অফিস থেকে ছুটি নেবেন কিভাবে
বর্তমানে আমরা অনেকেই অফিসের প্রাপ্য ছুটিগুলো পাই না। তার একটা বড় কারণ হলো চাকরির বাজারে অনিশ্চয়তা। আবার অনেকেই মনে করেন অফিসে ছুটি বেশি কাটালে বস মনে করবেন আপনি দায়িত্ব এড়িয়ে চলছেন অথবা আপনি চাকরি করার যোগ্য না।
কিন্তু জীবনের একঘেয়েমি কাটানোর জন্য আমাদের সবারই ছুটির অনেক প্রয়োজন। আবার অনেক সময় শারীরিক বা পারিবারিক কারণেও ছুটি কাটানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে। অনেকেই অফিসে বসের কাছ থেকে ছুটি কিভাবে নেবেন তা বুঝে উঠতে পারেন না। তবে অফিস থেকে ছুটি নেয়ারও কিছু সঠিক উপায় রয়েছে। এই সঠিক উপায়টা না জেনে অনেকে বসদের কাছে নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট করে ফেলেন।
তাহলে জেনে নিন অফিস থেকে ছুটি নেয়ার সঠিক উপায়গুলো সম্পর্কে।
সঠিক উপায়ে ছুটির আবেদন করা : অফিস থেকে ছুটি নেয়ার আগে প্রথমে অফিসের ছুটি সংক্রান্ত নীতিমালা ভাল করে জেনে নিতে হবে। এবার কোম্পানির নীতি নির্দেশিকা অনুসারে নিজের ছুটির আবেদন করতে পারেন। শুধু সারা বছর কতগুলো ছুটি পাবেন সেটা হিসেব করলেই চলবে না, ছুটিগুলো কবে এবং কি কারণে তাও বুঝে নিতে হবে। অনেক কোম্পানির কর্মীরা ছুটি না কাটালে তার বিনিময়ে টাকা প্রদান করে। অনেক কোম্পানি ছুটি না কাটালে সেই ছুটি পরবর্তী বছরের ছুটির সাথে যোগ করে দেয়। আবার অনেকে বছর শেষে অবশিষ্ট সকল ছুটি কাটাতে বাধ্য করে। আবার অনেক কোম্পানি আপনি যদি ছুটি না কাটান তার বিনিময়ে কোন প্রকার সুবিধা প্রদান করে না। আপনার কোম্পানি কোন নিয়মটি অনুসরণ করে সেটা জানা খুব জরুরি।
ছুটি কিভাবে বণ্টন করা হয় : আপনার ডিপার্টমেন্টে ছুটি ঠিক কিভাবে বণ্টন হয় সেটাও বোঝার চেষ্টা করুন। অনেক অফিসে কর্মীদেরকে সারা বছর ধরে ছুটি ভেঙ্গে ভেঙ্গে দেয়। আবার অনেক অফিস বছরের কোন এক সময় টানা ৩ সপ্তাহের ছুটি এক সাথে কাটানোর সুযোগ দেয়। কোম্পানিতে লিখিত অলিখিত অনেক ধরণের নিয়ম রয়েছে। আপনার আবেদন মঞ্জুর হবে কি হবে না তা এসব নিয়মের উপর নির্ভর করে।
আগে থেকেই জানিয়ে রাখুন : আপনি যখন ছুটি নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবেন তার ঠিক এক সপ্তাহ আগে বসকে ছুটি সম্পর্কে জানিয়ে রাখুন। আপনি আগে থেকেই জানিয়ে রাখলে আপনার অনুপস্থিতিতে অফিসের কাজ কিভাবে ম্যানেজ করা হবে সেটার প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হবে। অফিস থেকে ছুটির অনুমতি পাবার আগে কখনই বাসের টিকেট বা হোটেলে বুকিং দিবেন না। কোন কারণে দিয়ে থাকলেও সেটাকে বসের সামনে অজুহাত হিসেবে উপস্থাপন করবেন না।
বসের মেজাজ বুঝে ছুটির আবেদন করুন : অফিসে ছুটির আবেদন করার আগে বসের মেজাজ বুঝে নেয়া অত্যান্ত জরুরি। আপনার ছুটির আবেদন মঞ্জুর হবে কি না সেটা অনেকাংশেই নির্ভর করে বসের মানসিক অবস্থা ও অফিসের আবহাওয়ার উপর। তাই আপনি আপনার আবদার কবে এবং কখন বসের সামনে উপস্থাপন করছেন সেটিও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
সহকর্মীদের কথাও ভাবতে হবে : ছুটি নেয়ার আগে সহকর্মীদের কথাও ভাবতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই একজন কর্মী অনুপস্থিত থাকলে দলের অন্যান্য কর্মীদের উপর কাজের চাপ বেড়ে যায়। যদি আপনার দলকে মাসের নির্দিষ্ট কোন সময় কাজের হিসাব বুঝিয়ে দিতে হয় তবে মাসের ওই সময়টায় ছুটি নেয়া থেকে বিরত থাকা ভাল। এসময় ছুটি নিলে আপনার কাজটা অন্য কাউকে করতে হবে এবং সে এই বাড়তি কাজের জন্য প্রস্তুত না থাকতে পারে। তাই অফিস থেকে ছুটি নেয়ার আগে সহকর্মীদের কথা অবশ্যই চিন্তা করতে হবে।
যে কোন পরিস্থিতি মেনে নেয়ার মানসিকতা রাখুন : অফিসের যে কোনো সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার মানসিকতা রাখুন। অনেক সময় আপনার সকল কৌশল ঠিক থাকার পরেও ছুটি হয়তো মঞ্জুর না হতে পারে। হতে পারে আপনি ছুটির আবেদন করার আগেই আরো ২-৩ জন ছুটি মঞ্জুর করে নিয়ে গেছে। তাই যে কোন সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ছুটি না পেয়ে অতিরিক্ত উচ্চবাচ্য করলে সেটা ভবিষ্যতে আপনার জন্য ভাল কিছু বয়ে আনবে না।
আরকে/এমকে
মন্তব্য করুন