• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ধর্ষণ চেষ্টাকারীকে তরুণীর আবেগঘন চিঠি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ২০ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৮:৪৯

মেয়েটির নাম সারা রিওবাক। যুক্তরাজ্য থেকে ফ্রান্সে এসেছিলেন একটি ইন্টার্নশিপের করতে। আড্ডা দিতে গিয়েছিলেন এক নাইটক্লাবে। সেখানেই বদ্ধ কামরায় এক ব্যক্তি তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ওই ঘটনার প্রায় এক বছর পর ধর্ষণের চেষ্টাকারীকেই আবেগঘন চিঠি লিখেছেন সারা।

নিজের সেই খোলা চিঠি সম্পর্কে সারা রিওবাক বলেন, নিজেকে ধর্ষণের বিষাক্ত ও সহিংস বাস্তবতা থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসেবেই তিনি এ চিঠিটি লিখেছেন। কীভাবে আদালত কক্ষে নিজের হামলাকারীর মুখোমুখি হয়েছিলেন সে সম্পর্কেও তিনি বর্ণনা দিয়েছে। ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে কীভাবে নারীদের প্রতিরোধ গড়তে হবে, তাও তিনি বলেছেন। তার চিঠিটি পড়লে শিউরে ওঠবেন যে কোনো পাঠকের মন। সারার চিঠিটি হুবহু বাংলায় তুলে ধরা হলো-

সুপ্রিয়,
আমি আপনাকে ডিসেম্বরের ঠান্ডা বিকেলে লিখছি, আমাকে ধর্ষণচেষ্টার প্রায় এক বছর পর। কারণ এতোদিনে প্রথমবার কাগজ-কলম নিয়ে বসার মতো যথেষ্ট শক্তি অর্জন করেছি। আমি আপনাকে লিখছি কারণ, আজ বিকেলে আমাদের আবার দেখা হলো। তবে আশপাশের পরিবেশ আগের মতো ছিল না। আপনার হাত পিছমোড়া করে বাঁধা ছিল, যেগুলো আমার শরীরকে আঁকড়ে ধরার মতো অবস্থায় ছিল না।

আপনি বলেছেন যে, আপনি যা করেছেন তা খুব অল্প সময়ের জন্য ছিল। আপনি আমাকে ২০ মিনিটের জন্য একটি ঘরে বন্দী করেননি, আমার পোশাক খুলে ফেলার চেষ্টা করেননি। আপনি আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেননি। আপনি বলেছেন, মেঝেতে আমার শরীরের ওপর আপনার শরীর ছিল কারণ অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্য পা হড়কে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলাম আমি। আপনি আমাকে জোর করে মাটিতে ফেলে আমার ওপর চেপে বসেছিলেন। এরপর আমি আপনাকে আমার দু’পায়ের মাঝখান থেকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ফেলতে পেরেছিলাম। কারণ আপনি সিদ্ধান্ত নেননি যে, আপনি থেমে যাবেন।

আমি আপনাকে থামতে বাধ্য করেছিলাম। আপনার চোখগুলো ছিল কালো এবং আপনি সরাসরি আমার আত্মার ভেতর তাকিয়ে ছিলেন। এ সময় আপনি বললেন, আপনি আমাকে ছাড়তে চান না। আমি না বলেছিলাম, জানিয়েছিলাম যে, আমি ট্যাম্পুন পরে আছি। এরপর আমি আপনাকে লাথি মারলাম, ভয়ে চিৎকার করলাম এবং কাঁদতে শুরু করলাম। আপনি আমাকে ধরে শরীরজুড়ে ব্যথা দিতে লাগলেন। অথচ আপনাকে আমি আমাকে ছোঁয়ার অধিকার দেইনি।

আমার মতো যে নারী আপনার মতো পুরুষদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন, আদালতে আমি তাদের পক্ষে কথা বলবো। প্রতিটি ধর্ষিত, নির্যাতিত, আক্রান্ত, ইচ্ছের বিরুদ্ধে স্পর্শ হওয়া নারীর পক্ষে কথা বলবো।

আমি বুঝতে পারছিলাম না যে, আমার সঙ্গে কী হচ্ছে। ঠিক সেই সময়ে আদালত থেকে আমার কাছে চিঠি আসে। এরপরই আমি বুঝতে পারি, যে বিষয়টি সারা বছর এড়ানোর চেষ্টা করেছি তার মুখোমুখি হতে হবে। যাতে আমার অবস্থান অন্যকেও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে উৎসাহিত করে।

আমি চাই এটা পুরুষরাও পড়ুক। যাতে একজন আক্রান্ত নারীর মতো তারাও অনুভূতিটা বুঝতে পারে। আমি চাই এসবের পরিবর্তন হোক।

ইতি
সারা রিওবাক

এসজে/ এস

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh