• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

সেহরিকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম

হাফেজ মাওলানা মো. নাসির উদ্দিন

  ২৪ মে ২০১৮, ১২:০৮

ইসলামে পঞ্চম স্তম্ভের অন্যতম পবিত্র মাহে রমজান। আর রোজার পাঁচটি সুন্নতের প্রথমটি হলো সেহরি বা ভোররাতের খাবার গ্রহণ করা।

মধ্যরাতের পর থেকে সুবহে সাদিক তথা ফজর ওয়াক্তের আগের সময়টাকে সেহরি বলা হয়। সেহরি বিলম্বে খাওয়া সুন্নত। তবে সন্দেহের সময় পর্যন্ত বিলম্ব করা যাবে না। তার আগেই সেহরি নিরাপদ সময়সীমার মধ্যে শেষ করতে হবে। শেষ সময়ে সেহরি করলে নবীজীর সুন্নত যেমন আদায় হয়, তেমনি রোজা রাখাও সহজ হয়।

হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা সেহরি খাও, কেননা সেহরিতে বরকত রয়েছে। (বুখারী শরীফ, হাদিস ১৮০১ ও মুসলিম শরীফ, ১০৯৫/৪৫)

অন্য এক হাদিসে আছে, সেহরি খাওয়া বরকতপূর্ণ কাজ। সুতরাং তোমরা তা ছেড়ে দেবে না, যদিও এক ঢোক পানি দিয়ে হোক না কেন। কারণ যারা সেহরি খায় আল্লাহ তাআলা তাদের উপর রহমত বর্ষণ করেন এবং তার ফেরেস্তাগণ তাদের জন্য রহমতের দোয়া করেন। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস-১০৭০২)
--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন : আজকের ইফতার ও সেহরির সময়
--------------------------------------------------------

হজরত আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্নিত। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদের (মুসলমানদের) রোজা আর আহলে কিতাব (ইহুদি-খ্রিষ্টান) দের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহরি খাওয়া আর না খাওয়া। (মুসলিম শরীফ, পৃষ্ঠা ১৩১)

হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা সেহরি খাও, যদি তা এক ঢোক পানিও হয়। অন্যত্র বলেছেন, তোমরা সেহরি খাও, যদি এক লোকমা খাদ্যও হয়। এই হাদিসসমূহ দ্বারা সেহরির গুরুত্ব বোঝা যায়। এক ঢোক পানি, এক লোকমা খাদ্য, এক কাপ দুধ, সামান্য ফলমূল বা একটি খেজুরের মতো সামান্য হলেও সেহরি গ্রহণ করা সুন্নত। সেহরি একদিকে শারীরিক শক্তি জোগায়, যা রোজা পালনে সহায়ক হয়, অপর দিকে রুহানি শক্তি জোগায়, যা তাকওয়া অর্জনে সহয়তা করে। বরকতময় সেহরির কল্যাণকর নানা দিকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- সুন্নতের অনুসরন করা, ইসলামের নিজস্ব স্বকীয়তা রক্ষা করা, ইবাদতের জন্য শক্তি এবং তাকওয়া অর্জন, স্বাস্থ্য ও মনের অধিক প্রফুল্লতা লাভ, ক্ষুধার তাড়নায় সৃষ্ট প্রবৃত্তির বাসনা নিবারণ।

এমনকি সেহরির সময় দোয়া কবুল হয়। এসময় অধিক জিকির-আজকার, তাহাজ্জুদ আদায় ও দোয়া মোনাজাতের সুযোগ লাভ হয়। কোনো কারণে সেহরি খাওয়া সম্ভব না হলেও রোজা রাখতে হবে, কোনো প্রকার বাহানায় রোজা ছাড়া গ্রহণযোগ্য নয়। এবং ইচ্ছাকৃতভাবে সেহরি বর্জন করা ঠিক নয় এটা সুন্নতের বরখেলাপ। তা ছাড়া নবীজী বলেছেন, সেহরি ছাড়া রোজা রাখা ইহুদি নাসারাদের ধর্ম। তাই সেহরি গ্রহণ করে ইসলামি রোজার স্বকীয় বৈশিষ্ট্যকে রক্ষা করা ইমানদারদের কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে কবুল করুন।

আরও পড়ুন :

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • ধর্ম এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রোজায় বিনা পয়সায় যে হোটেল সেহরি-ইফতার করায়
সেহরিতে মসজিদের মাইকে অনবরত ডাকাডাকি, যা বললেন আহমাদুল্লাহ 
গোসল ফরজ হলে কি সেহরি খাওয়া যাবে
ইফতার-সেহরিতে যা খাবেন, যা খাবেন না
X
Fresh