহার করে রপ্তানির লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।  রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। একইসঙ্গে টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করতে বিকল্প সব ব্যবস্থার বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয় সভায়।  সিনিয়র সচিব বলেন, জিআই ট্যাগ ব্যবহার করে পন্য রপ্তানি করলে উদ্যোক্তারা পণ্যের অধিকতর মূল্য পাবেন এবং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে। এ বিষয়ে সবার সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন সচিব। একইসঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে একটি লিগ্যাল এক্সপার্ট প্যানেল গঠনের বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। আলোচনা পর্বে টাঙ্গাইল শাড়ির আবেদনকারী হিসেবে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক এই শাড়ি উৎপাদনের ইতিহাস, উৎপাদন ও বিপণন অঞ্চল নিয়ে সভাকে অবহিত করেন।
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭:০৩
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়