সিরিয়া সংকট সমাধানে একমত পুতিন-রুহানি-এরদোয়ান
সিরিয়ার রাজনৈতিক সংকট সমাধানে দেশটির সরকার ও বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করতে জাতীয় কংগ্রেস গঠনের প্রস্তাবে একমত হয়েছে রাশিয়া, ইরান ও তুরস্ক। বৈঠক শেষে এ নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হলে বিষয়টিকে স্বাগত জানায় সিরিয়া।
রাশিয়ার সোচি’তে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একত্রিত হয়েছিলেন।
তিন দেশের প্রেসিডেন্টদের বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষা এবং রক্তপাত বন্ধ করে এমন যেকোনো রাজনৈতিক উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে শুরু থেকে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল দামেস্ক।
এর আগে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, সিরিয়ার সরকার ও বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করতে ‘সিরিয়ান পিপলস কংগ্রেস’গঠনের ব্যাপারে রাশিয়ার প্রস্তাবে একমত হয় ইরান ও তুরস্ক। এই কংগ্রেস সিরিয়ার প্রধান জাতীয় সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করবে। সবার আগে তারা জাতিসংঘের তদারকিতে নির্বাচন করার জন্য নতুন সংবিধান প্রণয়নসহ রাষ্ট্রটির ভবিষ্যৎ কাঠামো দাঁড় করবে।
কংগ্রেস গঠনের তারিখ এবং এতে কারা থাকবে তা এখনো বিস্তারিত বলা হয়নি। তবে আগামী ২৮ নভেম্বর সোচিতে অনুষ্ঠিতব্য জেনেভা সংলাপে কংগ্রেসটি অংশ নেবে বলে আশা করছেন তারা।
পুতিন বলেন, আমি বিশ্বাস করি সিরিয়া সংকট সমাধানে একটি নতুন মাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। এ সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের জন্য সব পক্ষকেই ছাড় দিতে হবে বলেও মনে করিয়ে দেন তিনি।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বন্দিদের মুক্তি দিয়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে সব পক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান এই তিন নেতা।
২০১১ সালের মার্চ মাসে সিরিয়ায় বিদেশি মদদে চাপিয়ে দেয়া ভয়াবহ সহিংসতায় অন্তত তিন লাখ ৩০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে জাতিসংঘের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে।
জাতিসংঘ আরো বলেছে, সিরিয়ার এক কোটি ৮০ লাখ অধিবাসীর প্রায় অর্ধেক শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে যাদের অনেককে দেশের বাইরে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
তুরস্ক সিরিয়ার বিরোধীদের সহায়তা করে আসলেও প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ইরান তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়। সিরিয়ার সরকার ও বিরোধীদের আলোচনায় বসতে ও দেশটিতে চারটি ‘নিরাপদ স্থান’ প্রতিষ্ঠায় চাপ সৃষ্টি করতে এর আগেও এই তিন দেশ সংলাপে অংশ নেয়।
এর আগে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে এই তিন দেশই সিরিয়ায় অস্ত্র বিরতির চেষ্টা করেছিল। তখন শান্তি আলোচনাও হয়। তবে তুরস্ক এখনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। আসাদকে সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া ও ইরান।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরানি সামরিক উপদেষ্টাদের পরামর্শ এবং রাশিয়ার বিমান হামলার ছত্রছায়ায় সিরিয়ার সেনাবাহিনী উগ্র সন্ত্রাসীদের দমনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। গত রোববার সিরিয়ার সেনাবাহিনী উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশের নিয়ন্ত্রণে থাকা সর্বশেষ শক্তি ঘাঁটি বুকামালের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।
ওয়াই/সি
মন্তব্য করুন