• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

মার্কিন মুসলিমরা ভোট দেবেন কাকে?

এ এইচ মুরাদ

  ০৮ নভেম্বর ২০১৬, ১৫:২৬

আর কিছুক্ষণ পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এবার প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকানদের হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হিলারি ক্লিনটন লড়াই করছেন। ১২ কোটি ভোটার বেছে নেবেন তাদের নতুন প্রেসিডেন্টকে। এ নির্বাচনে মুসলিম ভোট ভালোই প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদন অনুসারে, দেশটিতে মুসলিম ভোটারের সংখ্যা ৩৩ লাখের বেশি। তবে কাউন্সিল অব ইসলামিক রিলেশন (কেয়ার)-এর তথ্য মতে রেজিস্ট্রার মুসলিম ভোটারের সংখ্যা ৮০ লাখের ওপর। মোট ভোটারের তুলানায় সংখ্যাটা কম হলেও নানান ইস্যুতে দু'প্রার্থীর জয়-পরাজয়ের ব্যবধান তৈরি করে দিতে পারেন মার্কিন মুসলিমরা।

নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতেই রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলেন। বিশেষ করে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তুলে অভিবাসীদের ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ১ কোটি ১০ লাখের বেশি অবৈধ অভিবাসীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চালু করতে উদ্যোগ গ্রহণের কথাও জানান এ রিপাবলিকান প্রার্থী। ওই বক্তব্য দিয়ে ট্রাম্প কট্টরপন্থি আমেরিকানদের সমর্থন আদায় করে নিলেও বিতর্কের মুখে সরে আসেন।

অভিবাসন ইস্যুতে ট্রাম্পের ঠিক বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে থাকার বিষয়ে ওবামার উদ্যোগকে আরো এগিয়ে নেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। মার্কিন অভিবাসন নীতি সংস্কার করারও আহ্বান জানিয়েছেন।

মধ্যপ্রাচ্য তথা মুসলিম দেশগুলো থেকে শরণার্থী বিষয়েও মুখোমুখি অবস্থানে দু'প্রার্থী। আমেরিকায় সিরীয় শরণার্থীর সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলেছেন হিলারি। তার ভাষায়, সহিংসতা এবং দমন-পীড়ন থেকে পালিয়ে আসা মানুষদের স্বাগত জানানোর ইতিহাস আমেরিকার আছে এবং সেই ধারাই অব্যাহত রাখতে চান তিনি। অপরদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ট্রাম্প মনে করেন, সিরিয়াসহ মুসলিম দেশ থেকে আরো যাচাইবাছাই করে আমেরিকায় শরণার্থী নেয়া দরকার।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বশস্ত্রবাহিনী বিভাগের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা কবির আহমেদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা মূলত তাকেই সমর্থন করছি, যিনি আমাদের অর্থাৎ মুসলিম কমিউনিটির পাশে থাকবেন। এ নির্বাচন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই এটি পজেটিভ প্রভাব ফেলবে। আর সে কারণেই আমেরিকায় বসবাসরত মুসলিম কমিউনিটির বেশিরভাগই গেলো ৩ দিন ধরে ভোট নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘সবার সুবিধার জন্য দু’সপ্তাহেই ভোটারদের তালিকা প্রকাশ করেছি। আমরা মুসলিম আমেরিকান কমিউনিটি এক আছি, এ মেসেজ বিশ্বব্যাপী দিতে চাই। আর হিলারিই মুসলিম আমেরিকানদের পছন্দের তালিকায়।’

অতীতের নির্বাচনে মুসলিমদের নিয়ে এতো আলোচনা ছিল না। ট্রাম্পের কট্টোর নীতির কারণেই এবার মুসলিম ভোট নিয়ে উন্মাদনা বেশি দেখা যাচ্ছে। মুসলিম ভোটের প্রায় ৭০ ভাগই ডেমোক্র্যাট শিবিরে যাবে, একমাস আগেই এমন পরিসংখ্যান প্রকাশ করে ভয়েস অব আমেরিকা।

২শ' ৪০ বছরের গণতন্ত্রের দেশটির ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নাকি হিলারি, তা জানা যাবে বুধবার। তবে এ নির্বাচনে যিনিই জয়লাভ করুক না কেনো নীতিগত অবস্থান একই থাকবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমেরিকান প্রবাসী বাঙালিরা হিলারিকেই সমর্থন দিচ্ছেন। মূলত তাদের পছন্দ সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তাকে ভোট দিলে সেটি যোগ হচ্ছে হিলারির ঝুলিতে। তবে আমেরিকার বিদেশ নীতি (পররাষ্ট্র নীতি) বেশ শক্তিশালী। ট্রাম্প নির্বাচিত হলেই যে, সব অভিবাসন বন্ধ হয়ে যাবে তা ঠিক নয়। অভিবাসন বন্ধে সংশোধন করতে হবে অনেক আইন। যা প্রেসিডেন্টের পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন পড়বে সিনেটরের। আইন পরিবর্তন করতে হলে প্রেসিডেন্ট ও সিনেটর, দু’মতই দরকার। যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন তাকে নজর রাখতে হবে জনগণের পছন্দের ওপর।’

এইচএম/ এস

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh