• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo
অস্থির চালের বাজার
অস্থির চালের বাজার। দাম বাড়ছেই। সারা দেশে অভিযান, জরিমানা, শুল্ক ছাড়ের পরও নিয়ন্ত্রণে নেই চালের দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে ৩০ প্রতিষ্ঠানকে ৮৩ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে এসব পদক্ষেপকে পাত্তাই দিচ্ছে না অসাধু চাল ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। এদিকে মৌসুমভিত্তিক উৎপাদন খরচ ও জাতভিত্তিক চালের দাম নির্ধারণ করতে চাইছে সরকার। আগামী পয়লা বৈশাখ থেকে সরু চাল, চিকন চাল, মোটা চাল এসব থেকে বের হয়ে জাতভিত্তিক চালের দাম নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। একই সঙ্গে মৌসুমভিত্তিক উৎপাদন খরচ নির্ধারণে মিলার, পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ের জন্য একটা রূপরেখা তৈরি  করা হয়েছে।   তিনি আরও বলেন, এ জন্য খাদ্য, কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যৌথভাবে বৈঠক করে এটা চূড়ান্ত করে জানিয়ে দেব। পয়লা বৈশাখ থেকে তা কার্যকর হবে।   এদিকে দাম বাড়ানো নিয়ে একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মিলারদের দুষছেন খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, রোজার সময় বাজারে চালের দাম স্বাভাবিক থাকার কথা। তাদের দাবি, কোনো কারণ ছাড়াই মিলগেটে বস্তাপ্রতি চালের দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।   রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাঝারি চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা দরে। গুটি স্বর্ণা বা মোটা চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়। ৮-১০ দিন আগে এ দুই জাতের চালের দর ছিল যথাক্রমে ৫২ থেকে ৫৪ ও ৪৮ থেকে ৫২ টাকা। একই সময় চিকন বা মিনিকেট চালের কেজি ছিল ৬৮ থেকে ৭২ টাকা, ভোক্তাদের এখন কিনতে হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৬ টাকা দরে। দেখা যায়, এ তিন জাতের চাল কেজিতে বেড়েছে ২ থেকে ৪ টাকা।   রাজধানীর মগবাজারে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আবুল কালাম। তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম দিন দনি যে হারে বাড়ছে, সে হারে বেতন বাড়ছে না। তাই আমাদের অনেক কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে। রোজার শুরুতে আটাশ চাল কিনেছি ৫৪ টাকা। ২০ দিন পর একই চাল  নিতে হলো ৫৮ টাকায়।   অপরদিকে দালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে মিলাররা বলছেন, ধান সংকটের কথা। দায়ী করছেন মৌসুমি মজুতদারদের। তাদের অভিযোগ কৃষকের কাছ থেকে কম দরে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ধান কিনে রেখেছেন। ফলে কৃষকের কাছে ধান নেই। মজুতদারের কাছ বেশি দামে থেকে ধান কিনতে বাধ্য হচ্ছেন মিলাররা। ধানের দাম বেশি হওয়ায় মিল পর্যায়ে চালের কেজিতে ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা বেড়েছে।   কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রতিবেদন বলছে, গত এক মাসের তুলনায় বাজারে এখন সব ধরনের চালের দাম বেশি।   সংস্থাটির তথ্যানুযায়ী, ঢাকার বাজারে গতকাল প্রতি কেজি চিকন চাল ৬৮ থেকে ৮০, মাঝারি চাল ৫৫ থেকে ৬০ ও মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত মাসের এ সময় চিকন চালের কেজি ৬৪ থেকে ৭৮ টাকা, মাঝারি চাল ৫২ থেকে ৫৬ ও মোটা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা ছিল। সে হিসাবে গত এক মাসে এ তিন ধরনের চাল কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে।   কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রতিবেদন আরও বলছে, শতাংশের হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে মোটা চালে ৪ দশমিক ০৮ শতাংশ, মাঝারি চালে ৬ দশমিক ৪৮ এবং ৪ দশমিক ২৩ শতাংশ দাম বেড়েছে চিকন চালের দাম।      
০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৪

লাগামহীন সিন্ডিকেটে অস্থির রোজার বাজার
সংযমের বার্তা নিয়ে দিন কয়েক বাদেই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান। সিয়াম সাধনার মাস। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি দেখলে মনে হয় যেন সব সংযম শুধু ভোক্তা সাধারণের জন্য; সংযমের ধার ধারতে হয় না ব্যবসায়ীদের। প্রতি বছর এ মাসটি এলেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে নিত্যপণ্যের দাম; আর নাভিশ্বাস ওঠে ক্রেতার। একের পর এক অজুহাতে ভোক্তা সাধারণের পকেট কাটে সিন্ডিকেট।  এবারও সেই একই পরিস্থিতি দৃশ্যমান। সরকারের আশ্বাস, হুঁশিয়ারি কিছুতেই দমানো যাচ্ছে না নিত্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেট। বেড়ে গেছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে আরও চড়েছে মাছ-মাংস ও সবজির বাজার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যতই বলুক বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে, বিক্রেতারা বলছেন পণ্যের সংকট।  শুক্রবার (৮ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর ও কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায় বাড়তি দামে ঘাম ছুটছে ক্রেতার। এমনকি সরকার নির্ধারিত দামেও পণ্য বিক্রিতে নারাজ বিক্রেতারা।    গত কয়েক দিনে স্বস্তি আসতে শুরু করলেও আবার অস্থির হয়ে উঠেছে সবজির বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে কোনো কোনো সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। বাজারঘুরে দেখা যায়, মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৯০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, আলু ৩৫ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শালগম ২৫-৩০ টাকা, শসা ৬০ টাকা ও লতি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি পেঁপে ৪০ টাকা, খিরাই ৫০-৬০ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, চিচিঙ্গার ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৪০-৬০ টাকা, আকারভেদে প্রতিপিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গত সপ্তাহে সেঞ্চুরি হাঁকানো করলা ও ঢ্যাড়শ বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ১০০-১৪০ টাকা ও ১২০ টাকা কেজিতে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে করলা ও ঢেঁড়শের সরবরাহ তেমন বাড়েনি। তাই দাম বেশি।  আর অন্য শাক-সবজির সরবরাহও কম। তাই বাড়তি দাম রাখতে হচ্ছে তাদের। আর ক্রেতারা বলছেন, রোজা এলেই তাদের জিম্মি করে ফেলে ব্যবসায়ীরা। শাকপাতা থেকে শুরু করে সবকিছু খেতে হয় অস্বাভাবিক বাড়তি দামে। কাজীপাড়া কাঁচাবাজারে কথা হয় সোলাইমান নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রোজা উপলক্ষে বাইরের বিভিন্ন দেশ, এমনকি মুসলিম সংখ্যালঘু কিছু দেশেও পণ্যের দাম কমে। আর আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়ায়। মনে হয়, সব সংযম আমাদেরই করতে হবে। ব্যবসায়ীরা সংযমের প্রয়োজনবোধ করেন না। সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সিন্ডিকেট বন্ধ করা সম্ভব না।  তিনি বলেন, ‘সয়াবিন তেলের দাম ১৬৩ টাকা লিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ এখন বিক্রেতা বলে, তাদের আগের স্টক শেষ হয় নাই। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, চিনির দাম এক টাকাও বাড়বে না, পর্যাপ্ত আছে; আর বিক্রেতা বলছে, এক আগুনে চিনিই নাই এখন বাজারে। আমরা সবই বুঝি। বুঝলেও কিছু করতে পারি না।’ এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে ব্রয়লার মুরগির দাম; প্রতি কেজির জন্য ২২০-২৪০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। এ ছাড়া সোনালি মুরগি ৩৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৮০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৬০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি কেজি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৯০০ টাকায়। শেওড়াপাড়া কাঁচা বাজারে হাঁস-মুরগি ব্যবসায়ী সাইদুল হক বলেন, পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে, তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।  এ ছাড়া প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়। মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানেও সরবরাহ সংকটের অজুহাত নিয়ে বসে আছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০-২২০ টাকা, চাষের শিং ৫২০ টাকা, চাষের মাগুর ৫৫০ টাকা ও চাষের কৈ ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকার ওপরে। রোজার পণ্যের বাজার ঘুরে দেখা যায়, নতুন করে দাম না বাড়লেও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব পণ্য। বাজারে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। আর প্রতি কেজি ছোলার ডাল ১০০-১২০ টাকা, ডাবলির ডাল ৮৫ টাকা, মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫-১১০ টাকা, চিকন মসুর ডাল ১৩৫-১৪০ টাকা, মোটা দানার মুগ ডাল ১৪৫-১৫০ টাকা, চিকন মুগ ডাল ১৭০-১৮০ টাকা ও খেসারি ডাল ১০৫-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য পণ্যের মধ্যে বেসন ১৪০-১৬০ টাকা, খোলা আটা ৫৫-৬০ টাকা, প্যাকেট আটা ৬৫-৬৮ টাকা, খোলা ময়দা ৬৫-৭০ টাকা এবং প্যাকেট ময়দা ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি বলতে গেলে পাওয়াই যাচ্ছে না। যেসব বিক্রেতার কাছে পাওয়া যাচ্ছে, তারা বলছেন আগের স্টক। এদিকে বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন দামের ভোজ্যতেল। এরপরও নতুন বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি না করে পুরাতন বোতল ক্রেতাকে ধরিয়ে বাড়তি দাম চাইছেন বিক্রেতারা। বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেলেও। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল আজ ১৬০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। রোজার আগে ঊর্ধ্বমুখী মসলার বাজারও। জিরা বাদে বেড়ে গেছে প্রায় সব ধরনের মসলার দাম। প্রতি কেজি জিরা ৭৫০ টাকা, এলাচ ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা, দারুচিনি ৪৬০-৪৭০ টাকা, গোলমরিচ ৯০০ টাকা ও লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এই মুহূর্তে।
০৮ মার্চ ২০২৪, ১৬:৫৯

ঘোষণা ছাড়াই বাড়ল ভোজ্যতেলের দাম, অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার
কোনো ঘোষণা ছাড়াই প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা করে বাড়িয়েছে বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো। একইসঙ্গে প্রতি কেজি আটায় ৫ টাকা ও চিনির দাম বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। শুধু এসব পণ্যই নয় ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরপরই বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এ তালিকায় চাল, ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংসও রয়েছে।     বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানো বা কমানোর কাজ ঘোষণা দিয়ে করলেও এবারে চুপিসারেই দাম বাড়াল।  রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার খুচরা দোকানি ও একাধিক সুপার শপ ঘুরে দেখা যায়, প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৩ টাকায়, যা নির্বাচনের আগ বিক্রি হয়েছে ১৬৯ টাকায়। ৫ লিটারের বোতলের দাম ৮২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮৪৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। দাম বাড়িয়ে ৫ লিটারের বোতল নির্বাচনের আগে বাজারে ছাড়লেও নতুন দামের এক লিটারের সয়াবিন তেল নির্বাচনের পরই বাজারে এসেছে।  তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, গত বছরের নভেম্বরে ডলারের দাম বেড়ে যায়। প্রতি ডলারের মূল্য ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১২২-১২৪ টাকা হয়ে যায়। ওই সময় ভোজ্য তেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনের কাছে এই দাম সমন্বয়ের আবেদন করে গত নভেম্বরের ৯ তারিখ।  বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন ও ব্যবসায়ীরা মিলে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করলেও নির্বাচন সামনে রেখে দাম বৃদ্ধির অনুমতি দেয়ার বিষয়টি আর এগোয়নি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন এলসি খোলার জন্য ডলার কিনতে হচ্ছে ১২৬-১২৭ টাকায়, যে কারণে তারা দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন।  সাধারণত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমতি দেওয়ার পরই কোম্পনিগুলো বাজারে দাম বাড়ানো বা কমানোর ঘোষণা দিয়ে থাকে। এর আগে গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা কমিয়ে ১৬৯ টাকা করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তেল, চিনি ও আটার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ডলার ও আন্তর্জাতিক সরবরাহ পরিস্থিতির যে অবস্থা, তাতে দাম বাড়াতে না পারলে লোকসান করতে হবে। নির্বাচনের কারণে এ অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। অবস্থা এখন এমন হয়েছে, দাম না বাড়ালে বাজারে পণ্য সরবরাহ করা মুশকিল হয়ে পড়বে।    ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা নিরুপায় হয়েই দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া নতুন করে যুক্ত হয়েছে বাড়তি ফ্রেইট চার্জ। লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল সীমিত হয়ে পড়ায় পণ্য পরিবহনের সময় এবং খরচ বেড়ে গেছে, যার প্রভাবও বাজারের ওপর পড়ছে।   সয়াবিন তেলের পাশাপাশি দুই কেজির প্যাকেটের আটার মূল্যও বাড়িয়েছে বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। দুই কেজির প্যাকেটের আটার দাম ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। চিনির দামেও একই ধরনের অস্থিরতা। প্রতি কেজি প্যাকেটের চিনি বাজারে ১৪৮ টাকা মূল্য থাকলেও বিক্রেতারা সেটা খুলে বাজারে বিক্রি করছেন ১৫৫-১৬০ টাকায়। বাজারে কোনো প্যাকেটের চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। খোলা চিনি অনেক ক্ষেত্রে যে যা পারছে, ইচ্ছেমতো দামে বিক্রি করছে।  ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ১৫ জানুয়ারির বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজি আটার দাম ৪.৩৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি কেজি আটার প্যাকেট ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার বাজারে কোনো প্যাকেটের চিনি নেই। সব জায়গাতেই বিক্রি হচ্ছে খোলা চিনি। দু-একটি কোম্পানি কিছু প্যাকেটের চিনি সরবরাহ করলেও তার মোড়কে যে দাম, তা দিয়ে দোকানিদের লাভ থাকে না। সে কারণে ১৪৮ টাকা মূল্যের চিনির প্যাকেট কেটে ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা। খোলা চিনিও একই দামে বিক্রি হচ্ছে।  গত কয়েকদিনে বেড়েছে চালের দাম। নির্বাচনের সপ্তাহখানেক পর হঠাৎ করেই চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অথচ মাত্রই আমন মৌসুমের ধান কাটা শেষ হয়েছে। যেখানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১.৭০ কোটি টনের মতো চাল সরবরাহ চেইনে যুক্ত হওয়ার কথা।  বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর ২০ লাখ লিটার ভোজ্যতেল ও ২০ লাখ লিটার চিনির চাহিদা রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে আগামী রমজানে ভোক্তাদের ওপর আরও চাপ তৈরি হবে; যে কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজারে নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।  এই পরিস্থিতিতেই খুচরা বিক্রেতারা জানান, মোটা চাল সপ্তাহখানেক আগেও বিক্রি হয়েছে ৪৮-৫০ টাকায়, যেটা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫৪ টাকায়। মাঝারি মানের চিকন চালের দাম ৫৫-৫৯ টাকা থেকে বেড়ে ৬০-৬২ টাকা এবং মিনিকেট ও নাজিরশাইলের মতো চিকন চাল ৬২-৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬৮-৮০ টাকা হয়েছে।  নির্বাচনের আগে থেকে প্রভাব পড়তে শুরু করলেও গরুর মাংসের দাম নির্বাচনের পরই মূলত ঢাকায় ৬৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০০-৭৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০-২১০ টাকা হয়েছে। ডিমের দামও এ সময়ে প্রতি ডজন ১২৫-১৩০ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০-১৩৫ টাকায় উঠেছে।  এদিকে, রমজান আসতে বাকি আরও দুমাস। এর মধ্যেই অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। বেড়ে গেছে চাল, ছোলা, ডাল, বেসন, মাছ, মাংস ও খেজুরসহ কয়েকটি পণ্যের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। এখনই এ অবস্থা হলে, রোজার সময় সব নাগালের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।  শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানী বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে দাম বাড়ার চিত্র। বিক্রেতারা জানান, রোজার আগেই দাম বেড়েছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের। ক্রেতাদের মতে, মূলত আড়তদার ও মিল মালিকদের কারসাজিতে বাড়ছে দাম। সিন্ডিকেট করে রোজার আগেই বাজার অস্থির করে তুলেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। একজন ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি এখনও দুমাস। অথচ এখনই অস্থির হয়ে ওঠেছে বাজার। বিদ্যমান সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে রোজার সময় সব পণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে যাবে। আরেকজন ক্রেতা বলেন, নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা থাকবে, নতুন বছরে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সরকার চাইলে রোজার সময় নিত্যপণ্যের দাম নাগালে রাখতে পারে। এজন্য দরকার কেবল কঠোর নজরদারি।   বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে আাটা-ময়দা, ডাল-ছোলা ও বেসনের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজিতে এসব পণ্য ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, আর মসুরির ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এছাড়া কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ছোলা ৯৫ টাকা ও ছোলার ডাল ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাঙ্কর ও খেসারির ডাল বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৭০ টাকা এবং ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। ডালের দাম বাড়ায় বেড়েছে বেসনের দামও। কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি বেসন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, প্রতি কেজি মুলা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, লতি ৮০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।   এ ছাড়া প্রতি কেজি বেগুন জাতভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পটোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পুরান আলু ৭০ টাকা, নতুন আলু ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, কহি ৫০ টাকা, কাঁচা টমেটো ২০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আকারভেদে ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এদিকে পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়ে কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়; আর পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। এ ছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, পালংশাক ১৫ টাকা ও লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।   ক্রেতার ঘাম ঝরাচ্ছে মাছের দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে সামান্য বাড়লেও তা সাধ্যের বাইরে বলছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতাদের দাবি, পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ না পাওয়া যাওয়ায় দাম কমছে না। আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ২১০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।   অস্থির পেঁয়াজের বাজারে মিলেছে কিছুটা স্বস্তি। নতুন করে বাড়েনি দাম। প্রতি কেজি পুরাতন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়। তবে বাজারে দেখা নেই ভারতীয় পেঁয়াজের। দু-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। আর প্রতিকেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আড়ত পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। আর আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। এ,ছাড়া কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে আদা-রসুনের।   এদিকে, ফলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে খেজুরের দাম বেড়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিকেজি দাবাস খেজুর ৪৫০ টাকা, জিহাদি খেজুর ২৪০ টাকা, আজওয়া খেজুর ৯০০ টাকা, বড়ই খেজুর ৪০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৯০০ টাকা ও মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি মাল্টা ৩০০ টাকা, সবুজ আপেল ২৮০ টাকা, নাশপতি ২৫০ টাকা, আনার ৫০০ টাকা, লাল আঙুর ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা ও কমলা ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৮:১৮

পর্যাপ্ত সরবরাহের পরও অস্থির চালের বাজার
দীর্ঘদিন উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল থাকার পর ফের অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও রাজধানীর পাইকারি বাজারে চিকন ও মোটা চালের দাম বস্তাপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছে।  শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাবুবাজার ও বাড্ডা বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।  সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও নতুন ও পুরনো চাল বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে মোটা ও চিকন চাল কেজিতে বেড়ে গেছে চার থেকে ছয় টাকা। মোটা চাল ব্রি-২৮ মানভেদে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। খুচরা বাজারে চিকন চালের মধ্যে মিনিকেট মানভেদে কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৭৮ টাকা ও নাজিরশাইল মানভেদে ৭০ থেকে ৮৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।   এ বিষয়ে চাল ব্যবসায়ী ও চালকলের মালিকরা বলছেন, কৃষকের কাছ থেকে মিল মালিকরা এবার বাড়তি দামে ধান কিনেছেন। এতে তারা নতুন করে কিছুটা দাম বাড়িয়ে বাজারে চাল ছাড়ছেন। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিলারদের কারসাজিতে চালের বাজার নতুন করে অস্থির হয়ে উঠেছে। নানা অজুহাতে চালকল মালিকরা দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এতে পাইকারি ও খুচরা বাজারেও চালের দাম বেড়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারওয়ান বাজারের চালের এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, নির্বাচনের এক দিন পর মিলাররা হঠাৎ কারসাজি করে চালের দাম বস্তায় ২৫০ টাকার বেশি বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। এতে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়েও চালের দাম বেড়েছে। সাধারণত যখন চালের দাম বাড়ে, তখন এক লাফে বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে বাড়ে। কিন্তু এবার এক লাফে বস্তাপ্রতি প্রায় ৩০০ টাকার মতো বাড়িয়ে দিয়েছেন মিলাররা।  এ ব্যাপারে বাবুবাজারের চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাড়তি দামে ধান কিনতে হয়েছে মিলারদের। এতে চালের দাম বাড়তি। মিলাররা বস্তাপ্রতি চাল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। বাড্ডা বাজারে চাল কিনতে আসা এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমন মৌসুম শেষ হতেই চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে সব পণ্যের দাম কয়েক দফা বাড়লেও চালের দাম কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। নতুন করে চালের দাম বাড়ায় ক্রেতাদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে গেল। বাজারে সরকারের নজরদারি নেই বলেই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট চালের দাম বাড়াতে সাহস পাচ্ছে।
১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৮:৪৩
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়