• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বাড়ছে বইয়ের চাপ, নেই শেখার আনন্দ

মুক্তা মাহমুদ

  ২২ জানুয়ারি ২০১৭, ২১:৫৮

বারবার সিলেবাস ও পরীক্ষা পদ্ধতি বদলের সঙ্গে বাড়তি বইয়ের চাপ, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শেখার আনন্দ ও সৃজনশীলতার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে। এতে পড়াশোনার প্রতি শিক্ষার্থীদের যেমন ভয় বাড়ছে, তেমনি অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন সমস্যাকে আরো জটিল করছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতো করতে-ই, এমন ঘনঘন পরিবর্তন।

জানা গেছে, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু হবে, এসএসসি পরীক্ষা। এজন্য অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হয় টেস্ট পরীক্ষা। অথচ টেস্টের ঠিক ১ মাস আগে পরিবর্তন করা হয় এসএসসি পরীক্ষার পদ্ধতি। যেখানে ৩০ নম্বর রাখা আছে এমসিকিউ ও ৭০ নম্বর সৃজনশীল রচনামূলকের জন্য। পাবলিক পরীক্ষার ৪ মাসে আগে হুট করে এমন সিদ্ধান্তের কারণে বিপাকে পড়েন পরীক্ষার্থীরা।

কেবল এসএসসি নয়, গেলো কয়েক বছর ধরে প্রায় সব পাবলিক পরীক্ষা নিয়ে চলছে গবেষণা। সঙ্গে যোগ হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত বইয়ের বোঝা, সিলেবাসের চাপ। যা সামলাতে শৈশব-কৈশর বিসর্জন দিয়ে, সকাল-বিকেল উর্ধ্বশ্বাসে ছুটতে হচ্ছে কোচিং বা প্রাইভেট টিউটরের কাছে।

অভিভাবেকরা বলছেন, শিক্ষকদের অনেকেই সৃজনশীল প্রশ্ন বোঝেন না। কেউ কেউ সৃজনশীল গাইড বই দেখা পড়ান। এমন অবস্থায় হঠাৎ করেই সৃজনশীল প্রশ্ন বাড়ানোই এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের ওপর পড়ছে। পরোক্ষভাবে চাপ পড়ছে অভিভাবকদের ওপরেও।

শিক্ষা জীবনের শুরুতেই কেন এমন চাপ? কার সিদ্ধান্তেই বা পরীক্ষা পদ্ধতিতে ঘনঘন পরিবর্তন? এমন সব প্রশ্নে কিছুটা বিব্রত-ই হলেন অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদ ও আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম। তার মতে, 'এটি একটি বড় সমস্যা। একটা স্কুলে সব শিক্ষার্থীর উপস্থিত বুদ্ধি সমান না। সবাই একই বিষয়ে ভাল করবে, এমনতো না।' বইয়ের মধ্যে অসামঞ্জস্য আছে স্বীকার করে তিনি বলেন, 'যে ছেলে ব্যাংকে চাকুরি করবে। তার কমার্স পড়া উচিত। চারুকলা, শরীরচর্চা শিক্ষা সম্পর্কে ধারণা থাকলেই চলে। এগুলো যদি বিজ্ঞান বা সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের সঙ্গে অধ্যায় হিসেবে সংক্ষিপ্ত আকারে যুক্ত করে নেয়া যেত, তাতেই যথেষ্ট ছিল। এতে বইয়ের চাপ অনেকটাই কমে আসত।'

আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামে চৌধুরীর মতে শিক্ষাব্যবস্থা যেভাবে চলছে, তা কেবল শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট বা জিপিএ গ্রেডই বাড়াচ্ছে। সঙ্গে অন্ধকার হচ্ছে, ভবিষ্যত।

তিনি বলছেন, আইন করে কোচিংকে বৈধতা দেয়া হলো। অথচ এতোকাল বলা হচ্ছিল, এটা খুবই ক্ষতিকর। এটার নতুন নাম দেয়া হয়েছে, ছায়া শিক্ষা। আমাদের আশঙ্কা এই ছায়াটা কায়াতে পরিণত হবে।'

তবে এমন পরিবর্তনকে ইতিবাচক মনে করছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলছেন, 'উদ্বীগ্ন হবার কোন কারণ নাই। শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল শিখলে ঠিকই উত্তর দিতে পারবে। এর মধ্য দিয়ে একটা ব্যপার হবে, সৃজনশীলে শিক্ষার্থী নিজের ভাষায় উত্তর লিখতে পারবে। এক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে, অভিভাবক ও শিক্ষকরা যাতে অতিরিক্ত চাপ না দেন।

তিনি আরো বলছেন, আমরা এখন দেশের শিক্ষাক্রমকে যুগোপযোগী করার চেষ্টা করছি। স্থায়ী একটা অবস্থায় নিয়ে আসতে চাইছি।

এসজে/জেএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh