• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

পড়ার টেবিলটা হোক রোমাঞ্চকর

সোহেলী সায়মা সেঁজুতি

  ২৯ নভেম্বর ২০১৭, ১৬:৫৪

পড়াশোনা কথাটার সঙ্গে রিডিং টেবিল যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত। সেই চিরাচরিত কাঠের একটা টেবিল, কিছু ড্রয়ার কিংবা মাথার ওপর ভারী একটা ক্যাবিনেট মানেই পড়ার টেবিল। কিন্তু এই জায়গাটা যে আসলে কত বেশি ‘রোমাঞ্চকর’ হতে পারে তা কেবল রিডিং টেবিল ব্যবহারকারীরাই উপলব্ধি করতে পারবে।

একটু ভিন্ন আঙ্গিকে নিজের পছন্দ এবং সুবিধা অনুযায়ী তৈরি করে নিতে পারেন পড়ার টেবিল। খুব যে আহামরি খরচ বা ব্যয়বহুল হবে তৈরি করতে তা কিন্তু নয়। বরং নিজের জীবনের অত্যন্ত জরুরি একটা জায়গা মনের মতো থাকা এবং মনোনিবেশ করাটাই হলো জরুরি।

সাধারণত, কাঠবোর্ড বা অন্য কোনো উপকরণেও পারেন পড়ার টেবিল তৈরি করতে। তবে প্রচলিত বৃত্তের ধারা অনুযায়ী আমরা কাঠের বা প্রসেসড উডের বাইরে যেতে চাই না। আর ডিজাইনের ক্ষেত্রে আজকাল অনেক বেশি আধুনিক ভাবনা থাকায় খুব স্লিম কনটেম্পোরারি নকশাই আমাদের মন টানে। তাই দেখা যায় সনাতনী সেই দুপাশে ভারী ড্রয়ার আর মাথার ওপর বিশাল ক্যাবিনেট খুব একঘেয়ে লাগে।

খুব স্লিম একটা টপ, হালকা কিছু ড্রয়ার কিন্তু পর্যাপ্ত বই কিংবা প্রয়োজনীয় উপকরণ রাখার আধুনিক ডিজাইনের ক্যাবিনেট যদি সুসজ্জিতভাবে অ্যারেঞ্জমেন্ট করা হয় তবে পারিপার্শ্বিক অন্যান্য আসবাবের পাশাপাশি পড়ার টেবিলও হয়ে উঠবে আকর্ষণীয়। আর আজকাল বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ছোট ছোট ড্রয়ার বা ক্যাবিনেট ইউনিটগুলো যে যার মতো সুবিধা অনুযায়ী বানিয়ে নেন। এতে করে পছন্দ মতো ডিজাইন করা ইউনিটগুলো সুবিধা অনুযায়ী সাজিয়ে নেয়া যায়। যাকে আমরা অনেক সময় পোর্টেবল ফার্নিচার বলে থাকি।

তবে সত্যি কথা হলো পড়ার টেবিল আকর্ষণীয় দেখার চেয়ে মূল ব্যাপার হলো পড়ার ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করা এবং কাজে লাগানো। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে টেবিল তৈরির সময় প্রয়োজনীয় ক্যাবল (তার), লাইটের পয়েন্ট, উপযুক্ত ড্রয়ার ইউনিট করে নেয়া ভালো। এতে করে বাড়তি করে কোনো ঝামেলার উপদ্রব হবে না।

আর টেবিল যদি হয় ছোট্ট সোনামণির, তবে তার সুবিধা আর শারীরিক গঠনের মাপ অনুযায়ী তৈরি করতে হবে। আজকাল অনেক মা-বাবাই শিশুর পড়ার টেবিলের পাশের দেয়ালগুলোকে বইয়ের যেকোনো ছড়া বা গল্প অনুসারে রাঙিয়ে তোলেন। পড়ার বইয়ের বিষয়টি যখন দেয়ালে ফুটে উঠবে, তখন শিশু এমনিতেই মজা পাবে। এছাড়া টেবিলের পাশে ক্যাবিনেট করা সম্ভব হলে সেখানে বইগুলো সাজিয়ে রাখার পাশাপাশি শিশুর পছন্দসই খেলনাও রাখতে পারেন। এছাড়া পড়ার টেবিলেই বিভিন্ন বুদ্ধিদীপ্ত খেলার আয়োজন রাখতে পারেন।

আর সাধারণ মাপের পড়ার টেবিল তৈরিতে একান্তই নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী সঠিক মাপের ভিত্তিতেই বানাতে হবে। কারণ দীর্ঘসময় টেবিলে বসতে হয়। আর টেবিল যদি সঠিক মাপে তৈরি না হয় তবে নানান ধরনের শারীরিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আর গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, পড়ার টেবিল সুন্দর করে গুছিয়ে রাখা। সাধারণত দেখা যায় পড়া শেষ করেই আমরা বই-পত্র, খাতা-কলম ছড়িয়ে রাখি। যা একেবারেই বেমানান লাগে পড়ার টেবিলের জন্য। এতে করে অনেক সময় পড়ার টেবিলে বসার প্রতি আগ্রহ কমে যায়। পড়া শেষে জিনিসপত্র টেবিলের নির্দিষ্ট জায়গায় গুছিয়ে রাখাটা অতি প্রয়োজন। তাহলে অটুট থাকবে টেবিলের সৌন্দর্য এবং পড়ালেখা নির্ভর যেকোনো জিনিস খুঁজে পাওয়া সহজ হবে। এতে পড়াশোনার জায়গাটাও দেখতে দারুণ লাগবে।

যদি ইচ্ছে হয় বাড়তি নয়নাভিরাম এবং চোখের চাপ কমাতে কৃত্রিম আলো সংযোজন করতে পারেন পড়ার টেবিলের সাথেই। কম আলোতে কখনোই পড়াশোনা করা উচিত নয়। এতে চোখের ক্ষতি হতে পারে। তাই পড়ার টেবিলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ঘরের যেখানে আলোর উৎস, তার কাছাকাছি টেবিলটা রাখলে বেশি কাজে দেবে। এছাড়াও টেবিল ল্যাম্প লাইটের ব্যবস্থা রাখতে পারেন। এছাড়া বানানো পড়ার টেবিল যেন খুব ভালো ফিনিশিং হয় তা ভালোভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।

জীবনের প্রায় দীর্ঘ একটা সময় কেটে যায় এই পড়ার টেবিলে। পরীক্ষার চাপ আর ভালো ফলাফলের পাশাপাশি আদর্শ এবং নীতিগত শিক্ষা এই পড়ার টেবিলেই বিকশিত হয় সুশিক্ষার মাধ্যমে। সুস্থ শিক্ষা আর স্বাস্থ্যকর পারিবারিক পরিবেশ পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জন্যই কাম্য।

আরকে/জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • লাইফস্টাইল এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh