• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo
জাপার অন্তঃকোন্দলের জন্য সরকারকে দায়ী করলেন জিএম কাদের
জিএম কাদেরকে লিগ্যাল নোটিশ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার মানহানির অভিযোগ এনে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে।  দলটির যুগ্ম-মহাসচিব সাদ এরশাদকে দল থেকে বহিষ্কার করায় তাকে এ লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়। দ্রুত ক্ষমা চেয়ে বহিষ্কারের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার না করা হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নোটিশে জানানো হয়েছে। খুলনা জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট এসএম মাসুদুর রহমান শনিবার (২৩ মার্চ) ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। তিনি গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নোটিশে মাসুদুর রহমান উল্লেখ করেন, জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নু দল থেকে বহিষ্কৃত। নতুন কাউন্সিলে কাউন্সিলরদের সর্বসম্মতিতে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্ত্রী বেগম রওশন এরশাদকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়। এরশাদপুত্র রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ দলের যুগ্ম-মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন। নোটিশে তিনি আরও বলেন, জিএম কাদের দল থেকে রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদকে বহিষ্কার করতে পারেন না। কারণ তিনি তো দলের চেয়ারম্যানই নন। তিনি দল থেকে অব্যাহতির কথা বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে জনসম্মুখে রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদের মানহানি করেছেন। দ্রুত ক্ষমা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার না করলে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করেন আইনজীবী মাসুদুর রহমান। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) জিএম কাদের অনুসারী মাহমুদ আলম সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এম এ কুদ্দুস খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা রহমান মুন্নি, প্রাদেশিক বিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আলম খুশু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এস এম আল জুবায়ের, যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে, শারফুদ্দিন আহমেদ শিপু, শারমিন পারভীন লিজা, যুগ্ম-প্রচার সম্পাদক শেখ মাসুক রহমান ও যুগ্ম-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহনাজ পারভীনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এদিকে দলটির পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আগেই জিএম কাদেরের নেতৃত্ব পরিহার করে জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের নেতৃত্বে পৃথক জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছেন অব্যাহতি পাওয়া এসব নেতা। কাউন্সিলে সাদ এরশাদ, সাহিদুর রহমান টেপা কো-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি নেতারা বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
যে কারণে নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি, জানালেন রওশন
এরশাদের ৯৫তম জন্মদিন আজ
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ঈদের পর আন্দোলনে যাবে জাপা
ক্ষুধা-দরিদ্রতায় অগণিত মানুষ দিশেহারা : জিএম কাদের
সেন্টুর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি জাপা চেয়ারম্যান
অসুস্থতার কারণ উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান পদ থেকে শফিকুল ইসলাম সেন্টুর পদত্যাগপত্র আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেননি পার্টির চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ।   মঙ্গলবার (১২ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সোমবার রাতে রাজধানীর গুলশানে জাপা চেয়ারম্যানের বাসভবনে পার্টির শীর্ষ নেতাদের এক জরুরি বৈঠকে সেন্টুর পদত্যাগপত্রটি গ্রহণ না করে তাকে দলীয় কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশের আহ্বান জানানো হয়।   বৈঠক শেষে শফিকুল ইসলাম সেন্টুকে দেওয়া এক পত্রে পার্টির নবনির্বাচিত মহাসচিব কাজী মামুনূর রশিদ বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনাক্রমে জরুরি ভিত্তিতে শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আপনার (শফিকুল ইসলাম সেন্টু) দেওয়া পদত্যাগপত্রটি গৃহীত হয়নি। আপনাকে কো-চেয়ারম্যান পদে বহাল থেকে পার্টির সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অনুরোধ করা যাচ্ছে।   মহাসচিবের চিঠিতে আরও বলা হয়, পার্টির প্রতি আপনার নিবেদিত ত্যাগ চেয়ারম্যানসহ দলের শীর্ষ নেতারা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে সব সময় স্মরণে রাখবেন। আপনার (শফিকুল ইসলাম সেন্টু) ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে নেতাকর্মীদের আস্থা, বিশ্বাস ও সম্মানের মূল্যায়ন করবেন।   এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় অসুস্থতার কারণ উল্লেখ করে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন শফিকুল ইসলাম সেন্টু।
৪৮ ঘণ্টা না যেতেই রওশনের পার্টি থেকে পদত্যাগ করলেন সেন্টু
কাউন্সিলের ৪৮ ঘণ্টা না পেরুতেই রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির কো-চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সেন্টু।  সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে রওশন এরশাদ বরাবর নিজ স্বাক্ষরিত এক পদত্যাগপত্র জমা দেন সেন্টু। এতে পারিবারিক ও স্বাস্থ্যগত কারণে পদত্যাগ করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর আগে, বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে কথা বললে দলীয় পদ হারান সেন্টু। সেন্টুকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদে মহানগর উত্তরের ৬ শতাধিক নেতাকর্মীও পার্টি থেকে পদত্যাগ করেন।   শফিকুল ইসলাম সেন্টু জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির সভাপতি ছিলেন। বহিষ্কৃত সেন্টু যোগ দেন রওশন এরশাদের বলয়ে। বলতে গেলে তার জনবল দেখেই তড়িঘড়ি করে জি এম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে অব‌্যাহতি দিয়ে রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম‌্যান ঘোষণা করা হয়। শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয় কাউন্সিলে সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা ও দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদকে জাতীয় পার্টির নতুন চেয়ারম‌্যান, কাজী ফিরোজ রশীদকে নির্বাহী চেয়ারম‌্যান এবং কাজী মামুনুর রশীদকে মহাসচিব নির্বাচিত করা হয়।
নেতৃত্ব পরিবর্তনে ইসিতে চিঠি দিয়ে সাড়া পেল না রওশনপন্থীরা
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব পরিবর্তনে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে রওশন এরশাদপন্থীরা। তবে এতে সাড়া দেয়নি ইসি। শনিবার (৯ মার্চ) ইসির উপসচিব মো. মাহবুবুল আলম শাহ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী না-হওয়ায় রওশনপন্থীদের আবেদন ইসিতে নামঞ্জুর হয়েছে। এর আগে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব পরিবর্তনে গত ৪ মার্চ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বরাবর চিঠি দেয় রওশন এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ। চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং একাদশ জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের গুলশানের বাসায় দলটির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের জরুরি বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সভায় সবার দাবির প্রেক্ষিতে জাতীয় পার্টির গঠনতান্ত্রিক ক্ষমতাবলে রওশন এরশাদ পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেছেন এবং কাজী মামুনুর রশীদকে অন্তর্বর্তী (পরবর্তী সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত) মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এদিকে শনিবার ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল করেন রওশন এরশাদপন্থীরা। কাউন্সিলে রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে আগামী ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত করা হয়। কাউন্সিলে আগামী তিন বছরের জন্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন কাজী ফিরোজ রশীদ। সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা নির্বাচিত। এ ছাড়া পাঁচজন কো-চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। কো-চেয়ারম্যানরা হলেন- শাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাদ এরশাদ, গোলাম সারওয়ার মিলন, সুনীল শুভ রায়। সুনীল শুভ রায় জাতীয় পার্টির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবেন। জাতীয় পার্টির দুই শীর্ষ নেতা রওশন এরশাদ ও জিএম কাদেরের দ্বন্দ্ব অনেক পুরোনো। তবে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর ক্ষুব্ধ হন রওশনপন্থীরা। অন্যদিকে, ছেলে সাদ এরশাদকে রংপুরে মনোনয়ন না দেওয়ায় রওশন এরশাদ নির্বাচন থেকে বিরত থাকেন। এর জেরে নতুন করে জাপায় দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এখন শেষে পর্যন্ত দলটি দুই ভাগ হয়ে গেল।
আমরাই মূল জাতীয় পার্টি : চুন্নু
জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, আরেকটি ব্রাকেটবন্দী দল হতে পারে। কিন্তু আমরাই মূল জাতীয় পার্টি। শনিবার (৯ মার্চ) রওশন এরশাদপন্থীদের কাউন্সিল প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে তিনি এ কথা বলেন। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, রওশন এরশাদপন্থীদের পৃথক কাউন্সিল করা দলের গঠনতন্ত্রবিরোধী। তবে আমরা তাদের কার্যক্রমকে গুরুত্ব দিচ্ছি না। জি এম কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে এবং থাকবে। এদিন ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল করেন রওশন এরশাদপন্থীরা। কাউন্সিলে রওশন এরশাদকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে আগামী ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত করা হয়। কাউন্সিলে আগামী তিন বছরের জন্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন কাজী ফিরোজ রশীদ। সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা নির্বাচিত। এ ছাড়া পাঁচজন কো-চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। কো-চেয়ারম্যানরা হলেন- শাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাদ এরশাদ, গোলাম সারওয়ার মিলন, সুনীল শুভ রায়। সুনীল শুভ রায় জাতীয় পার্টির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবেন। জাতীয় পার্টির দুই শীর্ষ নেতা রওশন এরশাদ ও জিএম কাদেরের দ্বন্দ্ব অনেক পুরোনো। তবে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর ক্ষুব্ধ হন রওশনপন্থীরা। অন্যদিকে, ছেলে সাদ এরশাদকে রংপুরে মনোনয়ন না দেওয়ায় রওশন এরশাদ নির্বাচন থেকে বিরত থাকেন। এর জেরে নতুন করে জাপায় দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এখন শেষে পর্যন্ত দলটি দুই ভাগ হয়ে গেল।
জি এম কাদের বেইমানি করেছেন : রওশন
জি এম কাদের দলের সঙ্গে বেইমানি করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। তিনি বলেন, নির্বাচনে সারাদেশের ২৫০ প্রার্থীকে কোরবানি দিয়েছেন তিনি। তাদের কোনো খোঁজ নেননি। শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে দলের দশম জাতীয় কাউন্সিলে তিনি এ কথা বলেন। রওশন এরশাদ বলেন, এরশাদ এদেশে যে নতুন ধারার রাজনীতির প্রবর্তন করেছিলেন, সেই রাজনীতি হারিয়ে যেতে বসেছিল। আজ এই কাউন্সিল যদি না হতো, তাহলে জাতীয় পার্টি হারিয়ে যেত। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতো। আমরা আমাদের  হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আমরা হারিয়ে ফেলতাম। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে এরশাদের নীতি-আদর্শ এবং উন্নয়ন-সমৃদ্ধি ও সংস্কারের রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। জনগণের মনে আবার আমরা বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি।’  তিনি বলেন, এরশাদের জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভেদ নেই। আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি এবং থাকব। অতীতে যারা পার্টি ছেড়ে গেছে, তারা কেউ এরশাদের নীতি-আদর্শ নিয়ে যায়নি। তাই জাতীয় পার্টি কখনো ভেঙেছে- তা আমি মনে করি না। লাঙ্গল প্রতীক এখনো আমাদের অনুকূলে আছে এবং আগামীতেও থাকবে। রওশন এরশাদ আরও বলেন, দলের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত না রেখে বিকেন্দ্রীকরণ করার প্রস্তাব রেখেছি। জাতীয় পার্টিতে গণতন্ত্র চর্চার একটা নিদর্শন আমরা সৃষ্টি করতে চাই। সেই লক্ষ্যে গঠনতন্ত্র সংশোধন উপকমিটি প্রয়োজনীয় সংশোধনীর প্রস্তাব আনবে।
জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ
জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান হিসেবে আগামী ৩ বছরের জন্য নির্বাচিত হলেন রওশন এরশাদ।  শনিবার (৯ মার্চ) দশম জাতীয় কাউন্সিলে তার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কাউন্সিলে আগামী তিন বছরের জন্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন কাজী ফিরোজ রশীদ।  সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা নির্বাচিত। এ ছাড়া পাঁচজন কো-চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে।  কো-চেয়ারম্যানরা হলেন শাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাদ এরশাদ, গোলাম সারওয়ার মিলন, সুনীল শুভ রায়। সুনীল শুভ রায় জাতীয় পার্টির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে, শনিবার (০৯ মার্চ) জাতীয় সংগীত এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মৃধা। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনিস্টিউটসহ মৎস্যভবন এবং শাহবাগ এলাকা। নানা রংবেঙের পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল। সড়কদ্বীপগুলোতে লাগানো হয়েছে এরশাদ শাসনামলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন। নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট মঞ্চ। ১২ হাজার কাউন্সিলর এবং ডেলিগেট উপস্থিতির লক্ষ্য চুড়ান্ত করে সম্পন্ন করা হয়েছে সকল আয়োজন।
বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়ে রওশনপন্থী জাপার সম্মেলন
জাতীয় পার্টির (জাপা) বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়ে সম্মেলন করছেন রওশন এরশাদ। শনিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর রমনা ইনস্টিটিউটের সামনে খোলামাঠে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনে রওশন এরশাদ ছাড়াও রয়েছেন, জাতীয় পার্টি থেকে অব্যাহতি পাওয়া কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু। ফলে জাতীয় পার্টি নামে আরও একটি দলের সৃষ্টি হচ্ছে। এর আগে জাতীয় পার্টি ভেঙে একই নামে পাঁচটি দল হয়েছে। রাজধানী ছাড়া ঢাকার বাইরে থেকেও নেতাকর্মীরা সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানী বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুন। গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেবর-ভাবির কোন্দলের মাত্রা চরমে ওঠে। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা সরাসরি পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলেন। ফল বিপর্যয়ের জন্য দোষারোপ করেন। তাদের পদত্যাগও চান পরাজিত প্রার্থীদের অনেকেই। এ ঘটনা কেন্দ্র করে দলে থাকা দীর্ঘদিনের মিত্রদের একে একে বহিষ্কার করেন জিএম কাদের। এর মধ্যে গত ২৮ জানুয়ারি জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে জাপার স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হন রওশন এরশাদ। মূলত রওশন অংশে তিনি ছাড়া বাকি শীর্ষ নেতাদের সবাই দল থেকে বহিষ্কৃত। বহিষ্কৃত নেতাদের নিয়েই নতুন করে দল গঠন করতে যাচ্ছেন সাবেক এই বিরোধী দলের নেতা। তবে দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রওশন এরশাদকে বহিষ্কার করেননি জিএম কাদের। দলটির একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাপায় সবচেয়ে বড় ভাঙন হতে যাচ্ছে আজ শনিবার। যদিও ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না রংপুরসহ ১৭টি জেলা। অন্য জেলার নেতাকর্মীরাও কমবেশি এখন দুই ভাগে বিভক্ত। বিভক্তি প্রসঙ্গে রওশনের সম্মেলন বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব কাজী ফিরোজ রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে অনেক চেষ্টা করেছি, শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। জাপা ফের ভাঙছে। এজন্য কে দায়ী, তা হয়তো সময় মূল্যায়ন করবে। প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির যাত্রা শুরু হয়। এরপর নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে অন্তত ছয় ভাগে বিভক্ত হয়েছে দলটি। তারপর থেকে এরশাদ-রওশন ও জিএম কাদের জাপার মূল ধারায় ছিলেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনা প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর থেকেই নেতৃত্ব নিয়ে রওশন ও জি এম কাদেরের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে।