• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

তাবলিগ চলবে আলেমদের নেতৃত্বে: আল্লামা শফী

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ২৮ জুলাই ২০১৮, ২১:৪৫

তাবলিগের মধ্যে নতুন কোনও ধারা চলবে না। যে আলেম নয়, তার কথা সেখানে চলবে না। তাবলিগ চলবে আলেমদের নেতৃত্বে। বললেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

শনিবার ঢাকার মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত তাবলিগের ওয়াজাহাতি জোড়ে এসব কথা বলেন তিনি।

আল্লামা শফী বলেন, আমরা নবীজির লাঠির রেখার ওপর প্রতিষ্ঠিত দারুল উলুম দেওবন্দ। দেওবন্দের ফতোয়াকে ভিত্তি করেই আলেমরা কথা বলেছেন। যিনি আলেম নন, তার কোনও কথা শুনবেন না। আলেমরা বাংলার সিংহ, তাদের কথা শুনবেন। অন্য কিছু আমরা মানব না, আমলও করব না।

তিনি বলেন, তাবলিগের তিন মুরুব্বি যে উসুলে কাজ করেছেন, কেয়ামত পর্যন্ত তাই চলবে। এই কাজের মুরুব্বি হবেন উলামায়ে কেরাম। মুফতিয়ানে কেরাম আমাদের মারলেও সহ্য করব। কিন্তু মূর্খদের মার খাব কেন? তাবলিগ তো আদব শেখার জন্য। যাদের আদব নেই, তাদের তাবলিগ কিসের?

সারাদেশ থেকে আসা লক্ষাধিক আলেম-উলামার উদ্দেশে হেফাজতে ইসলামের আমির বলেন, সবাই গ্রামে গ্রামে জামাত নিয়ে বের হন। যাতে অন্য কোনও নতুন তাবলিগ শুরু হতে না পারে। মাদরাসা বন্ধ করে হলেও তাবলিগে বের হতে হবে। নতুন নতুন যারা বিভিন্ন কথা বলছে তাদের কথা মানা যাবে না।

তাবলিগের এই জোড়ে নেয়া ছয়টি সিদ্ধান্ত হলো-

১. জমহুর উলামায়ে কেরাম একমত হয়েছেন, তিনটি মৌলিক কারণে- (ক) কোরআন ও হাদিসের মনগড়া ব্যাখ্যা, (খ) তাবলিগের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে তাবলিগ ব্যতীত দ্বীনের অন্যান্য মেহনতকে যথা দ্বীনি শিক্ষা ও তাসাউফ ইত্যাদিকে হেয়-প্রতিপন্ন করা এবং (গ) পূর্ববর্তী হজরত মাওলানা ইলিয়াস (রহ.), হজরত মাওলানা ইউসুফ (রহ.) ও হজরত মাওলানা এনামুল হাসান (রহ.) এর উসুল ও কর্মপন্থা থেকে সরে যাওয়ার কারণে বর্তমানে মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেবকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণভাবে বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ।

২. মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেব হজরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ. এর রেখে যাওয়া শুরায়ি নেজামকে উপেক্ষা করে নিজেই নিজেকে আমির দাবি করেছেন; যা শরিয়ত বিরোধী। তাই তার কোনও সিদ্ধান্ত বা ফায়সালা বা নির্দেশ কাকরাইল তথা বাংলাদেশে বাস্তবায়িত করা যাবে না।

৩. দারুল উলুম দেওবন্দ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেব আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের মতাদর্শ থেকে সরে গিয়ে নতুন কোনও ফেরকা গঠনের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের কোনও জামাত বা ব্যক্তিকে নেযামুদ্দিনে পাঠানো বা যাওয়া মুনাসিব হবে না। একইভাবে নেজামুদ্দিন থেকে আসা কোনও জামাতকে বাংলাদেশের কোনও জেলায়, থানায় ও ইউনিয়নে কাজ করার সুযোগ দেয়া যাবে না।

৪. হজরত মাওলানা ইলিয়াস রহ., হজরত মাওলানা ইউসুফ রহ. ও হজরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ এর বাতানো পদ্ধতিতে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ সারাবিশ্বে সমাদৃত ও গৃহীত হয়েছে। তাই বাংলাদেশের তাবলিগের কাজ পূর্ববর্তী এই তিন হজরতের পদ্ধতিতে এবং উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। নতুন কোনও পদ্ধতি চালু করা যাবে না। কাকরাইল, টঙ্গী ময়দান এবং জেলা মারকাযসহ সকল মারকায এই নীতিতেই পরিচালিত হবে।

৫. কাকরাইল মসজিদের যেসব শুরা সদস্য আমরণ মাওলানা মুহাম্মদ সাদ সাহেবের ভ্রান্ত আকিদা অনুসরণের হলফনামা করেছেন যা শরিয়ত পরিপন্থি, তারা শুরার সদস্য থাকার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন। অতএব, তাদেরকে তাবলিগের কাজে শুরা ও ফায়সাল না রাখার আহ্বান জানানো যাচ্ছে।

৬. এই বছর টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত ইজতেমায় সরকারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে আগামী ২০১৯ সালের ইজতেমার জন্য নির্ধারিত তারিখ- প্রথম পর্ব ১৮, ১৯, ২০ জানুয়ারি ও দ্বিতীয় পর্ব ২৫, ২৬, ২৭ জানুয়ারি এর সঙ্গে আজকের মজমা ঐকমত্য পোষণ করছে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আল্লামা আশরাফ আলী, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, মুফতি আবদুল মালেক, আল্লামা আজহার আলী আনোয়ার শাহ, মুফতি রুহুল আমিন, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মুফতি এনামুল হক, মুফতি ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা কেফায়াতুল্লাহ আযহারী।

কে/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ধর্ষণ মামলায় জামিন পেলেন হেফাজত নেতা মামুনুল হক
ঈদের আগে মামুনুল হককে মুক্তি না দিলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি
প্রধানমন্ত্রী চান বিভেদ ভুলে তাবলিগের দু’পক্ষ এক হয়ে যাক : ধর্মমন্ত্রী
হাঙ্গামাকারীরা তাবলিগ জামাতের অনুসারী হতে পারে না : ধর্মমন্ত্রী
X
Fresh