• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

ট্রাম্পের জিরো টলারেন্স, জিরো হিউম্যানিটি

আহাম্মদ উল্লাহ সিকদার

  ১৯ জুন ২০১৮, ১২:১৯
আশ্রয় প্রত্যাশী এক হন্ডুরিয়ান মাকে টেক্সাসের ম্যাকঅ্যালেনে সীমান্তে চেক করার সময় তার দুই বছরের শিশু কাঁদছে

শুরু থেকেই কট্টর অভিবাসনবিরোধী হিসেবে পরিচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচারণায় এ বিষয়টি তিনি বারবারই স্পষ্ট করেছেন। এমনকি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও বাস্তবায়ন শুরু করেন ট্রাম্প। মুসলিম কয়েকটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষেধ, ওবামা প্রশাসনের অভিবাসন নীতি বাতিলের সিদ্ধান্ত, সীমান্তে বেড়া দেয়ার মতো বিভিন্ন বিষয়ে নিজের কঠোর অবস্থান জানান দেন।

তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা হাজার হাজার অভিবাসন প্রত্যাশী ব্যক্তিদের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের অমানবিক আচরণ পুরো বিশ্ব অবাক হয়েছে। সমালোচনা হচ্ছে দেশের ভেতর থেকে। এমনকি খোদ ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও এ নিয়ে কথা বলেছেন।

তবে নিজের অবস্থানে পুরোপুরি অনড় ট্রাম্প বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অভিবাসী শিবির’হতে দেবেন না। উল্টো দোষ চাপাচ্ছেন বিরোধীশিবির ডেমোক্রেটদের ঘাড়ে। তার ভাষায় বর্তমান পরিস্থিতির জন্য তারাই দায়ী। তবে ডেমোক্রেটরাও প্রশাসনিক নীতির ওপর চাপ বাড়াচ্ছেন। আর এই দলে যোগ দিচ্ছেন রিপাবলিকানরাও।

কিন্তু ট্রাম্প আর ডেমোক্রেটদের এই টানাহেঁচড়ার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত এলাকা আকাশ ভারি হয়ে উঠছে। সীমান্ত এলাকার একটি অডিও ক্লিপে ক্রন্দনরত শিশুদের নিয়ে ঠাট্টা করতেও শোনা যায় একজন বর্ডার পেট্রল এজেন্টকে। তিনি বলেন, এখানে অর্কেস্ট্রা দল আছে। দরকার শুধু একজন কন্ডাক্টরের। বাবা-মা থেকে আলাদা করে দেয়া এসব শিশুকে ‘বাবা’ও ‘মা’বলে কাঁদতে শোনা যায়।

এসময় এল সালভেদরের ৬ বছর বয়সী এক মেয়ে তার আন্টিকে ফোন করতে বারবার অনুরোধ করতে শোনা যায়। শিশুটি জানায়, সে ফোন নাম্বারও মুখস্থ করেছে। শিশুটি ফুঁপিয়ে বলে, আমার মা বলেছে আমি আমার আন্টির সঙ্গে যাবো। সে আমার ফোন পেলেই নিয়ে যাবে।

গেলো এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন ‘জিরো টলারেন্স’অভিবাসী নীতি বাস্তবায়ন শুরু করলে এখন পর্যন্ত ২ হাজার তিনশোর বেশি শিশুকে তাদের বাবা-মার কাছ থেকে আলাদা করা হয়েছে। প্রাপ্ত বয়স্ক যারা আশ্রয়ের আশায় মার্কিন সীমান্ত পার হবার চেষ্টা করেছিলেন, তাদের অনেককেই কারাগারে রাখা হয়েছে। শিশুদের ডিটেনশন সেন্টার, ওয়ারহাউজ ও সুপারমার্কেটে রাখা হয়েছে।

অভিবাসন প্রত্যাশীদের সন্তানদের খাঁচায় রাখা হয়েছে

এদিকে স্বামী ট্রাম্পের এই ‘জিরো টলারেন্স’নিয়ে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প বলেছেন, পরিবার থেকে শিশুদের আলাদা করে দেয়াকে আমি ঘৃণা করি। দরকার হলে এই আইনের পরিবর্তন করা হোক। সোচ্চার হয়েছেন আলোচিত সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের স্ত্রী লরা বুশও। এ নিয়ে ওয়াশিংটন পোস্টে এক নিবন্ধও লিখেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, বাবা-মার কাছ থেকে সন্তানকে আলাদা করা নির্মম, অনৈতিক ও হৃদয়বিদারক।

অভিবাসীদের দিয়ে গড়া দেশটিতে ট্রাম্পের দাদাও এক সময় জার্মানি থেকে পাড়ি জমিয়েছিলেন। আর সেই ট্রাম্পই কিনা এখন ঘোর অভিবাসীবিরোধী।

এ/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
‘স্বাস্থ্যখাতকে প্রধানমন্ত্রী জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন’
‘ঘুষ দিয়ে অনুমোদন নেওয়া মসজিদে নামাজ পড়া নাজায়েজ’
X
Fresh