রাবির ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে ধর্মীয় 'উসকানি', শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ণ প্রশ্ন রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
ভর্তিচ্ছুরা জানান, বুধবার বিকেল আড়াইটা থেকে চারটা পর্যন্ত চারুকলা অনুষদের অধীনে ‘আই’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রশ্নপত্রে ৮০টি প্রশ্ন ছিল। এর মধ্যে দুটি প্রশ্নকে 'আপত্তিকর' বলে দাবি করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এর মধ্যে একটি প্রশ্নে বলা হয়েছে, 'পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মগ্রন্থের নাম কী?' উত্তরের অপশনে ছিল, পবিত্র কোরআন শরীফ, পবিত্র বাইবেল, পবিত্র ইঞ্জিল ও গীতা।
আপত্তিকর অন্য প্রশ্নটিতে বলা হয়, 'মুসলমান রোহিঙ্গাদের ওপর মায়ানমারের সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধধর্মালম্বীরা সশস্ত্র হামলা চালায় কত তারিখে?' উত্তরের অপশনে ছিল, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ এবং ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রশ্ন নি:সন্দেহে সাম্প্রদায়িক উস্কানি। সবাই নিজ নিজ ধর্মকে ভালবাসে। অন্যের ধর্মকে সম্মান করাও সবার কর্তব্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের মত একটি জায়গায় এ ধরনের প্রশ্ন রাখা কতটা যৌক্তিক, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমার ধর্মীয় গ্রন্থকে আমিই সর্বশেষ্ঠ বলবো। এক্ষেত্রে ভিন্ন ধর্মালম্বীরাও তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় গ্রন্থকে সর্বশেষ্ঠ বলে দাবি করেন। এমন প্রশ্ন কোনোভাবেই সার্বজনীন কোনো কাঠামোতে করা যেতে পারেনা বলেও দাবি করেন তিনি।
এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা মেহেদী হাসান রাসেল। তিনি বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক মানসিকতার প্রতিফলন ঘটেছে। এসব প্রশ্ন সুস্পষ্টভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রসূত এবং চারুকলা বিষয়ের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নয়।’
রাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি এ এম শাকিল হোসেন জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসকে ছোট করতে পারে না। ভর্তি পরীক্ষার মত জায়গায় এমন বিদ্বেষমূলক সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসকে কুলুষিত করা হয়েছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দোষিদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি করেন তিনি।
তবে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। সেজন্য আমরা দু:খ প্রকাশ করছি। বিতর্ক তৈরি হওয়া দু'টি প্রশ্নে সব শিক্ষার্থীই নম্বর পাবেন।
এসজে
মন্তব্য করুন