ট্রাম্পের ১শ’ দিন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে বসেছেন ১শ’ দিন হতে যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে এবং পরে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার কথা-বার্তা, মন্তব্য ও আচরণ সবই বিশ্বগণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার ও প্রকাশ পেয়েছে। নির্বাচনের আগে যতোই সমালোচনা হোক, শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউসে তাকে বসিয়েছেন মার্কিন জনগণ। তবে নির্বাচিত হবার পর তার আগের অনেক আচরণই পরিবর্তন হয়েছে।
হোয়াইট হাউসে বসার পর ফের নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিচ্ছেন ট্রাম্প। আরটিভি অনলাইনের পাঠকের জন্য তার ১শ’ দিনের খবরা-খবর এখানে তুলে ধরা হচ্ছে।
- শনিবার ১শ’তে পৌঁছাবেন ট্রাম্প
- উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে আমেরিকা (ভিডিও)
- মেক্সিকো দেয়াল নির্মাণ ইস্যুতে পিছু হটলেন ট্রাম্প
- আগের জীবনকে মিস করি : ট্রাম্প
- ফের গণমাধ্যমের ওপর চড়াও ট্রাম্প
- ট্রাম্পের ১০০ দিন, কীভাবে দেখছে বিশ্ববাসী
- ট্রাম্পের ১০০ দিন, ৩ বছরে সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি আমেরিকার
মন্তব্য করুন
শিশুদের বিরল রোগের ‘জিন থেরাপি’ বিশ্বের সবচেয়ে দামি ওষুধ
মেটাক্রোম্যাটিক লিউকোডিস্ট্রফি বা এমএলডি নামক অতি বিরল রোগের জন্য নতুন একটি জিন থেরাপির অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যার পাইকারি মূল্য ৪ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার। এটিই এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ওষুধ।
মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন গত সোমবার ওষুধটির অনুমোদন দেয়।
এমএলডি একটি বিরল এবং মারাত্মক রোগ যা সাত বছরের কম বয়সী শিশুদের আক্রান্ত করে। এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা কখনও কখনও হাঁটতে এবং কথা বলার ক্ষমতা হারাতে শুরু করে।
ওষুধটির প্রস্তুতকারক সংস্থা অরচার্ড থেরাপিউটিকসের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া প্রতি এক লাখ শিশুর মধ্যে একটি শিশু এমএলডি নামক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়। বছরে এই সংখ্যা ৪০ শিশুর কম।
অরচার্ড থেরাপিউটিকসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ডা. ববি গ্যাসপার বলেছেন, এটি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী ওষুধ। এটিতে শিশুদের বিধ্বংসী রোগকে প্রতিরোধ করার সক্ষমতা রয়েছে।
সুরক্ষা বিতর্কে পদত্যাগ করছেন বোয়িংয়ের সিইও
সুরক্ষা ঘাটতি নিয়ে বিতর্কের মুখে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী (সিইও) ডেভ ক্যালহাউন। রদবদল আসতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই বহুজাতিক সংস্থার শীর্ষস্থানীয় একাধিক পদেও। যেমন, অবিলম্বে অবসর নিতে যাচ্ছেন বাণিজ্যিক এয়ারলাইন্স বিভাগের প্রধান। এছাড়া চেয়ারম্যান আর নির্বাচনে দাঁড়াবেন না বলেও ঘোষণা দিয়েছে বোয়িং। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জানুয়ারিতে উড্ডয়নের পরপরই একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স প্লেনের অব্যবহৃত দরজা খুলে উড়ে যায়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও প্রশ্ন দেখা দেয় সংস্থাটির সুরক্ষা ও মান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে।
বিশ্লেষকদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে বোয়িংয়ের নেতৃত্বে পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছিল। এ ব্যাপারে সিএফআরএ রিসার্চের ইক্যুইটি বিশ্লেষক স্টুয়ার্ট গ্লিকম্যান বলেন, বোয়িংয়ের শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন প্রয়োজন। সংস্থাটির বর্তমান যে সংকট, তা এর করপোরেট সংস্কৃতির সমস্যা থেকেই উদ্ভূত হয়েছে এবং এর সমাধান কেবল নতুন চিন্তাধারা দিয়েই সম্ভব।
২০২০ সালের শুরুর দিকে বোয়িংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারির জেরে তৎকালীন প্রধান নির্বাহী ডেনিস মুয়েলেনবার্গ পদচ্যুত হলে তার স্থলাভিষিক্ত হন ক্যালহাউন।
মুয়েলেনবার্গ দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মাত্র পাঁচ মাসের ব্যবধানে প্রায় একই ধরনের দুর্ঘটনায় পতিত হয় দুটি নতুন ৭৩৭ ম্যাক্স প্লেন। এতে প্রাণ হারান ৩৪৬ জন যাত্রী ও ক্রু। এমন বিপর্যয়কালীন পরিস্থিতিতে বোয়িংয়ের বোর্ড সদস্য থেকে সিইও পদে উঠে আসেন ক্যালহাউন। প্রধান নির্বাহী হয়েই সংস্থাটির নিরাপত্তা সংস্কৃতি জোরদার এবং মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি।
কিন্তু এ বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই আলাস্কা এয়ারলাইনসের একটি নতুন বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স প্লেনের জরুরি বহির্গমন দরজা উড়ে যায়।
এ ঘটনায় বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত হচ্ছে। পাশাপাশি প্লেনটিতে থাকা যাত্রীদের অনেকেও আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি করছে সংস্থাটিকে। আলাস্কা এয়ারলাইনসের ঘটনা তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দরজাটিতে চারটি বোল্ট লাগানো ছিল না।
জাহাজের ধাক্কায় যানবাহনসহ মাঝ নদীতে ভেঙে পড়ল সেতু
যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে জাহাজের ধাক্কায় মাঝ নদীতে ভেঙে পড়েছে একটি সেতু।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৫ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে প্যাটাপসকো নদীর ওপর অবস্থিত ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ নামের সেতুটিতে একটি পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কা লাগে। এ সময় সেতুটি দিয়ে পারাপাররত বেশ কয়েকটি যানবাহন পড়ে যায় মাঝ নদীতে। এখন পর্যন্ত হতাহতের সংখ্যা জানা না গেলেও ঘটনাটিকে ‘উন্নয়নশীল গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
বাল্টিমোর সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর চিফ কেভিন কার্টরাইটের বরাত দিয়ে বিবিসি ও স্কাই নিউজসহ মার্কিন বিভিন্ন গণমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এছাড়া দুর্ঘটনার বেশ কয়েকটি ফুটেজও প্রকাশ পেয়েছে ইতোমধ্যে।
ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ১.৬ মাইল দীর্ঘ ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটির একটি বড় অংশ স্থানীয় সময় দেড়টায় সংঘর্ষের পর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে নদীতে। এ সময় সেতু থেকে এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি যানবাহনও পড়ে যেতে দেখা যায়।
বাল্টিমোর সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর চিফ কেভিন কার্টরাইট বলেছেন, এই মুহূর্তে আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নিখোঁজ লোকদের উদ্ধার করা।১০টি নৌযান উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ঘটনাস্থলে।
তিনি বলেন, কতজন মানুষ পানিতে পড়ে গেছে সে সম্পর্কে সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে ডুবে যাওয়াদের উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।
এদিকে ম্যারিল্যান্ড ট্রান্সপোস্ট কর্তৃপক্ষ তাদের এক এক্স পোস্টে জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই সেতুটির উভয় দিকের সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে সেতুর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলও। প্যাটাপসকো নদীর সব ধরনের জাহাজ, স্টিমার ও নৌকাকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে অন্যপথে।
এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বাল্টিমোর শহরের মেয়র ব্রেন্ডন এম স্কট। দুর্ঘটনায় নিখোঁজদের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন তিনি।
জানা গেছে, দালি নামে পরিচিত সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী কনটেইনার জাহাজটি বাল্টিমোর বন্দর হয়ে শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে যাচ্ছিলো। কিন্তু পথিমধ্যে সেতুটির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সেখানেই আটকে গেছে জাহাজটি।
দুর্ঘটনা কবলিত ১.৬ মাইল দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। ন্যাশনাল স্টিল ব্রিজ অ্যালায়েন্স অনুসারে, বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রাস ব্রিজগুলোর মধ্যে একটি এটি।
নিজের ডেকে আনা পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেল বাংলাদেশি তরুণের
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিও। সাহায্য চেয়ে কল করেছিলেন পুলিশকে; ফোনে বলেছিলেন যে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু, পুলিশ আসতেই উল্টে যায় পরিস্থিতি। নিজের ডেকে আনা পুলিশের গুলিতেই প্রাণ যায় ১৯ বছর বয়সী তরুণের।
ঘটনাটি ঘটেছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ওজোন পার্কে, ১০১তম অ্যাভিনিউয়ের ১০৩তম স্ট্রিটের অবস্থিত ফ্রান্সিস রোজারিওর বাড়িতে; স্থানীয় সময় বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরের দিকে ৯১১ নম্বর থেকে ফোন আসে তাদের কাছে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে উইন রোজারিও নামে ওই তরুণ জানান, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।
এরপর ওজোন পার্কের ১০১তম অ্যাভিনিউয়ের ১০৩তম স্ট্রিটের বাড়িটিতে দুপুর দেড়টার দিকে যায় পুলিশ। বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় উঠে ভেতরে উইন রোজারিওকে দেখতে পায় তারা। এ সময় তাকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশ সদস্যরা। এ অবস্থায় ওই তরুণ নিজের হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে তাদের দিকে তেড়ে এলে সরাসরি গুলি করা হয় তাকে। পরে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হলে উইনকে মৃত ঘোষণা করেন সেখানকার চিকিৎসক।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনলেও পুলিশের দাবি, উইন রোজারিও মাদকাসক্ত এবং মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন। আত্মরক্ষার্তেই গুলি করতে বাধ্য হয়েছেন তাদের সদস্যরা।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের চিফ অব পেট্রোল জন চেল জানান, বাংলাদেশি ওই তরুণ নিজের হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে তেড়ে আসছিলেন পুলিশ সদস্যদের দিকে। এ কারণে তাকে গুলি করা হয়েছে।
উইনকে কয়টি গুলি করেছে পুলিশ সেটি এখনও জানা যায়নি। তবে জন চেল জানিয়েছেন, পুরো ঘটনাটি শরীরে থাকা ক্যামেরায় রেকর্ড আছে। বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে এবং বিশদভাবে তদন্ত করে দেখা হবে।
এদিকে নিহত তরুণের বাবা ফ্রান্সিস রোজারিওর প্রশ্ন, ‘আমার ছেলে নিজেই যেহেতু বলেছে সে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন, তাহলে কেন গুলি করে মারতে হলো তাকে?’
এ ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে।
যুক্তরাষ্ট্রে সেতু দুর্ঘটনা : দুই মরদেহ উদ্ধার
যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় ফ্রান্সিস স্কট কি সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় দু’জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেরিল্যান্ড স্টেট পুলিশ দু’জনের মরদেহ উদ্ধারের খবর জানায়।
তারা হলেন- মেক্সিকোর আলেহান্দ্রো হার্নান্দেজ ফুয়েন্তে, ৩৫, এবং গুয়েতেমালার ডর্লিয়ান রনিয়েল ক্যাস্টিলো ক্যাব্রেরা, ২৬। পানিতে নিমজ্জিত একটি ট্রাকের ভেতর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ভোরে একটি কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড রাজ্যের বাল্টিমোর শহরের ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুটি ভেঙে পড়ে। এতে সেতুতে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়ি পানিতে পড়ে যায়। এসময় আটজন নির্মাণ শ্রমিক নদীতে পড়ে যান। পরে দু’জনকে উদ্ধার করা গেলেও ছয়জনকে নিখোঁজ ঘোষণা করা হয়।
সেতু ভেঙে নদীতে প্রচুর কংক্রিট এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকার কারণে বর্তমানে আর নিরাপদে উদ্ধারকাজ চালানো যাচ্ছে না। সোনার স্ক্যান ব্যবহার করে বাকি মরদেহগুলো খোঁজা হচ্ছে। সূত্র : বিবিসি
বাল্টিমোরে জাহাজের ধাক্কায় সেতু ধসে পড়ার ঘটনায় যা জানা গেল
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোরে দুদিন আগেই জাহাজের ধাক্কায় ভেঙে পড়ে ১.৬ মাইল দৈর্ঘ্যের ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতু। প্যাটাপসকো নদীর বুকে ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনায় সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এখনও নিখোঁজ আছেন চারজন। সেতু ভেঙে ঘটনাস্থলে প্রচুর কংক্রিট এবং অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকার কারণে বর্তমানে আর নিরাপদে উদ্ধারকাজ চালানো যাচ্ছে না। খবর রয়টার্সের।
স্থানীয় সময় বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেরিল্যান্ড স্টেট পুলিশ জানায়, উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলো মেক্সিকোর আলেহান্দ্রো হার্নান্দেজ ফুয়েন্তে ও এবং গুয়েতেমালার ডর্লিয়ান রনিয়েল ক্যাস্টিলো ক্যাব্রেরা নামে দুই ব্যক্তির। মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয় ডুবে থাকা একটি ট্রাকের ভেতর থেকে।
এদিকে সেতু ধসের এ ঘটনায় বাকি চার নিখোঁজ ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধারের আশা ছেড়ে দিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড। এরই মধ্যে উদ্ধার অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটিকে ধাক্কা দেয় শ্রীলংকাগামী সিঙ্গাপুরের একটি কার্গো জাহাজ। এতে সেতুটির বড় একটি অংশ ধসে পড়লে তাতে থাকা কয়েকটি যানবাহনও নদীতে পড়ে যায়।
দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজটির নাম দালি। স্থানীয় সময় রাত ১টায় যুক্তরাষ্ট্রের পাটাপসকো নদী থেকে শ্রীলংকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে সেটি। জাহাজটি পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ভারতীয় নাবিকরা। ১টা ২৪ মিনিটে জাহাজটির বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা দেয়। এর পরপরই সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে জাহাজটি।
এর ঠিক তিন মিনিট পর ১টা ২৭ মিনিটে সেতুর একটি পিলারে আঘাত করে ১৫ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে চলা জাহাজটি। আর সঙ্গে সঙ্গেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে সেতুটি।
এদিকে সেতুটিতে কোনো কাঠামোগত সমস্যা ছিল না বলে জানিয়েছেন মেরিল্যান্ডের গভর্নর ওয়েস মুর। এরপরও কীভাবে জাহাজের ধাক্কায় এমন বড় একটা সেতু হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রকৌশলীরা জানান, সেতুটি ধাতু দ্বারা নির্মিত ট্রাস পিলারগুলোকে সংযুক্ত করেছে। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পিলারে আঘাত হানে জাহাজটি। মূলত সেতুটির নির্মাণশৈলীর কারণেই সেতুটি এমনভাবে ভেঙে পড়ে।
দুর্ঘটনা কবলিত ১.৬ মাইল দৈর্ঘ্যের ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। সেতুটির নামকরণের পেছনে আছে একটি ইতিহাস।
১৮১৪ সালের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হেরে যায় যুক্তরাজ্য। সে সময় এই যুদ্ধের সাক্ষী হয়েছিলেন আমেরিকার জাতীয় সংগীত ‘স্টার স্প্যাংগল্ড ব্যানার’ এর রচয়িতা ফ্রান্সিস স্কট কি। এরপর তার নামে ১৯৭৭ সালে প্যাটাপসকো নদীর ওপর নির্মিত হয় সেতুটি।
আমেরিকার বাল্টিমোর হারবার অতিক্রম করার তিনটি রাস্তার মধ্যে ফ্রান্সিস স্কট কি সেতুটি অন্যতম। বাল্টিমোর বন্দরের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। প্রতিদিন গড়ে ৩১০০০ যানবাহন চলাচল করত সেতুটি দিয়ে।
নাবালকেরা সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে না
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যানটিস এই বিলে সই করেছেন। ২০২৫-এর ১ জানুয়ারি থেকে এই আইন কার্যকর হবে। সোশ্যাল মিডিয়া বা সামাজিকমাধ্যম নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে আমেরিকায়। সম্প্রতি বাইডেন সরকার সেখানে টিকটক বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে।
তারই মধ্যে ফ্লোরিডার গভর্নর সোমবার জানিয়ে দিলেন, নাবালকেরা যাতে সামাজিকমাধ্যম আর ব্যবহার করতে না পারে, তা নিয়ে একটি আইনে তিনি সই করেছেন। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই আইন কার্যকর হবে। ১৩ বছর না হলে আর সামাজিকমাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না।
আইনে বলা হয়েছে, ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করা যাবে না। ১৪ এবং ১৫ বছরের বালক-বালিকারা অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবে, কিন্তু তার জন্য বাবা-মায়ের অনুমতি নিতে হবে।
ফ্লোরিডার স্থানীয় সরকার জানিয়েছে, সামাজিকমাধ্যমের এই যুগে এই আইন বাবা-মাকে বাচ্চা বড় করতে সাহায্য করবে। বস্তুত, অনেকদিন ধরেই ফ্লোরিডায় এই বিলটি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। রাজ্যের স্পিকার পল রেনার চেয়েছিলেন, ১৬ বছরের নিচে কোনো নাবালক সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করতে পারবে না। সেই প্রস্তাব খারিজ হলেও তার কাছাকাছি একটি প্রস্তাব শেষপর্যন্ত আইনের চেহারা পেয়েছে।
এদিন রেনার বলেছেন, সামাজিকমাধ্যম ভরে আছে পেডোফিল এবং পাচারকারীতে। তারা সামাজিকমাধ্যমকে ব্যবহার করে নাবালকদের উত্তেজিত করে এবং অন্ধকার জগতের দিকে টেনে নিয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়, তার মতে, সামাজিকমাধ্যম বাড়ন্ত শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। এটা এক ধরনের নেশা তৈরি করে, যা বাচ্চাদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। এই বিলটি নিয়ে বিতর্কের সময় দুইটি বিষয় সামনে এসেছিল। একদিকে শিশু-সুরক্ষা, অন্যদিকে বাকস্বাধীনতা। সামাজিকমাধ্যম ব্যবহারের অধিকার এভাবে ছিনিয়ে নেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত বলা হয়েছে, শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাকেই সবার আগে গুরুত্ব দিতে হবে।