• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গণপরিবহনে ওঠা-নামা

রুবিনা ইয়াসমিন

  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১২:৪৮

রাজধানীর গণপরিবহন:

রাজধানীতে সাধারণ আর মধ্যবিত্তের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম হলো গণপরিবহন। জীবনে বেঁচে থাকার তাগিদে ঘুম থেকে উঠেই কর্মস্থলে যাবার জন্য ব্যস্ত থাকে সবাই। আর কর্মস্থলে যাবার একমাত্র উপায়ই হলো গণপরিবহন।দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় সাধারণ মানুষদের। কিছুটা বলা যায় লটারি ভাগ্যের মতো। ভাগ্য ভালো হলে উঠতে পারলেন আর যদি খারাপ হয় তাহলে তো একমাত্র উপায় হলো অপেক্ষা করা। তাই এ যুদ্ধটা নিত্যদিনের সঙ্গী হিসেবে আছে সাধারণ মানুষদের। তাই ভোগান্তিটা শুধু সাধারণ মানুষেরই।

গণপরিবহনে যাত্রীভোগান্তি:

ত্রুটিপূর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান হলে যানবাহন সংকটে ভোগান্তি ওঠে চরমে। গাড়ির জন্য দীর্ঘ অপেক্ষায় থেকে বাদুড়ঝোলা হয়ে উঠতে হয় যানবাহনে। অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ে বহুগুণ, বাড়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। এ যেনো শাঁখের করাত। কোথায় যাবে যাত্রীরা? ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও দেখা পাওয়া যায় না গাড়ির।

গণপরিবহন কর্মীদের আচরণ:

গণপরিবহনে বাসে উঠা নীলা নামের যাত্রী আরটিভি অনলাইনকে জানান, বাসে উঠা নিয়ে যেমন সমস্যা ঠিক তেমনি চালক আর হেলপারদের ব্যবহারগত রয়েছে অনেক ত্রুটি। এর বেশিরভাগ ভুক্তভোগিরাই হচ্ছেন যাত্রী। বিশেষ করে মেয়েদের বেশি সমস্যায় পড়তে হয় এসব গণপরিবহনে।

নীলা আরো বলেন, গাড়ির ফিটনেস ঠিক নেই। কোনো ক্ষেত্রে নেই চলাচলের অনুমোদন। চালকের লাইসেন্স? সেটাও ভুয়া। দক্ষতার প্রশ্ন তো আছেই। চার চাকা ঠিক তো ইঞ্জিনে ত্রুটি। এ অবস্থা নিয়ে পুরো ঢাকা চষে বেড়ালেও ফিরে তাকাবার কেউ নেই। প্রায় সারা বছর ঢাকার রাস্তায় চলাচলকারী গণপরিবহনগুলোর দশা এ রকম। কারো কোনো সমস্যা নেই। সবই চলে ঠিকঠাক।

নীলা প্রশ্ন উঠায়, কেউ কি নেই এসব দেখার? গণপরিবহনের এ নৈরাজ্য কি কারো চোখেই পড়ে না? চোখে পড়ে, তবে মাঝেমধ্যে। তখনই শুরু হয় সাঁড়াশি অভিযান। মোড়ে মোড়ে পুলিশ আর রেকার। পাশেই প্লাস্টিকের চেয়ার-টেবিল পেতে বসে যান ভ্রাম্যমাণ আদালতও। ফিটনেসে একটু হেরফের হলেই আর ছাড় নেই। হয় মামলা আর না হয় সোজা ডাম্পিং। তবে সবশেষে রেজাল্ট হয় শূন্য।

বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মশিউর রহমান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, যাত্রীরা যে অভিযোগ করেছেন তা কিছুটা ঠিক। তবে আমাদের সাধ্যমতোই চেষ্টা করছি এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে। নিয়ম অনুযায়ী, আমরা প্রতিদিন মোবাইল কোর্ট বসিয়ে কাজ করছি। আর ত্রুটিপূর্ণ যানবাহনগুলোকে আমারা আইনের আওতায় আনছি। আর আমাদের পাশাপাশি এ রাস্তায় গণপরিবহনের অনেকটা দায়িত্ব পড়ে যায় ট্রাফিকের। তারা যদি ঠিকভাবে মনিটরিং করে তাহলে সমাধান সম্ভব।

ট্রাফিকের সহকারি পুলিশ কমিশনার আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, রাস্তায় গাড়ি নামলে এর কাজ যে শুধু ট্রাফিকের এটা ঠিক না। বিআরটিএ থেকে যদি লাইসেন্স, ফিটনেস দেখে অনুমোদন দেয়া হয় তাহলে এর সমাধান সম্ভব। একা শুধু ট্রাফিকের পক্ষে সম্ভব না এর সমাধান করা। আমার আমাদের প্রতিদিনের যে দায়িত্ব তা পালন করছি।

ঘুষের রাজ্যে বিআরটিএ আর পুলিশ:

যাত্রী নীলা এ দুটো সরকারি সংস্থার উদ্দেশে বলেন, দেশে একটি প্রচলিত প্রবাদ আছে, মার কাছে মামার বাড়ির গল্প। ঠিক তেমনটি যেনো সরকারি এ দুটো সংস্থা। এ দুটো সংস্থা হলো ঘুষের রাজ্য। এদের কোনো কিছু বলে লাভ নেই। পরিশেষে ঘটনা যায়-ই হোক, সব দোষ আমাদের সাধারণ মানুষের। আমাদের এ কথা শোনার মতো কেউ নাই।

ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা:

বর্তমানে রাজধানীতে ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। এর মধ্যে দু’লাখই পুরোপুরি অচল। আর ফিটনেসহীন গাড়ী চলছে রাজধানীতে ছয় লাখ।

ডিএইচ

মন্তব্য করুন

daraz
  • অন্যান্য এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh