• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বানাবে সাড়ে ৩ লাখ বাংলাদেশি!

হোসাইন তারেক

  ০৭ নভেম্বর ২০১৬, ১৯:৪৫

আর মাত্র একদিন পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮তম নির্বাচনে কে যাচ্ছেন হোয়াইট হাউজে, তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ৯ নভেম্বর রাত পর্যন্ত। আর এতে ভূমিকা থাকবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ভোটারদেরও। কারণ ৩৩ লাখ অভিবাসী ভোটারের প্রায় ১০ ভাগই বাংলাদেশের বাঙালি।

আমেরিকায় প্রায় ১০ লাখের বেশি বাংলাদেশির বাস। এর মধ্যে ভোটার সাড়ে ৩ লাখ। শুধু নেতা নির্বাচন নয়, দেশটির সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানেই শক্ত অবস্থান রয়েছে তাদের। মার্কিন স্বশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তাও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। তিনি কবির আহমেদ।

দেশটির নির্বাচন নিয়ে এ কর্মকর্তা কথা বলেছেন আরটিভি অনলাইনের সঙ্গে। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাঙালি ভোটারদের অংশ গ্রহণের বিষয়ে কবির আহমেদ বললেন, ‘আমেরিকার নেতা নির্বাচনে বাঙালি ভোটাররা বিশেষ ভূমিকা রাখে। সাড়ে ৩ লাখ বাংলাদেশি ভোটার যে কোনো প্রার্থীর কাছেই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তবে এদের অধিকাংশই ডেমোক্র্যাট সমর্থক। নির্বাচন প্রচারণার শুরুতেই হিলারির পক্ষে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ কমিউনিটি।’

বিশ্বের অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া ভিন্ন। সাধারণ ভোটাররা তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করলেও নেতা নির্বাচন হয় ইলেক্টরাল ভোটে। কবির আহমেদ বলেন, ‘ভোটের পরিসংখ্যানে আমেরিকার নেতা নির্বাচন হয় না। ৫০টি অঙ্গরাজ্যের ৫৩৮ জন ইলেক্টরের সমন্বয়ে ইলেক্টরাল কলেজ গঠিত। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে প্রার্থীকে এর মধ্যে অন্তত ২৭০টি ইলেক্টরাল ভোট পেতে হয়। সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশিদের ভোট দেশটির নেতা নির্বাচনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। যদি কোনো প্রার্থী অঙ্গরাজ্যে ১ ভোট বেশি পেয়েও নির্বাচিত হন, তিনি পাবেন সে রাজ্যের সবকটি ইলেক্টরাল ভোট।’

সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি ভোটারের অবস্থান নিউইয়র্ক ও জ্যাকসন হাইটসে। এখানকার প্রায় ৮০ হাজার বাঙালি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এছাড়া ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রায় ৪২ হাজার, ফ্লোরিডায় ৩০ হাজার ও টেক্সাসাসে রয়েছেন ৩৮ হাজারের মতো বাঙালি ভোটার। ওয়াশিংটন, মেরিল্যান্ড, পেনসিলভ্যানিয়াতেও রয়েছেন বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি ভোটার। তাই অঙ্গরাজ্যগুলোর সবকটি ইলেক্টরাল ভোট পেতে বাঙালিদের গুরুত্ব দিচ্ছেন হিলারি-ট্রাম্প।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন এ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ১৩টি অঙ্গরাজ্যকে ব্যাটেলগ্রাউন্ড হিসেবে ধরা হয়। সেগুলো হলো- অ্যারিজোনা, কলোরাডো, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, আইওয়া, মিশিগান, নেভাদা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহাইও, পেনসিলভ্যানিয়া, ভার্জিনিয়া এবং উইসকনসিন। আমেরিকার ৫০ অঙ্গরাজ্যের এ ১৩ রাজ্যের ভোটারদের সমর্থন যেকোনো সময় পরিবর্তন হয়। বাকি রাজ্যগুলে রিপাবলিকান বা ডেমোক্রেটিকদের দুর্গ হিসেবে পরিচিত।

তিনি বলেন, অভিবাসী কমিউনিটির স্বার্থেই হিলারির বিজয় নিশ্চিত করতে চায় বাঙালিরা। এজন্য পুরো যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশি-আমেরিকানরা। আর তাই নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, পেনসিলভ্যানিয়া, ভার্জিনিয়া, মেরিল্যান্ড, জর্জিয়া, ফ্লোরিডা, ম্যাসাচুসেটস, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, মিশিগান ও ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে হিলারির পক্ষে সমাবেশ করেন তারা।

২শ ৪০ বছর আগে ১৭৭৬ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে ১শ ৪৪ বছর দেশটির সাধারণ নির্বাচনে কোনো নারী ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর নারীরা ভোটাধিকার পান ১৯২০ সালে। তবে ৯৬ বছর আগে ভোটাধিকার পেলেও কোনো নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এই প্রথম। এর আগে কোনো রাজনৈতিক দলই নারীদের নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়নি।

এইচটি/ এস

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh