• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo
‘নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছি’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মো. মহিববুর রহমান এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতি আস্থা রেখে দেশের মানুষ নৌকায় ভোট দিয়েছে। তাই সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে আমি শপথ নেওয়ার পর থেকে ইশতেহার বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেছি। আমার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ইশতেহার বাস্তবায়নে সততা ও দক্ষতার সঙ্গে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। আপনারা উপজেলা প্রশাসনের যে যেই দপ্তরে কাজ করেন তারা ইশতেহার দেখে যেটি আপনার দপ্তরের মধ্যে পড়ে সেটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করুন।  শনিবার (২৭ জানুয়ারি) শহীদ শেখ কামাল স্মৃতি কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত সরকারি কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। কলাপাড়া ইউএনও মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রতিমন্ত্রী মহিব আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আগামীর বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চান। তাই আসুন আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করি। যাতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলাসহ আগামীর বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে বিনির্মাণ করতে পারি। কলাপাড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. মঞ্জুরুল আলমের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা নির্ধারিত সময়ে আপনাদের স্ব স্ব অফিসে এসে সরকারের অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করুন। আপনারা জনসেবামূলক কাজের জন্য সার্বক্ষণিক আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। আমার মন্ত্রণালয় আপনাদের সেবা দেওয়ার জন্য সর্বদা প্রস্তুত। নির্বাচনে পক্ষ-বিপক্ষ করা নিয়ে কোনো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হোক সেটা আমি চাই না। আপনারা যার যার অবস্থান থেকে আজ থেকে স্বাধীনভাবে, নির্দ্বিধায় মানুষের কল্যাণে কাজ করুন। আমি সবাইকে একটা কথাই বলতে চাই, আমার আমলে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও সালিস বাণিজ্য চলবে না। উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যক্ষ সৈয়দ নাসির উদ্দিন, কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, প্রতিমন্ত্রীর সহধর্মিনী অধ্যক্ষ ফাতেমা আক্তার রেখা প্রমুখ। পরে দুপুর ১টায় কলাপাড়া মহিলা কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আয়োজনে অপর এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রতিমন্ত্রী। এসময় শিক্ষার্থীদের আয়োজনে প্রতিমন্ত্রীর সম্মানে মনোজ্ঞ সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে শিক্ষার্থীরা। একই দিন বিকেল তিনটায় কুয়াকাটা রাখাইন মার্কেট মাঠে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত এক এক মতবিনিময় সভায় যোগদান শেষে সড়কপথে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুয়াকাটা ত্যাগ করেন প্রতিমন্ত্রী মহিব।  এর আগে ২৫ জানুয়ারি ঢাকা থেকে তিন দিনের এক সরকারি সফরে নিজ জেলা পটুয়াখালীতে আসেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মো. মহিববুর রহমান। তিনদিনের এ সফরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় যোগদেন প্রতিমন্ত্রী। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
২৭ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:০৪

ভোটে আ.লীগের ইশতেহার জনগণের ইশতেহারে পরিণত হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু না হলে আমরা স্বাধীন দেশ পেতাম না। এ জায়গায় বসে আমরা আলোচনা করতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্ট এর শহীদ, মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও আত্মদানকারী মা বোনদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর জীবনকে বাংলার মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন। বাংলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন। ৪৩ বছরের রাজনৈতিক পথ চলায় তিনি জেনারেলদের শাসন দেখেছেন। গ্রেপ্তার হয়েছেন। তারপরও তিনি বাংলার মানুষের কথা বলেছেন। ৭৫ পরবর্তী সামরিক শাসকরা তাঁর চরিত্র হননের অপচেষ্টা করেছে। গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছে, হত্যার ভয় দেখিয়েছে, ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে, তারপরও তিনি এগিয়ে গেছেন। বাংলার মানুষের প্রতি ভরসা করে তিনি এই পর্যায়ে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান। প্রতিমন্ত্রী রোববার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ দপ্তর ও সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী দ্বিতীয়বারের মতো নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ায় মন্ত্রণালয় এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল এবং সংস্থা প্রধানগণ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলার মানুষের জন্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে পারেন। তিনি বাংলার মানুষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন; তার প্রতি বাংলার মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা আছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহার ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান, বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ দিয়েছে। এটার প্রতি বাংলার মানুষের বিশ্বাস ছিল। এটি মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করেছে। বাংলার মানুষ জানতেন- প্রধানমন্ত্রী এ ইশতেহার বাস্তবায়ন করতে পারবেন। ৭ই জানুয়ারি ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ইশতেহার জনগণের ইশতেহারে পরিণত হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমাদের। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আগামী দিনে একসাথে কাজ করব। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে যতটুকু প্রশংসা এর সবটুকু কৃতিত্ব আপনাদের। সবাই যদি দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করতে পারি, তাহলে লক্ষ্য আরো এগিয়ে নিতে পারব। বঙ্গবন্ধুর ঋণ আমরা শোধ করতে পারব না। যদি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি তাহলে বঙ্গবন্ধুর ঋণ কিছুটা হলে শোধ করতে সক্ষম হব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয়-আন্তর্জাতিক প্রতিকূলতার মুখোমুখি থেকে সাহস ও দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব; আন্তর্জাতিকভাবে মাথা ব্যথার কারণ। তিনি অকুতোভয়। কোন কিছু পরোয়ানা করেন না। তাঁকে সাহস জোগানো আমাদের কর্তব্য; যাতে পরবর্তী প্রজন্ম নির্বিঘ্নে দেশ পরিচালনা করতে পারে, নেতৃত্ব দিতে পারে। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের কাজে সহযোগিতার জন্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। ভবিষ্যতে পারিবারিক বন্ধন দিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি আশা করেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় একটি আকর্ষণীয় মন্ত্রণালয়ে পরিণত হবে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
১৪ জানুয়ারি ২০২৪, ২২:৫২

নির্বাচনী ইশতেহার ও পর্যালোচনা
৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের ১২ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দল আওয়ামীলীগের ১১ টি ইশতেহার এর একটি হচ্ছে সর্বস্তরের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সুরক্ষা ও চর্চার প্রসার। এই দলটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সাথে, একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের সাথে জড়িত। দলটির রয়েছে স্বৈরাচার বিরোধী সফল আন্দোলনের ইতিহাস।  বিগত বছরগুলোতে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সেবাসমূহ ডিজিটালাইজড করা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি করা, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ইত্যাদি সহ নানাভাবে সফলতার নিদর্শন রেখেছে।  তেমনি কিছু সমালোচনারও উদ্ভব হয়েছে। যেমন: দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অর্থ পাচার, আমলাতন্ত্রের লাল ফিতা, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ইত্যাদি।  প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ফুকুইয়ামা বলেছেন একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র তিনটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়: রাষ্ট্র, আইনের শাসন, এবং গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা।  রাষ্ট্র তার শক্তি ও সামর্থ্য দিয়ে দেশকে রক্ষা করতে,  আইন প্রয়োগ করতে এবং সকল স্তরের জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করতে কাজ করে।  আইনের শাসন শুধুমাত্র গণনাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ করাই নয়,  ক্ষমতায় থাকার প্রবণতা আছে এমন রাজনৈতিক অভিজাতদেরও নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে আপামর জনসাধারণের মূল্যবোধকে সমুন্নত করা এবং বহুদলীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।  সবশেষে, এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভারসাম্য ও সমন্বয় সাধনই শাসকদের প্রধান কাজ। ম্যাক্স ভেবার আরও বলেছেন যে একটি আধুনিক রাষ্ট্রকে পক্ষপাতহীন হতে হবে।  যেখানে সব নাগরিক কে সমান চোখে দেখতে হবে। যেখানে কোন একটি বিশেষ গোষ্ঠী যারা ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন তাদের বিশেষ কোন সুবিধা দেবে না।  যদি আমরা আমেরিকার গণতন্ত্রের ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো উনিশ শতকের শুরুর দিকে আমেরিকাতেও শাসক গোষ্ঠী তার নিজ দলের লোকজনদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকতেন।  আসলে এমনটা হওয়া কোন অস্বাভাবিক বিষয় নয়। ফুকুইয়ামা বলেছেন এমনটা হওয়া আসলে গণতন্ত্রের উন্নয়নেরই লক্ষণ।  আমরা যদি বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ড সার্বিকভাবে পর্যালোচনা করি তবে দেখতে পাই যে জননেত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় জেলা পরিষদ চালু করেছেন। দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সাথে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন।  নিজের মন্ত্রিসভায় যেসব সদস্য  কোন বিতর্কে জড়িয়েছেন তাদের মন্ত্রিত্ব বাতিল করেছেন, নিজ দলের বেপরোয়া কর্মীকে সতর্ক করেছেন কিংবা শাসিয়েছেন। এমনকি পদচ্যুত করেছেন।  হয়তো এর পরিমাণ বা পরিধি এর বিষয়ে আরও অনেক কাজ করবার আছে যা আমরা এই দলটির কাছ থেকে আশা করি।  দেশের প্রখ্যাত এক গুণীজন বলেছেন, “মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়”। আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করা। উনি উনার স্বপ্নের মতো মহত্তম। যার সক্ষমতা বেশী তার কাছে দাবীও থাকে বেশী।  তাই আমরা দেশের জন্যগণ চাই আওয়ামীলীগ দলটি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে তাদের ইশতেহার অনুযায়ী দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সুরক্ষা ও চর্চার প্রয়াসে সকল পর্যায়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে রাষ্ট্রযন্ত্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা অর্পণ করুক, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে প্রশাসনকে আরও বেগবান করুক, এবং সকল নাগরিককে সমান চোখে দেখার মাধ্যমে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নকে রোধ করুক।  লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৩

স্বামীকে নিয়ে মাহির ১৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা
আর মাত্র তিন দিন পরেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আসন্ন এই নির্বাচনে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন থেকে ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন নায়িকা মাহি মাহি। আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ১৭ দফা ইশতেহার ঘোষণা দিলেন মাহি। বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা বাজারে ১৭ দফা উন্নয়নের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন মাহি। পাশাপাশি নির্বাচনে কালো টাকা ছড়ানোর শঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে লড়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন এই চিত্রনায়িকা। তার ১৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহারে মাহিয়া মাহি বলেন, সকল শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ ও জাতি নির্বিশেষে সকলের বৈষম্য দূরীকরণ ও সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা হবে।গোদাগাড়ী-তানোরে রাজশাহী অঞ্চলের মধ্যে প্রথম বৃহৎ আকারে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ঘরে-ঘরে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন। কৃষি ও কৃষকের বিষয়ে মাহি বলেন, গোদাগাড়ী-তানোর কৃষিপ্রধান একটি অঞ্চল। এই অঞ্চলের মানুষ প্রচুর কৃষিপণ্য উৎপাদন করলেও সঠিক সংরক্ষণের অভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এই অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, সবজি ও ফল সংরক্ষণে হিমাগার প্রতিষ্ঠা করা এবং কৃষিপণ্য রপ্তানিমুখী করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া কৃষকদের ন্যায্যমূল্যে সার, বীজসহ কৃষি উপকরণ সরবরাহের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং এর সুবিধা প্রত্যেক কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে। ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করা চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি প্রতিশ্রুতির মধ্যে আরও রয়েছে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করা হবে; ঘরে ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা, গোদাগাড়ী-তানোরে শতভাগ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা। শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্কুল-কলেজ-মাদরাসার অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গঠনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, গোদাগাড়ী-তানোরে দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। তার সংসদীয় এলাকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টির লক্ষ্যে পাবলিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা ও বৃহৎ আকারে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ; তরুণ ও নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে ও প্রশিক্ষণ প্রদানপূর্বক আউটসোর্সিং, আত্মকর্মসংস্থান, ব্যবসার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিপূর্বক বিভিন্ন পন্থায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার কথা জানিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে আইসিটিবিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে নির্বাচনী ইশতেহারে। এ ছাড়া অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকা প্রণয়নপূর্বক প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্টসহ সকল যোগাযোগ অবকাঠামো সংস্কার, মেরামত ও নির্মাণের কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মাহিয়া মাহি। তিনি আরও বলেন, কার্যকর নদী ব্যবস্থাপনা ও খননের মাধ্যমে নৌরুট চালু করা, গোদাগাড়ী-তানোরের বিভিন্ন স্থানে পর্যটনকেন্দ্র নির্মাণ করা ও শিশুদের জন্য বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা, মসজিদ, মন্দির, গির্জাসহ সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ; গোদাগাড়ী-তানোরের অন্তর্গত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিকের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধিসহ সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। প্রয়োজন অনুযায়ী অবকাঠামোগত উন্নয়ন, চিকিৎসক নিয়োগ, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, টেকনোলজিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার গুণগত পরিবর্তন; কৃষি সেচের সহজলভ্য করণের লক্ষ্যে গভীর নলকূপ স্থাপনসহ সেচ সমস্যা সমাধানে সেচ ব্যবস্থায় ১০০ শতাংশ বিদ্যুতায়ন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ-বাণিজ্য বন্ধ করা হবে। আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মাহি। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। এ ছাড়া রাজশাহী-১ আসনে আরও ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন। ইশতেহার ঘোষণাকালে মাহি অভিযোগ করেন, এলাকায় ক্ষমতাশালীরা তার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে। প্রচারণায় বাধা দেওয়ার পাশাপাশি ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে তার কর্মীদের। তবে শত বাধা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে লড়ে যাবেন। 
০৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:৫৯
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়