ঘুরে আসুন মন মাতানো সব জায়গা
ঈদ মানেই লম্বা ছুটি, প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ। ভ্রমণপিপাসু ব্যক্তিরা তাই ঈদ এলেই খুশিতে নেচে ওঠেন। ভাবছেন এবার ঈদের ছুটিতে সপরিবারে কোথায় বেড়ানো যায়? এই দমবন্ধ যানজটে পরিপূর্ণ যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তির জন্য এই বেড়ানোটুকুই আমাদের সম্বল। তাহলে জেনে নিন এবার ঈদে যেসব মনোমুগ্ধকর জায়গা থেকে ঘুরে আসতে পারেন।
পানামনগর
৪০০ বছর আগের সেই জৌলুশ না থাকলেও সেই সোনালি দিনের ঐতিহ্য বুকে ধারণ করে আজও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে সোনারগাঁওয়ের পানামনগর।
সেখানে মোগল রাজা ঈশা খাঁর আমলে নির্মিত কিছু প্রাসাদ আর পুরাকীর্তি এখনো আপনাকে মনে করিয়ে দেবে কত শত বছর আগেও কত সমৃদ্ধ ছিল আমাদের এই দেশ।
সোনারগাঁ জাদুঘর ও সংলগ্ন পার্ক
পানামনগরের পাশেই গড়ে উঠেছে সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর।
পুরনো দিনের গ্রামীণ ঐতিহ্য থেকে শুরু করে আগেকার আমলের রাজাদের ব্যবহৃত সব আসবাবপত্র ও যুদ্ধাস্ত্র দেখতে পারবেন সেখানে।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক
গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের রাথুরা মৌজায় এই সাফারি পার্ক। প্রায় চার হাজার একর জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে এটি। ছায়া সুনিবিড় প্রাকৃতিক শোভায় ভরা এ পার্কে রয়েছে ভাওয়ালগড়ের ঐতিহ্যবাহী গজারি গাছ, শালবন, আকাশ মণি, কাশবন, ছন। এখানে আরও রয়েছে আটটি বাঘ, চারটি সিংহ, চারটি ভাল্লুক, চারটি জিরাফ, তিনটি জেব্রা ও দশটি বন্য গরু। এছাড়াও কুমির, সাপ, উটপাখিও আছে।
সুন্দরবন
পৃথিবী বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল এই সুন্দরবন। এখানে রয়েছে নানা প্রজাতির হরিণের অবাধ বিচরণ। এছাড়াও দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে করমজল ফরেস্ট স্টেশন, কটকা, হিরণ পয়েন্ট, কচিখালী, মান্দারবাড়ীয়া, দুবলার চর, তিনকোনা দ্বীপ, মংলা বন্দর ইত্যাদি। ঈদের ছুটিতে সুন্দরবনের কিছু স্থান ঘুরে আসতে পারেন।
জাফলং
জাফলংয়ের দর্শনীয় দিক হচ্ছে চা বাগান ও পাহাড় থেকে পাথর আহরণ। মারি নদী ও খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশে জাফলং অবস্থিত। মারি নদীতে ভ্রমণের মাধ্যমে পাথর সংগ্রহের দৃশ্য আপনাকে সত্যিই আনন্দ দেবে। এখানে প্রচুর বনজ প্রাণীর বসবাস। এখানে গেলে খাসিয়া উপজাতিদের জীবন ও জীবিকা চোখে পড়বে। এছাড়াও দেখতে পারবেন জৈন্তাপুর রাজবাড়ি, শ্রীপুর এবং তামাবিল স্থলবন্দর। মাগুরছড়াও পথেই পড়বে।
রাতারগুল
সিলেটের রাতারগুলে রয়েছে নানান প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী। সিলেট-গোয়াইনঘাটের সড়কের হরিপুরে বন বিভাগের অধীনে বিশাল রাতারগুলে রয়েছে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য নৌকায় ঘুরে বন দেখার সুবর্ণ সুযোগ। লোভাছড়া গোয়াইনঘাটের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কোলঘেঁষে গড়ে ওঠা লোভাছড়া রয়েছে চা বাগান আর লেকবেষ্টিত নানান সৌন্দর্যপূর্ণ স্থাপনা।
শ্রীমঙ্গল
সিলেটের শ্রীমঙ্গল যাওয়ার আগে রয়েছে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া ইকো পার্ক। বিশাল এ বনে রয়েছে নানান প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও বিলুপ্ত অনেক বন্যপ্রাণী। এছাড়া আপনি ঘুরে আসতে পারেন কুলাউড়ার ভাটেরায় প্রস্তাবিত পর্যটন স্পট ‘অভয় আশ্রমে’। যেখান থেকে উপভোগ করা যাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাকালুকির হাওর। দেখে আসতে পারেন সুনামগঞ্জের শনির হাওর, টাঙ্গুয়ার হাওর, দেখার হাওর, ছাতকের লাফার্জ সুরমা ও বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরিসহ অনেক অঞ্চল।
মাধবকুণ্ড
মাধবকুণ্ড দেশের বৃহত্তম একমাত্র প্রাকৃতিক জলপ্রপাত। মাধবকুন্ড ইকোপার্ক, নয়নাভিরাম দৃশ্য ও নান্দনিক পিকনিক স্পট হিসেবে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে সুপরিচিত। সুবিশাল পর্বত গিরি, শ্যামল সবুজ বনরাজিবেষ্টিত ইকোপার্কে প্রবীণ, নবীন, নারী-পুরুষদের উচ্ছ্বাস অট্টহাসি আর পাহাড়ি ঝরনার প্রবাহিত জলরাশির কল কল শব্দ স্বর্গীয় ইমেজের সৃষ্টি করে।
প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন
আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারকেল বৃক্ষের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে মৃদু হাওয়ার কোমল স্পর্শ এটি বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য বর্ণনার ক্ষুদ্র প্রয়াস। বালি, পাথর, প্রবাল কিংবা জীববৈচিত্র্যের সমন্বয়ে জ্ঞান আর ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য অনুপম অবকাশকেন্দ্র সেন্টমার্টিন। কক্সবাজার জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে সাগরবক্ষের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিন।
হিমছড়ি
এখানকার সৈকতের চেয়েও আকর্ষণীয় হলো এর ভ্রমণ পথ। সৈকত লাগোয়া আকাশছোঁয়া পাহাড় এখানের অন্যতম আকর্ষণ। হিমছড়ির পাহাড়ের হিম শীতল ঝরনাও বেশ আকর্ষণীয়। কক্সবাজার সৈকত থেকে খোলা জিপ ছাড়ে হিমছড়ির উদ্দেশে।
নিঝুম দ্বীপ
নিঝুম দ্বীপের মূল আকর্ষণ হরিণ দর্শন। এখানে একটি ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট রয়েছে। বন বিভাগ সেটিকে হরিণের অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করছে।
আরকে
মন্তব্য করুন