শিশুদের ছুঁড়ে ফেলছে আগুনে, পুরুষদের গুলি
মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশটির রাখাইন প্রদেশে ব্যপক খুন ও নির্যাতন চালাচ্ছে। নির্মমতার মাত্রা এতো তীব্র পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বাধ্য হয়ে সেখানকার রোহিঙ্গা মুসলমান প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন।
তাদের অভিযোগ, সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে, পুরুষদের ধরে গুলি করছে, নয়তো গলা কেটে ফেলছে। এতে স্বামীহারা হচ্ছেন বহু নারী।
বাংলাদেশের সরকারের দাবি, সীমান্তে চলছে কঠোর নজরদারি। এতো কড়াকড়ি সত্ত্বেও রাতের অন্ধকারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিচ্ছেন বহু বিপন্ন রোহিঙ্গা।
এমন এক রোহিঙ্গা নারীর অভিযোগ, সেনারা তার স্বামীকে গুলি করে হত্যা করেছে এবং বাচ্চাদের আগুনে ছুঁড়ে ফেলেছে। তাই সে নিজের প্রাণ বাঁচাতে রাতের অন্ধকারে সীমান্ত অতিক্রম করে এখানে এসেছে।
এদিকে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের কথা বরাবরই 'অতিরঞ্জিত' বলে দাবি করে আসছে।
বর্মী সরকারের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আসলে রাখাইনে যা ঘটছে, তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা।
তবে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ভয়াবহতা স্যাটেলাইটে তোলা ছবিতেও ফুটে উঠছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলোতে ১২শ’র বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। হাজার হাজার রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে।
এ অভিযান চালানোর কারণ হিসেবে সেনাবাহিনী উল্লেখ করেছে, রাখাইন প্রদেশে সম্প্রতি শুরু হওয়া বিদ্রোহ দমনের অংশ হিসেবে এ অভিযান। গেলো ৯ অক্টোবর রাখাইন সীমান্ত চৌকিতে হামলার জের ধরে এ অভিযান।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানাচ্ছে, ওই এলাকায় সেনাবাহিনী হেলিকপ্টার গানশিপও ব্যবহার করে।
গেলো সোমবার আরো দু’টি ভিন্ন জায়গা থেকে মোট ৮৭ জন রোহিঙ্গা মুসলমানকে আটক করা হয়েছে। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে সে সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
তবে রোহিঙ্গাদের প্রতি সরকারের কঠোর মনোভাব থাকলেও সীমান্তের ওপারে চরম সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে পড়া মানুষদের প্রতি বাংলাদেশি সাধারণ মানুষের সহানুভূতি দিন দিন বাড়ছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশের সীমান্ত খোলা রাখার জন্য আশা জানিয়েছেন।
আরএমকে/ডিএইচ
মন্তব্য করুন