সহপাঠীর আত্মহত্যায় ইবি শিক্ষার্থীর আমরণ অনশন
‘বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবন দিতে আসিনি, জীবনকে নতুনভাবে গড়তে এসেছি। বন্ধুর লাশের ভার আর সইতে পারছি না। উঁচু ভবন নয়, উঁচু উঁচু মানের সেবা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে।’ লেখাটি ছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’র দেয়ালে। একজন শিক্ষার্থী বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাতের লেখা ‘দর্শনের দারিদ্র্য’ বইটি হাতে নিয়ে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’র পাদদেশে আমরণ অনশনরত।
সোমবার বেলা ১২টায় হেমন্তের অগ্নিঝড়া রোদে তাকে দেখা গেল এ আমরণ অনশনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে একজন করে মনোবিদ নিয়োগের দাবিতে তার এ অনশন। আমরণ অনশনকারী ছাত্রের নাম তানভীর হাসান লিংকন। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
গেল বৃহস্পতিবার আইন বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান অসুস্থতা ও হতাশার কারণে আত্মহত্যা করেছিল। আত্মহননের পর আজ ক্যাম্পাস চালুর পরেই লিংকন এই আমরণ অনশন শুরু করেন। এর আগেও গত এক বছরে প্রেমজনিত ও অসুস্থতার কারণে চার শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও সচেতনতামূলক সভা-সেমিনার, বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে কোনও মনোবিদ নিয়োগ না দেয়ায় শিক্ষার্থীরা বেছে নিচ্ছে আত্মহত্যার মতো ভয়ানক পথ। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে একজন করে মনোবিধ নিয়োগের দাবিতে লিংকন আমরণ অনশন শুরু করে। এসময় লিংকন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার এ দাবি না মানা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব।’
পোস্টারে আরও লেখা ছিল ‘শিক্ষাঙ্গনে আত্মহত্যার মিছিল আর যেন দীর্ঘ না হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলের ডাক্তাররা আরও মানবিক ও আন্তরিক হবে কবে?’
অনশন চলাকালে তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন সর্বশেষ আত্মহননকারী আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসানের সহপাঠীরা। তারা জানান, গেল বৃহস্পতিবার মেধাবী ছাত্র নাজমুল শারীরিক ও মানসিক নানা অসুস্থতার কারণে চরম হতাশায় আত্মহননের পথ বেছে নেয়। আজ এই আমরণ অনশনে আমাদের সর্বাত্মক সমর্থন রয়েছে।
পরে দুপুর দেড়টার দিকে প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমান অনশনে উপস্থিত হয়ে লিংকনের দাবিগুলো মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে অনশন স্থগিত করেন তিনি।
আরও পড়ুন :
- গ্রামীণফোনের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন বাণিজ্যমন্ত্রী
- যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের প্রথম ও সবচেয়ে বড় দেয়ালচিত্র উদ্বোধন
জেবি/পি
মন্তব্য করুন