• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ব্রেইনে পরিবর্তন ঘটাতে পারে স্মার্টফোন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০১ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:৫২

নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া (নোমোফোবিয়া) অর্থাৎ মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করতে না ভয়। এটা একশ শতকের নতুন একটি টার্ম। হয়তো আপনিও কখনো এটি মনে মনে আওড়িয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মোবাইল ফোন আসক্তি মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর সেটি এতোটাই ভয়াবহ যে গবেষকরা বলছেন, এটা আমাদের মস্তিষ্কের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। খবর সিএনএনের।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত নতুন এক জরিপে এমন তথ্যই জানা যাচ্ছে।

সম্প্রতি সিউলে কোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মোট ৩৮ জন কিশোরের ওপর ইন্টারনেট বা স্মার্টফোন আসক্তি নিয়ে গবেষণা চালায়। এদের মধ্যে ১৯ জন যাদের এসবের প্রতি আসক্তি নেই তাদের তুলনায় যাদের ইন্টারনেট বা স্মার্টফোন আসক্তি রয়েছে তাদের গাবা লেভেল উচ্চ পর্যায়ের বলে জানাচ্ছেন ওই গবেষকরা।

ওই গবেষণায় বলা হচ্ছে, স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট আসক্তি আমাদের মস্তিষ্ককে আক্ষরিক অর্থেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

তবে আসক্ত ১২ জনকে নয় সপ্তাহ কগনিটিভ বিহেভিওরাল থেরাপি দেয়ার পর গাবা লেভেল স্বাভাবিক হয়ে আসে।

অসউইগোতে স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের হিউম্যান কম্পিউটার ইন্টারঅ্যাকশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ক্যাগলার ইলডিরিম বলেছেন, কগনিটিভ বিহেভিওরাল থেরাপি মনঃসংযোগ ও ব্রেইনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।

স্ট্যানফোর্ডের নিউরো ইমেজিং বিশেষজ্ঞ নিউরোরেডিওলজিস্ট ডা. ম্যাক্স উইনটারমার্ক বলেছেন, এটা খুব ছোট গবেষণা। তাই এটাকে এক চিমটি লবণ মনে করতে হবে। আমি এই প্রথম ইন্টারনেট আসক্তি নিয়ে এ ধরনের গবেষণার কথা শুনলাম। তবে অ্যালকোহল, ড্রাগ ও অন্যান্য ধরনের আসক্তির কারণে ব্রেইনের বিভিন্ন ট্রান্সমিটার ভারসাম্যহীন হয়ে পড়া সংক্রান্ত গবেষণা রয়েছে।

মার্কিন সেন্টারস ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন বলছে, মোবাইল ফোনের কারণে দেশটিতে প্রতিদিন কমপক্ষে নয়জন নিহত হয়। আর আহত হয় এক হাজারের বেশি মানুষ।

যুক্তরাষ্ট্রে এ চিত্রটা যে কতটা ভয়াবহ সেটি জানা যাচ্ছে পিউ রিসার্চের ২০১০ সালের একটি গবেষণা থেকে। আমেরিকার প্রায় অর্ধেক প্রাপ্তবয়স্ক গাড়ি চালানোর সময় টেক্সট ম্যাসেজ পড়া বা পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তরুণদের ক্ষেত্রে চিত্রটা আরো ভয়াবহ। তিনজনে একজন স্বীকার করেছেন যে তারা গাড়ি চালানোর সময় টেক্সট ম্যাসেজ পড়েছেন বা পাঠিয়েছেন।

গবেষকরা বলছেন, সেল ফোন বা ইন্টারনেট ডিভাইসের নীল আলোর কারণে আমাদের ঘুমেও ব্যাঘাত ঘটে।

যদি আপনি নিজের মধ্যে বা আপনার কাছের মানুষের মধ্যে আসক্তির কোনো লক্ষণ খুঁজেন তাহলে সেটির পথও বাতলে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেগুলো হলো:

  • দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখতে হবে। যেমন মিটিং, খাবার সময়, বাচ্চাদের সঙ্গে খেলার সময় এবং অবশ্যই গাড়ি চালানোর সময়।
  • আপনার মোবাইল ফোন থেকে ফেসবুক ও টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়াগুলো আন-ইন্সটল করে ফেলুন। শুধু ল্যাপটপ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন।
  • দিনের নির্দিষ্ট সময়ে কাজ বা পারিবারিক জীবনকে বাধাগ্রস্ত করে না এমন মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকুন।
  • অ্যালার্ম হিসেবে মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজনে অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করুন।
  • স্মার্টফোনের পরিবর্তে মেডিটেশন করতে পারেন। অথবা মানুষের সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়া বাড়াতে পারেন।

এ/ এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • তথ্যপ্রযুক্তি এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh