• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo
বৃষ্টি প্রার্থনায় রাজধানীতে ইসতিসকার নামাজ আদায়
প্রচণ্ড তাপদাহে বৃষ্টি চেয়ে নামাজ ও আমল
তাপদাহে পুড়ছে দেশ। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। চলমান এই অবস্থা আরও তিনদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তর, ‘হিট অ্যালার্ট’ বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তার সময় আরও তিন দিন বাড়িয়েছে। এমন সময়ে বৃষ্টি আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত। আল্লাহর রহমতে প্রকৃতি পায় স্বস্তি ও উর্বরতা শক্তি। এক পশলা বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছে মানুষ। এমন সংকটময় মুহূর্তে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ পড়ার নির্দেশ দেয় ইসলাম। নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা চেয়ে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে তার রহমতের প্রার্থনা করার বিধান হাদিসে এসেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমা করবেন। তোমাদের জন্য মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।’ (সুরা নুহ: ১০-১১) আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার বাইরে কিছুই হয় না। রোদ-বৃষ্টিও তারই রহমত ও মহান কুদরতের প্রকাশ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি বাতাস পাঠান, এরপর তা মেঘমালা সঞ্চালিত করে। এরপর তিনি মেঘমালা যেভাবে ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং স্তরে স্তরে রাখেন। এরপর তুমি দেখতে পাও যে তা থেকে বৃষ্টি নেমে আসে। তিনি তার বান্দাদের মধ্যে যাদের ইচ্ছা তা (বৃষ্টি) পৌঁছান; তখন তারা আনন্দিত হয়।’ (সুরা রুম: ৩৮) সালাতুল ইসতিসকার পদ্ধতি ইসলামের পরিভাষায় বৃষ্টির এই বিশেষ নামাজকে সালাতুল ইসতিসকা বা বৃষ্টিপ্রার্থনার নামাজ বলা হয়। ফিকহের কিতাবে এই নামাজের বিশেষ পদ্ধতির কথা এসেছে। খোলা ময়দানে আজান-একামত ছাড়া উঁচু স্বরে কেরাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজের পর ইমাম খুতবা দেবেন। খুতবায় বেশি বেশি ইস্তিগফার ও কোরআন তিলাওয়াত করবেন। এরপর দুই হাত উঠিয়ে মিনতির সঙ্গে দোয়া করবেন এবং হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়বেন। মুসল্লিরাও তখন কায়মনোবাক্যে তার সঙ্গে শরিক হয়ে দোয়া-প্রার্থনা পড়বেন। বৃষ্টির নামাজ আদায় করতে বিনয়ের সঙ্গে যাওয়া সুন্নত। একমাত্র আল্লাহ তাআলাই যে বান্দার সব প্রয়োজন পূরণ করেন—এই বিশ্বাস অন্তরে জাগ্রত রাখতে হবে।  ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) খুবই সাদামাটাভাবে, বিনয়-নম্রতা এবং আকুতিসহ বাড়ি থেকে বের হয়ে নামাজের মাঠে উপস্থিত হয়েছেন।’ (আবু দাউদ)   বৃষ্টির নামাজের দোয়া বৃষ্টির নামাজ আদায়ের সময় নিচের দোয়াটি পাঠ করা খুবই কল্যাণকর। এই দোয়া নবী (সা.) নিজেই বৃষ্টির জন্য পাঠ করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, লোকজন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে অনাবৃষ্টির কষ্টের কথা বললে তিনি ঈদগাহে সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে এই দোয়া করেন। এরপর আল্লাহর হুকুমে বৃষ্টি বর্ষণ হতে শুরু করে। বৃষ্টি থেকে পরিত্রাণ পেতে মানুষের ছোটাছুটি দেখে নবীজি হেসে ফেলেন। (আবু দাউদ: ১১৭৩) দোয়াটি হলো—আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আর-রাহমানির রাহিম। মালিকি ইয়াউমিদ্দিন। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ইয়াফয়ালু মা ইউরিদ। আল্লাহুম্মা আনতাল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা আনতাল গানিয়্যু ওয়া নাহলুল ফুকারাউ। আনজিল আলাইনাল গাইছা ওয়াজআল মা আনজালতা লানা কুওয়্যাতান ওয়া বালাগান ইলা হিন। অর্থ: সব প্রশংসা পৃথিবীর প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তিনি পরম করুণাময়, দয়ালু ও শেষ বিচারের মালিক। আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তিনি যা ইচ্ছা করেন। হে আল্লাহ, তুমিই একমাত্র মাবুদ, তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তুমি ধনী, আমরা গরিব। আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করো এবং আমাদের জন্য যা অবতীর্ণ করো, তা আমাদের জন্য শক্তিময় ও কল্যাণ দান করো।’ (আবু দাউদ: ১১৭৩)
তীব্র গরমে মহানবী (সা.) যে দোয়া পড়তেন
টিকা নিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট লাগবে হজযাত্রীদের 
টাকা জমা না দেওয়ায় ২২ হজ এজেন্সিকে চিঠি
বেসরকারি হজযাত্রী প্রতিস্থাপন নিয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি
গোসলের পর নতুন করে অজু করতে হবে কি?
ইসলামের পরিভাষায়, গোসল হল সমস্ত দেহ ধৌত করার মাধ্যমে পূর্ণ পবিত্রতা অর্জনের একটি পন্থা। কতিপয় ধর্মীয় উপাসনা এবং আচার-অনুষ্ঠান পালনের পূর্বশর্ত হচ্ছে গোসল। শুক্রবার জুমার নামাজের পূর্বে, ঈদের নামাজের পূর্বে, এহরামের পূর্বে, হজের জন্য প্রস্তুত হওয়ার সময়, অজ্ঞান হওয়ার পর সচেতন হলে অথবা আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পূর্বে গোসল করা মস্তাহাব। আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের বলেছেন, ‘তোমরা যদি অপবিত্র অবস্থায় থাকো, তবে নিজেদের শরীর (গোসলের মাধ্যমে) ভালোভাবে পবিত্র করে নাও।’ (সুরা মায়েদা: ৬) গোসল করার পর নামাজের জন্য কি নতুন করে অজু করতে হবে কিনা, সে বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল মুহাম্মাদ (সা.) গোসলের পরে নতুন করে অজু করতেন না। (তিরমিজি: ১০৭) এ থেকে বোঝা যায়, গোসলের পর অযু করতে হবে না। কারণ, গোসলের মাধ্যমে অজু হয়ে যায়। গোসলের পর অজু ভঙ্গের কারণ পাওয়া না গেলে নতুন করে অজু করতে হবে না। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-কে গোসলের পর অজু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, গোসল অপেক্ষা কোনো অজু ব্যাপকতর? (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা: ৭৪৮) মূলত গোসল করার পর অজু করার কোনো বিধান ইসলামে নেই। ফরজ গোসল হলে কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়া ফরজ এবং পরিপূর্ণ অজু করে নেওয়া সুন্নত, যা গোসলেরই অংশ। আর গোসল ফরজ না হলে কুলি করা ও নাকে পানি দেওয়া সুন্নত এবং পরিপূর্ণ অজু করা মোস্তাহাব। তাই যথাযথভাবে গোসল করার পর নতুন করে আবার অজু করা ঠিক নয়। (সহিহ বুখারি: ২৪৮; উমদাতুল ক্বারি: ০৩/৮৬; বাহরুর রায়েক: ০১/৯৪; আদ্দুররুল মুহতার: ০১/৩২৩)।
যেখান থেকে আসে গরমের তীব্রতা
গত কয়েক দিন ধরে দেশে গরমের তীব্রতা দেখা দিয়েছে। প্রচণ্ড গরমে মানুষ হাঁসফাঁস করছে এবং দুর্ভোগ নেমে এসেছে জনজীবনে। গরমে বাড়ছে জ্বর ও ডায়রিয়াসহ নানান রোগ। গরম প্রসঙ্গে হাদিসে কী বলা আছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করে বলে হে রব, আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলেছে। মহান আল্লাহ তখন তাকে দুটি নিশ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি নিশ্বাস শীতকালে, আরেকটি গ্রীষ্মকালে। কাজেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাকো (বোখারি, হাদিস : ৩২৬০)। প্রচণ্ড গরমের সময় রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জোহরের নামাজ কিছুটা বিলম্বে আদায় করতেন। তাই বেশি গরম পড়লে জোহরের নামাজ দেরিতে আদায় করা সুন্নত। এ প্রসঙ্গে হজরত আবু জার রা. বলেন, এক সফরে আমরা আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গে ছিলাম। একসময় মুয়াজ্জিন জোহরের আজান দিতে চেয়েছিল। তখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, গরম কমতে দাও। কিছুক্ষণ পর আবার মুয়াজ্জিন আজান দিতে চাইলে নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (পুনরায়) বলেন, গরম কমতে দাও।   এভাবে তিনি (নামাজ আদায়ে) এত বিলম্ব করলেন যে আমরা টিলাগুলোর ছায়া দেখতে পেলাম। অতঃপর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, গরমের প্রচণ্ডতা আসে জাহান্নামের উত্তাপ হতে। কাজেই গরম প্রচণ্ড হলে উত্তাপ কমার পর নামাজ আদায় কর (বুখারি ৫৩৯)। গরমের তীব্রতা মূলত জাহান্নামের তীব্রতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তাই প্রচণ্ড গরমে জাহান্নামের কথা স্মরণ করে মহান আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া উচিত।
আগে ইকামত না দিলে কি নামাজ শুদ্ধ হবে?
নামাজ একটি দৈনিক নিয়মিত ইবাদত। একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নামাজ আদায় করতে হয় যা কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত আছে। এটি মুসলমানদের জন্য প্রতিদিন অবশ্যকরণীয় একটি ধর্মীয় কাজ। তবে প্রতিদিন আবশ্যকরণীয় বা ফরজ ছাড়াও বিবিধ নামাজ রয়েছে যা সময়ভিত্তিক বা বিষয়ভিত্তিক। ইসলামে ইচ্ছাকৃত ফরজ নামাজ না পড়া কবিরা গুনাহ বা বড় পাপ। নামাজ (সালাত) ইসলামের পাঁচটি রোকনের মধ্যে দ্বিতীয় রোকন। নামাজ প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক ও বুদ্ধি-জ্ঞান সম্পন্ন, নারী পুরুষ নির্বিশেষে, প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ বা অবশ্যকরণীয়। পবিত্র কুরআনের ১৭টি আয়াতে বলা হয়েছে সালাত প্রতিষ্ঠা করো। ফরজ নামাজের জামাতের আগে ইকামত দেওয়া সুন্নতে মুআক্কাদা। নবিজি সব সময় ইকামত দিয়েই নামাজ পড়াতেন। তাই জামাতে নামাজ পড়ার সময় ইকামত না দেওয়া মাকরূহ। একা নামাজ পড়ার সময়ও ইকামত দেওয়া উত্তম। তবে ভুল করে বা অন্য কোনো কারণে ইকামত ছাড়া জামাতে নামাজ আদায় করলে সুন্নতের খেলাফ ও মাকরুহ হলেও নামাজ শুদ্ধ হবে। পুনরায় ওই নামাজ আদায় করতে হবে না। নামাজের ইকামত শুরু হলে মুক্তাদীদের করণীয় হলো দাঁড়িয়ে কাতার সোজা করতে থাকা যেন ইকামত শেষ হতে হতে জামাতের কাতার সোজা হয়ে যায় এবং ইকামত শেষ হলে ইমাম নামাজ শুরু করতে পারেন।  সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, বেলাল (রা.) আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আসতে দেখে ইকামত শুরু করতেন। মুক্তাদিরা কাতার সোজা করা শুরু করতেন। এভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের জায়গায় পৌঁছার আগেই কাতার পুরোপুরি সোজা হয়ে যেত। (সহিহ মুসলিম: ১/২২০)
বিপদ-আপদ থেকে বাঁচার দোয়া
প্রত্যেকটি মানুষের জীবনেই বিপদ-আপদ আসে। অনেক সময় পাপের পরিণাম হিসেবেও নেমে আসে বিপদ। তবে মাঝেমধ্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা হিসেবেও আসতে পারে বিভিন্ন ধরনের বিপদ-আপদ এবং বালামসিবত। এ জন্য আল্লাহর রসুল (সা.) সব ধরনের বিপদ-মুসিবত থেকে মুক্তির জন্য দোয়া শিখিয়েছেন।  হযরত জাবির রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, কোনো ব্যক্তি (আল্লাহর কাছে) কোনো কিছু প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা তাকে তা দান করেন। অথবা তদানুযায়ী তার থেকে কোনো অমঙ্গল প্রতিহত করেন। যতক্ষণ না সে কোনো পাপাচারে লিপ্ত হয় বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দোয়া করে। (তিরমিজি)   হযরত সালমান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, দোয়া ছাড়া আর কিছুই তাকদির পরিবর্তন করতে পারে না আর নেক আমল ছাড়া আর কিছুই বয়সে বৃদ্ধি ঘটায় না। (সহিহ ১৫৪, তিরমিজি ২১৩৯) হযরত উসমান ইবনে আফফান (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা তিনবার করে এই দোয়াটি পাঠ করবে, তাকে আসমান-জমিনের কোনো জিনিস ক্ষতি করতে পারবে না।   উচ্চারণ : বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মায়াস‌মিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিসসামা-ই ওহুয়াস সামিউল আলিম   অর্থাৎ, আমি আল্লাহ‌র নামে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, যার নামের সঙ্গে আসমান ও জমিনে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না, আর তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪১০)
রাসুল (সা.) যেভাবে ঘুমাতে নিষেধ করেছেন
মানুষের সুস্থতার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম। ইসলামের নির্দেশিত পদ্ধতি ও রাসুল (সা.)-এর সুন্নত মোতাবেক ঘুমও ইবাদত-পুণ্যে পরিণত হয়। ঘুমের জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময় হলো রাত। কেননা আল্লাহ তা’আলা রাতকে বিশ্রামের উপযোগী করেই বানিয়েছেন।  রাসুল (সা.) এশার নামাজের পর গল্পগুজব ও গভীর রাত পর্যন্ত সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর তাগিদ দিতেন (মুসনাদ আবি ইয়ালা, হাদিস :  ৪৮৭৯)। মহান আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের জন্য রাত্রিকে করেছি আবরণস্বরূপ আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য (সুরা : নাবা, আয়াত : ৯-১১)।’ আমাদের প্রিয় নবি (সা.) রাতে দেরি করে ঘুমানো অপছন্দ করতেন। সাহাবায়ে কিরামকে তাগিদ দিতেন এশার পরপরই ঘুমিয়ে যাওয়ার। রাসুল (সা.) এশার নামাজ এক-তৃতীয়াংশ রাত পরিমাণ দেরি করে পড়া পছন্দ করতেন, আর এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা অপছন্দ করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৯৯)। নির্জন বাড়ি-ঘরে ঘুম : অনেক সময় বাড়ি-ঘর নিস্তব্ধ ও নির্জনতায় ছেয়ে থাকে। এসব ঘরে একাকী ঘুমানো উচিত নয়। তাই জনশূন্য ঘরে ঘুমানোর ক্ষেত্রে হাদিসের নিষেধাজ্ঞা রায়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, ‘রাসুল (সা.) কোনো ঘরে নির্জন রাত যাপন ও একাকী সফর করতে নিষেধ করেছেন (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৫৬৫০) খোলা আকাশের নিচে ঘরের বাইরে ও আকাশের নিচে ঘুমাতে মহানবি (সা.) নিষেধ করেছেন। অনুরূপ ছাদেও ঘুমানো উচিত নয়। হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কেউ যদি রাতে বেষ্টনীবিহীন ছাদে ঘুমায়, তাহলে (কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে) তার ব্যাপারে (আল্লাহর) কোনো দায়িত্ব নেই (আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৪১)।’ জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা রাতে পানাহারের পাত্রগুলো ঢেকে রেখো। ঘরের দরজাগুলো বন্ধ রেখো। আর সন্ধ্যাবেলা বাচ্চাদের ঘরের ভেতর রেখো, কারণ এ সময় জিনেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোনো কিছুকে দ্রুত পাকড়াও করে। ঘুম যাওয়ার সময় বাতিগুলো নিভিয়ে দাও। কেননা, অনেক সময় ছোট ক্ষতিকারক ইঁদুর প্রজ্বালিত সলতেযুক্ত প্রতীপ-বাতি টেনে নিয়ে যায় এবং সব জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৩১৬)  
ওমরাহ ভিসার অপব্যবহারের ব্যাপারে হুঁশিয়ার করল সৌদি
ওমরাহ ভিসার অপব্যবহার রোধে হুঁশিয়ার করেছে সৌদি সরকার। ধর্মীয় উদ্দেশ্য ছাড়া কর্মসংস্থান বা অন্য কোনো কাজে যেন এই ভিসার ব্যবহার না করা হয় সেজন্য ওমরাহ পালনকারীদের প্রতি সতর্কতা জারি করেছে দেশটির হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আরব আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ। ভিসার নির্দিষ্ট প্রবিধানগুলো মেনে চলার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে সৌদির হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ওমরাহ পালনের লক্ষ্যে ইস্যু করা ভিসাগুলো কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বা এ সম্পর্কিত ক্রিয়াকলাপের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ নিজেদের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, ওমরাহ পালনের ধর্মীয় উদ্দেশ্য যথাযথভাবে পূরণের ওপর জোর দিতে হবে। বিবৃতিতে ওমরাহ পালনকারীদের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দেশত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে এই ভিসা ব্যবহারের যেন কোনো প্রকার চেষ্টা না করা হয়, সেজন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।  
কোরবানির ঈদের সম্ভাব্য তারিখ
সৌদি আরবে চলতি বছরের কোরবানির ঈদ জুন মাসের ১৬ তারিখ উদযাপিত হতে পারে। দেশটির চাঁদ দেখা কমিটি এ তথ্য জানিয়েছে। সৌদি আরবের চাঁদ কমিটির ঘোষণা অনুযায়ী, ঈদুল আজহা হতে পারে ১০ জিলহজ। সৌদি আরবে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয়েছে গত ১০ এপ্রিল। ঈদুল ফিতরের দুই মাস দশ দিন পরে পালিত হয় ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। সাধারণত বাংলাদেশে সৌদি আরবের পরের দিন কোরবানির ঈদ পালন করা হয়। সেই হিসাবে আগামী জুন মাসের ১৭ তারিখ বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ পালিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখ পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।   মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিমকে (আ.) স্বপ্নে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানির আদেশ দেন মহান আল্লাহ। এরপর তিনি সবচেয়ে প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করার সিদ্ধান্ত নেন। এ ঘটনায় মহান আল্লাহ খুশি হয়ে যান এবং ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়।  মূলত এই ঘটনাকে স্মরণ করেই সারা বিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে জিলহজ মাসের ১০ তারিখ পশু কোরবানি করেন। জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু করে ১৩ তারিখ পর্যন্ত পশু কোরবানি করা যায়।    সূত্র : বিবিসি