• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মানিকগঞ্জ-২: লড়াই হবে বিএনপি-জাতীয় পার্টির

জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, মানিকগঞ্জ

  ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৮:৫২

হরিরামপুর, সিঙ্গাইর ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে মানিকগঞ্জ-২ আসন ও জাতীয় সংসদের ১৭৩ নম্বর আসনটি গঠিত।

১ম থেকে ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত মানিকগঞ্জে আসন ছিল চারটি। ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আসন পুনর্বিন্যাস করে মানিকগঞ্জ-৪ আসনটি ভেঙে মানিকগঞ্জ-২ আসনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফলে মানিকগঞ্জের আসন সংখ্যা ৪টি থেকে কমে ৩টি হয়।

মানিকগঞ্জ-২ আসনে হরিরামপুর উপজেলার সঙ্গে মানিকগঞ্জ-৪ আসনের নির্বাচনী এলাকা, সিঙ্গাইর উপজেলা ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং শিবালয় উপজেলাকে বাদ দিয়ে মানিকগঞ্জ-১ আসনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

১ম ও দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনটি ছিল ঢাকা-২ ও ঢাকা-৪ আসন। ১৯৮৪ সালে মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হলে আসনটি মানিকগঞ্জ-২ ও মানিকগঞ্জ-৪ হয়। যা জাতীয় সংসদের ১৭৩ ও ১৭৫ নম্বর আসন।

১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই দুটি আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য হন যথাক্রমে মোসলেম উদ্দিন খান হাবু মিয়া ও মীর আবুল খায়ের ঘটু।

১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন বিএনপির প্রার্থী ক্যাপ্টেন (অব.) আব্দুল হালিম চৌধুরী ও শামসুল ইসলাম খান নয়া মিয়া।

১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ ও ১৯৮৮ সালে ৪র্থ সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির নেতা ডা. লুৎফর রহমান ও গোলাম ছরোয়ার মিলন।

১৯৯১ সালে পঞ্চম, ১৯৯৬ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে ষষ্ঠ ও ১৯৯৬ সালের জুন মাসে সপ্তম ও ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন প্রয়াত বিএনপি নেতা হারুণার রশিদ খান মুন্নু ও শামসুল ইসলাম খান নয়া মিয়া।

অর্থাৎ এই আসনে নয়া মিয়া মোট পাঁচবার এবং মুন্নু মিয়া মোট চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। নয়া মিয়া সরকারের শিল্পমন্ত্রী ও মুন্নু দপ্তরবিহীন মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

নয়া মিয়ার মৃত্যুর পর তার আসনে উপ-নির্বাচনে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্ত। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের নির্বাচনে নবগঠিত সংসদীয় এলাকায় বিএনপি দলীয় প্রার্থী হন মুন্নুর মেয়ে আফরোজা খান রিতা।

তাকে পরাজিত করে ৯ম সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন ১৪ দলীয় জোট সরকারের প্রার্থী জাতীয় পার্টির নেতা এস এম আব্দুল মান্নান।

২০১৪ সালে ১০ম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে।
এই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করায় মমতাজ বেগম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনেও দলের মনোনয়ন চাইবেন তিনি। তবে তার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন জোট সরকারের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আব্দুল মান্নান।

জাতীয় পার্টির সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী গোলাম ছারোয়ার মিলনও এই আসনে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন বলে জানা যায়।

এছাড়াও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান শফিউল আরেফীন টুটুল, মানিকগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী, হাটিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডা. আলী জ্বিলকদ আহমেদও জনসংযোগ করে যাচ্ছেন।

তবে এই আসনে মমতাজ বেগমের পরিবর্তে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য এস এম আব্দুল মান্নানকে ১৪ দলীয় জোট থেকে মনোনয়ন দেয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

জাপা নেতা মান্নান এরইমধ্যে তার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নির্বাচনী কাজ পরিচালনার দায়িত্ব কার ওপর দেয়া যেতে পারে তা যাচাই-বাছাই শুরু করেছেন। কিছু কিছু এলাকায় তিনি দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী তারা কাজও করছেন। কারণ মান্নানকে জোট থেকে মনোনয়ন না দেয়া হলেও তিনি নির্বাচন করবেন বলে ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে দলীয় সিদ্ধান্ত না থাকলেও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী এলাকায় দলীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদানের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে তাদের প্রার্থিতার কথা জানান দিচ্ছেন।

এই আসনে সাবেক শিল্পমন্ত্রী শামসুল ইসলাম খান নয়া মিয়ার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্ত, সিঙ্গাইর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান খান রোমান মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।

এই আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল সাবেক মন্ত্রী হারুণার রশীদ খান মুন্নুর বড় মেয়ে ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতাকে। তবে রিতাকে মানিকগঞ্জ-৩ আসনে মনোনয়ন দেয়া হলে এই আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্তর মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত।

তাই এই আসনে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাপা নেতা এস এম আব্দুল মান্নানের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবার সম্ভাবনা আছে। তবে এক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে থাকবে বিএনপির প্রার্থী।

জেবি/এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • রাজনীতি এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
গাজায় দুর্ভিক্ষ ‘আসন্ন’: হোয়াইট হাউস
গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ, আসনপ্রতি লড়বে ১৫ জন
দু-একটি আসন ছাড়া বাসের প্রায় সব টিকিট শেষ
সিলেট টেস্টে চালকের আসনে শ্রীলঙ্কা, ধুকছে বাংলাদেশ
X
Fresh