অরবিন্দ চক্রবর্তীর কবিতা
কুস্তিজীবন
কুস্তিখেলার পাশে দাঁড়ানো উত্তেজনা থেকে লেখা হয় একজন মাসল ম্যানের জীবন
এত জল এত রক্ত কোনটাকে একাকার ঘাম বলা হবে বুঝে ওঠার আগে ঝরে যায় উল্লাস।
সহায় দস্তানা লুটিয়ে করে ফোঁসফাস। চোখ ছিটকে পড়ে পিংপং বলের ছুটন্তি নিয়ে।
তখন পৃথিবীর মানুষ হয়ে বোঝা যায়, তুমি কোনো এক হত্যা-জগতের রাহুত আধখাওয়া ফলের আবেদন দেখেছ অথচ বুঝতে চাইছ না ফুলের মতো সম্ভাবনাগুলোও ফোটাতে পারে তারাকথা।
নামের মাংস
উট দৌড়ের আয়োজন নিয়ে সেজেগুজে বসে আছেন
কয়েকজন ঠা্ণ্ডা মাথার বুলডোজার।
সকালফোটা বন্দরের পাশে নাকউঁচু দুর্গ করে
আলগোছে আয়ু খুঁটছে জিপসি ক্লাউন,
পরিখায় ঝরে পড়ছে ইতিহাসবাহিত সেই নামের পালক।
ধূলিসংরক্ষণ বিভাগ একযোগে দাবি তুলছে,
ডানার আয়তন গুঁড়িয়ে দেয়া হোক
মুদ্রার মাংস পচে গলে ধসে যাক।
মেহরোগী শুধু হেরেমশালা খুলে
নিয়তিবাচক ফুর্তি করুক মধুমদ বিষয়ক ধারণাধামে।
ব্যবহারিক
চোখ দেখেছিল, আমার সিঁড়ি কার বন্দীশ করতে করতে উপরে উঠে যায়
এদিকে আমি আলোর শরীর নিয়ে নদীর ভরসায় মোম গেড়ে বসে থাকি।
উঁচুত্যকা আশকারা দেয়, কানকথায় মুকুট ছুঁয়ে আসতে বলে।
রাবণ সম্প্রদায় জানে না, আমি সমতলকে কথা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঘাটোয়াল
কথার সঙ্গে কথা বলি। হৃদয় ভাণ্ডকে বোঝাই এ আমার আনন্দলোক,
নাচুকের ঘুঙুর থেকে একটি পালক ছিটকে গেলে সে দায় তোমার করতালির।
মাপক
যতদূর চলে এসেছি, এত উঁচুতে না ওঠাই ভালো।
এখানেও যদি ভয় সাপের, তবে সরে যাক সিঁড়ি
এরচে ভালো হবে তোদের কলোনির সঙ্গে হাসাহাসি করা, টাকা উড়িয়ে,
মাস্তি করে জীবন তামা করে দেওয়া।
এতে কত যে আনন্দ বন্ধু!
ফুল আর ফুল থাকে না, ধুলো আর ধুলো থাকে না
হয়ে ওঠে স্বর্ণরেণু, মানুষের স্পর্শ-পাখোয়াজে।
চোখ
ফুল দেখা চোখও লাশ দেখে, নিজের।
এরপর মুর্দা পালক আয়না পাশে রেখে স্মৃতির রং মোছে।
বন্ধুকে বহন করতে গেলে শব পিছলে যায়, এগিয়ে আসে হাটবাজারের পা।
প্রসঙ্গত শিমুল পরিবারের কাছে প্রশ্ন থাকে সবার
লালের নামে যে রং আগুন ধারণ করে
তা কি মৃত্যুঘটিত কোনো সংবাদমাধ্যম থেকে আপন করে আনা সুবর্ণরেখা?
পরিচিতি
অরবিন্দ চক্রবর্তী
জন্মদিন : ১১ আগস্ট ১৯৮৬
জন্মস্থান : রায়পাড়া সদরদী, ভাঙ্গা, ফরিদপুর, বাংলাদেশ
কবিতার বই : ছায়া কর্মশালা (২০১৩), সারামুখে ব্যান্ডেজ (২০১৬)
সম্পাদনা : দ্বিতীয় দশকের কবিতা (২০১৬)
অখণ্ড বাংলার দ্বিতীয় দশকের কবিতা ডিসেম্বর (২০১৬)
মন্তব্য করুন