• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ন্যাশনাল জিওগ্রাফির তালিকায় ১০ মসজিদ

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ০১ মার্চ ২০১৮, ১৮:৫৭

বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মসজিদের মাঝে অল্পসংখ্যক মসজিদই আছে, যেগুলো ধর্মীয় গুরুত্বের পাশাপাশি নির্মাণ এবং স্থাপত্যশৈলীতে নজর কেড়েছে বিশ্ববাসীর। এদের কোনোটি ঐতিহাসিক কারণেই বিখ্যাত, আবার কোনোটি অত্যাধুনিক নকশা এবং নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে আলোচিত।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফি এসব কয়েকটি অসাধারণ সুন্দর মসজিদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে।

সুলতান আহমেদ মসজিদ, ইস্তাম্বুল

সুলতান আহমেদ মসজিদ তুরস্কের একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। উসমানীয় সুলতান প্রথম আহমেদ ১৬১৬ সালে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির অভ্যন্তরের দেয়ালগুলোতে নীল রঙের টাইলস থাকায় এটি ব্লু মস্ক নামেও পরিচিত। মসজিদটিতে পাঁচটি প্রধান গম্বুজ, ছয়টি মিনার এবং আটটি মধ্যম আকৃতির গম্বুজ আছে। মসজিদটির অবস্থান ইস্তাম্বুলের হাজিয়া সোফিয়ার ঠিক পাশেই। মসজিদটিতে একসাথে ১০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে। ইউনেস্কো মসজিদটিকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের অন্তর্ভুক্ত করেছে।

নাসির আল মুলক মসজিদ, ইরান

১৮৮৮ সালে নির্মিত নাসির আল মুলক মসজিদটির অবস্থান ইরানের পঞ্চম বৃহত্তম শহর শিরাজে। ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি রঙিন কাঁচের জানালাগুলোর জন্য বিখ্যাত। বাইরে থেকে মসজিদটিকে দেখতে খুবই সাধারণ মনে হলেও এর ভেতরের কারুকার্য মানুষকে মুগ্ধ করে। রঙ্গিন জানালা দিয়ে আলো এসে মসজিদের ভেতরে অবস্থিত দেয়াল পার্সিয়ান কার্পেটগুলোর উপর বিচিত্র বর্ণিল নকশা ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের অবতারণা করে। মেঝেতে গোলাপী রঙের টাইলস থাকার কারণে মসজিদটি স্থানীয়ভাবে পিঙ্ক মসজিদ নামেও পরিচিত।

ইসতিকলাল মসজিদ, জাকার্তা

আরবি ইসতিকলাল শব্দটির অর্থ স্বাধীনতা। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় অবস্থিত ইসতিকলাল মসজিদটি নির্মিত হয়েছে দেশটির স্বাধীনতার স্মরণে। ১৯৭৮ সালে নির্মাণ সম্পন্ন হওয়া মসজিদটি দেশটির জাতীয় মসজিদ। ২ লাখ মুসল্লি ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট মসজিদটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম মসজিদগুলোর মধ্যে একটি।এশিয়ার বৃহত্তম এবং মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীর পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মসজিদ।

জামে মসজিদ, দিল্লি

মুঘল সম্রাট শাহজাহানের সময় নির্মিত দিল্লির জামে মসজিদটি ভারতের সবচেয়ে বড় মসজিদগুলোর একটি। সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি ভারতবর্ষের রাজধানী আগ্রা থেকে দিল্লিতে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেন। সে সময় রাজধানীর প্রধান মসজিদ হিসেবে ১৬৫৬ সালে এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।

২৫ হাজার মুসল্লি ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করতে তৎকালীন সময়ে খরচ হয়েছিল প্রায় ১০ লাখ রুপি। লাল বেলেপাথর এবং মার্বেল পাথরে তৈরি মসজিদটি মুঘল সাম্রাজ্যের স্থাপত্যকলার নিদর্শন বহন করছে।

শেখ জায়েদ মসজিদ, আবুধাবি

আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে অবস্থিত শেখ জায়েদ মসজিদটি দেশটির সবেচয়ে বড় মসজিদ। ১২ হেক্টর জমির উপর অবস্থিত এ মসজিদ কমপ্লেক্সটিতে একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারও আছে। ৫৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করে নির্মিত মসজিদটিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আনা মূল্যবান পাথর, ঝাড়বাতি এবং কার্পেট ব্যবহার করা হয়েছে।৪০ হাজার মুসল্লি ধারণক্ষমতা বিশিষ্ট মসজিদটির উদ্বোধন করা হয় ২০০৭ সালে।

সুলতান হাসান মসজিদ, কায়রো

মামলুক সুলতানদের সময়ে ১৩৫৯ সালে নির্মিত সুলতান হাসান মসজিদটিতে একই সাথে মাদরাসাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। মিসরের কায়রোর ওল্ড সিটিতে অবস্থিত এ মসজিদটি নির্মাণকালীন সময়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ মসজিদগুলোর একটি ছিল। মসজিদটির চার কোণে অবস্থিত চারটি মাদরাসায় ইসলামের চারটি মাজহাবের উপর শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। মসজিদটির দেয়ালগুলোর উচ্চতা ৩২ মিটার।

শাহ মসজিদ, ইসফাহান

ইরানের ইসফাহানে অবস্থিত শাহ মসজিদ বা ইমাম মসজিদ ইরানের সবচেয়ে বিখ্যাত স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর মধ্যে একটি। সাফাভিদ সাম্রাজ্যের শাহ আব্বাসের শাসনামলে ১৬২৯ সালে নির্মিত এ মসজিদটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসবে মর্যাদা পেয়েছে। মসজিদটি এর সাতরঙা মোজাইক টাইলস এবং দেয়ালে খচিত ক্যালিগ্রাফিক নকশার জন্য সুপরিচিত। একে পারস্যের ইসলামিক স্থাপত্যের শ্রেষ্ঠ উদাহরণগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ন্যাশনাল মসজিদ, কুয়ালালামপুর

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অবস্থিত নেগারা মসজিদ বা ন্যাশনাল মসজিদ হচ্ছে দেশটির জাতীয় মসজিদ। ১৯৬৫ সালে নির্মিত মসজিদটির অবস্থান প্রায় ১৩ একর আয়তনের বাগানের মধ্যে। এর মুসল্লি ধারণক্ষমতা ১৫,০০০।

এডুকেশন সিটি মসজিদ, দোহা

কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থিত এডুকেশন সিটি মসজিদকে বলা হয় সর্বপ্রথম অত্যাধুনিক স্থাপত্যের তৈরি মসজিদ। ২০১৫ সালে নির্মিত মসজিদটিতে একসাথে ১,৮০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে। মসজিদটির চারপাশে অবস্থিত বাগানের মধ্য দিয়ে চারটি ঝর্ণা প্রবাহিত হয়, যা পানি, মধু, দুধ এবং শরাবকে প্রতিনিধিত্ব করে।

হাসান আল-থানি মসজিদ, ক্যাসাব্লাঙ্কা

মরক্কোর ক্যাসাব্লাঙ্কায় অবস্থিত হাসান আল-থানি বা দ্বিতীয় হাসান মসজিদ হচ্ছে বিশ্বের সর্বোচ্চ মিনার বিশিষ্ট ধর্মীয় স্থাপনা। এর মিনারটির উচ্চতা ২১০ মিটার। ১৯৯৩ সালে নির্মিত মসজিদটির মুসল্লি ধারণ ক্ষমতা প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার। এর মিনারের চূড়ায় একটি লেজার বিম অবস্থিত, যা থেকে কাবা ঘরের দিক বরাবর সর্বদা একগুচ্ছ আলোক রশ্মি বিচ্ছুরিত হতে থাকে।

আরও পড়ুন:

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • ফিচার এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
মসজিদের বারান্দায় যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ
১০০ বছর পর খুলল মসজিদ, ঈদের নামাজ পড়লেন মুসলিমরা
মক্কা-মদিনায় ঈদের নামাজ পড়াবেন যারা
ঢাকার ১৮৪ ঈদগাহ ও ১৪৮৮ মসজিদে নিরাপত্তা দেবে ডিএমপি
X
Fresh