‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ ট্রাম্প
টাইম ম্যাগাজিনের ‘পারসন অব দ্যা ইয়ার-২০১৬’ হয়েছেন নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিষয়ে ট্রাম্প বললেন ‘ এটা আমার জন্য বিরাট সম্মান।’
টাইমসের পারসন অব দ্য ইয়ারের শর্টলিস্টে ছিলেন ট্রাম্পের কাছে পরাজিত ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এছাড়া যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিট আন্দোলনের প্রচারণা চালানো ইনডিপেনডেন্ট পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজও ছিলেন সংক্ষিপ্ত তালিকায়।
টাইমসের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ন্যান্সি গিবস জানান, হিলারি পারসন অব দ্য ইয়ার তালিকায় ২য় হয়েছেন।
এপি / জেএইচ
মন্তব্য করুন
কার্বন নিঃসরণ কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন লক্ষ্যমাত্রা
কার্বন নিঃসরণ কমানোর নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে জো বাইডেন প্রশাসন৷ বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, সংশোধিত এই নীতিমালা যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি শিল্পকে ইলেকট্রিক গাড়ি শিল্পে রূপান্তরের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে৷
নতুন নীতিমালায় গাড়ি এবং ট্রাকের জন্য নির্ধারিত দূষণ-মান অবশ্য হোয়াইট হাউসের সাম্প্রতিক প্রস্তাবের মতো হয়নি৷ হোয়াইট হাউস ২০৩২ সালের মধ্যে নিঃসরণ কমাতে আরো কঠিন কর্মপরিকল্পনার প্রস্তাব দিয়েছিল৷ যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি রাজ্য, বিশেষ করে মিশিগান রাজ্যের গাড়ি শিল্প কারখানা এবং কারখানার কর্মীরা ইলেকট্রিক গাড়ি প্রস্তুতের হার বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করার দাবি জানিয়ে আসছিল৷ তাদের দাবির মুখে পরে ২০৩২ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি শিল্পকে অন্তত ৩৫ শতাংশ ইলেকট্রিক গাড়ি প্রস্তুতের সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেয় পরিবেশ রক্ষা সংস্থা-ইপিএ৷
আগের প্রস্তাবে ২০৩২ সালের মধ্যে মোট গাড়ির অন্তত ৬৭ শতাংশ বৈদ্যুতিক করার কথা বলেছিল তারা৷ দাবির মুখে শিথিল করা প্রস্তাবে ইপিএ আরো বলেছে, কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ কমানোর জন্য হাইব্রিড, অর্থাৎ তেল এবং বিদ্যুতে চলে এমন গাড়িও বাড়ানো যেতে পারে৷ ইপিএ-র প্রধান মাইকেল রিগান মনে করেন, এমন প্রযুক্তি-নিরপেক্ষ পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে পরিবেশ দূষণ হ্রাস যদি সম্ভব না-ও হয়, দূষণের বর্তমান মাত্রা অন্তত ধরে রাখা যাবে৷
তিন বছর আগে জো বাইডেন ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ৫০ ভাগ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিলেন৷ আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হলে সেই লক্ষ্যমাত্রার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে৷
বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব
আগামী ৮ এপ্রিল বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখতে যাচ্ছে বিশ্ব। তবে, পৃথিবীর সব অঞ্চল থেকে পূর্ণগ্রাস এই সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে না বলে জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
বিরল এ সূর্যগ্রহণের ফলে ওইদিন মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলবে চাঁদ। ফলে দিন হবে রাতের মতো অন্ধকারাচ্ছন্ন। তাই ৮ এপ্রিল শত শত স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে।
মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নাসা বলছে, আগামী ৮ এপ্রিল স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৭ মিনিটে মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে প্রথম সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে।
৫৪ বছর পর এমন সূর্যগ্রহণ হওয়ায় নাসার বিজ্ঞানীরা এটিকে ‘বিশেষ’ বলে বর্ণনা করেছেন। এর আগে ১৯৭০ সালে এমন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল, আবার হতে পারে ২০৭৮ সালে।
তবে বিরল এই সূর্যগ্রহণ নিয়ে কিছু উদ্বেগও রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে, সূর্যগ্রহণের সময় সরাসরি সূর্যের দিকে তাকানোর ফলে চোখের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, ওকলাহোমা, আরকানসাস, মিসৌরি, ইলিনয়, কেনটাকি, ইন্ডিয়ানা, ওহাইও, পেনসিলভানিয়া, নিউইয়র্ক, ভার্মন্ট, নিউ হ্যাম্পশায়ার এবং মেইন অঙ্গরাজ্য থেকে পূর্ণগ্রাস এই সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে।
এদিকে সূর্যগ্রহণ ঘিরে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ‘দুর্যোগ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় পণ্য মজুত রাখারও পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এদিন চলাচলের সময় ব্যবহারের জন্য শিক্ষার্থীদের বিশেষ চশমাও দেওয়া হবে।
গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে জাতিসংঘে হাজির এবার যুক্তরাষ্ট্র
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা, অভিযান ও হত্যা বন্ধে যতবারই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উঠেছে জাতিসংঘে, ঠিক ততবারই হয় ভেটো দিয়েছে, নয় ভোট পরিহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু অবরুদ্ধ এ উপত্যকায় এবার তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া প্রস্তাব নিয়ে নিজেরাই এগিয়ে এসেছে ইসরায়েলের চরম মিত্র। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে প্রস্তাবটি জমা দিয়েছে ওয়াশিংটন।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ব্লিঙ্কেন বলেছেন, আমরা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এমন একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছি যাতে জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিতের জন্য গাজায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা আশা করি অন্যান্য দেশ এতে সমর্থন দেবে।
বুধবার সৌদি আরবে স্থানীয় গণমাধ্যম আল হাদাথকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, নিরাপত্তা পরিষদে আমাদের এ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব একটি কঠোর বার্তা। গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থানের একটি বলিষ্ঠ ইঙ্গিত।
তবে, ইসরায়েলের হাত ছেড়ে দিচ্ছেন না জানিয়ে ব্লিঙ্কেন বলেন, আমরা অবশ্যই ইসরাইলের পাশে আছি এবং তাদের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতিও আমরা সম্মান জানাই। কিন্তু একইসঙ্গে, যেসব বেসামরিক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, যারা চরম দুর্দশায় আছেন—তাদের ওপরও আমাদের নজর দিতে হবে। এটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাদেরকে প্রাধান্য দিতে হবে। বেসামরিক মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে হবে এবং তাদের জন্য মানবিক সহায়তা জোগাড় করতে হবে।
ওইদিন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান ও দেশটির নেতা মোহাম্মাদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্লিঙ্কেন। এরপর মিশর ও ইসরাইলেও সফর করবেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের এক হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় আগ্রাসন শুরু করে দখলদার রাষ্ট্রটির সেনারা। এরপর থেকে হামাস উৎখাতের নামে ইসরায়েলি সেনারা সাড়ে ৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে হামলা ও অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে। ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ৩২ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। সঙ্গে আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭০ হাজার।
প্রসঙ্গত, গাজায় চলমান এই গণহত্যায় ইসরায়েলকে সরাসরি অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানির মতো পশ্চিমা দেশগুলো। এমনকি জাতিসংঘে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো।
ইমরানকে হটাতে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন ডোনাল্ড লু
প্রথমবারের মতো ২০২২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের হাউস ফরেন রিলেশনস কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন শীর্ষ এ মার্কিন কর্মকর্তা।
কমিটির চেয়ারম্যান প্রতিনিধি জো উইলসনের প্রশ্নের জবাবে ডোনাল্ড লু বলেছেন, এই অভিযোগ, এই ষড়যন্ত্র তত্ত্ব মিথ্যা। এটি একটি ডাহা মিথ্যা অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের এপ্রিলে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এরপর থেকেই ইমরান তার এই পরিণতির জন্য বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা বলছিলেন। যেখানে একটা সময় ডোনাল্ড লুর নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন তিনি।
গণমাধ্যমে ইমরান দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক ডোনাল্ড লু-ই সেই ব্যক্তি, যিনি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিল। এরপর নিজ দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকেও একই অভিযোগ তোলেন ইমরান খান।
ইমরানের দাবি করেছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতকালে তার রাশিয়া সফর করার কারণে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে ইসলামাবাদকে হুমকির বার্তা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
ইমরানের ভাষ্য, ২০২২ সালের ৭ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে নিযুক্ত পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ডোনাল্ড লু। সেখানে তিনি আসাদ মজিদকে সতর্ক করে বলেছিলেন, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাবে ইমরান টিকে গেলে তার প্রভাব দেখা যেতে পারে।
এ সংক্রান্ত একটি তারবার্তা আসাদ মজিদ পাঠিয়েছিলেন ইমরান খানকে। গত আগস্টে ওই সাইফারের কথিত বয়ান প্রকাশ করেছিল আমেরিকার এক সংবাদ সংস্থা ‘দ্য ইন্টারসেপ্ট’।
এদিকে বুধবারের শুনানিতে লু বলছিলেন, আমরা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একমাত্র পাকিস্তানি জনগণই তাদের নিজস্ব নেতা নির্বাচন করবে।
এ সময় উপস্থিত কেউ কেউ তাকে মিথ্যাবাদী বলে উঠে দাঁড়ান। এতে শুনানি কার্যক্রম বেশ কয়েকবার থেমে যায়। পরে সেখান থেকে উত্তেজিত কয়েকজনকে সরিয়ে নেয় ক্যাপিটাল পুলিশ।
কমিটির সামনে এদিন ডোনাল্ড লু এমনও দাবি করেন যে, খানকে অপসারণের পর থেকে তিনি বেশ কয়েকটি হত্যার হুমকি পেয়েছেন। এমনকি তার পরিবারকেও ভিত্তিহীন এ অভিযোগে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যতই ষড়যন্ত্রের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করুক, বিভাগের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার গত বছর স্বীকার করেছিলেন যে, ইমরান খানের রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ায় অসন্তুষ্ট ছিল বাইডেন প্রশাসন।
ম্যাথিউ মিলার তখন বলেছিলেন, আমরা পাকিস্তান সরকারের কাছে ব্যক্তিগতভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলাম। কারণ, আমরা ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের দিনেই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মস্কো সফর নিয়ে প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলাম। আমরা সেই উদ্বেগটি বেশ পরিষ্কার করে দিয়েছিলাম।
অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলা করল যুক্তরাষ্ট্র
প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোকে দমিয়ে রেখে স্মার্টফোনের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তারের অভিযোগ তুলে টেক জায়ান্ট অ্যাপলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দেশটির নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের ফেডারেল আদালতে বিচার বিভাগ এই মামলা করে। মামলা চালিয়ে নিতে ১৬ সদস্যের যে আইনজীবী দলটি গঠন করেছে সরকার। সেই দলের প্রত্যেকেই এক একটি অঙ্গরাজ্যের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল)।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, কূটকৌশল এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে স্মার্টফোনের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার ও বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে অ্যাপল।নিজেদের ব্যবসা পরিচালনাসংক্রান্ত সার্বিক অপারেশনের অন্তত ৫টি ক্ষেত্রে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে কোম্পানিটি।
আদালতে অভিযোগ জমা দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করেছে মার্কিন সরকারের আইনজীবী দলটি। দলের অন্যতম সদস্য অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্মার্ট ফোনের বাজারে প্রতিযোগিতা থেকে দূরে থেকে সর্বোচ্চ মুনাফা নিশ্চিতের জন্য নিজেদের একচেটিয়া প্রভাবের অপব্যবহার করছে অ্যাপল,যা যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত আইনে অপরাধ। ক্রেতাদের এমন কোনো কোম্পানির পণ্য চড়া মূল্য দিয়ে কেনা উচিত নয়, যেটি আইনের কোনো পরোয়া করে না।
সংবাদ সম্মেলনে মেরিক গারল্যান্ড বলেন, অ্যাপল কখনো চায় না যে তাদের আইফোনের অ্যাপস্টোরে যেসব অ্যাপ রয়েছে, সেসবের চেয়ে উন্নত কোনো অ্যাপ বাজারে আসুক। নতুন প্রতিযোগী অ্যাপের আগমন ঠেকাতে অ্যাপল নিয়মিত তার ‘অ্যাপ রিভিউ’ প্রক্রিয়ার অপব্যবহার করছে।
গারল্যান্ড আরও বলেন, স্মার্টওয়াচের বাজার নিজেদের দখলে রাখতে আইফোনে এমন সফটওয়্যার ব্যবহার করছে অ্যাপল, যার ফলে অ্যাপলের নিজেদের কোম্পানির তৈরি স্মার্টওয়াচ ব্যতীত অন্য কোনো কোম্পানির স্মার্টওয়াচের সঙ্গে যেন আইফোনের সংযোগ স্থাপন সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে মামলা দায়েরের পর এক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাপল জানিয়েছে, আদালতকে মামলাটি খারিজ করার অনুরোধ করবে তারা। তবে এই অনুরোধ ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অ্যাপল বলছে, ‘তথ্য ও আইনের প্রেক্ষিতে মামলাটি ভুল এবং আমরা এর বিরুদ্ধে জোরালোভাবে লড়াই করব।’
২০০৯ সাল থেকে মার্কিন সরকারের কাছ থেকে তৃতীয়বারের মতো আইনি পদক্ষেপের মুখোমুখি হয়েছে অ্যাপল এবং রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের প্রশাসনের অধীনে কোম্পানির বিরুদ্ধে দায়ের করা প্রথম অ্যান্টি-ট্রাস্ট চ্যালেঞ্জ।
যদি সরকার মামলায় জয়লাভ করে, তবে এটি অ্যাপলকে তার বর্তমান চুক্তি ও অনুশীলনগুলো সংশোধন করতে বাধ্য করতে পারে, এমনকি কোম্পানিটি ভেঙে ফেলতে পারে। কারণ বিনিয়োগকারীদের ওপরও আইনি লড়াইয়ের প্রভাব পরায় অ্যাপলের শেয়ার ৪ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে।
তবে এসব পরিবর্তন বাস্তবায়িত হতে কয়েক বছর সময় লাগবে। কারণ মামলাটি আদালতে নিষ্পত্তি হতে অনেক সময় লাগবে। ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রেবেকা অ্যালেনসওয়ার্থ মামলাটিকে ‘ব্লকবাস্টার’ হিসেবে অভিহিত করেন। এর আগে গুগল, মেটা ও আমাজন সবাই একই ধরনের মামলার মুখোমুখি হয়েছে।
তিনি বলেন, স্মার্টফোনের কার্যকারিতা বাড়ানো, প্রযুক্তি ও সফটওয়্যারকে ভোক্তা এবং অন্যান্য ব্যবসায়ের কাছে আরও অ্যাকসেসযোগ্য করে তোলার মতো বিষয় এই মামলার মূলে রয়েছে। মামলাটি অ্যাপলকে ছোট ইউনিটে বিভক্ত করা বা বিভাজন বন্ধ করার বিষয়ে নয়। অ্যাপল তার আইওএস ইকোসিস্টেমে ও ব্যবসায়িক অনুশীলনের জন্য ক্রমবর্ধমান আইনি প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়েছে।
বিচার বিভাগের মতে, মার্কিন স্মার্টফোন বাজারে অ্যাপলের শেয়ার ৭০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিস্তৃত স্মার্টফোন বাজারে কোম্পানিটির শেয়ার ৬৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
শিশুদের বিরল রোগের ‘জিন থেরাপি’ বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধ
মেটাক্রোম্যাটিক লিউকোডিস্ট্রফি বা এমএলডি নামক অতি বিরল রোগের জন্য নতুন একটি জিন থেরাপির অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যার পাইকারি মূল্য ৪ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার। এটিই এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ওষুধ।
মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গত সোমবার ওষুধটির অনুমোদন দেয়।
এমএলডি একটি বিরল এবং মারাত্মক রোগ যা সাত বছরের কম বয়সী শিশুদের আক্রান্ত করে। এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা কখনও কখনও হাঁটতে এবং কথা বলার ক্ষমতা হারাতে শুরু করে।
ওষুধটির প্রস্তুতকারক সংস্থা অরচার্ড থেরাপিউটিকসের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া প্রতি এক লাখ শিশুর মধ্যে একটি শিশু এমএলডি নামক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়। বছরে এই সংখ্যা ৪০ শিশুর কম।
অরচার্ড থেরাপিউটিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডা. ববি গ্যাসপার বলেছেন, এটি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ওষুধ। এটিতে শিশুদের বিধ্বংসী রোগকে প্রতিরোধ করার সক্ষমতা রয়েছে।
সুরক্ষা বিতর্কে পদত্যাগ করছেন বোয়িংয়ের সিইও
সুরক্ষা ঘাটতি নিয়ে বিতর্কের মুখে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী (সিইও) ডেভ ক্যালহাউন। রদবদল আসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই বহুজাতিক সংস্থার শীর্ষস্থানীয় একাধিক পদেও। যেমন, অবিলম্বে অবসর নিতে যাচ্ছেন বাণিজ্যিক এয়ারলাইন্স বিভাগের প্রধান। এছাড়া চেয়ারম্যান আর নির্বাচনে দাঁড়াবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছে বোয়িং। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জানুয়ারিতে উড্ডয়নের পরপরই একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স প্লেনের অব্যবহৃত দরজা খুলে উড়ে যায়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও প্রশ্ন দেখা দেয় সংস্থাটির সুরক্ষা ও মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে।
বিশ্লেষকদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে বোয়িংয়ের নেতৃত্বে পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছিল। এ ব্যাপারে সিএফআরএ রিসার্চের ইক্যুইটি বিশ্লেষক স্টুয়ার্ট গ্লিকম্যান বলেন, বোয়িংয়ের শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন প্রয়োজন। সংস্থাটির বর্তমান যে সংকট, তা এর করপোরেট সংস্কৃতির সমস্যা থেকেই উদ্ভূত হয়েছে এবং এর সমাধান কেবল নতুন চিন্তাধারা দিয়েই সম্ভব।
২০২০ সালের শুরুর দিকে বোয়িংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির জেরে তৎকালীন প্রধান নির্বাহী ডেনিস মুয়েলেনবার্গ পদচ্যুত হলে তার স্থলাভিষিক্ত হন ক্যালহাউন।
মুয়েলেনবার্গ দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে প্রায় একই ধরনের দুর্ঘটনায় পতিত হয় দুটি নতুন ৭৩৭ ম্যাক্স প্লেন। এতে প্রাণ হারান ৩৪৬ জন যাত্রী ও ক্রু। এমন বিপর্যয়কালীন পরিস্থিতিতে বোয়িংয়ের বোর্ড সদস্য থেকে সিইও পদে উঠে আসেন ক্যালহাউন। প্রধান নির্বাহী হয়েই সংস্থাটির নিরাপত্তা সংস্কৃতি জোরদার এবং মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু এ বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই আলাস্কা এয়ারলাইনসের একটি নতুন বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স প্লেনের জরুরি বহির্গমন দরজা উড়ে যায়।
এ ঘটনায় বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত হচ্ছে। পাশাপাশি প্লেনটিতে থাকা যাত্রীদের অনেকেও আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি করছে সংস্থাটিকে। আলাস্কা এয়ারলাইনসের ঘটনা তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দরজাটিতে চারটি বোল্ট লাগানো ছিল না।