• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

জিলহজ মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত

হাফেজ মাওলানা মো. নাসির উদ্দিন

  ০৬ আগস্ট ২০১৮, ১৭:২৭

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস বারটি আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তার মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এতে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার কর না।(সুরা তাওবা,আয়াত:৩৬)

উল্লিখিত আয়াতে সম্মানিত চারটি মাস কী কী তা নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিস শরিফে বলে দিয়েছেন। সেগুলোর তিনটি হচ্ছে ধারাবাহিক আর একটি হচ্ছে বছরের মাঝে। ধারাবাহিক তিনটি হচ্ছে জিলকদ, জিলহজ ও মহররম এবং বছরের মাঝেরটি হচ্ছে রজব।(বুখারী শরীফ ২/৬৭২;তাফসীরে ইবনে কাসীর ২/৩৮৯) ইসলামপূর্ব আরবরাও এ মাসগুলোকে সম্মানিত মনে করত এবং এগুলোতে যুদ্ধ-বিগ্রহ থেকে বিরত থাকত। মুফাসসিরে কুরআন তাফসিরের আলোকে বোঝা যায় জিলহজ মাসের পবিত্রতাই মূলত এখানে মূখ্য। এ মাসটি হজের মাস। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ এ মাসের সাথে জড়িত। এ মাসে যেন সকল মানুষ নির্ভিঘ্নে হজ আদায় করতে পারে, সে জন্য এর আগের মাস জিলকদকে আরবের মুশরিকরাও গুরুত্বপূর্ণ মনে করত। এ মাসে সবধরণের হানাহানি, কাটাকাটি নিষিদ্ধ মনে করত। আবার যেন মানুষ হজ আদায় করে আপন জায়গায় নির্ভিঘ্নে ফিরে যেতে পারে সে জন্য এর পরের মাস মহররমকেও তারা সম্মানিত মনে করত এবং তারা এ মাসে যুদ্ধ-বিগ্রহ লিপ্ত হওয়াকে অপরাধ মনে করত।

এই মাসের আমলসমূহ

১. আল্লাহ তাআলা যাদেরকে হজ পালন করার মত সামর্থ্য দিয়েছেন তাদের উচিত তা আদায় করা, কোনো ধরনের অহেতুক ওজর-আপত্তি দেখিয়ে অবহেলা না করা, দুনিয়ার অন্যান্য প্রয়োজন পেছনে রেখে হজ আদায়কে অধিক গুরুত্ব দেওয়া। আমাদের কেউ যদি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ না করে থাকে তাহলে তাকে আল্লাহ তাআলার দরবারে অনুতপ্ত হওয়া উচিত এবং এখনই দৃঢ়-প্রতিজ্ঞা করা দরকার যে, পরবর্তী মৌসুমে যেন কোনভাবেই আমার হজ অনাদায় থেকে না যায়।

২. কুরবানি দেওয়ার মত আর্থিক স্বচ্ছলতা যাদের রয়েছে তাদের কুরবানি দেওয়া উচিত। ৩. জিলহজ মাসের প্রথম দশক অর্থাৎ ঈদের দিন ব্যতীত বাকি নয় দিন রোজা রাখার বিশেষ ফজিলতও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার রোজা, জিলহজের প্রথম দশকের রোজা এবং প্রত্যেক মাসের তিনটি রোজা কখনো ছাড়তেন না।(মুসনাদে আহমদ,হাদিস:২৫৯২০)

৩. জিলহজ মাসের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হল, ‘আইয়ামে তাশরীকে’ অর্থাৎ নয় তারিখের ফজর নামাজ থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্যন্ত। তাকবীর বলা, তাকরির হল‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা-ইলাহা ইল্লালাহু ওয়া আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ্ ।’ নামাজ জামাতের সাথে হোক বা একাকি, পুরুষ মহিলা সবার জন্য প্রতি ফরজ নামাজের পর এ তাকবিরটি একবার বলা ওয়াজিব। পুরুষরা উচ্চস্বরে বলবে আর মহিলারা অনুচ্চস্বরে। নামাজ কাজা হয়ে গেলে কাজা নামাজ আদায় করার পরও তাকবির বলবে। এ মাসে বর্জণীয় বিষয়সমূহ: জিলহজ মাস যেহেতু একটি পবিত্র মাস, সম্মানিত মাস, তাই এর পবিত্রতাও সেভাবেই রক্ষা করতে হবে। এ মাসের পবিত্র দিনগুলোতে নেক কাজের যেমন বিশাল সওয়াব রয়েছে, তেমনি এদিনগুলোতে গুনাহেরও ভয়াবহ শাস্তি রয়েছে। তাই এ দিনগুলোকে অপবিত্র করার মত কোন আচরণ যেন আমাদের থেকে প্রকাশ না পায়।

আরও পড়ুন :

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh