• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বিদায় হজে আল্লাহর নবী ১০০টি উট কোরবানি করেন

মাওলানা নাসির উদ্দিন

  ২৯ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৫৭

ঈদুল আজহায় কোরবানির সঙ্গে জড়িত হজরত ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র হজরত ইসমাইলের (আ.) স্মৃতি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এ ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, সে (ইসমাইল) যখন পিতার সঙ্গে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হলো, তখন ইবরাহিম তাকে বললো হে পুত্র, আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে জবেহ করছি, এখন তোমার অভিমত কি? ইসলাইল (আ.) বললেন : হে পিতা, আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ হুকুমে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন।

যখন পিতা-পুত্র উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করলেন এবং ইবরাহিম (আ.) তাকে জবেহ করার জন্য শায়িত করলেন, তখন আমি তাকে ডেকে বললাম: হে ইবরাহিম, তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে। আমি এভাবেই সৎকর্মীদের প্রতিদান দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই এটা এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তার পরিবর্তে দিলাম জবেহ করার জন্য এক জন্তু।’(সুরা সাফফাত, আয়াত: ১০২-১০৭)

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোনো সময় কোরবানি বাদ দেননি। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনা শরিফে দশ বছর অবস্থান করেছেন। আর প্রতি বছরই কোরবানি করেছেন। বিদায় হজে একশ’ উট কোরবানি দিয়েছেন। তার মধ্যে স্বহস্তে ৬৩টি উট কোরবানি করেন। বাকিগুলো হজরত আলি (রা.) এর কাছে সোপর্দ করেছেন। একসঙ্গে এত উট কোরবানি করা, কোরবানি ফজিলত ও গুরুত্ব বহন করে।

কোরবানি ইবাদত হিসেবে হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু হয়; কিন্তু ঈদুল আজহার দিনে কোরবানি ওয়াজিব করা হয় হজরত ইবরাহিম (আ.) যখন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নিজ পুত্রকে কোরবানির জন্য প্রস্তুত হন সেই ঘটনার স্মরণে। এরপর থেকে ঈদুল আজহায় কোরবানিকে ওয়াজিব করে দেয়া হয়েছে। তারই ফলস্বরূপ আমরা কোরবানি হজরত ইবরাহিম (আ) এর পবিত্র স্মৃতি হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছি।

মুসলিম উম্মাহর নিকট হজরত ইবরাহিম (আ.) এর ঘটনা এমন একটি স্মারক যা প্রতি মুহূর্তে মুসলমানের হৃদয়ের মাঝে বিরাজ করে। আর এর আবেগ অন্তরের অন্তঃস্থলকেও করে তোলে আলোড়িত। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, হে মানব জাতি! প্রত্যেক পরিবারের পক্ষে প্রতি বছর কোরবানি করা আবশ্যক।(মেশকাত শরিফ)

তিনি আরো বলেন, কোরবানির দিন কোরবানি করার চেয়ে প্রিয় ইবাদত আল্লাহর নিকট আর নেই। (মেশকাত শরিফ)

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোরবানির রক্ত মটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে কবুল করে নেয়া হয়।(মেশকাত শরিফ)

কোরবানির দিনের বিষয়ে নবীজী (স.) বলেছেন, আজ আমাদের প্রথম কাজ হলো নামাজ পড়া। তার পরের কাজ হলো কোরবানি করা। যে ব্যক্তি এমন আমল করলো, সে আমার তরিকার ওপরই থাকবে। আর যে ব্যক্তি নামাজের আগে কোরবানি করলো, তার কোরবানি গ্রহণযোগ্য হয়নি; বরং তার কোরবানি শুধু গোশত খাওয়ার জন্য হলো। সওয়াবের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক থাকলো না।(মেশকাত শরিফ)

আল্লাহ আমাদেরকে সঠিকভাবে আমল করার তৌফিক দান করুক।(আমিন)

কে/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh