• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

অসহায় এক প্রবাসীর গল্প

মোস্তফা ইমরান রাজু, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি

  ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৫:৩৮

কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের ভেতর এক কোনে হুইল চেয়ারে বসে শুধু চোখের পানি ফেলছেন মাইনুল ইসলাম (৪০) নামে এক বাংলাদেশি। তার বোবা কান্না যেনো দেখার কেউ নেই!

দূর থেকে অসহায় এ মানুষকে দেখে এগিয়ে আসেন সেই সময় সরকারি কাজে বিমানবন্দরে থাকা মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কল্যাণ সহকারী মোকসেদ আলি ও মিরান লস্কর নামে এক প্রবাসী। জানতে পারেন ট্রাভেল পাস দিয়ে দেশে পাঠানোর নাম করে অন্য এক বাংলাদেশি দেড় লক্ষ টাকার বিনিময়ে তাকে এখানে রেখে চলে গেছেন। সেই বাংলাদেশি সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে পারেননি অসুস্থ মাইনুল। এসময় কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছিল তার।

সংক্ষিপ্ত কথার ফাঁকে মাইনুল জানান, দালালের মাধ্যমে সাগর পথে তিনি মালয়েশিয়ায় এসেছিলেন। কাজ করতেন জহুর বারু। অসুস্থ হয়ে এক পাশে প্যারালাইজড হয়ে যাওয়ার পর দেশে যাওয়ার জন্য আবারও দালালের শরণাপন্ন হন। তাকে দেশে পাঠানোর নামে দেড় লক্ষ টাকা দালাল হাতিয়ে নিয়েছে বলেও জানান তিনি।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার রায় ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় ৫ মামলা
--------------------------------------------------------

মাইনুল বলেন অনেক কষ্টে বাড়ি থেকে এই টাকা পাঠিয়েছে পরিবারের সদস্যরা। সেই দালালই প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে এখানে ফেলে রেখে গেছেন। নাটোরের বাগাতিপাড়ার সেরাজুল ইসলামের ছেলে মাইনুলকে সেই রাতে মালয়েশিয়ার সেরডাং হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

হাইকমিশনের কল্যাণ সহকারী মোকসেদ আলি জানান, অসুস্থ প্রবাসীদের দেশে পাঠাতে যেখানে মাত্র চারশ রিঙ্গিত (আট হাজার টাকা) খরচ হয় সেখানে মাইনুলের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে সাড়ে সাত হাজার রিঙ্গিত (দেড় লক্ষ টাকা)। হুইল চেয়ারসহ অসুস্থ রোগীকে বিমানে ফ্লাই করাতে হলে অবশ্যই ডাক্তারের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয় সেটিও দেয়া হয়নি। যার ফলে টিকিট থাকলেও তাকে বিমানে উঠতে দেয়নি রিজেন্ট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ।

এখন মাইনুলকে দেশে পাঠাতে সবধরনের সহযোগীতা দেয়া হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের এ কল্যাণ সহকারী।

এদিকে সেরডাং হাসপাতালে মাইনুলকে দেখতে যান মালয়েশিয়া শ্রমিকলীগের নেতা নাজমুল ইসলাম বাবুল ও শাহ আলম হাওলাদারসহ নেতৃবৃন্দ। যারা বিমানবন্দর থেকেই সহযোগীতা করে আসছেন।

তারা জানান, রোগীর অবস্থা সঙ্কটাপূর্ণ। ডাক্তার জানিয়েছেন যে, তার ব্রেনে রক্তক্ষরণ হচ্ছে এখনই অপারেশনের প্রয়োজন। আর সেজন্য প্রায় বিশ হাজার রিঙ্গিতের প্রয়োজন। অসহায় মাইনুলের পাশে দাঁড়াতে বিত্তবানদের সহযোগীতা চেয়েছেন এ শ্রমিক নেতারা।

সেরাডাং হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে মাইনুল আর তার দেশে ফেরার প্রতীক্ষায় ক্ষণ গুনছে স্বজনেরা। ডাক্তার জানিয়েছে অর্থ সংগ্রহ না হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে দেশে পাঠানোর চেষ্টা করা হবে।

মাইনুল জীবন যুদ্ধে নেমেছে পরিবারের স্বচ্ছলতা এনে দিতে অথচ নিয়তির নির্মম পরিহাস, নিজেই এখন পরিবারের বোঝা। মাইনুলকে সুস্থ করে দেশে পাঠাতে সবার সহযোগীতা দরকার। মাইনুলকে সহযোগীতা করতে যোগাযোগ করতে পারেন দুতাবাস কর্মাকর্তা- মোকসেদ আলি (+60123656540) ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম বাবুলের সঙ্গে। (+60123100472) ।

আরও পড়ুন:

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh