• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সিঁড়িতেও চলবে হুইলচেয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ০৫ জুন ২০১৭, ১৩:০২

হুইলচেয়ার ব্যবহারকারীদের জন্য দারুণ খবর। এমন এক ধরনের চেয়ার আবিষ্কার হয়েছে যা শুধু সহজে মাটিতেই চলবে না, সিঁড়ি বেয়েও উঠতে পারবে! এমননি প্রযুক্তির হুইলচেয়ার আবিষ্কার করেছেন লিলুয়ার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তিন শিক্ষার্থীরা।

সিনেমার প্রতিবন্ধী চরিত্র হুইলচেয়ার নিয়ে এগোতে গিয়ে আটকে গিয়েছিলেন সিঁড়ির সামনে। পরের সংলাপ ছিল, 'ওহ! নট স্টেয়ার্স এগেন'! হলিউডের 'দ্য প্লেয়ার্স' সিনেমার এ সংলাপই কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থী শ্রমণা চক্রবর্তীর মাথায় উস্কে দিয়েছিল নতুন ধরনের হুইলচেয়ার আবিষ্কারের ভাবনা। সেজন্য তিন সহপাঠীকে নিয়ে নতুন ধরনের ব্যাটারিচালিত হুইলচেয়ার তৈরি করেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা।

লিলুয়ার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের অনেকেই তাদের পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে ফি প্রতি বছর নানা প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেন। এসব প্রযুক্তি নিয়ে প্রদর্শনীও হয়ে থাকে। আর সেই প্রদর্শনীতেই নতুন ধরনের হুইলচেয়ার প্রযুক্তি তৈরি করে দেখিয়েছেন শ্রমণা এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চূড়ান্ত বর্ষের পড়ুয়া সুমন্ত লাহা, দেবদীপ চট্টোপাধ্যায় ও প্রীতম দাস। তাদের তৈরি নতুন হুইলচেয়ার নিয়ে বিদেশেও প্রদর্শনী এবং সম্মেলনে গিয়েছেন ওই শিক্ষার্থীরা।

কোন প্রযুক্তিতে চলবে এ নতুন হুইলচেয়ার? এ ব্যাপারে শ্রমণা বলছিলেন, কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এ হুইলচেয়ার তৈরি করা হয়েছে। সিঁড়ির সামনে গেলে চেয়ারে বসেই সেই সিঁড়ি টপকাতে পারবেন প্রতিবন্ধী মানুষেরা। সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় তার উচ্চতা, ঢাল চেয়ারে বসে নিজে থেকেই সামলে নিতে পারবেন। সাধারণত দেখা যায় প্রতিবন্ধী মানুষেরা ২-৩টি সিঁড়ি পেরোতে গিয়েও অসহায় বোধ করেন। অনেক সময় অন্যের সাহায্য নিয়ে সিঁড়ি পেরোতে হয়। এ চেয়ার তা থেকে মুক্তি দেবে।

তাদের মতে, বাজারচলতি হুইলচেয়ার হাত দিয়ে ঠেলতে হয়। ব্যাটারিচালিত চেয়ারগুলির ক্ষেত্রে 'জয়স্টিক' দিয়ে চালাতে হয়। কিন্তু হাত-পা অসাড় হয়ে গেলে তা চালানো সম্ভব হয় না। পিছন থেকে কাউকে ঠেলে নিয়ে যেতে হয়। সেই অসুবিধার কথা মাথায় রেখে এ হুইলচেয়ার চালানোর ক্ষেত্রেও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। চেয়ারে বসে থাকা মানুষটির মাথার সঙ্গে একটি সেন্সর জুড়ে দেওয়া হবে। মাথার নড়াচড়ার মাধ্যমে চেয়ারের গতি ও দিক নির্ণয় করা যাবে!

শিক্ষার্থী বলেন, বিদেশি সংস্থার তৈরি ব্যাটারিচালিত হুইলচেয়ারের দাম অনেক বেশি। কিন্তু এই নতুন প্রযুক্তির হুইলচেয়ার অনেক কম দামে মিলতে পারে। নতুন এই প্রযুক্তি নিয়ে এরই মধ্যে আগ্রহী হয়েছে কয়েকটি বাণিজ্যিক সংস্থা। প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং'র অধ্যাপক সাধন ঘোষ বলেন, হুইলচেয়ারের ভাবনাটা দারুণ। বাণিজ্যিক ভাবে কতটা সফল হচ্ছে তা না ভেবে আপাতত ওদের উদ্ভাবনী শক্তিটাকে উৎসাহ দেয়া উচিত। হয়তো দেখা যাবে এ সব ভাবনাকে পুঁজি করেই ভবিষ্যতে অনেক কিছু বাজারে আসবে।

এইচএম

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh